Home Blog Page 129

অমাবস্যা ও জ্যোতিষ শাস্ত্র

আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বর্তমান সময়টি বেশ তাৎপর্য পূর্ণ আগামী 12 ই জুলাই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এবং রথের ঠিক আগেই আগামী 9 তারিখ শুক্রবার রয়েছে অমাবস্যা|
একদিকে রথ যাত্রা যেমন যেকোনো শুভ কাজের সূচনার জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ তিথি অন্যদিকে যুগ যুগ ধরে জ্যোতিষ ও তন্ত্রে শাস্ত্রে অমাবস্যা তিথির গুরুত্ব অপরিসীম|আজকের পর্বে ব্যাখ্যা করবো জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতে কেনো অমাবস্যা এতো গুরুত্বপূর্ণ|

প্রথমে জানা দরকার এই অমাবস্যা তিথি কি|শুক্লপক্ষ এবং কৃষ্ণপক্ষ এক মাসের দুটি অংশ রয়েছে। শুক্লপক্ষে চন্দ্রের শিল্পকলা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ চন্দ্র বৃদ্ধি পায়। কৃষ্ণপক্ষের চন্দ্র বক্ররেখা এবং অমাবস্যায় সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে যায়। চাঁদের ষোলটি কলার মধ্যে ষোড়শ শিল্পকে অমা বলা হয়। তাই এই তিথি অমাবস্যা নামে পরিচিত।

স্কন্দ পুরাণ অনুসারে অমাবস্যা সংক্রান্ত একটি শ্লোকে বলা হচ্ছে|

‘আমা শোভাগইন দেবী প্রক্ত মহাকাল
সংস্থিতা পরমা মায়া দেহিনাম দেহধারিনী।’

এই শ্লোক অনুসারে, আমা চাঁদ দ্বারা উপাসনা করা হয়, এটি চাঁদের সমস্ত ষোলো কলার শক্তি অন্তর্ভুক্ত করে। এই শিল্প ক্ষয় এবং উত্থান হয় না। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে যখন সূর্য ও চাঁদ কোনও কোনও রাশিতে থাকে, তখন অমাবস্যা তিথি সৃষ্টি হয়|

শাস্ত্রে অমাবস্যা তিথির কর্তা পিতৃদেব বলে বিশ্বাস করা হয়। সুতরাং, অমাবস্যায় পিতৃগণের সিদ্ধির জন্য তর্পণ, শ্রদ্ধা কর্ম ও দান করা গুরুত্বপূর্ণ। অমাবস্যায় পবিত্র নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভের সম্ভাবনা। এছাড়া যেকোনো তন্ত্রের কাজ এবং শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডন এই সময়ে করলে তা অনেক বেশি সফল এবং কার্যকর হয়|শাস্ত্র মতে যেকোনো রকম প্রতিকার ধারণের জন্যে এই সময় শ্রেষ্ট সময়|

প্রতিটি অমাবস্যায় যেমন আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলার মন্দিরে বিশেষ পুজো হোম যজ্ঞ ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের সু ব্যবস্থা থাকে এই অমাবস্যা তেও তার ব্যাতিক্রম হবেনা|আপনারা নিজেদের ভাগ্যবিচার ও গ্রহদোষ থেকে মুক্তি পেতে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়কে কাজে লাগাতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ

স্বামী বিবেকানন্দের মহা প্রয়ান দিবস

একবার স্বামীজি অমরনাথ দর্শনের পরে নিবেদিতাকে আভাস দিয়েই রেখেছিলেন, মহাদেব-কৃপায় তিনি ইচ্ছামৃত্যুর বর পেয়েছেন। যার নিহিত অর্থ হল, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত না হলে তাঁর দেহত্যাগ হবে না।

4 জুলাই স্বামীজির মহাপ্রয়াণ ঘটে এবং পরদিন ৫ জুলাই, শনিবার। তখন ভগিনী নিবেদিতার ঠিকানা ১৬ নন্বর বাগবাজার লেন। সকাল ৯টা নাগাদ বেলুড় মঠ থেকে একটা ছোট চিঠি পান স্বামী সারদানন্দজি স্বাক্ষরিত নিম্নলিখিত বয়ানে-‘-‘মাই ডিয়ার নিবেদিতা, দ্য এন্ড হ্যাজ কাম, স্বামীজি হ্যাজ স্লেপ্ট লাস্ট নাইট অ্যাট নাইন ও’ক্লক। নেভার টু রাইজ এগেন- সারদানন্দ’’।

কালবিলম্ব না করেই বেলুড় থেকে আসা পত্রবাহকের সঙ্গেই রওনা হলেন বেলুড় মঠ|
বেলুড় মঠে পৌঁছেই নিবেদিতা সোজা উঠে গেলেন দোতলায় স্বামীজির ঘরের দিকে। স্বামীজির দেহটি মেঝেতে শায়িত হলুদ রঙের ফুলমালা আচ্ছাদিত হয়ে। মানসকন্যা স্বামীজির শিয়রের কাছে বসে পড়েন।এই মুহূর্ত থেকে স্বামীজীর দেহ পঞ্চভুতে বিলীন হয়ে যাওয়ার মুহূর্ত অবধি নিবেদিত স্বামীজীকে চোখের আড়াল করেননি|

স্বামীজির শেষকৃত্য সমাপনের নির্দিষ্ট স্থানে, যে স্থান বিবেকানন্দ নিজেই চিহ্নিত করেছিলেন মহাপ্রয়াণের কিছু দিন আগে, স্থানটি ছিলো তাঁর প্রিয় বেলগাছের কাছে এর উল্টো দিকেই |সেখানেই শেষ হলো শেষ কৃত্য|পরবর্তীতে এই খানে গড়ে ওঠে স্বামীজীর একটি মন্দির|

দাহ কার্য যখন চলছে দুরে বসে আছেন নিবেদিতা হটাৎ চিতাগ্নি থেকে একখণ্ড গেরুয়া বস্ত্র হাওয়ায় উড়ে এসে নিবেদিতার কোলে গিয়ে পড়ে। পরম মমতায় ও যত্নে নিবেদিতা তা গুরুর আশীর্বাদ ভেবে মাথায় ঠেকান। সেই পবিত্র স্পর্শ যেন শোকস্তব্ধ হৃদয়ে সান্ত্বনা ও শক্তি জোগায়|

আজ এই মহান সন্ন্যাসীর প্রয়ান দিবসে তার চরনে রইলো শতকোটি প্রনাম| 

দেবতাদের অস্ত্রশস্ত্র – গদা

দেবতাদের অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে এই ধারাবাহিক লেখনীতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ও বহুচর্চিত অস্ত্র নিয়ে লিখেছি, আজ আমাদের প্রাচীন ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অস্ত্র গদা নিয়ে লিখবো|

রামায়ন থেকে মহাভারত, পৌরাণিক যুগের প্রায় প্রতিটি বড়ো যুদ্ধতে বাবহিত হয়েছে এই গদা|গদা একেবারেই ভারতীয় প্রযুক্তি এবং ভারতীয় সভ্যতার দান, সমসাময়িক আর কোনো সভ্যতায় অস্ত্র হিসেবে গদার উল্লেখ নেই বললেই চলে|

গদা সব থেকে বেশি যার হাতে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো তিনি পবন পুত্র হনুমান|গদা ও বজ্রবলীর সম্পর্ক শৈশব থেকে|শৈশব থেকে কাকা বালি তাকে হত্যা করতে চাইতেন, একবার ছলনা করে বালি তাকে পাতাল পুরীতে কুবের দেবের লুকিয়ে রাখা গদা আনতে পাঠিয়েছিলেন কারন বালি জানতেন ওই গদা স্পর্শ করলে মৃত্যু অনিবার্য|কিন্তু রূদ্র অবতার হনুমান অনায়াসে সেই গদা উদ্ধার করেন|পরবর্তীতে রাবনের সাথে যুদ্ধে হনুমানের পাশাপাশি গোটা বানর সেনার প্রধান হাতিয়ার ছিলো গদা|

বজ্রবলীর পাশাপাশি , গদা ভগবান বিষ্ণু, ভগবান কৃষ্ণ,মা দূর্গা এবং পাণ্ডব ভীমের মতো প্রক্রমনশালীদের হাতে দেখতে পাওয়া যায়। হিন্দু ধর্মগন্থ অনুসারে এই গদা ধারণ করার জন্য ক্ৰোধ, লোভ, অহংকার, বাসনা ও মায়া এই ৫ বিষয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকা খুবই প্রয়োজন তাই গদার ব্যবহার সবার দ্বারা সম্ভব নয়|

আধুনিক বাস্তু শাস্ত্রে এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রেও গদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে|মনে করা হয় গৃহ মন্দিরে অথবা দেবতার সিংহাসনে গদা স্থাপন করলে বাস্তু দোষ দূর হয়, লকেট আকারে গদা ধারন করলেও কিছু গ্রহগত কুপ্রভাব দূর হয় বলে অনেকে মনে করেন|

প্রাচীন ভারতে গদাকে শুধু একটা অস্ত্র হিসেবেই নয় সাথে সাথে স্বঅভিমান বোধ, শাসন করার অধিকার ও শাসন করার শক্তির প্রতীক বলে মনে করা হতো।এই বর্তমান যুগেও এই বিষয়টিকে কিছুটা মেনে চলা হয় এবং একটি প্রাচীন রীতি অনুসরণ করে আজও শাসন ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে আমাদের বিধানসভায় গদা রাখা হয়|

আবার পরের পর্বে নতুন কোনো অস্ত্রর কথা আসবো আপনাদের সামনে, সামনেই রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ অমাবস্যা তিথি এবং তারপর রথযাত্রা|তাৎপর্যপূর্ণ এই সময়ে নিজের ভাগ্যবিচার বা গ্রহগত দোষ খণ্ডনের কথা ভেবে থাকলে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

মন্দির রহস্য – ভবানী পাঠকের কালী মন্দির

আজ মন্দির রহস্যর এই পর্বে এমন একটি মন্দিরের কথা লিখবো যা বাংলার ইতিহাস এবং সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাথে জড়িত এবং বহু রহস্য ও কিংবদন্তী প্রচলিত আছে এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে,উত্তর বঙ্গের জলপাইগুড়ি তে অবস্থিত এই প্রাচীন কালী মন্দির সাধারণ মানুষের কাছে আজও ভবানী পাঠকের মন্দির নামে পরিচিত|

এককালে অবিভক্ত বাংলার উত্তরের অন্যতম জেলা ছিলো রংপুর, এই রংপুরের অধীনে ছিলো বর্তমানের জলপাইগুড়ি এবং এই অঞ্চল দিয়ে তখনো বয়ে যেতো তিস্তা নদী|কথিত আছে এই দুর্গম অঞ্চল শাসন করতো এক দুর্ধর্ষ দস্যু রানী এবং এক মাতৃ সাধক যাদের বঙ্কিম চন্দ্রের কালজয়ী উপন্যাসে যথাক্রমে দেবী চৌধুরানী এবং ভবানী পাঠক নামে অভিহিত করা হয়েছে|উপন্যাসে উল্লেখিত ত্রিস্রোতা নদীই বর্তমানে তিস্তা নদী যে নদী দিয়ে যাতায়াত করতো দেবী চৌধুরানীর বজ্রা|

আজও সেই ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে ভবানী পাঠকের কালী মন্দির|জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগানের মধ্যে রয়েছে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মন্দির|উপন্যাস বলছে ভবানী পাঠক ডাকাত সর্দার হিসাবে পরিচিত থাকলেও তিনি সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন করতেন। তিনি অত্যাচারী ইংরেজ ও দেশীয় জমিদারদের জিনিস লুঠপাট করে তা দীন দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন এবং বেজায় কালী ভক্ত ছিলেন ভবানী পাঠক|প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠাতার সঠিক নাম নিয়ে কিঞ্চিৎ মতবিরোধ থাকলেও জনশ্রুতি অনুসারে এই মন্দির ভবানী পাঠকই বানিয়েছিলেন|

শোনা যায় মন্দিরে প্রথমে কাঠের মূর্তিই ছিল। দুই পাশে দুটি কাঠের কালী মূর্তি। সেই কালীকে পুজো করেই নাকি ভবানী পাঠক তাঁর অভিযানে বের হতেন। পরে কোনোভাবে সেই কাঠের মূর্তি পুড়ে যাওয়ায় মাটির মূর্তি তৈরি হয়|বর্তমানে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে মন্দিরে মা কালীর মূর্তি ছাড়াও তিস্তাবুড়ি, ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানী, গঙ্গা দেবী, সিদ্ধপুরুষ মোহনলালের মূর্তি আছে, জলপাইগুড়ির দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম এই ভবানী পাঠকের কালী মন্দির|

এখানে বড়ো আকারে কালী পুজো হয় আষাঢ় মাস ও কার্ত্তিক অমাবস্যায় এবং মন্দির প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় খোলে, বন্ধ হয় বিকেল পাঁচটায়।

আজ এই পর্ব এখানেই শেষ করলাম|ফিরবো আগামী পর্বে জানাবেন কেমন লাগছে এই ধারাবাহিক লেখনী|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার চান উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

দেবতাদের অস্ত্র শস্ত্র – বজ্র

সনাতন ধর্মের দেবতাদের অনেক ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যায়, যেমন – আগ্নেয়াস্ত্র, ব্রহ্মাস্ত্র, গরুড়াস্ত্র, কৌমদকী, নারায়ণাস্ত্র, পশুপতাস্ত্র, শিবধনু, সুদর্শন চক্র, ত্রিশূল, বৈষ্ণবাস্ত্র, বরুণাস্ত্র ও বায়বাস্ত্র।যেকোনো যুদ্ধে, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি তে ইন্দ্র এর সাথে সদা থাকে তার বজ্র |এই জাতীয় অস্ত্র আর কোনো দেবতা কে ব্যবহার করতে দেখা যায়না, হয় তো তিনি দেবরাজ তাই |অসীম শক্তিশালী এই অস্ত্র বহু শত্রুর বিনাশ করে একাধিক বার সৃষ্টি রক্ষা করেছে এই বজ্র যা একবার অসুর তৃষিরা সুর এর সাথে যুদ্ধে ধ্বংস হয় |

আজ এই পর্বে দেবরাজ ইন্দ্রের অস্ত্র বজ্র নিয়ে আলোচনা করবো, অসুর দের মধ্যে এক ভয়ঙ্কর অসুর ছিলো বৃত্যা সুর যার সাথে ভীষণ যুদ্ধ হয়েছিলো দেবরাজ ইন্দ্রের|এই যুদ্ধের সাথে জড়িত বজ্র নির্মাণের ইতিবৃত্ত|

ত্রিশিরাকে বধ করলে তার পিতা ত্বষ্টা ত্রুদ্ধ হয়ে ইন্দ্রকে বিনষ্ট করার জন্য অগ্নিতে আহুতি দিয়ে বৃত্রাসুরকে উৎপন্ন করেন। বহুকাল যুদ্ধ করেও বিত্রাসুরকে পারাজিত করতে পারলেন না দেবতারা|অবশেষে ঋষিরা বৃত্রকে ইন্দ্রের সঙ্গে সন্ধি করার প্রস্তাব দিলে বৃত্র সব শুনে বললেন যে, তিনি তাতে রাজি আছেন। কিন্তু ঋষিদের কথা দিতে হবে যে, শুষ্ক বা আদ্র্র বস্তু দ্বারা, প্রস্তর কাষ্ঠ বা অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা, দিবসে বা রাত্রিতে ইন্দ্র অথবা অন্যদেবতারা ওঁকে বধ করতে পারবেন না। ঋষিরা তাতে রাজি হলে সন্ধি স্থাপিত হল।অর্থাৎ দেবতা দের সব অস্ত্র সস্ত্র বৃত্যাসুর কে বধ করার ক্ষমতা হারালো|

এদিকে ক্রমে বৃত্যাসুর যখন অত্যাচারি হয়ে উঠতে লাগলো এবং এক সময় তাকে বধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় রইলো না, কিন্তু অস্ত্র নেই | তখন ঋষিরা একটা উপায় বাতলালেন | কোনো ত্যাগী এবং তেজময় সন্যাসীর অস্থি থেকে অস্ত্র তৈরী করে বৃত্যাসুর কে বধ করতে হবে

ত্যাগের জন্য সদা প্রস্তুত সেই বৈদিক ঋষি হলেন দধীচি | ভগবত্‍ পুরাণ অনুযায়ী তিনি অথর্বন ঋষি ও চিতির পুত্র ছিলেন তিনি|দেবতারা দধীচীর কাছে তার অস্থি চাইলেন | এই অনুরোধ শুনে দধীচি নামক এই মহামুনি সাধক আত্মত্যাগ করতে রাজি হন। দধীচিকে হত্যা করা হয় এবং তার দেহের হাড় দিয়ে বৃত্তাসুরকে হত্যার জন্য ইন্দ্রের জন্য একটি বিশেষ বজ্র তৈরি করা হয়|তার পর ইন্দ্র ও বৃত্তাসুরের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হলো |অবশেষে সেই বজ্র দিয়ে ইন্দ্র বৃত্যাসুর কে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং হত্যা করেন |

বজ্র মূলত অনন্ত শক্তি ও অসীম দৃঢ়তার প্রতীক যা দেবরাজ ইন্দ্রকে কঠোর হাতে স্বর্গ রাজ্য পরিচালনা করতে এবং দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালন করতে সাহায্য করে|আগামী পর্বে আবার নতুন কোনো অস্ত্রের কথা লিখবো|পড়তে থাকুন আর যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে চাইলে ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে আপাতত অনলাইনে ভাগ্যবিচার ও প্রতিকার প্রদানের সহজ ব্যবস্থা রয়েছে এবিষয়ে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

মন্দির রহস্য – কলকাতায় বনবিবির মন্দির

বাংলায় পূজিত লৌকিক দেব দেবী দের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হলেন বন বিবি, তবে অনেকেই ভাবেন এই বনবিবি মূলত দক্ষিণ বঙ্গের সুন্দর বনের অধিষ্টাত্রী দেবী, মূলত দক্ষিণ রায়ের সাথেই তার নাম উচ্চারিত হয়ে আসছে যুগ যুগ থেকে, বিপদ সংকুল সুন্দরবনের মানুষ যেকোনো বিপদ থেকে বাঁচতে বনবিবির স্মরণ নেন|কিন্তু শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন এই খাস কলকাতা তেই রয়েছে এক বন বিবির মন্দির|কিন্তু কেনো|এই রহস্য নিয়েই লিখবো আজকের পর্বে|

লৌকিক কিংবদন্তী অনুসারে বনবিবি মক্কার এক সুফি ফকিরের কন্যা। ফকিরের দুই বউ। প্রথম বউয়ের দেওয়া শর্তে, ঘটনাক্রমে দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজ দুই ছেলেমেয়েকে ফকির রেখে আসতে বাধ্য হন গহন বনে । পরে অবশ্য ছেলেটিকে ঘরে নিয়ে যান, ফকির কিন্তু একা মেয়ে বড় হয় জঙ্গলে এক হরিণী-মায়ের কাছে এবং ক্রমে তিনিই হয়ে ওঠেন বনবিবি|এই বনবিবি যথার্থ অর্থে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অদ্ভুত নিদর্শন যাকে হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ ভক্তি করেন|

আসলে এক কালে দক্ষিণের সাগর-ছোঁয়া জল-জঙ্গল বিস্তৃত ছিল আদিগঙ্গার পাড় অবধি যা বয়ে যেতো দক্ষিণ কলকাতার গা ঘেঁষে|খাঁড়ি, বাদাবন আর মউলি-মেছুয়ার জঙ্গলে দাপানো ‘বড় মিঞা’ বা ‘দক্ষিণ রায়’-এর রাজত্ব গড়িয়েছিল এখানেও। সেই দক্ষিণ রায়ের তর্জন-গর্জন থেকে বাঁচাবেন কে, এক বনবিবি ছাড়া তাই এই অঞ্চলেও গড়ে উঠেছিল বনবিবির মন্দির|

বর্তমানে এইসব অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিবর্তন হয়েছে, আধুনিক হয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা|কিন্তু এখনো সেই প্রাচীন লৌকিক পরম্পরাকে ধরে রেখেছে এই সুপ্রাচীন বন বিবির মন্দির|

আপাতত এই পর্বে এইটুকুই|আগামী পর্বে লিখবো অন্য কোনো রহস্যময় মন্দিরের কথা|পড়তে থাকুন|যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে উল্লেখিত নাম্বারে একবার ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

মন্দির রহস্য – ভূতবাবার মন্দির

আজ অনেক দিন পর একটি নতুন মন্দির রহস্য পর্ব নিয়ে আমি আবার আপনাদের সামনে, আজ লিখবো দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় অবস্থিত ভূত বাবার মন্দির নিয়ে|

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার আদিগঙ্গার তীরে কৃষ্ণমোহনপুরে ‘ভূতবাবা-র’ থানটি অবস্থিত। এই অঞ্চলের লোকেরা এই থানকে ছোটকাছারী বলে ডাকেন|এই ছোটো কাছারি বলার কারন বিখ্যাত বড়ো কাছারী মন্দিরের সাথে এই মন্দিরের একটি সম্পর্ক আছে|এই বড়ো কাছারি মন্দির নিয়ে আমি আগেই একটি লিখেছি|

জনশ্রুতি শোনা যায় যে অতীতে বিষ্ণুপুরের বড়কাছারী নিকট যেতে হলে অনেক রাস্তা হাঁটতে হত। পথ ছিলো বিপদ সংকুল ও দুর্গম সেই কারণে অতীতে কোন এক ভক্ত এই থানটি তৈরী করে দেন এবং ছোটকাছারী নাম দিয়ে পূজা শুরু হয়|

এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত দেবতা ভূত বাবা আসলে একজন লৌকিক দেবতা, পুরান বেদ বা অন্য কোনো শাস্ত্রে এই দেবতার কোনো উল্লেখ নেই তবে স্থানীয় দের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ|অতীতে কোনো দেবতার মূর্তি ছিল না তবে
বতমানে ভূতবাবা-র যে মূর্তিটি রয়েছে সেটিতে তিনি সিংহাসনের উপর বামপদ ঝুলিয়ে বসে আছেন। দক্ষিণপদ বাম জানু উপর উপবিষ্ট। হাতে গলায় রুদ্রাক্ষ দেখা যায়। বিস্তৃত মোটা গোঁফ। দেবতার দুই হাত। এক হাতে গাঁজার কলকে। মাথায় চুল ও সৌম্যমুখ। ভূতবাবার ডানদিকে সহচর, বামদিকে নৃত্যরত আরেক সহচরী চোখে পড়ে|

মন্দির প্রাঙ্গনে রয়েছে এক অতি প্রাচীন ও রহস্যময় শেওড়া গাছ, এককালে যখন এখানে কোন মূতি পুজো হত না। আদিতে এখানে একটি ‘শ্যাওড়া ‘ গাছকেই ভূতবাবার প্রতীক হিসাবে পূজিত হত|বহু মানুষ বিশ্বাস করেন এই শেওড়া গাছের গোড়ার মাটি ও শিকড়ের মধ্যে রয়েছে অলৌকিক ক্ষমতা|

ভূতবাবার বাত্‍সরিক পুজো হয় ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষে যেকোন শনিবার ধরে ।সেই দিন এখানে মেলা বসে।এছাড়া প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার ১২ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত পুজো হয়।বহু মানুষ আসেন এই মন্দিরের এবং তাদের মনোস্কামনা জানান ভূতবাবাকে|

এমন কোনো রহস্যময় মন্দিরের কথা নিয়ে আবার ফিরে আসবো অন্য কোনো পর্বে|জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে কথা থাকলে উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

আন্তর্জাতিক যোগ দিবস

আজ ২১ জুন বিশ্ব যোগ দিবস
বা International Yoga Day যা পালিত হচ্ছে।সারা বিশ্ব জুড়ে, ভারতের যোগের ইতিহাসে কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন হলেও এই যোগ দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এসেছেন মাত্র কয়েক বছর আগেই|

২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন। সেই বছরই ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস বলে ঘোষণা করে।

যোগ হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা। এর মধ্যে দিয়ে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করার কারণ হলো ‘‌এই তারিখটিতে উত্তর গোলার্ধের দীর্ঘতম দিন হিসেবেও পালন করা হয়। তাই এই বিশেষ দিনের তাৎপর্য রয়েছে।’‌

একাধিক প্রাচীন শাস্ত্রে উল্লেখ আছে আজকের দিনে আদি যোগী তাঁর সবচেয়ে নিষ্ঠাবান সাত জন শিষ্যকে প্রথম দেখেন যাঁরা আলোকপাতের পথ প্রদর্শন না করা পর্যন্ত তাঁকে ছেড়ে না যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। এরপর পরবর্তী পূর্ণিমাতে আদি যোগী ওই শিষ্যদের যোগিক ক্রিয়া পদ্ধতি শেখাতে শুরু করেন। এটাই ছিলো প্রথাগত যোগ শিক্ষার সূচনা লগ্ন|

নিয়মিত যোগ অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং সুস্থ থাকুন|আপনাদের সবাইকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের অনেক শুভেচ্ছা|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

অম্বুবাচী ও মহাপীঠ কামাখ্যা : দ্বিতীয় পর্ব

সামনেই অম্বুবাচী, ধরিত্রির ঋতুমতী হওয়ার এই সময় কে উৎসবের আকারে পালন করা হয় সারা দেশ জুড়ে তবে তবে যে মন্দিরে এই অম্বুবাচী এক অন্য আধ্যাত্মিক মাত্রা পায় সেটি হলো পূর্ব ভারতের অন্যতম শক্তি পীঠ আসামের কামাখ্যা মন্দির|কামাখ্যায় কেনো অম্বুবাচী এতো গুরুত্ব সহকারে ও নিষ্ঠা সহ পালন হয় তার কিছু শাস্ত্রীয় কারন আছে|

নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত কামাখ্যা মন্দির হচ্ছে ৫১ সতীপীঠের অন্যতম। পুরান মতে দেবী সতীর গর্ভ এবং যোনি এখানে পড়েছিল। এ কারণেই প্রতিবছর এখানে মহা সমারোহে অম্বুবাচী পালিত হয়|আজকের পর্বে কামাখ্যা মন্দিরের ইতিহাস ও ধর্মীয় তাৎপর্য সংক্ষেপে আপনাদের সামনের তুলে ধরবো

আগেই বলেছি শাস্ত্রে বর্ণিত ৪টি আদি শক্তি পিঠগুলির মধ্যে, কামাখ্য মন্দিরটি বিশেষ কারণ দেবী সতীর গর্ভ এবং যোনি এখানে পড়েছিল এবং এইভাবে দেবী কামাখ্যাকে উর্বরতার দেবী বা “রক্তক্ষরণকারী দেবী” বলা হয়|মূল কামাখ্যা মন্দিরটি যে কতো প্রাচীন ও কবে কেমন নির্মাণ করেছিলেন তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল তবে হিউ এন সাং এর লেখাতেও এই মন্দিরের উল্লেখ আছে|

ইতিহাসের কুখ্যাত চরিত্র কালাপাহাড় থেকে শুরু করে একাধিক বার একাধিক বৈদেশিক শত্রুর হাতে এই মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোচ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বসিংহ এই ধ্বংসাবশেষ খুজে পান তিনি এই মন্দির সংস্কার করেন এবং তিনিই এই মন্দিরে পূজার পুনর্প্রবর্তন করেন|পরবর্তীতে আসামের রাজারা এই মন্দিরের দায়িত্বভার গ্রহন করেন|

কালিকা পুরাণের মতে, কামাখ্যা মন্দিরে
সতী শিবের সঙ্গে বিহার করেন,যোগিনী তন্ত্রে অবশ্য কামাখ্যাকে কালী বলা হয়েছে
তবে কালিকা পুরাণ অনুসারে, কামাখ্যায় পূজা করলেসকল ইচ্ছা পূর্ণ হয়। প্রাচীন কাল থেকে কামাখ্যার পূজা বামাচার ও দক্ষিণাচার উভয় মতেই হয়।সাধারণত ফুল দিয়েই পূজা দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে পশুবলি হয়। স্ত্রীপশু বলি সাধারণত নিষিদ্ধ |

নীলাচল পর্বতে অবস্থিত কামাখ্যা মন্দিরে চারটি কক্ষ আছে মূল গর্ভগৃহ ও তার সাথে তিনটি আলাদা আলাদা মণ্ডপ|গর্ভগৃহটি আসলে ভূগর্ভস্থ একটি গুহা। মুল গর্ভ গৃহে কোনো মূর্তি নেই। শুধু যোনি-আকৃতিবিশিষ্ট প্রস্তর খণ্ড ও ভূগর্ভস্থ প্রস্রবনটি আছে। প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে অম্বুবাচী মেলার সময় কামাখ্যা দেবীর ঋতুমতী হওয়ার ঘটনাকে উদযাপন করা হয়। এই সময়ে অলৌকিক ভাবে গুহার মধ্যে প্রবাহিত প্রস্রবণ রক্তবর্নে রূপান্তরিত হয়|এই সময়ে পুজো বন্ধ থাকে ও মন্দিরের দ্বার সর্বসাধারণের জন্যে রুদ্ধ থাকে|
ভক্তরা বাইরে থেকে প্রার্থনা করেন ও নিজের মনোস্কামনা জানান|

পূর্ব ভারতের তন্ত্র সাধনার প্রান কেন্দ্র বলাযায় কামাখ্যাকে তবে এবছর হয়তো সরকারী বিধিনিষেধ থাকার ফলে কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী উপলক্ষে সেই জন সমাগম চোখে পড়বে না, দেশ বিদেশ থেকে তান্ত্রিক ও জ্যোতিষীদের যে জমায়েত হতো এই সময়ে মন্দির চত্বরে তা হয়তো থাকবেনা|তবে অন্তরে ভক্ত ও শ্রদ্ধা থাকলে মাকে ডাকার জন্যে কোনো প্রতিবন্ধকতাই বাঁধা হতে পারেনা|আর সকল নিয়ম ও উপাচার মেনে এবছর ও আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলার মন্দিরের বিশেষ হোম যজ্ঞ ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের সব ব্যবস্থা থাকবে|আপনারা ঘরে বসেই নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পারেন, জ্যোতিষ ও তন্ত্র শাস্ত্র মতে সমাধান করাতে পারেন|যুক্ত হতে পারেন এই আধ্যাত্মিক কর্ম কাণ্ডের সাথে|প্রয়োজন মনে করলে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন ধন্যবাদ|

অম্বুবাচী ও মহা পীঠ কামরূপ কামাখ্যা

অম্বুবাচী ও পূর্ণিমা মিলিয়ে মিলিয়ে সময় টি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় দিক থেকে বেশ তাৎপর্য পূর্ন, দীর্ঘ তিরিশ বছরের পেশা দার জ্যোতিষ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি জীবনের যাবতীয় সমস্যা দুর করে জীবন কে সুন্দর করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ এই সময়কাল বা বিশেষ গ্রহগত সংযোগ, এই সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগালে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়|তাই জ্যোতিষ শাস্ত্রে যাদের বিশ্বাস আছে, যারা জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকার নেবো নেবো করেও ঠিক নিয়ে উঠতে পারছেন না তারা আর দেরি করবেন না এগিয়ে আসুন, কাজে লাগান এই বিশেষ সময় কে নিজের বাড়িতে বসেই|

আজ জানবো শক্তি পীঠ কামাখ্যা ও তার সাথে জড়িয়ে থাকা অম্বুবাচী সংক্রান্ত নানা প্রথা, কিংবদন্তি ও তার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা|এই বিশেষ স্থানটি অম্বুবাচী উৎসবের সাথে বিশেষ ভাবে সংযুক্ত তাই একটি গোটা পর্বজুড়ে এর তাৎপর্য জানা প্রয়োজন বলে মনে হয় নাহলে অনেক কথাই হয়তো না বলা থেকে যাবে|

আমার একান্ন পীঠ নিয়ে লেখা পর্ব গুলির মধ্যে একটি পর্বে কামাখ্যা নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছিলাম|পুরান মতে দেবী সতীর গৰ্ভ ও যোনি পতিত হয়েছিল এই স্থানে এই কারণে এই দেবীকে অনেকে উর্বরতার দেবী বা রক্ত ক্ষরণ কারী দেবীও বলে থাকেন|তাই স্বাভাবিক ভাবেই অম্বুবাচী যা দেবীর ঋতু মতি হওয়ার উৎসব এই স্থানে সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে পালন হয়|অম্বুবাচীর দিন থেকে পরবর্তী তিন দিন দেবীর মন্দির বন্ধ থাকে|এই সময় দেবীর দর্শন নিষিদ্ধ|এই সময়ে একটি লাল কাপড় দিয়ে দেবী কে ঢেকে রাখা হয়, ভক্তরা মন্দিরের বাইরে থেকে দেবীকে প্রনাম করেন ও নিজের মনোস্কামনা ব্যক্ত করেন|অম্বুবাচীর চতুর্থ দিন থেকে দেবীর স্নান এর পর তার দর্শন ও স্বাভাবিক পূজা প্রক্রিয়া পুনরায় আরম্ভ হয়|এই পরম্পরা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে|অম্বুবাচী নিবৃত্তির পর দেবীর রক্ত বস্ত্র ভক্ত দের মধ্যে দান করা হয়, প্রচলিত বিশ্বাস মতে এই রক্ত বস্ত্র লাভ করলে জীবনের অনেক সমস্যা দুর হয় ও বহু মনোস্কামনা পূর্ন হয়|

প্রতি বছর অম্বুবাচী উপলক্ষে আসামের কামাখ্যায় দেশের সর্ব বৃহৎ উৎসবটি আয়োজন করা হয় যা অম্বুবাচী মেলা নামে প্রসিদ্ধ|এই মেলা উপলক্ষে দেশ বিদেশ থেকে বহু তীর্থ যাত্রী এসে জড়ো হন কামাখ্যায় আর আসেন অসংখ্য সন্ন্যাসী ও তন্ত্র সাধক|ব্যাপক জন সমাগম হয় এই মেলায়, দর্শনার্থীর সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়ে যায় প্রতি বছর|এই উৎসব ও মেলা পরিচালনার ভার থাকে ‘মা কামাখ্যা দেবালয়’ এর উপর|

দুক্ষের বিষয় হয়তো ইতিহাসে এই প্রথমবার ধুমধাম করে পালন হবে না এই অম্বুবাচী মেলা কারন করোনা আতঙ্ক এখনো কাটেনি, তাই জারি রয়েছে কিছু নিদ্দিষ্ট বিধি নিষেধ|তবুও মা কামাখ্যার অগনিত ভক্ত দের কাছে এটা একটা বিশেষ সময়,অন্তরে তারা মাকে ডাকবে আর নিজেদের মনোস্কামনা জানবে|আমরা আশা রাখবো আগামী বছর আবার মহা সমারোহে, যাকজমকপূর্ন ভাবে পালিত হবে অম্বুবাচী উৎসব ও মেলা|

আজ এই পর্ব এখানেই শেষ করছি খুব শিগ্রই ফিরে আসছি অন্য লেখা নিয়ে,দেখতে থাকুন আমার টিভির ও ইউটিউব এর অনুষ্ঠান আর যোগাযোগ করুন যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা ও পরামর্শর জন্য, সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার আপনারা জীবন পাল্টে দিতে পারে|অম্বুবাচী উপলক্ষে মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলার মন্দিরের বিশেষ হোম যজ্ঞ ও গ্রহ দোষ খণ্ডন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|বিশ্বাস রাখুন, ভালো থাকুন |ধন্যবাদ|