দেব সেনাপতি কার্তিক

333

আজ কার্তিক সংক্রান্তি,কার্তিক পুজোর এই পবিত্র সময়ে দেব সেনাপতি কার্তিকের জন্ম বৃত্তান্ত ও তার বাহন অর্থাৎ ময়ূর নিয়ে কিছু পৌরাণিক তথ্য ও ব্যাখ্যা আপনাদের সামনের উপস্থাপন করবো এই বিশেষ পর্বে|

কোথাও তিনি মুরগান, কোথাও শুভ্রমনিয়াম, আবার বাংলায় তিনি ঘরের ছেলে কার্তিক|
কার্তিক শিব ও পার্বতীর সন্তান এ আমরা সবাই জানি, কিন্তু তার জন্মর একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ছিলো|তারকাসুরের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য দেবতারা একজন শৌর্য-বীর্যসম্পন্ন দেবসেনাপতির খোঁজ করছিলেন। অবশেষে সকলে মিলে মহাদেবের শরণাপন্ন হলেন তপস্যা ভঙ্গ করে অন্তত যাতে একটা পুত্র তিনি দেবতাদের উপহার দেন। এতে শিব সম্মত হয়ে নিজের তেজ নিঃক্ষেপ করলেন, মহাদেবের তেজ গিয়ে পড়ল পৃথিবীতে। বসুন্ধরা এই তেজ সহ্য করতে না পেরে তা অগ্নিতে নিক্ষেপ করলেন। অগ্নি আবার সেই মহাতেজ শরবনে নিক্ষেপ করলেন। আর এই শরবনেই একটি সুন্দর সন্তানের জন্ম হল। ঠিক এই সময় ছয়জন কৃত্তিকা অগ্নির ছয় পত্নী সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।তারা কার্তিকের লালন পালনের দায়িত্ব নিলেন|পরবর্তীতে তিনি হলেন দেব সেনাপতি এবং যুদ্ধে বধ করলেন তারকাসুর কে|কার্তিকের বিবাহ হয়েছিলো দেবসেনা নামক এক রমণীর সাথে|

আবার বিবাহ সংক্রান্ত অন্য একটি পৌরাণিক ব্যাখ্যাও আছে যা মূলত লোককাহিনী যেখানে কার্তিক উষা নামে এক সুন্দরী রমণীকে বিবাহ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু মাতা পার্বতীর সম্মতি না দেয়ায় তিনি আর বিবাহ করেননি এবং চীরকুমার রয়ে গেছিলেন|যাইহোক অগ্নির ছয় পত তাকে পালন কোরেছিলেন তাই তার নাম সড়ানন|

কার্তিকের বাহন ময়ূর কেনো হলো তা নিয়েও একটি ব্যাখ্যা আছে, ময়ূর খুব সামান্যই নিদ্রা যায়। সর্বদা সতর্ক। আলস্যহীন। ময়ুরের স্বজনপ্রীতি লক্ষণীয়। সৈনিক পুরুষ ময়ূরের মতো অনলস, কর্মকুশল এবং লোকপ্রিয় হবেন তা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া, ময়ূর মেঘ দেখলে যেমন আনন্দে পেখম তুলে নৃত্য করে, তেমনই ধীর ব্যক্তি শত বিপদেও উৎফুল্ল থাকবেন। সম্ভবত এই সব কারণেই দেব সেনাপতি কার্তিকের উপযুক্ত বাহন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ময়ূর|

আপনাদের সবাইকে কার্তিক পুজোর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|