কোলকাতার কালী পর্ব গুলির মধ্যে কলকাতা ও জেলার প্রসিদ্ধ কালী মন্দির গুলির কয়েকটির কথা আমি ইতিমধ্যে আপনাদের বলেছি।আজকের পরবে কোলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় একটি কালী মন্দির নিয়ে লিখবো যা আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।আজ সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির।
উত্তর কোলকাতার কুমোরটুলির কাছাকাছি ৫১২ রবীন্দ্র সরণিতেই প্রতিষ্ঠিত দেবী সিদ্ধেশ্বরী। এই মন্দিরের প্রথম প্রতিষ্ঠার সাল তারিখ আজও অন্ধকারে তবে অসংখ্য অলৌকিক কাহিনী ও জনশ্রুতি জড়িয়ে আছে বাগবাজারের দেবী সিদ্ধেশ্বরী কালীকে নিয়ে যার কিছু আজ আমি আপনাদের শোনাবো।
সে অনেক কাল আগের কথা । আজকের বারাকপুর তথা অতীতের চণক থেকে ভাগ্যের খোঁজে সুতানুটিতে এলেন গোবিন্দরাম মিত্র। বসতি গাড়লেন কুমোরটুলিতে। ভাগ্যের চাকা ঘুরল। পরিশ্রম ও কর্মদক্ষতায় সাহেব জমিদারের সহকারী হলেন গবিন্দ রাম মিত্র মশাই। ১৭২০-১৭৫৩ সাল পর্যন্ত ওই পদে থেকে উপার্জন করলেন অগাধ ধনরত্ন ও অর্থ। বাগবাজারের মন্দিরটি তিনি নির্মাণ করলেন ১৭৩০ ও মতান্তরে ১৭৩২ সালে।
মন্দিরে স্থাপিত দেবী মূর্তিটি মৃন্ময়ী। আয়ত নয়ন। প্রায় সাধারণ মানুষের উচ্চতা। দেবীর বাম চরণের দিকে সম্পূর্ণ দিগম্বর শ্বেত মহাদেবের মাথা। অনাড়ম্বর দেবী বিবস্ত্রা নন, বসনে দেবী নয়নাভিরাম।
শোনা যায় । একসময় এই মন্দিরের দুয়ারে এসে আকুল আকুতি জানিয়ে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, ‘ওরে এই মা সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। তোদের যা যা কামনা তাই তিনি পূর্ণ করতে পারেন’। ব্রাহ্ম সমাজের কেশবচন্দ্র সেন একবার বেশ অসুস্থ হলেন। এ কথা জানতে পেরে রোগমুক্তির কামনায় পরমহংসদেব বাগবাজারে সিদ্ধেশ্বরীর কাছে মানত করেছিলেন ডাব আর চিনি।
একটি জনশ্রুতি অনুসারে একসময় হিমালয়ের গিরি কন্দরে তপস্যারত কালীবর নামে এক সন্ন্যাসী দেবী কালিকার প্রত্যাদেশ পেলেন। হিমালয় ছেড়ে এসে সাধন আসন স্থাপন করলেন সুতানুটির বেত আর হোগলা বনে। তিনিই প্রথম ওই স্থানে দেবী সিদ্ধেশ্বরীকে প্রতিষ্ঠিত করেন। শোনা যায় । কোম্পানির আমলেও সন্ন্যাসী কালীবর প্রতিষ্ঠিত দেবী কালিকার সামনে দেওয়া হত নরবলি। সেসব এখন অতিত তবে দেবীর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভক্তি আজও অটুট আছে। আজও বিশেষ তিথিতে , বিশেষ পূজা উপলক্ষে বহু মানুষের ভীর হয় এই মন্দিরে।
আজকের পর্ব এখনেই শেষ করছি । ফিরবো নতুন পর্বে। যোগাযোগ করুন জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্য। ভালো থাকুন ধন্যবাদ।