কালী তীর্থ – সোনামুখীর মাইতো কালী

653

আজ কালী তীর্থতে লিখবো বাঁকুড়ার সোনামুখীতে অবস্থিত মাইতো কালী মন্দিরের কথা শুরু করবো একটি ঐতিহাসিক ঘটনা দিয়ে যা আবার অলৌকিক ও বটে|বাংলায় নবাবি আমল তখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় নি, সময় টা ১১৪৯ সাল, মারাঠা সেনাপতি ভাস্করপন্ডিত বর্গীদের একটি দলসহ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে সোনামুখিতে যায়|মা কালীর মন্দিরের সামনে বর্গীদস্যুদল সমবেত হয় লুঠতরাজের জন্য। এই এলাকার চারদিক তখন গাছপালায় ভরা ছিল। তারই মধ্যে ছিল কালীর মন্দির।কথিত আছে সেদিন এই অঞ্চলের মানুষজন সকলে বর্গী দস্যুদের ভয়ে বাইরে বেরোননি।শুধু এক বৃদ্ধ সাহস করে সন্ধ্যায় দেবীমন্দিরে আলো দেওয়ার জন্য একটি প্রদীপ নিয়ে মন্দিরে ঘটের সামনে রেখে বলিস্থানে হাড়িকাঠের সামনে প্রণাম করছিলেন।এই ঘটনায় প্রবল রাগে বর্গীদলের সর্দার একটি খাঁড়া উঠিয়ে প্রণামরতবৃদ্ধকে বলি দিতে উদ্যত হয়।কিন্তু বলী দেয়া যায়নি অলৌকিক কোনো শক্তির প্রভাবে খাড়া নিচে নামেনি|এমনকি বর্গীদের সর্দার অন্ধও হয়ে যান। পরে ওই বৃদ্ধের চেষ্টাতেই সর্দার দৃষ্টি শক্তি ফিরে পান। এই সময় বর্গীদল বলে তারা আর লুঠপাট করবে না এবং তারা ফিরে যায় ওই স্থান ছেড়ে|কেনো দেবীকে মাইতো কালী বলে তার ও ব্যাখ্যা আছে, শোনা যায় ডাকাত দল যাওয়ার সময় ‘মায়ী-ত কালী হ্যায়, মায়ী-ত কালী হ্যায়” বলতে বলতে জয়ধ্বনি দিতে দিতে যায় । তখন থেকেই এই কালীর নাম হয় ” মাই- তো- কালী “।মাইতো কালী মন্দিরে কালীপুজোর সময় পাঁচদিন ধরে পুজো চলে আড়ম্বরের সঙ্গে। একসময় এই পুজো স্থানীয় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজো হলেও এই পুজো আজ সকলের এবং গোটা বাংলার প্রসিদ্ধ কালীক্ষেত্র গুলির মধ্যে অন্যতম|আবার আগামী পর্বে অন্য কোনো কালী তীর্থ নিয়ে ফিরে আসবো|দেখতে থাকুন|ধন্যবাদ|