বাংলার কালী – মালদার গোবরজনা কালি মন্দির

600

আজ বহুদিন পর আরো একটি প্রাচীন কালী মন্দির নিয়ে লিখবো|সম্প্রতি এই মন্দির নিয়ে আমার টিভির অনুষ্ঠানেও বলেছি|আজকের পর্বে গোবরজন্না কালি মন্দির| মালদার গোবরজন্না কালি মন্দিরের কথা অনেকেরই অজানা। কিন্তু প্রচারের আলো থেকে অনেকটাই দূরে হলেও এই কালিমন্দিরের মাহাত্ম্য কিন্তু অপরিসীম|প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই মা কালীর মন্দির, কিন্তু জাঁকযমকে কিন্তু এতটুকু ভাটা পড়েনি। আজও প্রত্যেক কার্তিক অমাবস্যা তিথিতে ধুমধাম করে দেবীর আরাধনা করা হয়। মালদা জেলার প্রসিদ্ধ কালীপুজো গুলোর মধ্যে অন্যতম গোবরজনা কালী পুজো। মালদা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পুকুরিয়া থানার অন্তর্গত আড়াইডাঙ্গা অঞ্চলে গোবরজনা গ্রাম। আর এই গ্রামে দেড় বিঘা জমির উপর স্থাপিত গোবরজনা প্রাচীন কালী মন্দির | কথিত আছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানী উপন্যাসের নায়ক ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোয়। এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে কালিন্দী নদী। শোনা যায় একসময় ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী বজরা করে এই নদী পথ দিয়ে যাওয়ার পথে নদীতে তাদের বজরা আটকে পড়ায় এই গোবর জনা কালী মন্দিরে রাত্রি যাপন করেছিলেন। তারপর মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের পুজো দিয়েছিলেন তারা। তারপর থেকে এই পুজোকে ভবানী পাঠকের পূজো বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে তার বংশধরেরা বংশপরম্পরায় পুজো করে আসছেন। এই মন্দিরে প্রতি কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে বিশেষ পুজো হয় এবং আমাবস্যা শেষে পাশেই কালিন্দী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। কালী পূজার সময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক ভক্ত ভিড় জমায় এই মন্দিরে। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বিশাল মেলা বসে পুজোর দুদিন। বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগমের ফলে নিরাপত্তার জন্য পুলিশি ব্যবস্থা থাকে আটোসাটো। কালীপুজোর দিন ছাড়াও প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার পুজো হয়ে থাকে। এ পূজার একটি বড় বিষয় হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন। হিন্দু ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই পুজোয়| আগামী পর্বে অজানা কোনো কালী ক্ষেত্র ও তার সাথে জড়িয়ে থাকা অলৌকিক গল্প নিয়ে আবার ফিরে আসবো পড়তে থাকুন|জ্যোতিষ কেন্দ্রিক সমস্যা নিয়ে সরাসরি আমার সাথে কথা বলতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|