Home Blog Page 105

কলকাতার কালী – হংসেশ্বরী কালী মন্দির

কলকাতার কালী মন্দির নিয়ে অনেকগুলি পর্ব আগে লিখেছি যা আপনারা বেশ পছন্দ করেছেন|এবার কলকাতার বাইরে জেলার কিছু প্রসিদ্ধ কালী মন্দির নিয়ে লিখবো|আজকের পর্বে হংসেশ্বরী কালী মন্দির|

হুগলি জেলার বাঁশ বেড়িয়াতে অবস্থিত এই প্রাচীন ও সুবিশাল কালী মন্দির টি|

রাজা নৃসিংহদেব ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে হংসেশ্বরী কালীমন্দিরের নির্মাণ শুরু করেন এবং তার মৃত্যুর পর ১৮১৪ খ্রিষ্টাব্দে তার বিধবা পত্নী রাণী শঙ্করী মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করেন|

শোনা যায়, মন্দির তৈরির পাথর আনা হয়েছিল চুনার থেকে। আর রাজস্থানের জয়পুর থেকে কারিগরদের আনা হয়েছিল। ২১ মিটার মিনারে রূপ যেন একটি ফোটা পদ্মফুল। মন্দিরের মূল চূড়ার শীর্ষে সহস্রদ্বারে রয়েছেন পরম পুরুষ শ্বেতবর্মধারী মহাদেব আর সভাগৃহের মূলধারে কুলকুন্ডলিনী শক্তিরূপ হংসেশ্বরী।

এই মন্দিরের পুজোর বৈশিষ্ট্য হল, পুজোর দিন মা হংসেশ্বরীর মুখে মা কালীর একটি মুখোশ পরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও পুজোর পরের দিন সেই মুখোশ খুলে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়ম মেনেই চলে আসছে মায়ের পুজো|

দেবী হংসেশ্বরী দর্শনের জন্য বহু সারা বছরই মানুষ আসেন দূর দূরান্ত থেকে তার পাশাপাশি এটির স্থাপত্য পরিদর্শনের জন্য বহু শিল্পী বাঁশবেড়িয়ায় আসেন|

আশা করি ভালো লাগলো আজকের পর্ব আবার ফিরবো পরের পর্বে|দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে জ্যোতিষ পরামর্শ ও জ্যোতিষ প্রতিকার নিতে হলে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

কলকাতার কালী – কৌটা কালী

বিগত কয়েকটি পর্ব থেকে কোলকাতার কালী শীর্ষক ধারাবাহিক লেখায় জেলার কিছু প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরের কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি|সেই পরম্পরা কে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এই পর্বে|আজকের পর্ব লিখবো চন্দ্র কোনার পুরশুঁড়ি গ্রামের কৌটা কালী কে নিয়ে|

প্রায় তিনশো বছর ধরে চন্দ্রকোণা এক নম্বর ব্লকের পুড়শুড়ি গ্রামে পূজিতা হয়ে আসছেন সিংহ পরিবারের কৌটো কালী মা|এই দেবীর পুজো ও মন্দিরের সাথে জড়িত আছে কিছু বিচিত্র প্রথা যা শুনতে বেশ অদ্ভুত লাগে|কয়েকশ বছর ধরে এই রীতি নীতি পালিত হয়ে আসছে এখানে|

মনে করা হয় পুড়শুড়ি গ্রামের সিংহ পরিবারের এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন জমিদার রাম চন্দ্র সিংহ ১২৭৪ সালে |নিয়ম অনুযায়ী, দেবী প্রতিমাকে পুরোহিত ছাড়া কেউ দর্শন করতে পারেন না। মহিলারা তো রীতিমতো ব্রাত্য মাতৃদর্শনে। এমনকি ওই পরিবারের বাড়ির লোকজনও মাতৃদর্শন করেন না|পুজোর সব দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় ঘোষ পরিবার সিংহ পরিবার কেবলমাত্র অতিথি হিসেবে থাকে|

কৌটো কালী মাকে বিষ্ণু মন্দিরে ঠাঁই দেন জমিদার নীলকন্ঠ সিংহ। সেই থেকে সারা বছর বিষ্ণু মন্দিরেই অধিষ্ঠান করেন কৌটো কালী মা। জানা যায়, কালীপুজোর সময় মাত্র চার ঘন্টার জন্য মন্দির থেকে দেবী প্রতিমাকে বার করা আনা হয়| সেই কারণেই দেবী এখানে কৌট কালী নামে প্রসিদ্ধ|

আজও পুজো উপলক্ষে দেবীর সামনে দেওয়া হয় ছাগল বলিও। রীতি মেনে চার ঘন্টার মধ্যে পুজো ও ছাগল বলি সম্পন্ন করে, ফের দেবীপ্রতিমা বিষ্ণু মন্দিরে রেখে আসেন পুরোহিত| এই ভাবে নিয়ম ও প্রথা মেনে প্রতিটি বিশেষ তিথি তে এখানে কালীপূজা হয়|স্থানীয়দের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় দেবী কৌটা কালী|

আগামী পর্বে আবার কোন বিশেষ কালী মন্দিরের কথা নিয়ে আপনাদের সামনে আসবো| যাওয়ার আগে মনে করিয়ে দিও আগামী কালী পূজা উপলক্ষে যারা জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকার নেওয়ার কথা ভাবছেন তারা এখনি যোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

কোলকাতার কালী – সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির

কোলকাতার কালী পর্ব গুলির মধ্যে কলকাতা ও জেলার প্রসিদ্ধ কালী মন্দির গুলির কয়েকটির কথা আমি ইতিমধ্যে আপনাদের বলেছি।আজকের পরবে কোলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় একটি কালী মন্দির নিয়ে লিখবো যা আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।আজ সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির।

উত্তর কোলকাতার কুমোরটুলির কাছাকাছি ৫১২ রবীন্দ্র সরণিতেই প্রতিষ্ঠিত দেবী সিদ্ধেশ্বরী। এই মন্দিরের প্রথম প্রতিষ্ঠার সাল তারিখ আজও অন্ধকারে তবে অসংখ্য অলৌকিক কাহিনী ও জনশ্রুতি জড়িয়ে আছে বাগবাজারের দেবী সিদ্ধেশ্বরী কালীকে নিয়ে যার কিছু আজ আমি আপনাদের শোনাবো।

সে অনেক কাল আগের কথা । আজকের বারাকপুর তথা অতীতের চণক থেকে ভাগ্যের খোঁজে সুতানুটিতে এলেন গোবিন্দরাম মিত্র। বসতি গাড়লেন কুমোরটুলিতে। ভাগ্যের চাকা ঘুরল। পরিশ্রম ও কর্মদক্ষতায় সাহেব জমিদারের সহকারী হলেন গবিন্দ রাম মিত্র মশাই। ১৭২০-১৭৫৩ সাল পর্যন্ত ওই পদে থেকে উপার্জন করলেন অগাধ ধনরত্ন ও অর্থ। বাগবাজারের মন্দিরটি তিনি নির্মাণ করলেন ১৭৩০ ও মতান্তরে ১৭৩২ সালে।

মন্দিরে স্থাপিত দেবী মূর্তিটি মৃন্ময়ী। আয়ত নয়ন। প্রায় সাধারণ মানুষের উচ্চতা। দেবীর বাম চরণের দিকে সম্পূর্ণ দিগম্বর শ্বেত মহাদেবের মাথা। অনাড়ম্বর দেবী বিবস্ত্রা নন, বসনে দেবী নয়নাভিরাম।

শোনা যায় । একসময় এই মন্দিরের দুয়ারে এসে আকুল আকুতি জানিয়ে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, ‘ওরে এই মা সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। তোদের যা যা কামনা তাই তিনি পূর্ণ করতে পারেন’। ব্রাহ্ম সমাজের কেশবচন্দ্র সেন একবার বেশ অসুস্থ হলেন। এ কথা জানতে পেরে রোগমুক্তির কামনায় পরমহংসদেব বাগবাজারে সিদ্ধেশ্বরীর কাছে মানত করেছিলেন ডাব আর চিনি।

একটি জনশ্রুতি অনুসারে একসময় হিমালয়ের গিরি কন্দরে তপস্যারত কালীবর নামে এক সন্ন্যাসী দেবী কালিকার প্রত্যাদেশ পেলেন। হিমালয় ছেড়ে এসে সাধন আসন স্থাপন করলেন সুতানুটির বেত আর হোগলা বনে। তিনিই প্রথম ওই স্থানে দেবী সিদ্ধেশ্বরীকে প্রতিষ্ঠিত করেন। শোনা যায় । কোম্পানির আমলেও সন্ন্যাসী কালীবর প্রতিষ্ঠিত দেবী কালিকার সামনে দেওয়া হত নরবলি। সেসব এখন অতিত তবে দেবীর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভক্তি আজও অটুট আছে। আজও বিশেষ তিথিতে , বিশেষ পূজা উপলক্ষে বহু মানুষের ভীর হয় এই মন্দিরে।

আজকের পর্ব এখনেই শেষ করছি । ফিরবো নতুন পর্বে। যোগাযোগ করুন জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্য। ভালো থাকুন ধন্যবাদ।

কলকাতার কালী – মুক্তকেশি কালী মন্দির

আজ কের কলকাতার কালির এই পর্বে লিখবো কলকাতা সংলগ্ন একটি প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরের কথা|আজকের পর্বে মুক্ত কেশি কালী মন্দির |

দক্ষিনেশ্বর কালীমন্দির থেকে প্রায় ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থিত প্রাচীন জনপদ আড়িয়াদহ। এই স্থানেই রয়েছে প্রাচীন এই কালী মন্দির |২০০ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরের বাইরের ফলকে লেখা স্থাপিত সন নির্দেশ অনুযায়ী মুক্তকেশী মন্দির দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ও ১৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত অর্থাৎ ১২৩২ বঙ্গাব্দে|

এই মুক্তকেশী কি কারনে মুক্তকেশী তা জানা না গেলেও মনে করা হয় তাঁর কৃপা না কি অপার|

এই মন্দিরের দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন স্থানীয় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার, তাঁরাই দুশো বছরের বেশি সময় ধরে এই মন্দিরের দেখাশোনা করছেন|প্রতিটি বিশেষ তিথিতে এখানে নিষ্ঠা সহকারে কালী পুজোর আয়োজন হয় |

আশা করি ভালো লাগলো এই উপস্থাপনা |দেখা হবে পরের পর্বে |জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্য যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে |ভালো থাকুন |ধন্যবাদ 

পদ্মনাভ মন্দির

দুর্গোৎসব, দীপাবলি, ধনতেরাস,একের পর এক ধর্মীয় উৎসব পেরিয়ে এলাম|জ্যোতিষ জগতেও এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ|অসংখ্য মানুষের ভাগ্যবিচার ও জ্যোতিষ প্রতিকারের কাজ সামলে স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা ক্লান্তি এসেছিলো তাই কটা দিন বিশ্রামের পর আবার ফিরলাম কাজের জগতে, আবার কলম ধরলাম আধ্যাত্মিক লেখা লেখির জন্যে|এবার শুরু করছি সম্পূর্ণ নতুন এক ধারাবাহিক লেখা,মন্দির রহস্য|দেশ ও বিদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু বিখ্যাত মন্দির ও তাদের সাথে জড়িত রহস্য নিয়ে হবে এই ধারাবাহিক লেখা|একেকটা পর্বে লিখবো একেকটা মন্দির নিয়ে|আজ প্রথম পর্বে কেরলের বিখ্যাত ও বিতর্কিত পদ্মনাভ মন্দির|

মনে করা হয় খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত|ত্রাভাংকোর প্রসিদ্ধ রাজাদের মধ্যে অন্যতম মার্তন্ডা বর্মা এই মন্দিরটির প্রমুখ সংস্করণ করান এবং বর্তমান শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরটির গঠন তারই মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে|1750 খৃষ্টাব্দে মার্তন্ডা বর্মা ত্রাভাংকর রাজ্যটিকে ভগবান পদ্মনাভর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন|

এই মন্দিরটির উল্লেখ কিছু পুরাণেও পাওয়া যায়, যেমন, স্কন্দ পুরাণ ও পদ্ম পুরাণ|ভগবান বিষ্ণুর 108 টি পবিত্র মন্দিরগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। এই মন্দিরের মূল দেবতা হলেন, ফনা তুলে থাকা অনন্তনাগের উপরে আঁধশোয়া অবস্থায় বা অনন্ত শয্যায় ভগবান বিষ্ণু|

শ্রীপদ্মনাভস্বামী মন্দিরের বিষ্ণু মুর্তিটি গঠন শৈলীর জন্য জগৎ প্রসিদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে নেপালের গন্ডকী নদীর তীর থেকে নিয়ে আসা 12008 টি শালগ্রাম শিলা|মন্দিরের গর্ভ গৃহে একটি পবিত্র বেদীর উপর আঠেরো ফুট দৈর্ঘ্যর দেবমূর্তিটি রয়েছে যা তিনটি ভিন্ন দরজা থেকে দর্শন করা যায়|ক্রমানুসারে মস্তক এবং বক্ষ প্রথম দরজা দিয়ে, হস্তগুলি দ্বিতীয় দরজা দিয়ে এবং পদযুগল তৃতীয় দরজা দিয়ে দর্শন করা যায়|

পাথর এবং ব্রোঞ্জের তৈরী 80 ফুট উচ্চতার ধ্বজ স্তম্ভ বিশিষ্ট এই মন্দিরে বিষ্ণু ছাড়াও রয়েছেন নৃসিংহ দেব, গণপতি ও গজলক্ষী|মণ্ডপের ছাদে চিত্রিত রয়েছে নব গ্রহের চিত্র|

এই মন্দির কে ঘিরে সাম্প্রতিক কালে লেখা লেখি কিছু কম হয়নি যার মুলে আছে এক রহস্য|কয়েকবছর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অনুসন্ধান চালিয়ে এই মন্দিরের অভ্যন্তরে ৬টি প্রকোষ্ঠের সন্ধান পাওয়া যায়, যার প্রত্যেকটি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ সোনা। সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস এখান থেকে পাওয়া যায়|তবে মূল রহস্য এই ৬টি প্রকোষ্ঠ ছাড়িয়ে ৭ নম্বরে প্রকোষ্ঠ কে কেন্দ্র করে । এই প্রকোষ্ঠটি আজ পর্যন্ত খোলা সম্ভব হয়নি যার প্রধান কারন ধর্মীয় বিশ্বাস ও কিছুটা আইনি জটিলতা| এই প্রকোষ্ঠের দরজায় দুটি সাপের চিহ্ন আঁকা রয়েছে। কিন্তু কোনও স্ক্রু, তালা বা অন্য কিছু নেই, যা দিয়ে তা খোলা যেতে পারে|

একটি কিংবদন্তি অনুসারে এই প্রকোষ্ঠের দরজা ‘নাগবন্ধনম’ দ্বারা আবদ্ধ যা কেবল মাত্র একটি নিদ্দিষ্ট মন্ত্রের বিশেষ উচ্চারণেই খুলতে পারে|আজও এক রহস্য এই বন্ধ দরজা,বন্ধ দরজায় কান পাতলে নাকি ভিতরে জলের স্রোতের শব্দ শোনা যায় এমনকি প্রকোষ্ঠের ভিতরে সাপের হিস-হিস শব্দও শোনা গিয়েছে বলে অনেকে জানান|কিন্তু সবথেকে বড়ো প্রশ্ন হলো কি আছে এই বন্ধ দরজার ওপারে|কেউ কেউ মনে করেন ওই বন্ধ প্রকোষ্টে রয়েছে অপার ঐশ্বর্য, ধন সম্পদ আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করেন এর মধ্যে রাখা রয়েছে সৃষ্টিরহস্যের চাবিকাঠি|হয়তো কিছু রহস্য চিরকাল রহস্যই থেকে যাবে|হয়তো ভগবানের তাই ইচ্ছে|

আজ প্রথম পর্ব এখানেই শেষ করছি|ফিরবো আগামী পর্বে অন্য কোন মন্দিরের রহস্য নিয়ে|পড়তে থাকুন|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার নিয়ে কথা বলতে চান ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে|আপাতত নিজ গৃহ মন্দিরে প্রতিদিন ও অনলাইনে সর্বদা আছি আপনাদের পাশে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

তিরুপতি বালাজি

মন্দির রহস্য নিয়ে এই ধারাবাহিক আলোচনা শুরুতেই বেশ জমে উঠেছে তা আপনাদের প্রতিক্রিয়া থেকে বেশ বুঝতে পারছি তাই আর দেরি না করে আজ দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত|আজকের পর্ব লিখবো দক্ষিণ ভারতের তিরুপতি বালাজি মন্দির নিয়ে|

মনে করা হয় কলিযুগের দুঃখ ও যন্ত্রণা থেকে মানব সমাজকে মুক্ত করতে ভগবান বিষ্ণু তিরুমালায় ‘ভেক্টেশ্বর’ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন|
অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার অন্তর্গত তিরুপতির তিরুমালা শৈলশহরে অবস্থিত ভগবানের ভেঙ্কটেশ্বরের তিরুমালা মন্দির যা বালাজি মন্দির নামেও প্রসিদ্ধ এবং ধন সম্পদের দিক দিয়ে বিশ্বের বিশ্বের ধনিতম মন্দির গুলির অন্যতম|

বহু পুরান কাহিনী,কিংবদন্তি ও রহস্য জড়িয়ে আছে এই মন্দির ঘিরে যার কিছু আজ আমি আপনাদের সামনে আনবো|অনেকেই জানেন এই মন্দিরের দেবতার উদ্দেশ্যে মাথার চুল নিবেদন করা হয়|কিন্তু কেনো? তা জানতে হলে একটি পৌরাণিক ঘটনা জানতে হবে|

একবার ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের মাথায় এক নাবালক রাখাল নিজের অজান্তেই আঘাত করেছিলেন যার ফলে ভগবানের মাথার কিছু অংশের চুল ছিঁড়ে পড়ে যায়। নীলাদেবী নামে এক গন্ধর্ব রাজকুমারী এই ঘটনাটি দেখতে পান| নীলাদেবী মনে করেন, ভগবান ভেক্টেশ্বরের সৌন্দর্যে কোন ক্ষুত থাকা উচিত নয় তিনি তখন নিজের মাথার চুল কেটে জাদুশক্তির সাহায্যে ভগবান ভেক্টেশ্বরের মাথায় প্রতিস্থাপন করেন|নীলাদেবী যেহেতু নিজের সৌন্দর্যের কথা না ভেবে ভগবান ভেক্টেশ্বরের সৌন্দর্যের বিষয়ে ভেবে নিজের মাথার চুল তাঁকে দান করেছিলেন, তাই ভগবান ভেক্টেশ্বরও রাজকুমারী নীলাদেবীকে এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন|সেই প্রতিশ্রুতি অনুসারে এই ভেক্টেশ্বর মন্দিরে আগত প্রত্যেক ভক্ত তাঁদের নিজের মাথার চুল অর্পণ করবেন ভগবান ভেক্টেশ্বরকে। এবং সেই চুল প্রকৃত অর্থে পাবেন রাজকুমারী নীলাদেবী।সেই প্রথা আজও চলে আসছে|

কেনো তিরুপতি মন্দিরে এতো ধন সম্পদ দান করেন ভক্তরা তাও এক রহস্য যা জানতে হলে আমাদের আরো একটা পৌরাণিক ঘটনা জানতে হবে|তিরুমালার রাজকুমারী পদ্মাবতীর সঙ্গে শ্রীবিষ্ণুর বিবাহ স্থির হয় এবং এই বিবাহের জন্যই বিষ্ণু সম্পদের দেবতা কুবেরের কাছ থেকে বিবাহ উপলক্ষে বিপুল ঋণ গ্রহণ করেন।ঋণ করার কারণ পদ্মাবতীর বাবা এই অর্থ দাবি করেছিলেন। কুবের এই শর্তে ঋণ দান করেন যে, বিষ্ণু যতদিন পর্যন্ত এই ঋণ শোধ করতে পারছেন না, ততদিন তিনি বৈকুণ্ঠে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বিষ্ণু কুবেবের ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। ভক্তরা ভগবানকে বিপুল অর্থ ও সম্পদ প্রদান করেন, যাতে তিনি ঋণমুক্ত হন|আজও অগণিত ভক্ত ভগবানের ঋণ পরিশোধ করতে মুক্ত হস্তে দান করে চলেছেন|

ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের চোখ কেনো ঢাকা তারও নানা রকম ব্যাখ্যা হয়|অনেকে বিশ্বাস করেন এই বিপুল ঋণের কারণেই লজ্জিত বালাজি নাকি চোখের অর্ধাংশ ঢেকে রাখেন|কিছু শাস্ত্রজ্ঞ মনে করেন ভগবান বিষ্ণুর অন্যতম অবতার বুদ্ধ। বুদ্ধের একটি রূপ হল অবলোকিতেশ্বর। এই রূপে বুদ্ধের চোখ অর্ধনিমিলিত থাকে। বালাজির মূর্তি আসলে অবলোকিতেশ্বরেরই মূর্তি|তবে স্থানীয়রা মনে করেন বালাজির তিরুপতির চোখ যাতে ঢাকা থাকে, তা আসলে তিলক|বালাজির দৃষ্টি অতীব অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন। এই শক্তির প্রভাব সকলের সহ্য হবে না তাই ওই বিশেষ তিলক দ্বারা তাঁর নয়নকে অর্ধনিমিলিত রাখা হয়|

রহস্য একটি দুটি নয় অনেক|প্রচলিত বিশ্বাস ভগবানের বুকে কান পাতলে শোনা যায় সমুদ্রের শব্দ|ভগবানের কপালে জমে বিন্দু বিন্দু ঘাম|ভগবানের চুল ও কোনো সাধারণ চুল নয়,তা আসল, অকৃত্তিম|বালাজির পূজা সামগ্রীও আসে একটি মাত্র নিদ্দিষ্ট গ্রাম থেকে|এই প্রথা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে|আমি নিজেও তিরুপতি বালাজি মন্দির দর্শন করে ধন্য হয়েছি|

আজ এখানেই থামছি|আবার পরের পর্বে ফিরে আসবো নতুন এক মন্দির ও তার রহস্য নিয়ে|আবার অনলাইন ভাগ্য বিচারের পাশাপাশি চেম্বারে বসাও শুরু করেছি|যারা ভাগ্য বিচার, জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের ব্যাপারে আগ্রহী তারা উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন ধন্যবাদ

কোনারক সূর্য মন্দির

ভারতের মন্দির ও তাদের সাথে জড়িয়ে থাকা রহস্য নিয়ে লিখতে গেলে কোথা থেকে শুরু করা যায় আর কোথায় থামা যায় তা বুঝে ওঠা মুশকিল কারন অসংখ্য মন্দির আর প্রায় প্রতিটি মন্দিরের সাথে যুক্ত আছে একাধিক জনশ্রুতি, কিংবদন্তী যার পরতে পরতে রয়েছে রহস্য|তবুও চেষ্টা করছি নিজের ব্যাস্ত পেশাগত জ্যোতিষ চর্চার পাশাপাশি যতটা সময় পাওয়া যায় তা পড়াশোনা ও গবেষণার কাজে লাগাতে|ফল স্বরূপ এই ধারাবাহিক লেখনী আসতে পেরেছি আপনাদের সামনে|আজকের পর্বে কোনারকের সূর্য মন্দির|

১২৫০ সালে কলিঙ্গের রাজা নরসিংহ দেব কোনারকের সূর্য মন্দির তৈরি করেন|বর্তমানে উড়িষ্যার ভুবনেশ্বর থেকে ৬০ কিলোমিটার ও পুরী থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটি|উড়িষ্যা ও দ্রাবিড় সভ্যতার সংমিশ্রণে ধূসর রঙের বেলেপাথর দিয়ে এই বিশাল রথের আকারের মন্দির তৈরি হয়েছে যার সম্মুখে রয়েছে সূর্যদেবের সাত জোড়া ঘোড়া।

আজও এই কোনারক সূর্য মন্দির বহন করে চলেছে একাধিক রহস্য|এই মন্দিরে না আছে বিগ্রহ না হয়েছে কোনদিন পূজা|কিন্তু কেনো?
সেও এক রহস্য|

রাজার আদেশ ছিলো এই মন্দিরে প্রতিদিন ১২০০ শ্রমিক কাজ করবে আর তারা ১২ বছরে এই মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করবে। এই সময়ের থেকে একদিন কমবেশি বা একজন শ্রমিক কম-বেশি হলে সকলের প্রাণদণ্ড দেওয়া হবে|কিন্তু সেই আদেশ শেষ পয্যন্ত মানা হয়নি|নির্মাণ কাজে অংশ নেয়া এক শ্রমিকের পুত্র ধর্মদাস মঙ্গলঘট নির্মাণের কাজে হাত লাগায় এবং সফল হয়। কিন্তু তাতে রাজার নির্দেশ অমান্য করা হয় কারণ শ্রমিকের সংখ্যা ১২০০ থেকে ১২০১ হয়|তখন ধর্মদাস ১২০০ শ্রমিকের জীবন বাঁচানোর জন্য মন্দিরের চূড়া থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তখন থেকেই এই মন্দির অপবিত্র হয়ে যায়। তাই এই মন্দিরে আজও পূজা হয়না|

এই মন্দিরের আরেকটি রহস্য হল এর চুম্বকত্ব যা অনেক বড় বড় জিনিসকেওআকর্ষণ করতো নিজের দিকে|শোনা যায় ইংরেজরা যখন পুরী বন্দরে তাদের জাহাজ নিয়ে আসত তখন মাঝেমধ্যেই দিকভ্রান্ত হয়ে পড়তো। তখন ইংরেজরা এর কারণ অনুসন্ধান করে জানতে পারেন যে মন্দিরের ভেতরে রয়েছে এক বিশাল আকার শক্তিশালী চুম্বক। তখন তারা নিজেদের সমস্যা সমাধানের জন্য এই মন্দির থেকে চুম্বক খুলে নিয়ে যায় এতে মন্দিরের কিছু ক্ষতিও হয় যা পরে মেরামত করা হয়|

আমার মতে কোনারক মন্দিরের সবথেকে বেশি রহস্যময় দিক হলো তার নির্মাণ শৈলী যা জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত, জ্যামিতি আর ভাস্কর্যের এক অদ্ভুত জটিল সংমিশ্রনে তৈরি|রথ এর আদলে তৈরী এই সূর্য্য মন্দিরের ১২ জোড়া চাকা ছিল আদতে প্রতিটা চাকা একেকটি সূর্য্য ঘড়ি|মন্দির গাত্রে চিত্রিত ভাস্কর্য্য ও কম রহস্যময় নয় যা নিয়ে আজও গবেষণা হচ্ছে সারা বিশ্ব জুড়ে|
দেবতা না থাকলেও, পুজো না হলেও প্রাচীন ভারতের শিল্পকর্মের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরন হিসেবে কোনারক সূর্য মন্দির সারা পৃথিবীতে সমাদৃত|

আগামী পর্বে আবার ফিরবো এক নতুন মন্দিরের রহস্য নিয়ে|আবার শুরু করেছি চেম্বারে বসা তার পাশাপাশি অনলাইনে ভাগ্য বিচার তো চলছেই প্রতিদিন|আগামী দিনে জেলায় ও রাজ্যের বাইরের যাওয়ার ও পরিকল্পনা রয়েছে|এতো কিছুর মাঝে লেখা লেখিও চলবে সমান তালে|পড়তে থাকুন|প্রয়োজনে উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

জ্বালাজি মন্দির

আজকাল নিয়মিত অনলাইন ভাগ্য বিচার ও চেম্বারে ক্লাইন্ট দেখার পাশাপাশি যতটা সময় অবশিষ্ট থাকে তা এই আধ্যাত্মিক লেখালেখির কাজেই ব্যায় হয়|আপনাদের ভালো লাগছে জেনে মনে হয় আমার এই পরিশ্রম স্বার্থক|আগামী দিনেও আমার প্রতিটি আধ্যাত্মিক কর্মকান্ডে এই ভাবেই আপনাদের পাশে চাই|আজ আর ভূমিকা না করে শুরু করা যাক নতুন এক পর্ব|আজকের পর্বে জ্বালাজি মন্দির|

হিমাচল প্রদেশের অতি সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত এই রহস্যময় প্রাচীন মন্দির এই মন্দির সতী মাকে উৎসর্গ করা , এই মন্দিরে এক রহস্য ময় অগ্নি প্রজ্বলিত আছে যেটা কয়েক শতাব্দীর বেশি সময়ে ধরে জ্বলছে|

জ্বালাজি মন্দিরে ৭টি আগুনের শিখা দেখা যায় যেগুলি আজ পর্যন্ত কখনও নিভে যায়নি। কখনও কখনও শিখাগুলির সংখ্যা বেড়ে হয় ৯টি। ভক্তদের বিশ্বাস, শিখাগুলি মা ভগবতীর সাত বোনের বহিঃপ্রকাশ। কেউ আবার বলেন, শিখাগুলি আসলে মা দুর্গার ন’টি অবতারের প্রতীক। ভক্তদের ব্যাখ্যা যা-ই হোক, ঘটনা হল, এই শিখাগুলি জ্বলছে স্মরণাতীত কাল থেকে।

একটি প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে কিংবদন্তি অনুসারে, সম্রাট আকবর নাকি একবার এই অগ্নিশিখাগুলি নেভানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন‌|

এটাই এই মন্দিরের প্রধান রহস্য যার উদ্ঘাটন আজও সম্ভব হয়নি|এমন কি বিজ্ঞানীরাও এটা খুজে বের করতে পারেনি এই অগ্নি কোথা থেকে এর জ্বালানি তেল পাচ্ছে এবং কিভাবে আদি অনন্ত কাল ধরে জ্বলছে এই দিব্য অগ্নি শিক্ষা|

হয়তো এই রহস্য চিরকাল রহস্যই থেকে যাবে আর সেখানেই আমাদের আধ্যাত্মিকতার জয়, আমাদের সনাতন ধর্ম বিশ্বাসের জয়|

আগামী পর্বে আবার লিখবো নতুন কোনো মন্দির ও তার রহস্য নিয়ে|পড়তে থাকুন এই ধারাবাহিক লেখনী|জ্যোতিষ পরামর্শ ও সঠিক প্রতিকারের জন্যে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

পুরী জগন্নাথ মন্দির

বিগত পর্বগুলিতে বেশ কয়েকটি মন্দির ও তার সাথে জড়িত কিছু রহস্য আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি|ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকের পর্বে আলোচনা করবো এমন এক মন্দির নিয়ে যাকে নিয়ে রহস্যর শেষ নেই|আজকের বিশেষ পর্বে পুরী জগন্নাথ মন্দির|

হিন্দু দের পবিত্র চার ধামের মধ্যে পুরীর জগন্নাথ মন্দির অবশ্যই অন্যতম|পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য আছে যা কিন্তু যথেষ্ট রহস্যে মোড়া, তারই কিছু আজ আপনাদের সামনে আনবো এক এক করে|

প্রথমেই বলি,মন্দিরের উপর দিয়ে কোন বিমান বা পাখি উড়ে যেতে পারেনা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিষয়টি কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা অগ্রাহ্য করতে পারেন না|

মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো আছে তা রোজ নিয়ম করে পাল্টানো হয়,এই পতাকা সব সময় হওয়ার বিপরীতে ওড়ে। এর কারণ কিন্তু জানা যায় না কিন্তু এই অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটে থাকে|

আপনারা যারা পুরীর মন্দির দর্শন করেছেন হয়তো জানেন পুরীর যে কোন জায়গা থেকেই আপনি যদি মন্দিরের চূড়ার দিকে তাকান তাহলে সুদর্শন চক্র আপনার দিকে সম্মুখীন হয়ে থাকবে|এও এক রহস্য|

মন্দির চত্বরের কোলাহলের জন্যে হয়তো খেয়াল থাকেনা কিন্তু মন্দিরের ভিতরে সিংহদ্বারে মন্দিরে প্রবেশ করার পর প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের আওয়াজ আর শুনতে পাওয়াযায় না কিন্তু সিঁড়ি টপকে গেলেই তারপর আবার সমুদ্রের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়|

মনে করা হয় পুরী হলো ভগবানের ভোজনের স্থান তাই এখানকার সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বৈশিষ্ট্যটি হল প্রসাদ। রহস্যময় বিষয় হলো সারাবছর ধরে সমপরিমাণ প্রসাদ রান্না করা হয়, কিন্তু একই পরিমাণ প্রসাদ দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ হোক বা কয়েক লক্ষ মানুষকে খাওয়ানো হোক তবু প্রসাদ কখনো নষ্ট হয় না বা কখনো কম পড়ে না|এই প্রসাদ রন্ধন পক্রিয়াতেও রয়েছে এক রহস্য রান্নার পদ্ধতিতেও বেশ রহস্য আছে, মন্দিরের হেঁশেলে একটি পাত্রের উপর আরেকটি পাত্র এমন করে মোট সাতটি পাত্র আগুনের উপর বসে রান্না করা হয়। এই পদ্ধতিতে যেটি সবচেয়ে উপরে বসানো হয় থাকে, তার রান্না সবার আগে হয়। আর তার নিচেরগুলো তারপর , এভাবেই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে|

এতো রহস্য এতো অলৌকিক বিষয় থেকে এটাই প্রমান হয় যে ভগবানের লীলা বোঝা দায়|তার ইচ্ছায় সবই সম্ভব|সাধারণ বুদ্ধি বা যুক্তি দিয়ে ভগবানের লীলার বিচার সম্ভব নয়|

আজ এই বিশেষ পর্ব এখানেই শেষ করছি|ফিরবো আগামী পর্বে|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ ভাগ্য বিচার নিয়ে যোগাযোগ করতে চান উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

শিরডির সাইবাবা

ভারতের আধ্যাত্মিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের নিয়ে একটি ধারাবাহিক লেখনী শুরু করেছিলাম যেখানে ইতিমধ্যে কয়েকজন মহান সাধকদের নিয়ে লিখেছি|আজ দীর্ঘ বিরতির পর পুনরায় একটি নতুন পর্ব নিয়ে আমি আপনাদের সামনে|আজকের পর্বে শিরডির সাইবাবা|

নিঃসন্দেহে ভারতের সবচেয়ে পূজিত সন্তদের একজন মহারাষ্ট্রের শিরডির সাইবাবা। গোটা দেশ জুড়ে তাঁর ভক্তের সংখ্যা কোটি কোটি, তাতে নানা ধর্মের মানুষই আছেন। আর ভারত জুড়ে আছে অজস্র সাইবাবার মন্দির|

সাই শব্দটা পারসি শব্দ এর অর্থ পবিত্র ব্যক্তি। নিজের জীবৎকালে সাইবাবা কখনও তাঁর আসল নাম, জাতি বা ধর্ম প্রকাশ করেননি।তার জন্ম কাল ও জন্মস্থান ও সঠিক ভাবে জানা যায়না|

কেউ কেউ দাবি করেন, সাইবাবার জন্ম তামিলনাড়ুতে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারের আবার কেউ দাবী করেন তিনি গুজরাটে জন্মেছিলেন|সাম্প্রতিক কালে তাকে মুসলমান আখ্যা দিয়ে বিতর্কও সৃষ্টি করা হয়েছিলো|

এই সব বিতর্কে জড়িয়ে পড়া আমার উদেশ্য নয় আমার উদেশ্য সাইবাবার সাধনা ও তার জীবনের একাধিক অলৌকিক ঘটনা কে আপনাদের সামনে তুলে ধরা যা তার প্রতিটি ভক্তের কাছে ধ্রুব সত্য বলেই বিবেচিত|

মহারাষ্ট্রের শিরডি ছিলো সাইবাবার সাধন ক্ষেত্র|তার গোটা জীবন কালে একাধিক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়াযায় যা লিপিবদ্ধ আছে একাধিক গ্রন্থে|

দ্বারকামণির যে মসজিদ ছিল সাঁই বাবার সাধনক্ষেত্র সেখানে সর্বক্ষণ জ্বলত একটি ধুনি। সেই ধুনিরই ছাই প্রসাদ হিসেবে বাবা কখনও দিতেন ভক্তদের হাতে কখনও বা মাখিয়ে দিতেন তাঁদের কপালে। এটাই ছিলো তার ভক্ত দের প্রসাদ|কিংবদন্তী অনুসারে, সাঁই বাবার প্রদত্ত বিভূতির অনেক অলৌকিক ক্ষমতাও ছিল। অনেক প্লেগ রোগী নাকি এই বিভূতি খেয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কেউ আবার এই বিভূতির জোরে মুক্তি পেয়েছেন মানসিক অসুস্থতা থেকে|এই প্রক্রিয়ায় কর্মভার থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে তাঁদের বিশ্বাস। সাঁই বাবার ভক্তদের মধ্যে এখনও নিয়মিত জলে পবিত্র বিভূতি মিশিয়ে সেবনের রীতি প্রচলিত রয়েছে|

সাইবাবা বলতেন সব কা মালিক এক অর্থাৎ সবার পরম পিতা এক ঈশ্বর|তার অলৌকিক স্পর্শে যেমন তেলহীন প্রদীপে জ্বলে উঠতো আলো তেমনই তার আশীর্বাদে অনেক মানুষের জীবনের অনেক বিপদ কেটে যেত অলৌকিক ভাবে|তাই জাতী ধর্ম নির্বিশেষে সাই বাবা কোটি কোটি মানুষের আরাধ্য|

এই মহান সাধককে প্রণাম জানিয়ে শেষ করছি আজকের পর্ব|ফিরবি আগামী পর্বে|আপাতত অনলাইনে ছাড়াও বারাসাতের গৃহ মন্দিরে ও গড়িয়া চেম্বারে আমি নিয়মিত জ্যোতিষ পরামর্শ ও ভাগ্যবিচার করছি যারা যোগাযোগ করছেন তারা নির্দ্বিধায় উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|