বাংলার প্রাচীন কালী মন্দির গুলির মধ্যে অসংখ্য ডাকাত কালী মন্দিরে এবং যার অধিকাংশ রয়েছে হুগলীতে|এই হুগলীর পুরুষোত্তমপুরে রয়েছে একটি শতাব্দী প্রাচীন ডাকাত কালীর মন্দির যে মন্দিরে ঘটেছিলো এক অলৌকিক ঘটনা এবং এই ঘটনার মধ্যমনি ছিলেন স্বয়ং মা সারদা| শোনা যায়, মা সারদা একবার এই পথে ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব কে দেখতে যাওয়ার সময় এই পুরুষোত্তমপুরের গগন ডাকাতের খপ্পরে পড়েন। কিন্তু এর পর একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে এবং সারদা মায়ের মধ্যে মা কালীর রূপ দর্শন করে ডাকাত দল পথ ছেড়ে দেয়। ডাকাতরা সারদা মা-কে চাল কলাই ভাজা খেতে দেন|তার কাছে ক্ষমা চান ও নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে স্বসম্মানে তাকে পৌঁছে দেন তার গন্তব্যে| এই অলৌকিক ঘটনার পর থেকেই চাল কলাই ভাজা হয়ে ওঠে পুরুষোত্তমপুরের মা কালীর মূল প্রসাদ| শতাব্দী প্রাচীন এই কালী মন্দিরে আগে কোনও মূর্তি ছিলনা, ঘটে পুজো হত। পরবর্তীকালে নিকটবর্তী চালকেপাটি বাঁকিপুর গ্রামের অধিবাসীরা বর্তমানের সুদৃশ্য আটচালা মন্দিরটির নির্মাণ করে দেন।মন্দির গাত্রে টেরাকোটার কাজ লক্ষ্যণীয়। তিন খিলান যুক্ত এই মন্দিরের একটিই প্রবেশ দ্বার। মন্দির সম্মুখে সুন্দর একটি নাটমন্দির রয়েছে। প্রতিটি অমাবস্যা ও দীপাবলি কালীপুজো হয় তন্ত্রমতে। চার প্রহরে চারবার মায়ের পুজো হয়। নয় রকম বলি দেয়া হয়। এক কালে যথেচ্ছ ছাগবলি চালু থাকলেও বর্তমানে তার সংখ্যা ১০-১২ তে এসে ঠেকেছে।তবে মানুষের আস্থা ও ভক্তি অটুট ও অগাধ এই মা সারদার স্মৃতি বিজড়িত কালী মন্দির ঘিরে| মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা মন্দিরে আসন্ন কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে গ্রহ দোষ খণ্ডন ও হোম যজ্ঞে অংশ নিতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
বাংলার কালী – বাসুদেবপুর ডাকাতকালী মন্দির
আর কয়েকটিদিন পরেই কৌশিকী অমাবস্যা মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলার মন্দিরের বিশেষ পুজো ও গ্রহদোষ খণ্ডন এর হোম যজ্ঞর আয়োজন শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই|বহু মানুষ যোগাযোগ করছেন|সব মিলিয়ে ব্যাস্ততা এখন তুঙ্গে|তার মাঝেই আজ আপনাদের জন্যে নিয়ে এসেছি বাংলার এক প্রাচীন ডাকাত কালী মন্দিরের কথা যা অবস্থিত হুগলীর বাসুদেব পুরে|এই মন্দিরের সাথে জড়িত আছে কুখ্যাত রঘু ডাকাতের নাম|সাধক রামপ্রসাদ ও এই মন্দিরে এসেছিলেন ও এক অলৌকিক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছিলেন|
রঘু ডাকাতের আমল থেকেই মন্দিরের পুজো চলছে। মন্দিরে নরবলির প্রথা বহু পূর্বে বন্ধ হয়েছে। তবে এখনও মানত করা| ছাগবলি হয়|
এই ডাকাত কালী মন্দিরের ইতিহাস বেশ প্রাচীন ও রোমাঞ্চকর|
শোনা যায় আনুমানিক ৫০০ বছর আগে বাগহাটির জয়পুরের বাসিন্দা বিধুভূষণ ঘোষ ও তার ভাই রঘু ঘোষ ঘন জঙ্গলের মধ্যে হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী তাদের মায়ের মূর্তি স্থাপন করে। দিনের বেলায় দুই ভাই দিনমজুরের কাজ করলেও রাতে ধনীদের বাড়িতে ডাকাতি করত যদিও ডাকাতি করে আনা জিনিসপত্র এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে বিলি করত এই দুই ডাকাত|
সেকালে ডাকাত দলের ভয়ে দুপুরের পর থেকে এই রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করত না। কথিত আছে সেই সময়েরঘু ডাকাতের লোকজন রাস্তা দিয়ে যাওয়া কোনও মানুষকে ধরে বেঁধে রাখত। সন্ধ্যার পর পুরোহিতকে ডেকে এনে ঢাকঢোল বাজিয়ে নরবলি হতো| তারপর পুজো দিয়ে ও মহাপ্রসাদ খেয়ে ডাকাতি করতে বের হত।
সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন কোনও এক সময়ে এই রাস্তা ধরে ফিরছিলেন। ওই সময়ে রঘু ডাকাতের লোকজন তাকে নরবলি দেওয়ার জন্য ধরে নিয়ে এসে বেঁধে রাখে। অলৌকিক ভাবে ডাকাত দল বলি দেয়ার আগের মুহূর্তে হারিকাঠে রামপ্রসাদের পরিবর্তে মাকে দেখতে পায়। এরপর থেকে রঘু ডাকাত বলি বন্ধ করে রামপ্রসাদের সেবার ব্যবস্থা করে এবং পরের দিন সকালে নৌকায় করে রামপ্রসাদকে সসম্মানে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে।
আজও রঘু ডাকাত কতৃক স্থাপিত এই কালী মন্দিরে পুজো হয়|বিশেষ বিশেষ তিথিতে বিশেষ পুজো ও সেই উপলক্ষে বহু মানুষের সমাগম হয়|বাংলার নানা স্থানে রয়েছে এমন আরো অনেক প্রাচীন ঐতিহাসিক কালী মন্দিরে|আগামী পর্বে আবার অন্য কোনো কালী মন্দিরের কথা শোনাবো আপনাদের|মনে করিয়ে দিই এখনো যারা ভাবছেন কৌশিকী অমাবস্যায় গ্রহদোষ খণ্ডন করাবেন বা বিশেষ পুজোয় অংশগ্রহন করবেন তারা নির্দ্বিধায় উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
বাংলার কালী – পাতাল কালী
সামনেই কৌশিকী অমাবস্যা|তন্ত্র ও শক্তি সাধনার শ্রেষ্ঠ সময়|জ্যোতিষ শাস্ত্রেও বড়ো ভূমিকা আছে এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির|এই সময়ে কালী কথা বলবো সেটাই স্বাভাবিক|আজ বাংলার যে রহস্যময় কালী মন্দির নিয়ে লিখবো তা এপার বাংলায় নয় ওপার বাংলায় অবস্থিত|চট্টগ্রামের কাছে, সীতাকুন্ড নামক স্থানে অবস্থিত এই পাতাল কালী মন্দির|চন্দ্রনাথ পাহাড় অঞ্চলে অবস্থিত এই পাতাল কালী মন্দির যাকে গঠন শৈলীর জন্যে অনেকেই উল্টা কালী ও বলেন|শুধু পাতাল কালী নয় এই অঞ্চলে রয়েছে শিব লিঙ্গ এবং হনুমানমন্দির|কথিত আছে নেপালের এক রাজা স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পৃথিবীর পাঁচ কোণে পাঁচটি শিবমন্দির নির্মাণ করেন। এর মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের শিবমন্দির অন্যতম|মনে করা হয় মহাভারতের সময়ে এখানে মহামুনি ভার্গব বসবাস করতেন|রামচন্দ্র তার বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন। তারা আসবেন জানতে পেরে মহামুনি ভার্গব এখানে স্নানের জন্য তিনটি কুণ্ড সৃষ্টি করেন। এরপর রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতা এই কুণ্ডে স্নান করেন। এরপর থেকেই স্থানের নামকরণ করা হয় সীতাকুণ্ড|চন্দ্রনাথ পাহাড়ের এক খাদে শীলা খন্ডে প্রকট হয়েছেন মা কালীর যা পাতাল কালী বা উল্টা কালী নামে জগৎ বিখ্যাত|স্থানটি অতি দুর্গম ও রহস্যময়|কথিত আছে সত্য যুগে এখানে স্থাপিত হয় পাতাল কালী|শাস্ত্র অনুসারে এই স্থানে মা কালীর নির্দেশে হনুমান পাতাল রাজ মহিরাবনে কে হত্যা করেন|আজও বিপদ কে উপেক্ষা করে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাকে জয় করে বহু মানুষ আসেন পাতাল কালীর দর্শন করতে|পুজো করতে|আগামী পর্বে অন্য কোনো মন্দির রহস্য বা বাংলার কালী মন্দিরের কথা নিয়ে ফিরে আসবো|কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে জ্যোতিষপরামর্শ বা গ্রহ দোষ খণ্ডনের জন্যে নির্দ্বিধায় সরাসরিযোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
রাখী বন্ধন
আজ রাখী পূর্ণিমা|ভারতীয় সনাতন সভ্যতায় বহু প্রাচীন কালথেকে চলে আসছে এই উৎসব|ভারতের পুরাণ, মহাকাব্য থেকে ইতিহাস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রক্ষাবন্ধনের গল্প|রামায়নে মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রমে রাম-সীতার দুই সন্তান লব-কুশের জন্মের পর তাদের হাতে সুরক্ষা কবচ হিসেবে একটি বিশেষ সুতো বেঁধে দেন বাল্মীকি|মহাভারতে, মা কুন্তী যখন কর্ণকে জন্মের পর জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন সদ্যোজাতের হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন একটি সুতো যা রাখীর মতোই রক্ষা কবচ হিসেবে রক্ষা করেছিলো তার সন্তানকে|শিশুপালের দিকে সুদর্শন চক্র ছুড়ে দেওয়ার সময় কৃষ্ণের হাতের আঙ্গুল কেটে রক্ত বের হতে শুরু করে। কৃষ্ণসখী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে তাঁর হাতে বেঁধে দেন। বড়ো ভাইয়ের ন্যায় শ্রীকৃষ্ণও দ্রৌপদীকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন|এও তো একপ্রকার রাখী বন্ধন|পুরান অনুসারে দেবী লক্ষী রাজা বলীর হাতে রাখী পড়িয়ে বিষ্ণু কে বৈকুন্ঠ লোকে ফিরিয়ে এনেছিলেন|রাখী বন্ধন প্রতিশ্রুতি রক্ষার উত্সব। ভাইবোনের মধ্যেই হোক কিংবা প্রিয় দুই মানুষের মধ্যে। সেই জন্যই তো প্রেম পর্যায়ের গানেও রবি ঠাকুর লিখেছেন … ” মনে ক’রে সখী, বাঁধিয়া রাখিয়ো আমার হাতের রাখী– তোমার কনককঙ্কনে|আপনাদের সকলকে জানাই রাখী বন্ধনের অনেক শুভেচ্ছা|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
মন্দির রহস্য : দেবজী মহারাজের মন্দির
বহুদিন পরে আজ আবার আপনাদের ভারতের এক প্রাচীন রহস্যময় মন্দিরের কথা বলবো যার সাথে জড়িত আছে বহু কিংবদন্তী ও অলৌকিক ঘটনা|রয়েছে অশরীরী বা ভূতেদের উপস্থিতি নিয়ে নানান জনশ্রুতি|মধ্যপ্রদেশ এর ভোপাল থেকে প্রায় তিনশো কিলোমিটার দূরে মালাজপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম বেতুল। এই বেতুলে অবস্থিত দেবজি মহারাজ মন্দির|কথিত আছে গুরু দেওজি সন্ত একজন অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন রাজপুরোহিত ছিলেন। শোনা যায় তিনি বালিকে চিনিতে, পাথরকে নারকেলে, কাদাকে ফসলে পরিবর্তিত করতে পারতেন। অশুভ শক্তি কে বিতাড়িত করার অদ্ভুত ক্ষমতাও তাঁর ছিল। তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁর স্মৃতিতে গ্রামবাসীরা একটি সমাধি মন্দির তৈরি করে|কথিত আছে এই মন্দিরে এলে দেবজী মহারাজের আশীর্বাদে ও কৃপায় যেকনো ব্যাক্তির উপর ভর করে থাকা অশুভ শক্তি বা আত্মা পলায়ন করতে বাধ্য হয়|এখানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় চারশো বছরের পুরোনো অদ্ভুত মেলা। সারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই অদ্ভুত মেলা প্রত্যক্ষ করার জন্য এই মন্দিরে উপস্থিত হন।এই মেলা ভূত মেলা নামে খ্যাত|চিরাচরিত প্রথা অনুসারে ভক্তরা শরীরে থাকা প্রেতকে তাড়ানোর জন্য হাতে কর্পূর জ্বালিয়ে দেবতাকে উপাসনা করেন । এছাড়াও এখানে ঝাড়ু পেটা করে ভূত তাড়ানোরও রীতি রয়েছে ।মেলা চলাকালী এবং সারা বছর গুরু দেওজি সন্ত মহারাজের সমাধির সামনে প্রতিদিন বিকেল বেলা আরতির পর অশুভ আত্মাকে তাড়িয়ে মানুষদের সুস্থ করা হয়।দেবজী মহারাজের এই মন্দিরে বহু কাল থেকে অলৌকিক এই ঘটনা ঘটে আসছে| আরতির পর সাধারণ দর্শনার্থীরা ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে এবং ভূতে ধরা মানুষেরা ঘড়ির কাঁটার দিকে মন্দিরটি পরিক্রমা শুরু করেন। এই পরিক্রমার সময় গুরু মহারাজের নামে মন্ত্রোচ্চারণের মাঝেই মন্ত্রঃপুত জল ছিটানো হয়। এরপরেই ভূতে ধরা মানুষেরা পাগলের মতো আচরণ করতে করতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন ও পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে যান|ভারত আস্থা ও বিশ্বাসের দেশ আর মানুষের বিশ্বাস যুক্তি তর্কের উর্দ্ধে|এমন আরো অনেক রহস্যময় মন্দিরের কথা বলবো আগামী দিনে|আপাতত চেম্বারে ও অনলাইনে নিয়মিত ভাগ্যবিচারের কাজ চলছে|প্রয়োজনে উল্লেখিত নাম্বারে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
ঝুলন যাত্রার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
আজ ঝুলন পূর্ণিমা বা ঝুলন যাত্রা উৎসব|ভারতের সনাতন সংস্কৃতির অংশ হিসেবে আমাদের জীবন ও দর্শনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে অসংখ্য ধর্মীয় উৎসব ঝুলন যাত্রা এই উৎসব গুলির মধ্যে অন্যতম|এই ঝুলন উৎসব বা ঝুলন পূর্ণিমা হল শ্রীকৃষ্ণেরঅনুগামীদের অর্থাৎ বৈষ্ণবদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব|দোল ও জন্মাষ্টমীর পর ঝুলন তাদের কাছে অতি পবিত্র একটি অনুষ্ঠান|অমাবস্যায় পরের একাদশী থেকে আরম্ভ করে শ্রাবনী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে এই উৎসব|এই দিন দোলনা সাজানো, ভক্তিমূলক গান,কীর্তন, বিশেষ পূজা ও প্রসাদ বিতরনের মাধ্যমে রাধাকৃষ্ণের ঝুলন লীলাকে উদযাপন করেন সারা দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ|মনে করা হয় বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণর প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে দ্বাপরযুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল এবং সেই তিথি ও উৎসব আজও পালিত হয়ে আসছে সমান উৎসাহের সাথে|ঝুলন যাত্রা এমনই এক লীলা যেখানে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীরাধার মাধুর্যপূর্ণ প্রেমের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে|আসলে এখানে রাধা ও কৃষ্ণ ভক্ত ও ভগবানের চিরন্তন সম্পর্কের প্রতীক|সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সাথে তাল মিলিয়ে ঝুলন পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে দোলে|শুধু তাই নয় সূর্য হচ্ছে পৃথিবীতে সর্ব প্রকার শক্তির উৎস। আর পৃথিবীর গতি হচ্ছে-দু’টো, আহ্নিকগতি ও বার্ষিক গতি। দুই গতিধারায় বছরে দু-বার কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখায় গিয়ে অবস্থান করে। তখন ঘটে সূর্যের উত্তরায়ন ও দক্ষিণায়ন অবস্থান। সেই কারণেই শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা অনুষ্ঠানে দোলনাটিকে ঝোলানো হয় উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে|মায়াপুর, বৃন্দাবন সহ দেশের বহু জায়গায় ঝুলন উৎসবকে মহা সমারোহে নিষ্ঠা সহকারে পালন করা হয়, এক কালে বাংলার ঘরে ঘরে ঝুলন সাজানোর চল ছিলো|এখনও হয় কোথাও কোথাও|সব মিলিয়ে এ এক অসাধারন সুন্দর ও তাৎপর্যপুর্ন উৎসব|প্রতিটি উৎসবই কোনো না কোনো কারনে বিশেষ তাৎপর্য পূর্ণ|আর এই সকল উৎসব গুলি পালিত হয় তিথি নক্ষত্র ধরে বিশেষ বিশেষ সময়ে|মানুষের জীবনেও এই বিশেষ তিথি নক্ষত্রর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে যা আমাদের প্রাচীন জ্যোতিষ শাস্ত্রে সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে|সামনেই জন্মাষ্টমী এবং তারপর কৌশিকী অমাবস্যা|যারা পূজা পাঠ হোম যজ্ঞর মাধ্যমে গ্রহ দোষ খণ্ডন করে প্রতিকার চান তারা এই তিথি গুলি কাজে লাগাতে পারেন কিভাবে তা বলে দেয়ার জন্য আমি আছি আর আছে হৃদয়েশ্বরী মা সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দির|এই সময় কে কাজে লাগিয়ে জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা যারা দুর করাতে চান তারা আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ঝুলন পূর্ণিমার শুভেচ্ছা সবাইকে|ভালো থাকুন |ধন্যবাদ|
মা মনসার উৎপত্তি ও পূজার প্রচলন
আজ মা মনসার পূজার দিন|মনসা পূজা প্রধানত বাংলা ও উত্তর ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে প্রচলিত। বর্ষার প্রকোপে এ সময় সাপের বিচরণ বেড়ে যায়, তাই সর্পদংশন প্রতিরোধ ও সাপের বিষের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে তাঁর পূজা করা হয়। বাঙালি মেয়েরা শ্রাবন মাসের নাগ পঞ্চমীর দিন উপবাস ব্রত করে সাপের গর্তে দুধ ঢালেন।অধিকাংশ ক্ষেত্রে, প্রতিমায় মনসা পূজা করা হয় না। মনসা পূজিতা হন বিশেষভাবে সর্পচিত্রিত ঘট বা ঝাঁপিতে। যদিও কোথাও কোথাও মনসা মূর্তিরও পূজা হয়। দেবী মনসা একদিকে যেমন লৌকিক দেবী অন্যদিকে পুরানে এমনকি মহাভারতেও তার উল্লেখ রয়েছে|মনসার স্বরূপ ও তার উৎপত্তি এবং পরিচয় নিয়ে একাধিক শাস্ত্রে কিছু পরস্পর বিরোধী তত্ব উপস্থিত রয়েছে| মা মনসা হিন্দুধর্মের লৌকিক সর্পদেবী। মধ্যযুগের লোককাহিনী বিষয়ক মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান চরিত্র। সর্পদেবী হিসেবে মনসার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অথর্ববেদে। পুরাণে তাঁকে ঋষি কাশ্যপ ও নাগ-জননী কদ্রুর কন্যা বলা হয়েছে। খ্রিস্টীয় ১৪শ শতাব্দী নাগাদ মনসা প্রজনন ও বিবাহের দেবী হিসেবে চিহ্নিত হন এবং শিবের আত্মীয় হিসেবে শৈব দেবমণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত হন। কিংবদন্তি অনুযায়ী, শিব বিষপান করলে মনসা তাঁকে রক্ষা করেন সেই থেকে তিনি বিষহরি নামে পরিচিতা হন। মনসার জন্মকাহিনি প্রথম উল্লিখিত হয়েছে পুরাণ গ্রন্থেই মঙ্গলকাব্যে তাঁকে শিবের কন্যা বলা হলেও, অন্য একটি পুরাণ অনুসারে তিনি ঋষি কশ্যপের কন্যা।পুরা কালে সর্প ও সরীসৃপগণ পৃথিবীতে কলহ শুরু করলে কশ্যপ তাঁর মন থেকে মনসার জন্ম দেন। ব্রহ্মা তাঁকে সর্প ও সরীসৃপদের দেবী করে দেন। মনসা মন্ত্রবলে বিশ্বের উপর নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। এরপর মনসা শিবের সঙ্গে সন্ধিস্থাপন করেন। শিব তাঁকে কৃষ্ণ-আরাধনার উপদেশ দেন। মনসা কৃষ্ণের আরাধনা করলে কৃষ্ণ তুষ্ট হয়ে তাঁকে সিদ্ধি প্রদান করেন এবং প্রথামতে তাঁর পূজা করে মর্ত্যলোকে তাঁর দেবীত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। মহাভারতে মনসার বিবাহের উল্লেখ রয়েছে। ঋষি জগৎকারু এক প্রচণ্ড তপস্যায় রত ছিলেন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে বিবাহ করবেন না। একদা তিনি দেখতে পান যে একদল লোককে গাছে উলটো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এঁরা ছিলেন তাঁরই পূর্বপুরুষ। তাঁদের সন্তানেরা তাঁদের শ্রাদ্ধাদি সম্পূর্ণ না করায় তাঁদের এই দুঃখজনক অবস্থা হয়েছিল। তাঁরা জগৎকারুকে বিবাহ করার উপদেশ দিয়ে বলেন যে তাঁর পুত্রই শ্রাদ্ধাদি সম্পূর্ণ করে তাঁদের দুঃখ থেকে মুক্তি দিতে পারবে। বাসুকী জগৎকারুর সঙ্গে নিজ ভগিনী মনসার বিবাহ দেন। আস্তিক নামে তাঁদের একটি পুত্রসন্তান হয়। আস্তিক তাঁর পূর্বপুরুষদের মুক্তি দেন। রাজা জনমেজয় সর্পজাতির বিনাশার্থে সর্পনিধন যজ্ঞ শুরু করলে আস্তিকই নাগদের রক্ষা করেন। মনসাবিজয় কাব্য থেকে জানা যায়, বাসুকীর মা একটি ছোটো মেয়ের মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। শিবের শিবের ক্রিপায় এই মূর্তি থেকেই মনসার জন্ম হয় এবং পরবর্তীতে বাসুকী তাঁকে নিজ ভগিনীরূপে গ্রহণ করেন। বাসুকী তার কাছে গচ্ছিত বিষের ভান্ডার মনসাকে দেন যা পরবর্তীতে মনসার শক্তির উৎস হয়ে ওঠে| অর্থাৎ মনসার উৎপত্তি মূলত পুরানে বর্ণিত এবং তার জনপ্রিয়তা ও পুজোর প্রচার তাকে বাংলার লৌকিক দেবী হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে|প্রনাম জানাই মা মনসা কে|আবার যথা সময়ে ফিরে আসবো পুরান সম্পর্কিত কোনো নতুন পর্ব নিয়ে|জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজন বা তন্ত্র মতে সমস্যার সমাধানে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
ভারতের সাধক – শ্রী শ্রী রামদাস কাঠিয়া বাবাজি
ভারতের সিদ্ধ যোগী দের মধ্যে অন্যতম একটি নাম শ্রী শ্রী রামদাস কাঠিয়া বাবাজি|তিনি আধ্যাত্বিক জগতের সিদ্ধ সাধকদের মধ্যে একজন এবং তার জীবন ও সাধনা আজও তার অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগীর ম্যধ্যে এক রহস্য স্বরূপ|
পাঞ্জাবের এক সাধারন মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম নিয়ে কিকরে তিনি এতো উচ্ছ কোটির যোগী হয়ে উঠলেন তা নিয়েও একটি অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়| তাঁর কৈশোরে একবার মাঠে মহিষ চরাতে চরাতে তিনি একজন উজ্জ্বলকান্তি সাধু পুরুষের দর্শন লাভ করলেন। সাধুজী তাঁর নিকট কিছু আহার যাচনা করলে, কাঠিয়া বাবাজী মহারাজ নিজ গৃহ থেকে প্রচুর পরিমানে ময়দা, চিনি, ঘি, আদি তাঁকে এনে দিলেন। সাধু প্রসন্ন হয়ে তাঁকে বরদান করলেন যে, “তুমি যোগীরাজ হবে।” এই বরদান করে সাধু অন্তর্হিত হলেন। তখন সেই সময় কাঠিয়া বাবাজী মহারাজের মনে হল যেন সংসারের প্রতি তাঁর সমস্ত আসক্তি কেটে গেছে|ক্রমে তিনি আধ্যাত্মিক সাধনার পথ বেছে নিলেন শুরু করলেন শাস্ত্র পাঠ ও ধ্যান|
তিনি গায়ত্রী মন্ত্রে সিদ্ধি লাভের জন্য জপ করতে লাগলেন এবং শেষে তিনি গায়ত্রীতে সিদ্ধি লাভও করলেন|কথিত আছে স্বয়ং গায়ত্রীদেবী আবির্ভূত হয়ে তাঁকে দর্শন দিয়ে কৃতার্থ করেন|পরবর্তীতে বিরাট জটা-জুটধারী এক সাধুকে তিনি দর্শন করে তাঁর প্রতি ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট হন ও তৎক্ষণাৎ তাঁর নিকট আত্মসমর্পণ করে তার কাছে দীক্ষা ও সন্ন্যাস গ্রহণ করলেন।সেই সাধু ছিলেন আচার্য, শ্রীশ্রী দেবদাসজী কাঠিয়া বাবাজী মহারাজ যিনি ছিলেন যোগীশ্বর সিদ্ধ মহাপুরুষ|
সন্ন্যাস গ্রহণের পর কাঠিয়া বাবার নামকরণ হল, “রামদাস”। গুরুর সন্নিধানে থেকে তিনি সর্বতোভাবে গুরুসেবায় নিযুক্ত থাকতেন। তাঁর গুরুদেব তাঁকে হঠযোগের সঙ্গে অষ্টাঙ্গযোগ ও মন্ত্র শিক্ষা দিতে শুরু করলেন তবে সাধনার এই পর্যায় ছিলো অত্যন্ত কঠিন|পদে পদে গুরু শিষ্যের কঠিন পরীক্ষা নিতেন|একবার গুরু দেব নির্দেশ দিলেন যে, “যত ক্ষণ না আমি ফিরে আসি তুমি এখানে এই আসনে বসে থাকবে। আসন ছেড়ে অন্য জায়গায় কোথাও যাবে না।” গুরুদেব যে গেলেন ত এলেন আট দিন পরে। শ্রীরামদাসজী আট দিন একটানা সেই আসনে বসে রইলেন, কিছু আহার করলেন না, প্রকৃতির ডাকেও সারা দিলেন না অষ্টম দিনে গুরুদেব ফিরে এলে শ্রীরামদাসজী আসন থেকে উঠে গুরুদেবকে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করলেন। তাঁর গুরু আজ্ঞা পালনের প্রতি এই একনিষ্ঠতা ও দৃঢ়তা দেখে গুরুদেব খুব প্রসন্ন করলেননা|
এক্ষেত্রে আরেকটি ঘটনার উল্লেখ করা যায় একদিন হঠাৎ গুরু তার শ্রীরাম দাসজীকে বেদম পেটাতে লাগলেন, চিমটা আদি দিয়ে এমন মারতে লাগলেন যে শ্রীরামদাসজীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফুলে উঠল। মারতে মারতে তিনি বললেন, “তুই কেন আমার পিছনে পড়ে আছিস্, আমার সব বড় বড় চেলা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, তুইও চলে যা। আমি কারুর সেবা চাই না।” শ্রী রামদাসজী গুরুদেবকে বিনীত ভাবে বললেন, “মহারাজ, আমি আপনাকে সাক্ষাৎ ভগবান মনে করি, সেই জন্য আপনাকে ছেড়ে ত আমি কোথাও যাব না। তবে এই রকমও আর সহ্য করতে পারছি না। আমি আপনাকে ছুরি দিচ্ছি আপনি আমার গলা কেটে নিন্, কিন্তু প্রাণ থাকতে ত আমি আপনাকে ছেড়ে অন্য কোথাও যাব না।” শিষ্যের এই বিনীত ও আর্ত কথাগুলি শুনে গুরুদেব প্রসন্ন হয়ে বললেন, “আজকে তোমাকে আমি শেষ বার পরীক্ষা করলাম, তোমার সেবায় ও গুরুভক্তিতে আমি প্রসন্ন হয়েছি। আমি বরদান করছি যে তোমার সর্বাভীষ্ট সিদ্ধ হবে, তুমি ইষ্টদেবের সাক্ষাৎকার পাবে,” ইত্যাদি বহু বর শ্রীরামদাসকে প্রদান করলেন|
সাধনার সকল স্তর অতিক্রম করে সিদ্ধি লাভ করে প্রকৃত অর্থে যোগিরাজ হয়ে উঠেছিলেন রাম দাস বাবাজি|সারা ভারতের তীর্থ দর্শন করে বৃন্দাবনে পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি|নির্বাক সম্প্রদায়ের গুরুদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম শ্রেষ্ট গুরু ও সাধক যার কাছে দীক্ষা নিয়েছেন অসংখ্য মানুষ যার মধ্যে রয়েছেন বহু বাঙালি|তিনি অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন যার পরিচয় পাওয়া যায় একাধিক ঘটনায়
তিনি দেহে থাকাকালীন নিজেরই ছবি থেকে বহির্গত হয়ে একজনকে দীক্ষা দিয়েছিলেন। আকাশমার্গে বৃন্দাবন থেকে কলকাতায় আগমন করে অপর একজনকে মন্ত্র প্রদান করেছিলেন। তিনি এক কালে দুই পৃথক স্থানে ভক্তদের দর্শন দান করতে সমর্থ ছিলেন। শুধু তাই নয়, এখনো পর্যন্ত তিনি কোন কোন ভক্তকে প্রত্যক্ষদর্শন প্রদান করে থাকেন। তাঁর জীবনের সম্পূর্ণ বিবরণ এই স্থানে দেওয়া অসম্ভব। ১৩১৬ বঙ্গাব্দে ৮ই মাঘের ভোর রাত্রে এই মহাপুরুষ স্বেচ্ছায় যোগাসনে স্থিত হয়ে পরলোক গমন করেন|
প্রনাম জানাই এই মহান সাধককে|পড়তে থাকুন|জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজনে উল্লেখিত নাম্বার যোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|
শিবকথা – শিবের জন্ম
শিব কথার আজকের এই নতুন পর্বে আপনাদের স্বাগত|চিদ্ জগতে শিব সদাশিব রূপে অবস্থান করেন। কখনও কখনও শিবকে বৈকুণ্ঠের দ্বাররক্ষকও বলা হয়।আবার তিনি দেবাদিদেব অর্থাৎ দেবতাদের আরাধ্য দেবতা|তিনি তম গুনের অধিকারী তাই সংহার কর্তা|লৌকিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনি আপাদমস্তক সংসারী আবার তিনিই আদি অঘোরী|বৈচিত্রপূর্ণ এই একাধিক গুণাবলীর অধিকারী শিবের জন্মের উল্লেখ আছে শাস্ত্রে আছে তার পিতৃ পরিচয়|আদি শিব লিঙ্গ প্রকট হয়েছিলো আদি অন্ত হীন রূপে তবে জন্মসূত্রে শিবের পিতা হলেন ব্রহ্মা। ব্রহ্মার অনুরোধ সত্ত্বেও তাঁর প্রথম মানস পুত্র চতুষ্কুমারগণ প্রজা সৃষ্টিতে লিপ্ত হতে অস্বীকার করলে ব্রহ্মারঅন্তরে দুর্বিসহ ক্রোধ উৎপন্ন হয়েছিল। যা তিনি সংবরণ করার চেষ্টা করলেও তা তাঁর ভ্রূর মধ্য থেকে বেরিয়ে এসেছিল এবং নীললোহিত বর্ণের একটি শিশু উৎপন্ন হয়েছিল। জন্মের পরেই শিশু ক্রন্দন বা রোদন করতে শুরু করে। ব্রহ্মা তখন বলেছিলেন “হে সুরশ্রেষ্ট। যেহেতু তুমি উৎকন্ঠিত হয়ে রোদন বা ক্রন্দন করেছ তাই প্রজাসমূহ তোমাকে ‘রুদ্র’ নামে অভিহিত করবে।” এই হোলো সংক্ষেপে শিবের জন্ম বৃত্তান্ত ও তার রূদ্র নামের ব্যাখ্যা|শিবের নিত্যধাম-মহেশধাম জড়জগৎ ও বৈকুণ্ঠ লোকের মধ্যবর্তী। এ প্রসঙ্গে ব্রহ্মসংহিতাতে বলা হয়েছে “গোলোকনাম্নি নিজ ধান্মি তলে চ তস্য দেবী-মহেশ-হরি ধামসু তেষু তেষু” এখানে দেবীধাম অর্থে জড় জগৎ এবং হরিনাম অর্থে বৈকুন্ঠ লোক এবং মহেশ ধাম তার মধ্যবর্তী। সেই সদাশিবই জড় জগতে রুদ্র রূপে নিজেকে প্রকাশ করেন|আগামী পর্বে শিব সংক্রান্ত এমনই কোনো তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য ও ব্যাখ্যা নিয়ে ফিরে আসবো আপনাদের জন্যে|নিয়মিত লেখা ও ইউটিউবের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি টিভির অনুষ্ঠানেও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আসছি প্রায় প্রতিদিন|পাশাপাশি সরাসরি ও অনলাইনে বহু মানুষের ভাগ্য গণনা ও প্রতিকার প্রদান চলছে|আপনারাও নিজের প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন ধন্যবাদ|
মন্দির রহস্য- জাটোলি শিব মন্দির
শ্রাবন মাস জুড়ে শিব সংক্রান্ত নানান তথ্য আপনাদের সামনের উপস্থিত করবো লেখা লেখি ও টিভির অনুষ্ঠানেরা মাধ্যমে|পাশাপাশি ইউ টিউব এও প্রতি নিয়ত নিত্যনতুন ভিডিও আপলোড হচ্ছে|আজকের পর্বে এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে একটি রহস্যময় শিব মন্দিরের কথা লিখছি|জাটোলি শিব মন্দির নামে একটি সুউচ্ছ শিবমন্দির দেবভূমি হিমাচল প্রদেশের সোলানে অবস্থিত রয়েছে|অনেকের মতেই এই মন্দির দেশের উচ্চতম শিব মন্দির|এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অতি প্রাচীন এমননি একটি প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে প্রাচীনকালে স্বয়ং মহাদেব এই জায়গায় এসেছিলেন ও কিছুটা সময় এখানে কাটিয়ে যান|একটি বিশেষ কারনে এই মন্দির রহস্যময় মন্দিরে পরিনত হয়েছে|কথিত আছে এই মন্দিরের দেয়াল থেকে ডমরুর শব্দ উৎপন্ন হয়ে|এই মন্দিরের দেয়ালে আঘাত করলে এক বিশেষ ধরণের শব্দের তরঙ্গ তৈরি হয়। যা হুবহু মহাদেব হাতের বাদ্যযন্ত্র, ডমরুর শব্দের মতো|আস্থাশীল ও নিষ্ঠাবান দর্শিনার্থীদের কাছে এই অলৌকিক শব্দ বা ডমরু ধ্বনি অতি পবিত্র|শিব সাধক স্বামী কৃষ্ণানন্দ পরমহংস ১৯৭৪ সালে বর্তমানে অবস্থিত মন্দিরের স্থাপনা কার্য শুরু করেন| মন্দিরের উচ্ছতা ১১১ ফুট|মন্দিরের ভিতরের এক ক্রিস্টাল শিবলিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছে এবং শিব পার্বতীর মূর্তিও রয়েছে|পাশাপাশি আরও অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তিও রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ১১ ফুট উঁচু সোনার কলসি রাখা আছে মন্দিরের সর্বোচ্চ স্থানে|কলকাতারা দুর্গোৎসবের থিম পুজোর দৌলতে অনেকেই হয়তো এই মন্দির দেখেছেন তবে হিমাচল প্রদেশে যাত্রা কালে কখনো এই মন্দির দর্শনের সুযোগ এলে হাতছাড়া করবেন না|আজ বিদায় নিলাম চেম্বারে জ্যোতিষ চর্চা ও অনলাইন জ্যোতিষ পরামর্শ দেয়ার ফাঁকে সময় বের করে আবার ফিরে আসবো নতুন পর্ব নিয়ে|প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন| ধন্যবাদ|