Home Blog Page 131

বাংলার কালী – জোড়া কালী মন্দির

আরে কয়েকটি দিন পরেই ফলহারিণী কালী পূজা, ইতিমধ্যে ফল হারিনী অমাবস্যার মাহাত্ম নিয়ে বেশ কয়েকটি উপস্থাপনা আমি আপনাদের সামনে এনেছি, আগামী দিনে এই তিথীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ও জ্যোতিষ এবং তন্ত্র জগতের সাথে এই অমাবস্যার গভীর সম্পর্ক নিয়ে আরো অনেক কথাই বলবো|এই সময়টা কালী কথা বা কালী তত্ব নিয়ে আলোচনা করার শ্রেষ্ঠ সময় তাই এই পরম্পরা বজায় রেখে আজকের বাংলার কালীতে এক অদ্ভুত এবং ব্যাতিক্রমী কালী মন্দির নিয়ে লিখবো, জানবো এমন একটি মন্দিরের কথা যেখানে একটি নয় একটি নয় একসাথে দুটি কালী মূর্তির পুজো হয়|

বর্ধমানের কাটোয়ায় রয়েছে এই প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন জোড়া কালী মন্দির|শুরুতে অবশ্য একটি মূর্তির পুজো হতো এবং কেনো ও কিভাবে এই জোড়া কালী একসাথে দুটি কালী মূর্তির পুজো শুরু হয় তা জানতে গেলে বাংলার ইতিহাসের একটি বিশেষ অধ্যায় জানতে হবে|

বাংলার মসনদে তখন নবাব সিরাজ উদ দৌলা, পার্বতীচরণ শর্মা ছিলেন বাংলার নবাব সিরাজদৌলার উচ্চপদস্থ কর্মচারী। নবাব তাঁকে এই অঞ্চলের জমিদার হিসাবে নিযুক্ত করেন এই বংশেরই এক সদস্যর হাতেই শুরু হয়েছিলো এই কালী পুজো|পরবর্তীতে পরিবার ভাগ হওয়ার পর পারিবারিক অশান্তির জেরে একবছর পৃথকভাবে এক সদস্য কালীপুজো শুরু করেন, তবে তার ফল একেবারেই ভালো হয়নি, সেবছর পরিবারে নাকি কিছু ভয়ঙ্কর বিপদ হয়েছিল এবং কিছুকাল পরে দেবী স্বপ্নাদেশে নাকি জানিয়েছিলেন একই বেদিতে জোড়া প্রতিমার পুজো করতে হবে। তখন থেকেই একই মন্দিরে জোড়া প্রতিমার পুজো হয়ে আসছে|

এক কালে এই পুজোয় বলি প্রথা চালু থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে বৈষ্ণব মতে পুজো শুরু হয়, এই নিয়েও আছে এক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ|
শোনা যায় প্রায় ৩০০ বছর আগে কালীপুজোয় রাতে বলিদান হয়েছিল। সেই মাংস বলী প্রদত্ত মাংস পরের দিন রান্না করে সকলে যখন ভোজ খাচ্ছিলেন তখন মাংসে রহস্যজনক কটু গন্ধ পাওয়া যায়। পুরোহিত তখন পরামর্শ দিয়েছিলেন, মায়ের পুজোয় প্রাণীহত্যা বন্ধ করতে। সেই থেকে বলিদান প্রথা বন্ধ হয়ে যায় এই পুজোয়|

বর্তমানে বাংলার আর কোথাও এক সাথে এই রূপ জোড়া কালী মূর্তির পুজো সেই ভাবে লখ্য করা যায়না|প্রতিটি বিশেষ তিথীতে এখানে ধুমধাম করেই পুজো হয়। আশপাশের গ্রামের মানুষ এই জোড়া কালীর পুজোয় অংশ নেন। সকলেই জাগ্রতা দেবী হিসাবে মানেন জোড়া কালীকে|দেবী বেশ অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও বহু মানুষ তার কাছে আসেন মনোস্কামনা নিয়ে|

আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো এমন কোনো কালী মন্দিরের কথা নিয়ে|দেখতে থাকুন আমার ইউটিউব এবং টিভির অনুষ্ঠান ও যেকনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যানিয়ে আমার সাথে কথা বলতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

বর্ধমানের কাটোয়ায় রয়েছে এই প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন জোড়া কালী মন্দির|শুরুতে অবশ্য একটি মূর্তির পুজো হতো এবং কেনো ও কিভাবে এই জোড়া কালী একসাথে দুটি কালী মূর্তির পুজো শুরু হয় তা জানতে গেলে বাংলার ইতিহাসের একটি বিশেষ অধ্যায় জানতে হবে|

বাংলার মসনদে তখন নবাব সিরাজ উদ দৌলা, পার্বতীচরণ শর্মা ছিলেন বাংলার নবাব সিরাজদৌলার উচ্চপদস্থ কর্মচারী। নবাব তাঁকে এই অঞ্চলের জমিদার হিসাবে নিযুক্ত করেন এই বংশেরই এক সদস্যর হাতেই শুরু হয়েছিলো এই কালী পুজো|পরবর্তীতে পরিবার ভাগ হওয়ার পর পারিবারিক অশান্তির জেরে একবছর পৃথকভাবে এক সদস্য কালীপুজো শুরু করেন, তবে তার ফল একেবারেই ভালো হয়নি, সেবছর পরিবারে নাকি কিছু ভয়ঙ্কর বিপদ হয়েছিল এবং কিছুকাল পরে দেবী স্বপ্নাদেশে নাকি জানিয়েছিলেন একই বেদিতে জোড়া প্রতিমার পুজো করতে হবে। তখন থেকেই একই মন্দিরে জোড়া প্রতিমার পুজো হয়ে আসছে|

এক কালে এই পুজোয় বলি প্রথা চালু থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে বৈষ্ণব মতে পুজো শুরু হয়, এই নিয়েও আছে এক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ|
শোনা যায় প্রায় ৩০০ বছর আগে কালীপুজোয় রাতে বলিদান হয়েছিল। সেই মাংস বলী প্রদত্ত মাংস পরের দিন রান্না করে সকলে যখন ভোজ খাচ্ছিলেন তখন মাংসে রহস্যজনক কটু গন্ধ পাওয়া যায়। পুরোহিত তখন পরামর্শ দিয়েছিলেন, মায়ের পুজোয় প্রাণীহত্যা বন্ধ করতে। সেই থেকে বলিদান প্রথা বন্ধ হয়ে যায় এই পুজোয়|

বর্তমানে বাংলার আর কোথাও এক সাথে এই রূপ জোড়া কালী মূর্তির পুজো সেই ভাবে লখ্য করা যায়না|প্রতিটি বিশেষ তিথীতে এখানে ধুমধাম করেই পুজো হয়। আশপাশের গ্রামের মানুষ এই জোড়া কালীর পুজোয় অংশ নেন। সকলেই জাগ্রতা দেবী হিসাবে মানেন জোড়া কালীকে|দেবী বেশ অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও বহু মানুষ তার কাছে আসেন মনোস্কামনা নিয়ে|

আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো এমন কোনো কালী মন্দিরের কথা নিয়ে|দেখতে থাকুন আমার ইউটিউব এবং টিভির অনুষ্ঠান ও যেকনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যানিয়ে আমার সাথে কথা বলতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

বাংলার কালী – বড়ো কালী

বাংলার বিভিন্ন স্থানে অনেক সুউচ্চ কালী মন্দির বা বিশালআকার কালী মূর্তি থাকলেও আজও বড়ো কালী বলতে অনেকেই বর্ধমানের কালনার ভট্টাচার্য পরিবার কতৃক স্থাপিত একটি বিশেষ কালী মূর্তির কথাই বোঝান|অনেক রহস্য ময় ঘটনা ও জনশ্রুতি সৃষ্টি হয়েছে এই প্রাচীন কালী মন্দিরকে কেন্দ্র করে|আজকের পর্বে কালনার এই প্রসিদ্ধ এবং জাগ্রত বড়ো কালীর কথা লিখবো|

ব্রিটিশ আমলে এই কালী মন্দির তৈরি হয়, আনুমানিক ভাবে বড়কালীর পুজো অন্তত ৪০০ বছরের প্রাচীন|৪০০ বছর আগে হোগলা পাতার ছাউনি দেওয়া মাটির মন্দিরে শুরু হয়েছিল পুজো|পরবর্তীতে স্থানীয় ভট্টাচার্য পরিবারের প্রচেষ্টায় তৈরি হয় পাকা মন্দির আজও বংশ পরম্পরায় তারাই বড়োকালীর পুজোর সমস্ত দায়িত্ব নিষ্ঠা সহকারে পালন করে আসছেন|দেবী হয়ে উঠেছেন তাদের পারিবারিক কুলদেবী|এলাকাও আজ পরিচিত বড়োকালী তলা নামে|

এবার একটি অলৌকিক ঘটনার কথা বলি,এখানে দেবীর পায়ে নূপুর থাকার জন্য পুজোর দায়িত্বে থাকা পরিবারের কারও নূপুর পরা বা নূপুর উপহার দেওয়া নিষিদ্ধ। কথিত আছে, একবার সেই রীতি ভেঙে পরিবারের এক মহিলা নুপুর পড়েছিলেন আশ্চর্য জনক ভাবে ওই দিনই সন্ধ্যাবেলায় সর্পদষ্ট হন তিনি পরে অবশ্য দেবীর কৃপায় প্রানে বাঁচেন তিনি|

আরেকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়, শোনা যায় একবার এলাকারই অন্য এক পরিবার বড়কালীর চেয়ে বেশি উচ্চতার প্রতিমা বানাবে বলে মাপ চুরি করে নিয়ে যায়। কিন্তু ভাগীরথীর ঘাটে বিসর্জনের সময়ে দেখা যায়, বড়কালীর উচ্চতাই সবথেকে বেশি|

এই কালী মন্দিরের পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট মশাল|এক সময়ে এলাকায় ছিল ঘন বন। ছিলো ডাকাত,আনাগোনা ছিল বাঘেরও। বাঘের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অমাবস্যার রাতে দু’টি মশাল জ্বালিয়ে রাখা হত পুজোর সময়। সেই রীতি মেনে আজও পুজোর সময় দু’টি মশাল জ্বালিয়ে রাখা হয়|

বাংলার তথা জেলার বিখ্যাত এই কালী মন্দিরে একাধিক সময়ে একাধিক বিখ্যাত মাতৃ সাধক এসেছেন যাদের মধ্যে রয়েছেন সাধক রামকৃষ্ণ,আনন্দ ময়ী মা, ভবা পাগলা ও ওমকার নাথের মতো ব্যাক্তিত্বরা|

আজ এখানেই থামছি,তবে কালী নিয়ে লেখা চলবে কারন সামনেই ফলহারিনী অমাবস্যা|তন্ত্র ও জ্যোতিষ জগতের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে ও এই সময় অত্যান্ত তাৎপর্য পূর্ণ|জানিয়ে রাখি প্রতিবারের ন্যায় এবারও আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের বিশেষ পূজা হোম যজ্ঞ ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের সব ব্যবস্থা থাকবে|সেই সংক্রান্ত সব খবর পেতে ও জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন| ধন্যবাদ|

বুদ্ধ পূর্ণিমা

আজ দিনটি অতি পবিত্র, আজ বুদ্ধ পূর্ণিমা, ভগবান বুদ্ধ এই বিশেষ দিনটিতে জন্ম গ্রহন করেছিলেন সেই থেকে প্রতি বছর বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় “বুদ্ধ পূর্ণিমা ” আজ এই উৎসব শুধু বৌদ্ধ দের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই সারা বিশ্বের শান্তি প্ৰিয় ও আধ্যাত্মিক চেতনা সম্পন্ন মানুষের কাছে একটি বিশেষ দিন |

“বুদ্ধং স্মরণং গচ্ছামি “

এই মন্ত্র আজ আর শুধু একটি ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, আজ এই শ্লোক বিশ্ব বাসির মুক্তির স্লোগানে পরিণত হয়েছে, এবং তা হয়েছে বুদ্ধের ত্যাগ ও আধ্যাত্মিক চেতনা কে সামনে রেখে|

আজ গোটা পৃথিবী যে রক্তাক্ত ও হিংস্র সময়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আরো দিন দিন আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন ভগবান বুদ্ধ ও জীবন দর্শন, কিন্তু কি সেই মহান জীবন দর্শন আর কি বা ভগবান বুদ্ধের স্বরূপ? এসব জানার ও অনুভব করার জন্য আজকের দিনটি শ্রেষ্ঠ দিন|

নেপালের লুম্বিনী তে শুদ্ধধোন ও মায়াদেবীর সন্তান হিসেবে জন্মে ছিলেন সিদ্ধার্থ |যৌবনে রাজকুমারী যশোধরা দেবীর সাথে বিবাহ হয় সিদ্ধার্থর এক পুত্র ও হয়, নাম রাহুল |কিন্তু তিনি তো সংসার করতে আসেননি তিনি বুদ্ধ, তিনি আবির্ভুত হয়েছিলেন মানুষ কে সংসারের যাবতীয় দুক্ষ, কষ্ট ও মায়া থেকে মুক্তি দিয়ে মহানির্বানের পথ দেখাতে |

একবার রাজকুমার সিদ্ধার্থ প্রাসাদ থেকে ভ্রমণে বেরোলে, প্রথমে দেখলেন একজন বৃদ্ধ মানুষ তারপর একজন অসুস্থ মানুষ শেষে একজন মৃত মানুষ ও এই সবের পর এক সন্ন্যাসীকে দেখতে পান। এই দিন জীবনের এক চরম সত্য উপলব্ধি করলেন সিদ্ধার্থ, ভোগের রাস্তা ত্যাগ করে বেড়িয়ে পড়লেন ত্যাগের পথে, মুক্তির পথে এবং কঠোর সাধনার পর অবশেষে সিদ্ধি লাভ অর্থাৎ তার বুদ্ধ হয়ে ওঠা এবং বিশ্ববাসীকে মুক্তির পথ দেখানো যে পথে আজ হাটছে কোটি কোটি মানুষ |

বৈষ্ণব মতে বুদ্ধ আবার ভগবানের নবম অবতার মনে করা হয় বেদ অমান্য কারীদের ভিন্ন পথ প্রদর্শন করতে ও প্রানী হত্যা বন্ধ করতে তিনি আবির্ভূত হয়ে ছিলেন |যদিও এই মতবাদ নিয়ে কিছু ভিন্ন মতও আছে |সে বিতর্ক আজ থাক|

শুধু জন্ম নয় আজকের এই বিশেষ তিথিতে সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে ছিলেন গৌতম বুদ্ধ,আজও সারা পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ বিশেষ ভাবে পালন করে এই দিনটা |বৌদ্ধ মঠ গুলিতে সন্ন্যাসীরা প্রদীপ জ্বালিয়ে সমবেত ভাবে বিশেষ প্রার্থনা করেন |এই বিশেষ তিথি বৈশাখী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত|

সবাইকে বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা 

বাংলার কালী- কৃপাময়ী কালী মন্দির

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আজকের পর্বে আপনাদের এক ঐতিহাসিক কালী মন্দিরের কথা বলবো, মুর্শিদাবাদের কাসিম বাজারে রয়েছে এই কালী মন্দির যা কৃপাময়ী কালী মন্দির নামেই প্রসিদ্ধ, এই মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, রয়েছে বাংলার ডাকাতদের গল্প|

কাসিম বাজারের রাজা রাজা মণিন্দ্র চন্দ্র উদ্যোগী হয়ে এই আজকের এই মন্দির তৈরি করেন প্রায় দুশো বছর আগে|এককালে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই মন্দিরে গোপন আস্তানা তৈরি করেছিলেন। শোনা যায় নেতাজিও এখানে আসতেন এখানে|শোনা যায় এই মন্দির হয়ে ওঠে স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের গোপন ডেরা। আর মন্দিরে অন্য কেউ না এলেও পুরোহিতরা রোজ আসতেন। কিন্তু তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পূর্ণ সহযোগিতা করতেন এখানে লুকিয়ে থাকতে|

এক সময় এই এলাকা ডাকাতদের জন্যে কুখ্যাত ছিলো, কথিত আছে একবার মন্দিরে ডাকাতি করে পালানোর সময় হঠাৎ কাঁসার বাসন পড়ে যায়। সেই সময় অলৌকিক ভাবে সেবাইত পরিবারের এক সদস্যও স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন মন্দিরে ডাকাতি হচ্ছে তিনি ছুটে আসেন তিনি গুলি করে এক ডাকাতকে মেরে ফেলেন। ডাকাতরা নাকি মূর্তির গা থেকে গয়না খোলার সময় মায়ের একটি পা ভেঙে ফেলে। পরে বারাণসী থেকে আবার কষ্ঠিপাথর নতুন মুর্তি
নিয়ে আসা হয়।

মুর্শিদাবাদের অত্যন্ত জাগ্রত দেবী আনন্দময়ী করুণাময়ী ও কৃপাময়ী তার দুই বোন|আজও প্রতিটি বিশেষ তিথীতে অসংখ্য মানুষ আসেন কৃপাময়ী কালী মন্দিরের|কথিত আছে দেবী কাউকে খালি হাতে ফেরান না|আজ এখানে শেষ করলাম,ভালো থাকুন জ্যোতিষ ও তন্ত্র সংক্রান্ত প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নম্বরে এবং যুক্ত হন মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

বাংলার কালী – বোল্লা কালী মন্দির

একটি প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি , সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনের পাশাপাশি এই প্রতিকূলতার প্রভাব পড়েছে আমাদের আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রেও কারন তারাপীঠ, কামাখ্যা সহ দেশের প্রায় সব মন্দিরই বন্ধ|আবার সামনেই ফলহারিনী অমাবস্যা,এই সময় জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতে একটি বিশেষ সময়, আপনাদের জানিয়ে রাখি বিগত বছরের ন্যায় এবছরও আপনাদের হৃদয়েশ্বরী মা সর্বমঙ্গলার মন্দিরে অমাবস্যা উপলক্ষে বিশেষ পুজো, হোম যজ্ঞ ও গ্রহ দোষ খণ্ডনের ব্যবস্থা থাকছে,সেই সংক্রান্ত তোড়জোড় নিয়ে এখন থেকেই কিছুটা ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি|তার ফাঁকেই আজ বাংলার একটি অন্যতম জাগ্রত ও বিখ্যাত কালী মন্দিরের কথা আপনাদের বলবো|আজকের পর্বে বোল্লা কালী মন্দির|

বোল্লা কালীমন্দির আমাদের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি বিখ্যাত কালী মন্দির। বালুরঘাট শহর থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব মাত্র কুড়ি কিলোমিটার|মন্দিরটি দক্ষিণ দিনাজ পুরের বোল্লা গ্রামে অবস্থিত এবং মূলত গ্রামের নাম থেকেই বোল্লা কালী মন্দিরের নামকরণ|

আজ থেকে চারশো বছর এই অঞ্চলের জমিদার ছিলেন বল্লভ চৌধুরি|তার নাম অনুসারেই এলাকার নাম হয়েছে বোল্লা|মন্দির প্রতিষ্ঠার সাথেও জড়িয়ে আছে এক অলৌকিক ঘটনা|কথিত আছে একবার স্থানীয় জমিদার মুরারী মোহন চৌধুরি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে যান। তারপর তিনি বোল্লা মায়ের কাছে মানত করে মামলায় জয় লাভ করেন শোনা যায় দেবী কালি স্বয়ং তার উদ্ধারের জন্য এসেছিলেন এবং পরবর্তী দিনই জমিদার মুক্তি পেয়েছিলেন|কৃতজ্ঞতার প্রতীক হিসাবে তিনি দেবী কালির একটি সুদৃশ্য মন্দির নির্মাণ করেছিলেন|

যদিও অনেক আগে থেকেই এখানে কালী পুজোর প্রচলন ছিলো|বহুকাল আগে এখানে এক মহিলা স্বপ্নাদেশে একটি কালো পাথরখণ্ড কুড়িয়ে পেয়ে সেটিকে প্রথম মাতৃরূপে পুজো শুরু করেছিলেন|

কথিত আছে একবার এই এলাকায় পরপর ডাকাতের অত্যাচার শুরু হয়, বোল্লাকালী তখন রুদ্রমূর্তি ধারণ করে বাসিন্দাদের রক্ষা করেন।

বর্তমানে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে দক্ষিণ বোল্লা কালী মন্দিরে পুজো ও বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হয়|সমগ্র উত্তর বঙ্গ সহ বাংলা দেশ থেকেও বহু মানুষ আসেন মা বোল্লা কালীর দর্শন করতে ও তার পুজোয় অংশ নিতে|জনশ্রুতি অনুসারে, দেবী অত্যন্ত জাগ্রত ও তার কাছে নিবেদিত প্রতিটি মনোস্কামনা তিনি পূর্ণ করেন|

অন্তরে আস্থা ও শ্রদ্ধা থাকলে মা কাউকে খালি হাতে ফেরান না, এ আমি একজন সর্বমঙ্গলা মায়ের উপাসক হিসেবে নিজের বহুবার ব্যাক্তিগত ভাবে অনুভব করেছি, সাক্ষী থেকেছি বহু অলৌকিক অভিজ্ঞতার|মাকে ডাকুন তিনিই পারেন আমাদের সব বিপদ থেকে রক্ষা করতে|জ্যোতিষ সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে চাইলে উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে নেবেন|ভালো থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

বাংলার কালী – গোকনা কালী মন্দির

আর কিছুদিন পরেই ফলহারিনী অমাবস্যা,কালী সাধনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়|তন্ত্র ও জ্যোতিষ জগতেও এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ|এই আসন্ন অমাবস্যা উপলক্ষে আপাতত বাংলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত আরো কিছু প্রসিদ্ধ ও জাগ্রত কালী মন্দিরের জানা অজানা নানান ঐতিহাসিক কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ঠিক করেছি একেকটি পর্বে|আজ উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটে অবস্থিত গোকনা কালী মন্দির ও মা ভবানীর কথা লিখবো|

এখানে দেবী কালী কে মা ভবানী রূপে পুজো করা হয় এবং পুজো চলে আসছে আনুমানিক পাঁচশো বছর ধরে|এক কালে এই অঞ্চলে ছিল ডাকাতের রাজত্ব, অরণ্যে ঢাকা এই অঞ্চলে দিনের বেলাতেও সূর্যের আলো নাকি ঠিক মতো প্রবেশ করতো না|
কথিত আছে ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে মা ভবানী’র কাছে প্রার্থনা করত দস্যুরা|

এক কালে মাটির মন্দিরে মা ভবানী প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, কথিত আছে যে, ধান্যকুড়িয়ার জমিদার মহেন্দ্রনাথ গাইনের ছেলে মরণাপন্ন হলে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি এই মন্দিরে আসেন ও ছেলের প্রান ভিক্ষা করেন, মায়ের আশীর্বাদে জমিদারের ছেলে পুনর্জীবন লাভ করেন। এর ফলে জমিদার মহেন্দ্রনাথ গাইন পাকা গাঁথুনির মন্দির নির্মাণ করে দেন|মায়ের কৃষ্ণ বর্ণের পাথরের মূর্তি চতুর্দোলায় করে আনানো হয় কাশি থেকে|

মন্দিরের পেছনে রয়েছে একটি প্রাচীন পুকুর, শোনা যায় ডাকাতরা এই মন্দিরের পেছনের পুকুরে ডুব দিয়ে মা ভবানীর পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত এক কালে|মূল মন্দিরে মা ভবানীর
সাথে শিলা খণ্ড রূপে পূজিত হন বৈদ্যনাথ, মানেশ্বর ও পঞ্চানন|অলৌকিক ভাবে এক গ্রামবাসীর চাষ জমিতে লাঙ্গলের ফলায় মাটি খুঁড়তেই পাওয়া যাওয়া এই তিনটি শিলাখণ্ড তারপর তাদের মন্দিরে এনে শাস্ত্র মতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়|

শুধু উত্তর চব্বিশ পরগনা নয়, সারা বাংলায় এই প্রাচীন কালী মন্দির অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং জাগ্রত, বহু মানুষের বিশ্বাস জড়িয়ে আছে এই মন্দিরের সাথে|দীপান্বিতা অমাবস্যার কালী পুজোয় বিরাট আকারে পুজোর আয়োজন হয় এখানে এছাড়া প্রায় প্রতিটি বিশেষ তিথিতেই বিশেষ পুজো হয়|

আগামী ফল হারিনী অমাবস্যা উপলক্ষে আপাতত একের পর এক এমন সব প্রাচীন কালী মন্দিরের কথা লিখতে থাকবো পর্বে পর্বে|বাড়িতে থাকুন, পড়তে থাকুন|ইউটিউব চ্যানেলেও থাকবে বিশেষ কিছু অনুষ্ঠান|দেখতে ভুলবেন না|আর যারা ঘরে বসে জ্যোতিষ পরামর্শ চান, ভাগ্যগণনা চান, উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে নেবেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

বাংলার কালী – রমনা কালী মন্দির

আর কিছুকাল পরেই ফল হারিনী অমাবস্যা|জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তিথি গুলির অন্যতম|এই সময় প্রতি বছর পেশাগত ব্যাস্ততা তুঙ্গে থাকে, এবছর ও ব্যাতিক্রম নয়, তবে কাজের ধরণ পাল্টেছে,এখন দিনের বেশি ভাগ সময় কাটে অনলাইনে,ফোনে বা ভিডিও কলে ভাগ্যগণনা করে|আর তার ফাঁকে যেটুকু অবসর তা পড়াশোনা, মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা পূজার্চনা এবং লেখা লেখি করেই কাটে|আজ লিখবো ওপার বাংলা তথা এই উপমহাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ কালী মন্দির গুলির একটি, রমনা কালী মন্দির নিয়ে|

বাংলা দেশের ঢাকায় অবস্থিত রমনা কালী মন্দির যে ঠিক কতো পুরোনো এবং ঠিক কে ও কবে স্থাপন করেছিলেন তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল|এই মন্দির নতুন করে প্রচারে আসে ব্রিটিশ আমলে কারন ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি আবার নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল|স্থানীয় অঞ্চলের নাম থেকেই মন্দিরের নামকরণ|

এই মন্দিরের সংগে দুটি নাম ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে, এক বদরীনাথের যোশীমঠ থেকে গোপালগিরি নামে এক উচ্চমার্গের সন্ন্যাসী ও দ্বিতীয় ভাওয়ালের ভক্তিমতী ও দানশীলা রানি বিলাসমণি দেবী|কথিত আছে ঢাকায় এসে সাধন ভজনের জন্য উপযুক্ত একটি আখড়া হিসাবে এই মন্দির গড়ে তোলেন।পরবর্তীতে তার অবর্তমানে তৎকালীন কালীমন্দিরটির সংস্কার করেন আর এক সাধু হরিচরণ গিরি|পরবর্তী সময়ে এই মন্দিরের প্রধান সংস্কারকার্য ভাওয়ালের রানি বিলাসমণি দেবীর আমলেই হয় তিনি ছিলেন অত্যান্ত ভক্তিমতি ও দানশীলা|

এই মন্দিরের ইতিহাসের সাথে জড়িত আছে বাংলা দেশের মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস|যুদ্ধে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই মন্দির|শোনা যায় এককালে একশো কুড়ি ফুট উচ্চতা ছিলো এই মন্দিরের চুড়ো যা বহু দূর থেকে দেখা যেতো|যুদ্ধের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই স্থাপত্য|পরবর্তীতে অবশ্য ভক্ত দের চেষ্টায় ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় মন্দির সংস্কার করে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দেয়া হয়|

বর্তমানে জগৎ প্রসিদ্ধ কালী মূর্তি ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো, দুর্গা মন্দির ও রাধা মাধব মন্দির|মূল কালী মন্দিরে পাথরের বেদির ওপর বিরাজিত রয়েছে শ্রীশ্রী ভদ্রকালীর সুউচ্চ প্রতিমা|দেবীর রূপ চতুর্ভুজা তিনি মহাদেবের শয়ান মূর্তির ওপর দণ্ডায়মান এবং তার দু’পাশে রয়েছে ডাকিনী ও যোগিনী|

প্রতিটি বিশেষ তিথিতেই এখানে বিশেষ পুজো হয় যা দেখতে ও দেবীর আশীর্বাদ নিতে আসেন দেশ বিদেশের বহু মানুষ|আজ বিদায় নিলাম|ফিরবো পরের পর্বে|যারা আমার সাথে জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বা বাস্তু বিষয়ে আলোচনা ও পরামর্শর জন্যে যোগাযোগ করছেন বা করতে চান উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

শক্তিপীঠ – মেলাই চন্ডী

লেখা লেখি নিয়ে প্রায় নিয়মিত আপনাদের সামনে এলেও বহুদিন কোনো শক্তিপীঠ নিয়ে লেখা হয়নি,তাই আজ ঠিক করলাম বাংলারই একটি তথাকথিত কম জনপ্রিয় কিন্তু অত্যান্ত জাগ্রত ও তাৎপর্যপূর্ণ শক্তি পীঠ নিয়ে লিখবো, আজকের পর্বে বিতর্কিত শক্তি পীঠ মেলাই চন্ডী|

শুরুতেই এই শক্তিপীঠ কে বিতর্কিত বললাম তার
কারন এই পীঠ সর্বজন স্বীকৃত নয় অর্থাৎ পীঠ নির্ণয় তন্ত্রে এই পীঠকে শক্তিপীঠের মর্যাদা দেয়া হয়নি তবে অন্য কিছু প্রাচীন শাস্ত্রে মেলাই চন্ডীকে পীঠ হিসাবেই দেখানো হয়েছে|১৫৭৭ খ্রিস্টাব্দে রচিত কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কাব্যে আমতার মেলাইচণ্ডীর উল্লেখ পাওয়া যায়।

যারা বিশ্বাস করেন এটি শক্তিপীঠ তারা মনে করেন দেবী সতীর হাঁটুর মালাইচাকী পতিত হয়ে ছিলো এই স্থানে এবং সেই কারনেই এই পীঠ মালাই চন্ডী নামে পরিচিত|

আরেকটি ভিন্ন মত অনুসারে এই প্রাচীন দেবী মন্দির ও তার পুজো কে কেন্দ্র করে এক কালে বিরাট মেলা বসতো এই অঞ্চলে এবং দেবী এখানে চন্ডী রূপে পূজিতা তাই বহু মানুষের মিলন স্থল এই চন্ডী মন্দির লোক মুখে হয়ে ওঠে মেলাইচন্ডীর মন্দির|

প্রচলিত গল্প অনুসারে, দামোদর দিয়ে যেসব সওদাগর যাতায়াত করতেন, তাঁরাই মেলাইচণ্ডীকে স্থাপন করেন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে। পরে জটাধারী চক্রবর্তী নামের এক ব্রাহ্মণ স্বপ্নাদেশ পেয়ে জয়ন্তী গ্রাম থেকে প্রস্তররূপী দেবীকে আমতায় নিয়ে আসেন এবং দেবীকে স্থাপন করেন।

পরবর্তীতে কলকাতার হাটখোলার নামকরা লবন ব্যবসায়ী কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত স্বপ্নাদেশ পেয়ে মেলাইচণ্ডী মন্দির নির্মাণ করে দেন|বর্তমানে যে মন্দির দেখা যায় ১৩০৯ সালে সেই মন্দিরের সংস্কার হয়েছে নব রূপে,মূল মন্দিরের মাঝখানে চাতাল ও উঁচু বেদিযুক্ত দুর্গা মণ্ডপ। একটু ঢুকে উপাসনা গৃহ|এই মন্দিরে দেবীর সম্পূর্ণ রূপ নেই। মুখ মন্ডল মালাইচাকির ওপর ভিত্তি করে তৈরি|দেবীর বাহু ও পদযুগল নেই|মূলত একটি গোলাকৃতি প্রস্তর খণ্ড এখানে পূজিতা হয়|এছাড়া বিশেষ বিশেষ তিথিতে ঘট হিসেবে দেবীকে পুজোর রীতিও রয়েছে|

প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন মালাই চন্ডীতে প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয় এবং দুর্গোপুজার সময় এখানে মহোৎসব হয়। দেবী এখানে দুর্গা ও চণ্ডী উভয় রূপেই পুজিত হন। দেবীর সঙ্গে তার ভৈরবকেও পুজা করা হয় নিষ্ঠা সহকারে|পুজো উপলক্ষে অসংখ্য মানুষের জমায়েত হয় এই পবিত্র মন্দির প্রাঙ্গনে|

মা মালাই চন্ডী কে প্রনাম জানিয়ে আজকের লেখা শেষ করলাম|আপাতত চেম্বারের ব্যাস্ততা নেই, অনলাইনেই জ্যোতিষ পরামর্শ দেয়া চলছে,তাই যেটুকু অবসর পাওয়া যায় তা কাজে লাগিয়ে আবার কোনো নতুন পর্ব নিয়ে ফিরে আসবো আপনাদের সামনে|ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ধন্যবাদ| 

বাংলার কালী – মা ঝিংলেস্বরী

বাংলার প্রায় প্রতিটি জেলায় রয়েছে কিছু প্রাচীন কালী মন্দির যা নিয়ে প্রচলিত রয়েছে অদ্ভুত সব কিংবদন্তি এবং অলৌকিক জনশ্রুতি, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রাচীন কালী মন্দিরের কথা আপনাদের বলেছি, আজ বলবো পূর্ব মেদিনীপুরে অবস্থিত ঝিংলেস্বরী মায়ের মন্দিরের কথা|

পূর্ব মেদিনীপুরের ভবানীপুর নামক স্থানে রয়েছে এই প্রাচীন মন্দির যা কোনো শক্তি পীঠ না হয়েও স্থানীয়দের কাছে বিশেষ শ্রদ্ধার এবং অত্যন্ত প্রসিদ্ধ|

কথিত আছে আগে এই স্থান দিয়ে বয়ে যেতো হলদি নদী, নদীতে যাতায়াত করতো বিরাট বিরাট জাহাজ, একবার এমনই একটি জাহাজ নোঙর ফেলেছিলো এই স্থানে|জাহাজের নাবিকরা যখন ধূমপান করতে ব্যাস্ত তখন হটাৎ একটি মেয়ের আবির্ভাব হয় সেখানে, মেয়েটি নাবিকদের কাছে আগুন চায়|নাবিকরা মেয়েটিকে আগুন নিতে জাহাজে আসতে বলে|মেয়েটির রহস্যময়ী ভাবে হেসে বলে সে জাহাজে উঠলে বিপর্যয় ঘটতে পারে|নাবিকরা ছোট্ট মেয়েটির কথায় গুরুত্ব না দিলে অবশেষে মেয়েটিকে জাহাজে উঠতে হয়|মেয়েটি জাহাজে পা দেয়ার সাথে সাথে জাহাজ বসে যায় এবং মাস্তলে দেখা যায় দেবী মূর্তি|

এই অলৌকিক ঘটনা আজও লোকের মুখে শোনা যায়|মানুষের বিশ্বাস ওই স্থানেই নির্মিত হয়েছে এই প্রাচীন ঝিংলেস্বরী মন্দির|দেবী সেদিন বালিকার বেশে নাবিক দের জাহাজে উঠেছিলেন|আজও তিনি ঝিংলেস্বরী রূপে সেই স্থানে স্বমহিমায় বিরাজমান|

প্রাচীন মন্দিরটি ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিলো এবং কে নির্মাণ করেছিলেন তা সঠিক ভাবে জানা যায়না তবে পরবর্তীতে মহিষাদলের রাজা প্রচুর জমি দান করেন মন্দিরের উদ্দেশ্যে এবং মন্দিরের পূজার ভার অর্পণ করা হয় একটি বিশেষ পরিবারকে যে পরম্পরা আজও চলছে|দেবী এখানে উগ্রতারা রূপে বিরাজিতা|দূর্গা পুজো উপলক্ষে এখানে বহু মানুষের সমাগম হয় এবং নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়|

জানাবেন কেমন লাগছে আমার এই আধ্যাত্বিক লেখা লেখি|আগামী দিনে এমনই আরো কিছু প্রাচীন মন্দির ও দেবীর মহিমা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো|বাড়িতে থাকুন, জ্যোতিষ পরামর্শ হোক বা প্রতিকার, বাড়িতে থেকেই সম্ভব|শুধু ফোন করে নেবেন উল্লেখিত নাম্বারে বাস কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

শুভ অক্ষয় তৃতীয়া

মূলত তিনটি পৌরাণিক ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছে আজকের পবিত্র তিথি যাকে আমরা অক্ষয় তৃতীয়া রূপে পালন করে থাকি সারা দেশ জুড়ে|আজ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন আমি সেই তিনটি দিক একে একে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি যার মধ্যে লুকিয়ে আছে এই বিশেষ দিনটির তাৎপর্য|

প্রথমেই বলতে হয় ধন ও সম্পদের দেবতা কুবেরের কথা|কুবের হলেন দেবতাদের কোষাধক্ষ্য আবার সম্পর্কে তিনি রাবনের দূরসম্পর্কের ভাই|তাকে প্রতারিত করে লঙ্কা থেকে বিতাড়িত করেন রাবন এবং ছিনিয়ে নেন তার পুস্পক রথ, যে ব্যবহিত হয়েছিলো পরবর্তীতে রামায়নের সময়ে|অবশ্য কুবের হাল ছাড়েননি কঠোর তপস্যায় মহাদেবকে সন্তুষ্ট করে তিনি জগতের সমস্ত বৈভব ও ঐশ্বর্যর দেবতা হন|
পুরাণ মতে, এক অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই কুবেরকে তাঁর অনন্ত বৈভব দান করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব এবং দেব শিল্পী বিশ্বকর্মা কৈলাসের কাছে অলকায় কুবেরের প্রাসাদ তৈরি করে দেন যা অলোকাপুরী নামে খ্যাত|শুধু হিন্দু ধর্ম নয় বৌদ্ধ ধর্মেও ধন সম্পদের দেবতা হিসেবে পূজিত হন কুবের|

দ্বিতীয় যে কারনে অক্ষয় তৃতীয়া তাৎপর্যপূর্ণ তাহলো এই দিনই মহাভারত রচনা শুরু হয়ে ছিলো ব্যসদেব এই চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতেই মহাভারতের শ্লোক উচ্চারণ শুরু করেন আর গণেশ তা লিখতে শুরু করেন।মূলত এই কারনেই যে কোনও কাজ আরম্ভের জন্য এই দিনটিই প্রশস্ত বলে মনে করা হয়|

তৃতীয়ত বিষ্ণুর দশাবতারের ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের জন্ম চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে অর্থাৎ এই অক্ষয়তৃতীয়ার দিনে। এই কারণে দেশের কোনও কোনও জায়গায় দিনটি ‘পরশুরাম জয়ন্তী’ হিসেবেও পালিত হয়|

আমাদের বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে যেকোনো শুভ কাজ শুরু করা যেতে পারে আজকের দিনে|
আজকের দিনে সোনা রুপো বা মূল্যবান রত্ন ক্রয় করে গৃহে আনলে গৃহস্তের কল্যাণ হয় তাছাড়া আজ লক্ষী ও কুবেরের পুজোর মাধ্যমেও সৌভাগ্য লাভ করা যায়|যারা জ্যোতিষীর পরামর্শ বা প্রতিকার গ্রহণের কথা ভাবছেন তাদের জন্যেও এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ|শুভ হোক আপনাদের অক্ষয় তৃতীয়া|প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|