কালী তীর্থ – সর্বমঙ্গলা মন্দির গড়বেতা

546

আজ এই পর্বে যে দেবীর কথা লিখবো তিনি ঠিক কালী না হলেও মাতৃ শক্তির এক রূপ এবং তার মন্দিরের কিছু বিশেষত্ত্ব আছে যা এই কালী ক্ষেত্রতে আপনাদের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন বলে মনে হয়|আজ গড়বেতার মা সর্বমঙ্গলার কথা বলবো অনেকেই মনে করেন এই মা সর্বমঙ্গলা দুর্গারই আর এক রূপ।গড়বেতা বললেই প্রথমে আসে সর্বমঙ্গলা মন্দিরের কথা।এককালে গড়বেতা সংলগ্ন বিরাট অঞ্চল জঙ্গলাকীর্ণ ছিল এবং অনার্য উপজাতদের বাসভূমি ছিল। শিকারই ছিল তাদের প্রধান উপজীবিকা। শিকার করতে যাওয়ার আগে তারা এক বনদেবীর পুজো করত। এই বনদেবী পরবর্তীকালে বগড়ীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কথিত আছে, মহারাজ বিক্রমাদিত্য সর্বমঙ্গলা মায়ের সামনে তপস্যায় বসেন। তাঁর তপস্যায় মুগ্ধ হয়ে দেবী তাঁকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী করে দেন।নিজের অলৌকিক ক্ষমতা পরখ করতে রাজা বিক্রমাদিত্য তার অনুগত বেতালকে নির্দেশ দেন মন্দিরের মুখ দক্ষিণ থেকে উত্তরে করতে। সঙ্গে সঙ্গে বেতাল মন্দিরের মুখ পরিবর্তন করে দেন।আজও মন্দির সেই ভাবেই অবস্থান করছে|পরবর্তীতে রাজা গজপতি সিংহ এই মন্দিরটি সংস্কার করে বিগ্রহ নব রূপে প্রতিষ্ঠা করেন।মন্দির স্থাপত্যশৈলীর নিরিখে এই মন্দিরটি পীর দেউল পর্যায়ে পড়ে অর্থাৎ ওপরদিকে ধাপে ধাপে ক্রমহ্রাসমান এবং সেখানে আকারে ছাদ বিশিষ্ট মন্দির রয়েছে|এই মন্দিরের বিশেষত্ব হলো সাধারণত হিন্দু দেবদেবীর মন্দিরের মুখ হয় দক্ষিণে। তবে সর্বমঙ্গলা মন্দিরের মুখ উত্তর দিকে|এই মন্দিরটি ভারতের একমাত্র উত্তরমুখী মন্দির|সর্বমঙ্গলা মন্দিরের পাশাপাশি এখানে রয়েছে ১২টি শিবের মন্দিরও।সব মিলিয়ে কিংবদন্তী, ইতিহাস ও প্রাচীন জশ্রুতিতে ভরপুর এই তীর্থক্ষেত্র|চলতে থাকবে কালী তীর্থ নিয়ে লেখালেখি ও কালী তত্ত্ব নিয়ে নানা ব্যাখ্যা|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|