Home Blog Page 135

শিব কথা – নটরাজ রূপ

ইদানিং জ্যোতিষ চর্চার ক্ষেত্রে পেশাগত ব্যস্ততা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, অনলাইন পরিষেবা দেয়ার পাশাপাশি আবার নিয়মিত চেম্বারে বসছি, জেলায় জেলায় ও যেতে হচ্ছে, আগামী দিনে রাজ্যের বাইরেও যেতে হবে, কিছু করার নেই মানুষের দাবী, তবে এতো কিছুর মধ্যেই গোটা চৈত্র মাস ধরে ঠিক করেছি শিবের বিভিন্ন রূপ ও শিব কে নিয়ে নানা পৌরাণিক ঘটনা আপনাদের সামনে আনবো, আজকের পর্বে আলোচনা করবো শিবের নটরাজ রূপ নিয়ে|

পূরাণে কথিত আছে, শিব যখন ক্ষিপ্ত হন তখনই তার এই নটরাজ রূপ প্রকাশ্যে আসে, শিবের ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এই নৃত্যরত নটরাজ রূপের মাধ্যমে|শিবের একশো টি নামের মধ্যেও আছে নর্তক ও নিত্যনর্ত নাম দুটি|

শিল্প কলা বিশেষত নৃত্যের সঙ্গে শিবের গভীর সম্পর্ক রয়েছে|কথিত আছে নৃত্য ও সঙ্গীত শিবের সৃষ্টি, তিনিই এই নৃত্যকলার প্রবর্তক| শিবের সব থেকে প্ৰিয় দুটি নৃত্যের নাম হল তাণ্ডব ও লাস্য| তাণ্ডব ধ্বংসাত্মক এবং পুরুষালি নৃত্য ও লাস্য হলো তাণ্ডবের নারীসুলভ বিকল্প যার মধ্যে লুকিয়ে আছে সৃষ্টির আনন্দ| তাণ্ডব ও লাস্য নৃত্য যথাক্রমে ধ্বংস ও সৃষ্টির প্রতীক|

সমগ্র ভারতে বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে নটরাজ বেশে শিবের মূর্তি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি সব শিল্পীর পরম শ্রদ্ধেয় তার আশীর্বাদ নিয়ে অনেক শিল্পীই তার নৃত্য অনুষ্ঠান আরম্ভ করেন|অনেকেই শিবের নটরাজ মূর্তি বাড়িতে সাজিয়ে রাখেন, এক্ষেত্রে বাস্তু শাস্ত্র মতে নৃত্যরত শিবের মূর্তি রাখলে ঘরে পজেটিভ শক্তির মাত্রা মারাত্মক বেড়ে যায়|

আজকের পর্বে নটরাজ রূপ নিয়ে এইটুকুই, আবার ফিরবো পরের পর্বে, পড়তে থাকুন, সঙ্গে থাকুন আর জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করতে হলে ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে, আমি থাকবো পাশে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

শিব কথা – নন্দী ভৃঙ্গী

দেবাদিদেব মহাদেব কে নিয়ে লিখতে যখন শুরু করেছি তার দুই ছায়া সঙ্গী নন্দী ও ভৃঙ্গী কে নিয়ে কিছু কথা স্বাভাবিক ভাবেই এসে পড়ে কারন শিবের পাশে সর্বদা থাকেন এই দুজন, এমনকি অনেক শিবমন্দিরের সামনে নন্দীর মূর্তিও থাকে, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে। তবে সে মূর্তি সচরাচর বৃষ বা ষাঁড়ের। তবে এটা নন্দীর আসল রূপ নয়,

নন্দী ও ভৃঙ্গী কে নিয়ে পুরানে অনেক কথাই বলা আছে কূর্মপুরাণে নন্দী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, মহাদেবের এই প্রধান অনুচরটি করালদর্শন, বামন, বিকটাকার, মুণ্ডিতমস্তক, ক্ষুদ্রবাহু ও মহাবল।পূর্বে নন্দী মহারাজ পৃথক দেবতা হিসেবেও পূজিত হতেন পরবর্তীতে তিনি শিবের বাহন হিসেবে স্থান পান|

শিব মহাপুরাণ মতে, নন্দী শিলাদ মুনির পুত্র। শিলাদ ছিলেন ভগবান শিবের পরম ভক্ত এবং শিবের আশীর্বাদেই নন্দীর জন্ম হয়েছিলো এবং শিব স্বয়ং তাকে চিরঞ্জীবী হওয়ার বর দেন ও নিজের বাহন হিসেবে স্থান দেন|রামায়ণেও নন্দীর উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে অহংকারী রাবন কৈলাশ এসে নন্দীকে তার চেহারার জন্যে অপমান করেন ও বানর বলেন, নন্দী তাকে অভিশাপ দিয়েছিলো যে এক বানর তার পতন ডেকে আনবেন, পরে তাই হয়েছিলো|

নন্দীর ন্যায় ভৃঙ্গীও শিবের অনুচর। নন্দী যেমন হৃষ্টপুষ্ট, ভৃঙ্গী তেমনই রুগ্ন , কঙ্কালসার। ভৃঙ্গী আগে ছিলেন এক মুনি, শিবের উপাসক। তিনি শিবের সাথে পুজোয় কিছুতেই রাজি নন। ক্রুদ্ধ পার্বতী অভিশাপ ভৃঙ্গী কে অভিশাপ দিলেন। সেই অভিশাপে ভৃঙ্গী কঙ্কালে পরিণত হলেন। দু’পায়ে আর দাঁড়াতে পারেন না তিনি, তখন শিবের আশীর্বাদে তাঁর তৃতীয় চরণের সৃষ্টি হল। কিন্তু তবু ভৃঙ্গী পার্বতীর পুজো করবেন না। তখন শিব তাঁকে নিজের অর্ধনারীশ্বর রূপ দেখালেন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন যে পার্বতী শিবেরই অংশ। পরবর্তীতে তিনিও হয়ে উঠলেন শিবের অনুচর, একত্রে উচ্চারি হতে শুরু হয় নন্দী ও ভৃঙ্গীর নাম|

আগামী পর্বে এমনই কোনো পুরান কাহিনী বা পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে আবার ফিরে আসবো, পড়তে থাকুন আর জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসতে চাইলে বা অনলাইন এ নিজের সমস্যার সমাধান চাইলে যোগাযোগ করতে ভুলবেন না উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

নন্দী ও ভৃঙ্গী কে নিয়ে পুরানে অনেক কথাই বলা আছে কূর্মপুরাণে নন্দী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, মহাদেবের এই প্রধান অনুচরটি করালদর্শন, বামন, বিকটাকার, মুণ্ডিতমস্তক, ক্ষুদ্রবাহু ও মহাবল।পূর্বে নন্দী মহারাজ পৃথক দেবতা হিসেবেও পূজিত হতেন পরবর্তীতে তিনি শিবের বাহন হিসেবে স্থান পান|

শিব মহাপুরাণ মতে, নন্দী শিলাদ মুনির পুত্র। শিলাদ ছিলেন ভগবান শিবের পরম ভক্ত এবং শিবের আশীর্বাদেই নন্দীর জন্ম হয়েছিলো এবং শিব স্বয়ং তাকে চিরঞ্জীবী হওয়ার বর দেন ও নিজের বাহন হিসেবে স্থান দেন|রামায়ণেও নন্দীর উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে অহংকারী রাবন কৈলাশ এসে নন্দীকে তার চেহারার জন্যে অপমান করেন ও বানর বলেন, নন্দী তাকে অভিশাপ দিয়েছিলো যে এক বানর তার পতন ডেকে আনবেন, পরে তাই হয়েছিলো|

নন্দীর ন্যায় ভৃঙ্গীও শিবের অনুচর। নন্দী যেমন হৃষ্টপুষ্ট, ভৃঙ্গী তেমনই রুগ্ন , কঙ্কালসার। ভৃঙ্গী আগে ছিলেন এক মুনি, শিবের উপাসক। তিনি শিবের সাথে পুজোয় কিছুতেই রাজি নন। ক্রুদ্ধ পার্বতী অভিশাপ ভৃঙ্গী কে অভিশাপ দিলেন। সেই অভিশাপে ভৃঙ্গী কঙ্কালে পরিণত হলেন। দু’পায়ে আর দাঁড়াতে পারেন না তিনি, তখন শিবের আশীর্বাদে তাঁর তৃতীয় চরণের সৃষ্টি হল। কিন্তু তবু ভৃঙ্গী পার্বতীর পুজো করবেন না। তখন শিব তাঁকে নিজের অর্ধনারীশ্বর রূপ দেখালেন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন যে পার্বতী শিবেরই অংশ। পরবর্তীতে তিনিও হয়ে উঠলেন শিবের অনুচর, একত্রে উচ্চারি হতে শুরু হয় নন্দী ও ভৃঙ্গীর নাম|

আগামী পর্বে এমনই কোনো পুরান কাহিনী বা পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে আবার ফিরে আসবো, পড়তে থাকুন আর জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসতে চাইলে বা অনলাইন এ নিজের সমস্যার সমাধান চাইলে যোগাযোগ করতে ভুলবেন না উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

শিবকথা – কালভৈরব

শিবের বিভিন্ন রূপগুলির মধ্যে অন্যতম কাল ভৈরব যা শিবের অংশ বিশেষ ।

শিব পুরান বলে, কোনো একসময় ব্রহ্মা নাকি কোনও ধর্মবিরোধী কাজ করেছিলেন যার ফলে শিব অত্যন্ত রেগে যান ব্রহ্ম দেবের উপর। তাই সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য কালভৈরবকে সৃষ্টি করেছিলেন করেছিলেন শিব। অর্থ্যাৎ শিবের ক্রোধ থেকে জন্ম কাল ভৈরবের আর সেই কালভৈরবই ব্রহ্মার একটি মাথা কেটে নিয়েছিল। কিন্তু তারপর সেই ছিন্ন মস্তক ছুঁড়ে ফেলতে চাইলেও কালভৈরনের হাতেই আটকে ছিল সেটি।সেই অবস্থায় কিছু কাল ভ্রাম্যমান অবস্থায় কাটান তিনি |এদিকে ব্রহ্ম হত্যার পাপ অন্য দিকে এই অসহায় অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কপাল ব্রত পালন করতে হয় তাঁকে।তাতেও তেমন ফল হয়না, অবশেষে কাশীতে আসার পর তাঁর হাত থেকে হটাৎ খোশে পড়ে যায় সেই মস্তক। তার পর শিব কাল ভৈরব কে নিষ্ঠা সহকারে কাশী তেই স্থাপন করেন এবং কাশীকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেন কালভৈরবকে। তাই শিব হলেন কাশীর রাজা আর কালভৈরব তাঁর কোতোয়াল। তিনিই আশীর্বাদ করেন, তিনিই অভিশাপ দেন। এমনকি স্বয়ং যমরাজেরও নাকি কাশীবাসীকে শাস্তি দেওয়ার কোনও অধিকার নেই।কাশী তে কাল ভৈরব ই শেষ কথা |

কাশীর কালভৈরব মন্দির ঘিরে রয়েছে অসংখ্য রহস্যময় আচার ও প্রথা,কথিত আছে কাল ভৈরব এর অনুমতি ছাড়া কাশী প্রবেশ বা এখানে থাকা সম্ভব নয়|

অনেকের কাছেই কালভৈরব শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্যের দেবতা, তার বাহন কুকুর, অনেকে বিশ্বাস করেন গভীর রাতে কোথাও যাত্রা করার সময় কালভৈরবের নাম নিলে নাকি তিনি সব বিপদ কাটিয়ে দেন।হিন্দু পুরাণ মতে, কালভৈরব কাল বা সময়ের শাসক। প্রতিটি হিন্দু মন্দিরে কালভৈরবের মূর্তি রয়েছে। এবং তিনি সেই মন্দিরের রক্ষক হিসেবে বিবেচিত হন। শিব মন্দিরে কালভৈরব এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ওই মন্দিরের চাবির রক্ষক বলে বলে মনে করা হয়|

আগামী পর্বে শিবের অন্য কোনো রূপ নিয়ে ফিরবো আপনাদের সামনে, পড়তে থাকুন, জ্যোতিষ সংক্রান্ত কাজ বা পরামর্শ নিতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জন্মতিথি

আজ দিনটি অতি পবিত্র, আজ ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের 186 তম জন্মতিথি,আজ তাকে স্মরণ করার দিন, তার কাছে প্রার্থনা করার দিন|

শ্রী রামকৃষ্ণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছিলেন তার লীলা করতে, পরমহংসদেব যখন জগৎ সমক্ষে উদয় হন, তখন ঘোরতর ধর্মবিপ্লব চলছে চারপাশে, “জড়বাদী মুক্তকণ্ঠে বলছেন – “জড় হইতেই সমস্ত,জড়ের সংযোগেই আত্মা, জড় ব্যতীত আর কিছু নাই।“
ব্রাহ্ম সমাজ বলছে – “বেদ, বাইবেল, কোরান প্রভৃতি কিছুই মানিবার আবশ্যক নাই, কোনটিই অভ্রান্ত নয়, কোনটিই ঈশ্বর বাক্য নয়”
এমন সময় পরমহংসদেব প্রচার করলেন “কোন ধর্ম কোন ধর্মের বিরোধী নয়। বাহ্য দৃষ্টিতেই বিরোধ কিন্তু সকল ধর্মই মূলত এক কথা বলে
আরো সহজ করে বললেন ” যত মত ততো পথ “

তিনি শিব জ্ঞানে জীব সেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তার ভাব শিষ্য নরেন কে, সেই আদর্শ আজও এগিয়ে নিয়ে চলেছে রামকৃষ্ণ মঠ, আজকের তিথিকে মহা সমারোহে উদযাপন করা হয় মঠের প্রতিটি শাখায়,জন্ম তিথি তে প্রনাম ও শ্রদ্ধা জানাই এই মহান সাধকে, চরনে রইলো শত কোটি প্রনাম|আপনারাও উদযাপন করুন এই দিনটি|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

শিব কথা – শরভ অবতার

সবে মহাশিবরাত্রি শেষ হলো, তবে সারা চৈত্র মাসই শিবের গুনগান করার মাস , যদিও শৈব্য দের মধ্যে অবতার তত্ব প্রচলিত নেই তবে শাস্ত্রে শিবের বেশ কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন রূপ বা অবতারের উল্লেখি পাওয়া যায়, এই মাস জুড়ে তাদের কথা বলবো সঙ্গে থাকবে আরো দেবাদিদেব কে নিয়ে আরো অনেক গল্প, আজ লিখবো শরভ অবতার নিয়ে|

নৃসিংহ দেবের হাতে হিরণ্য কশিপুর বধ হলো কিন্তু নৃসিংহদেবের ক্রোধ কম হল না। তিনি ভয়ানক ধ্বংসলীলা চালিয়ে যেতে থাকেন। এই সময়ে সব দেবতারা একসাথে শিবের শরণ নেন। তাঁরা বুঝতে পারেন, একমাত্র মহাদেবই পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারেন। শিব বীরভদ্র ও ভদ্রকালীকে প্রেরণ করেন নৃসিংহকে থামানোর জন্য। কিন্তু মহাপ্রতাপ নৃসিংহ সেই দুই মহাশক্তিকেও বিপর্যস্ত করে ফেলেন। এমতাবস্থায় মহাদেব নিজেই শরভ নামের এক বিচিত্রদর্শন প্রাণীর রূপ নিয়ে আবির্ভূত হন।

শরভ এক সুবিশাল পাখি। তাঁর সহস্রবাহু এবং পশুর মতো দেহ|নৃসিংহ ও শরভ অবতারের মধ্যে ভয়ানক যুদ্ধ হয়|শরভের আঘাতে নৃসিংহ আত্মসংবরণ করেন। শরভই শেষ করেন নৃসিংহের লীলা।নৃসিংহ দেবের ক্রোধ থেকে রক্ষা পায় সৃষ্টি |

শিব নিজে একজন পরম বৈষ্ণব এবং নৃসিংহ দেব স্বয়ং বিষ্ণু| ভক্তের দ্বারা ভগবানের বধ বা ভক্ত এবং ভগবানের যুদ্ধ সনাতন ধর্ম শাস্ত্রের অতি বিরল ঘটনা|এই যুদ্ধ ও দুর্লভ অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় নৃসিংহ পুরান ও শিব পুরানে |

আগামী পর্বে শিব কে নিয়ে অন্য কোনো পৌরাণিক কাহিনী আপনাদের শোনাবো, পড়তে থাকুন, জ্যোতিষ পরামর্শনিতে, প্রতিকার করাতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

মন্দির রহস্য- নিষ্কলঙ্ক মহাদেব মন্দির

সারা দেশের কিছু রহস্যময় মন্দির ও তাদের সাথে জড়িত কিছু আশ্চর্য ও অলৌকিক কাহিনী আপনাদের সামনে আনতে শুরু করেছিলাম এই মন্দির রহস্য শীর্ষক ধারাবাহিক লেখনী|এই মহা শিব রাত্রি তিথীকে কেন্দ্র করে আরো একটি নতুন পর্ব নিয়ে আজ আমি আপনাদের সামনে, আজকের পর্বে দেশের অন্যতম প্রাচীন ও রহস্যময় গুজরাটের নিষ্কলঙ্ক মহাদেব মন্দির নিয়ে লিখছি|

গুজরাতের ভাবনগর জেলায় আরব সাগরের তীরে কোলিয়ক গ্রাম, এখানেই রয়েছে নিষ্কলঙ্ক মহাদেব মন্দির, একাধিক শিবলিঙ্গ রয়েছে এখানে, এগুলি স্বয়মভু অর্থাৎ নিজে থেকেই মাটির তলা থেকে প্রকট হয়েছে|

রহস্যময় ব্যাপার হলো, এই মন্দিরের দেখা সব সময় পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র ভাটার সময় মন্দিরে পুজো দেওয়া সম্ভব হয়, জোয়ারের সময় সমুদ্রের জলের তলায় চলে যায় এই মন্দির|কেবল মন্দির চূড়ার পতাকা দেখতে পাওয়া যায়|প্রতিদিন নিদ্দিষ্ট সময়ে সূর্যোদয়ের মত সমুদ্র বক্ষ থেকে উঠে আসে। এই দৃশ্য দেখার জন্যই বহু দর্শনার্থী ভিড় করেন সমুদ্র তটে। এখনও মনোষ্কামনা পূরণের আশায় এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন বহু পুণ্যার্থী।

মহাভারতে এই মন্দিরের উল্লেখ আছে, কথিত আছে মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরে কৌরব ও অন্যান্যদের হত্যা করার পাপ ধুতে এখানেই পুজো দেন পঞ্চপাণ্ডব|

প্রায় সারাবছরই মনোষ্কামনা পূরণের আশায় এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন বহু পুণ্যার্থী।আপনারাও কখনো সম্ভব হলে অবশ্যই দর্শন করুন এই অদ্ভুত এবং রহস্যময় মন্দির|আবার পরের পর্বে লিখবো নতুন কোনো মন্দির নিয়ে, যারা আমার গৃহ মন্দিরের শিবরাত্রির বিশেষ পুজো ও হোম যজ্ঞে অংশগ্রহন করলেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ, যারা জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আমার সাথে কথা বলতে চান বা দেখা করতে চান তারা দ্বিধা না করে ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বাংলার শিব – ভুশন্ডেশ্বর শিব মন্দির

আজ বাংলার শিবের এই পর্বে আমি আপনাদের বলবো সমগ্র এশিয়ার মধ্যে সর্ব বৃহৎ শিবলিঙ্গের কথা যা এই বাংলার খুব কাছেই অবস্থিত|

একটি পুরান কাহিনি অনুসারে ত্রেতা যুগে লঙ্কার রাজা রাবণ মহাদেবের কাছ থেকে উপহার হিসেবে একটি শিব লিঙ্গ পান কিন্তু রাবণ যখন তাঁর পুস্পক রথে করে এই শিবলিঙ্গটি নিয়ে চলে যেতে দেখেন তখন ক্ষুব্ধ হন দেবতারা এবং ঠিক করেন এই শিবলিঙ্গ নিয়ে যাওয়া আটকাতে হবে৷ দেবতারা ওই শিবলিঙ্গ চাইলেও তা দিতে রাজি হন না রাবণ, ফলে এই টানা পোড়েনে রাবণ তখন পথের মধ্যই কোনও এক স্থানে ওই লিঙ্গটি নামিয়ে রাখেন৷ কিন্তু তারপর আবার ওই লিঙ্গটি তুলতে গেলে এত ভারী লাগে যে রাবণ তা তুলতে পারেন না,বহু চেষ্টার পরেও ব্যর্থ হয়ে শূন্য হাতে রাবনকে লংকায় ফিরতে হয় এবং সেই বিশাল ও অপূর্ব সুন্দর শিব লিঙ্গটি চীরকালের জন্যে রয়ে যায় মর্তে|মনে করা হয় কৈলাশে এই শিবলিঙ্গটি দেবী পার্বতী পুজো করতেন|

এই স্থানটি হলো বাংলা থেকে অল্প দুরে, দিঘার কাছে উড়িষ্যায়,বালাসোরে এবং এখানেই ভুশন্ডেশ্বর শিব মন্দিরে সেই শিব লিঙ্গ স্বমহিমায় বিরাজমান|শিবলিঙ্গটি মাটি থেকে ১২ ফুট উচু এবং পরিধি ১৪ ফুট|ভুশন্ডেশ্বর শিব লিঙ্গটির অর্ধেক আসলে দেখা যায় যা মাটির উপর রয়েছে বাকী অর্ধেক রয়েছে মাটির তলায়|

স্থানীয় দের কাছে অত্যান্ত জনপ্রিয় এই শিব মন্দির, বহু মানুষ আসেন পুজো দিতে, আর শিব রাত্রিতে অসংখ্য শিব ভক্তের সমাগম হয় এখানে|চাইলে আপনারাও একদিন ঘুরে আসতে পারেন|বিদায় নেয়ার আগের জানিয়ে রাখি আগামী শিব রাত্রির বিশেষ তিথীতে আমার গৃহ মন্দিরে হোম যজ্ঞ বা গ্রহ দোষ খণ্ডনের জন্যে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে আর জ্যোতিষ পরামর্শ বা ভাগ্যবিচারের জন্যেও ফোন করতে পারেন যেকোনো সময়ে, জেনে নিতে পারেন আমাকে কবে কখন ও কোথায় পাবেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বাংলার শিব – নব কৈলাশ বা 108 শিব মন্দির

বিশেষ বিশেষ অমাবস্যা বা পূর্ণিমা তিথীর ন্যায় বছরের প্রায় প্রতিটি শিব রাত্রি জ্যোতিষ শাস্ত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ, বহু কঠিন কাজ সম্পন্ন শাস্ত্র মতে সম্পন্ন হয় শিব রাত্রির এই মহা যোগে, আপনারাও চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন এই বিশেষ সময়ে বিশেষ কার্যসিদ্ধির জন্যে, আজ আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি লেখা, আজ নব কৈলাশ বা একশ আট শিব মন্দির|

সারা ভারতে ১০৮ শিবমন্দির মাত্র দু’টি জায়গায় আছে। এবং এই দু’টি জায়গাই বাংলায়, পূর্ব বর্ধমানে। প্রথমটি বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে নবাবহাটে এবং দ্বিতীয়টি কালনাতে|

সারা দেশে ১০৮ শিবমন্দির রূপে প্রচারিত হলেও কালনার এই মন্দিরের প্রকৃত নাম ‘নবকৈলাস মন্দির’,বর্ধমানরাজ তেজচন্দ্র ১৮০৯ সালে কালনার এই মন্দিরটি নির্মাণ করান যেখানে সাদা ও কালো শিব লিঙ্গের বৈচিত্রপূর্ণ সমাহার লক্ষ্য করা যায়, মনে করা হয় সাদা রং ত্যাগের প্রতীক এবং কালো ভোগের প্রতীক|

কালনা রাজবাড়ি চত্বরের দক্ষিণ দিকে এই ১০৮ শিবমন্দির দু’টি বৃত্তকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
মোট ৭১টি সাদা ও ৩৭টি কালো শিবলিঙ্গ নিয়ে এই মন্দির অবস্থান করছে, ভিতরের বৃত্তের মাঝখানে রয়েছে একটি বিরাট কূপ, অনেকেই মনে করেন মন্দিরের পুজোর কাজে জলের চাহিদা মেটানোর জন্যই এই কূপ খনন করা হয়, আবার অন্য মতে এই বৃহৎ কূপটি শূন্য তথা নিরাকার ব্রহ্মস্বরূপ পরম শিবের প্রতীক|

দেশ বিদেশের বহু তীর্থযাত্রী প্রায় সারা বছরই আসেন এই অপূর্ব শিব মন্দির দর্শন করতে, আসন্ন মহা শিব রাত্রি উপলক্ষে এখানে ভিড় ও হবে মানুষের, আপনারাও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন|লেখা চলবে, আগামী পর্বে অন্য কোনো শিব মন্দির, জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্যে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

বাংলার শিব – রাজ রাজেশ্বর শিব মন্দির

আসন্ন শিব রাত্রি কে সামনে রেখে শুরু করেছি বাংলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত প্রাচীন শিব মন্দির নিয়ে লেখা, আজকের পর্বে লিখবো পূর্ব ভারতে সবচেয়ে বড় কালো পাথরের শিবলিঙ্গ নিয়ে, বাংলার নদিয়া জেলার মাজদিয়ার তিন কিমি দূরে শিবনিবাস গ্রাম আর এই গ্রামেই রয়েছে এই সর্ব বৃহৎ ও অন্যতম প্রাচীন শিব লিঙ্গ টি যার নাম রাজ রাজেশ্বর|

বাংলার ইতিহাস বলছে , নবাবী আমলে কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময় তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগর থেকে মাজদিয়ায় সরিয়ে আনেন, শিবের নামে তার রাজধানীর নামকরণ করেন শিবনিবাস৷ এখানে তিনি এক সুন্দর রাজপ্রাসাদ ও কয়েকটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন৷ তারমধ্যে তিনটি মন্দির এখনও অবশিষ্ট হয়েছে৷ এরমধ্যে সবচেয়ে পুরোনো মন্দিরটি হল রাজরাজেশ্বর শিবমন্দির, শিব এখানে রাজরাজেশ্বর নামে পরিচিত|

মহারাজা কৃষ্ণ চন্দ্র কতৃক ১৭৫৪ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয় মন্দিরটি৷ লোকমুখে বুড়ো শিবের মন্দির বলে খ্যাত এই মন্দির, চুড়ো সমেত এই মন্দিরের উচ্চতা ১২০ ফুট যা বাংলার মধ্যে অন্যতম, মন্দিরের ভিতর কালো শিবলিঙ্গ, উচ্চতা ১১ ফুট ৯ ইঞ্চি, বেড় ৩৬ ফুট। সিঁড়ি দিয়ে উঠে শিবের মাথায় জল ঢালতে হয়। পূর্ব ভারতে এতো বড় শিবলিঙ্গ আর নেই|

আগামী দিনে নদীয়া বেড়াতে গেলে স্বচক্ষে দেখে আসতে পারেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এই অদ্ভুত কীর্তি, ভালো লাগবে, আবার পরের পর্বে দেখা হবে, আপাতত চেম্বার ও অনলাইন দুভাবেই চলছে জ্যোতিষ কার্য, তার পাশাপাশি সরাসরি সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরে উপস্থিত থেকে নিজের গ্রহদোষ খণ্ডন করাতে পারেন, শুধু যোগাযোগ করতে হবে উল্লেখিত নাম্বারে, ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বাংলার শিব – মোটা মহাদেব বা দুর্গেস্বর মহাদেব

বাংলার প্রাচীন কিছু শিব মন্দিরের অজানা কথা নিয়ে যে ধারাবাহিক লেখা শুরু করেছি তার দ্বিতীয় পর্বে আজ বলবো কলকাতায় অবস্থিত দুর্গেশ্বর শিব বা ‘মোটা মহাদেব’ মন্দির নিয়ে |

কলকাতার নিমতলা অঞ্চলে অবস্থিত মোটা মহাদেব’ মন্দির বাংলার প্রাচীন আটচালা মন্দির শিল্পের উৎকৃষ্ট উদাহরণ, হাটখোলার দত্ত পরিবারের মদনমোহন দত্তের দুই পুত্র রসিকলাল দত্ত এবং জহরলাল দত্ত এর প্রতিষ্ঠা করেন,আনুমানিক ১৭৯৪ সালে অর্থাৎ প্রায় আড়াইশ বছর আগে, শোনা যায় সেকালে এর পাশ দিয়ে বয়ে যেত গঙ্গা|

বিশালকায় এই মন্দিরের উচ্চতা আনুমানিক পঞ্চাশ ফুট, ভাস্কর্যের রূপকার ছিলেন শিল্পী গদাধর দাস,মন্দিরের ভিতরে রয়েছে প্রায় দশ ফুট উচ্চতার শিবলিঙ্গ। এতবড় শিব কলকাতার কোন মন্দিরে নেই,প্রকাণ্ড আয়তনের শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালতে হয় লোহার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে|

এই শিব মন্দির ও প্রতিষ্ঠিত শিব লিঙ্গ নিয়ে একটি অদ্ভুত গল্পও প্রচলিত আছে,শোনা যায়, একসময় এই শিবলিঙ্গ মাঝে মাঝে ‘নিজের জায়গা থেকে সরে’ গঙ্গায় চলে যেত এবং এই চলে যাওয়া আটকাতে শিবলিঙ্গ কে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখার রীতি প্রচলিত হয়,

বর্তমানে ভগ্নপ্রায় এই মন্দিরে আজও আসেন বহু দর্শনার্থী, বিশেষ বিশেষ তিথীতে বিশেষ পূজা ও জন সমাগম ও লখ্য করা যায়, অনেকেই মন্দিরকে বুড়ো শিবের মন্দির ও বলেন|

আগামী দিনে এমন আরো অনেক প্রাচীন শিব মন্দিরে কথা নিয়ে ফিরে আসবো আপনাদের সামনে, জানিয়ে রাখি আসন্ন শিব রাত্রি উপলক্ষে আমার গৃহ মন্দিরে বিশেষ পুজো ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের সু ব্যবস্থা থাকছে, আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|