কালী কথা

542

পর্ব পাঁচ

সনাতন ধর্মে শক্তির দেবী হিসাবেই কালী পূজিত হন। এই কালী শব্দের ও অনেক অর্থ,কাল-কে যদি আলাদা করে নেওয়া হয় তাহলে কাল-এর একাধিক অর্থ বের হয়। কাল মানে সময়, আবার কাল তথা কৃষ্ণবর্ণ। কাল-এর অর্থ-এ লুকিয়ে আছে সংহার- বা মৃত্যু ভাবনাতেও। কালীকে কাল অর্থাৎ সময়ের জন্মদাত্রী বলা যেতে পারে, আবার পালনকর্ত্রী এবং প্রলয়কারিণী নিয়ন্ত্রক বলা হয়। এবং সেই কারণেই দেবীর নাম কাল যুক্ত ঈ-কালী। সনাতন ধর্মে ঈ-কারের সৃষ্টি ও শব্দোচ্চারণ-কে উল্লেখ করা হয়েছে ঈশ্বরী বা সগুণ ও নিগুর্ণ ব্রহ্মকে উপলদ্ধি করার জন্য। আবার শ্রীশ্রী চণ্ডীতে উল্লেখ মেলে যে, ‘ইয়া দেবী সর্বভুতেষু চেতনেত্যাবিধীয়তে, নমস্তসৈ, নমস্তসৈ নমো নমোঃহ।’ এই কারণে অনেকেই কালী-কে ক্রোধাম্বিতা, রণরঙ্গিনী বা করালবদনা বলেও অভিহিত করে থাকেন।

কালী পুজোর সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে তন্ত্র শাস্ত্রের, তন্ত্র সাধনায় তিনি অন্যতম আরাধ্যা দেবী এই শক্তি পূজায় যে পঞ্চমকার যথা- মদ্য-মাংস-মৎস্য-মুদ্রা-মৈথুন এর কথা পাই তার অর্থ লোকনাথ বসু তাঁর হিন্দুধর্ম মর্ম গ্রন্থে লিখেছেন, পঞ্চ ম কারের প্রথমটি অর্থাৎ মদ কেবল এক পানীয় নয়। তা আসলে ব্রহ্মরন্ধ্র থেকে ক্ষরিত অমৃতধারা বা সাক্ষাৎ আনন্দ।

কালিকা উপনিষদও মদ্য বা কারণবারির এই অন্তর্নিহিত অর্থের দিকেই জোর দিয়েছে। তার নবম শ্লোকে বলা হয়েছে, পঞ্চমকারের বেদসম্মত আধ্যাত্মিক অর্থ বুঝে যিনি দেবীরর পূজা করবেন, তিনিই সতত ভজনশীল, তিনিই ভক্ত।

তন্ত্রসাধনার মাধ্যমে কুলকুণ্ডলিনী জাগ্রত হলে খুলে যায়  মস্তিষ্কের উপরিতল বা ব্রহ্মরন্ধ্র। তখন যে আনন্দধারা প্রবহমান হয়, তাই আসলে মদ্য বা কারণ! আবার সাধকজীবন ও দশমহাবিদ্যা গ্রন্থে তারাপ্রণব ব্রহ্মচারীর মত, ‘মা মা’ বলতে বলতে যখন ভক্তি নেশার মতো থিতু হবে অন্তরে, তখন সেই মাদকতাকেই বলতে হবে মদ্য! তন্ত্রের আরো অনেক তত্ত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যা নিয়ে আগামী দিনে আলোচনা করা যায়|

দীপান্বিতা অমাবস্যার তিথিগত গুরুত্ব অপরিসীম, বিশেষত গ্রহ দোষ খণ্ডন, তন্ত্রমতে নানা বিধ সমস্যার সমাধানের জন্যে এই তিথি শ্রেষ্ঠ|তাই যুগ যুগ ধরে জ্যোতিষীরা, তান্ত্রিকরা  এই তিথিতে ছুটে আসেন তারাপীঠে, কামাখ্যায়|এবছর আমিও থাকছি তারাপীঠে|আপনারা যোগাযোগ করতে পারেন নিজেদের জীবনের সমস্যা নিয়ে|শুধু একটি ফোন করতে হবে উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|