দেবী লক্ষী : পর্ব এক

886

আগামী বুধবার কোজাগরী লক্ষী পুজো|দেবী আসবেন আমাদের গৃহে|তার আশীর্বাদে ও কৃপায় ধন্য হবে আমাদের জীবন|সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে ঘরে ঘরে|এই আশায় আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মহা সমারোহে লক্ষী পুজোর আয়োজন করি|এই পবিত্র সময়ে দেবী লক্ষীর স্বরূপ ও তার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য তিনটি পর্বে আপনাদের জন্যে আলোচনা করবো|আজ প্রথম পর্ব|মর্তে লক্ষী পুজোর প্রচলন হওয়া নিয়ে যে লৌকিক কাহিনী বা ব্রত কথা আছে তা হলো একবার দোলপূর্ণিমার রাতে নারদ বৈকুণ্ঠে লক্ষ্মী ও নারায়ণের কাছে গিয়ে মর্ত্যের অধিবাসীদের নানা দুঃখকষ্টের কথা বললেন। লক্ষ্মী মানুষের নিজেদের কুকর্মের ফলকেই এই সব দুঃখের কারণ বলে চিহ্নিত করলেন। কিন্তু নারদের অনুরোধে মানুষের দুঃখকষ্ট ঘোচাতে তিনি মর্ত্যলোকে লক্ষ্মীব্রত প্রচার করতে এলেন।এই সময়ে অবন্তী নগরে ধনেশ্বর নামে এক ধনী বণিক বাস করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর ছেলেদের মধ্যে বিষয়সম্পত্তি ও অন্যান্য ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া চলছিল। ধনেশ্বরের বিধবা পত্নী সেই ঝগড়ায় অতিষ্ট হয়ে বনে আত্মহত্যা করতে এসেছিলেন। লক্ষ্মী তাঁকে লক্ষ্মীব্রত করার উপদেশ দিয়ে ফেরত পাঠালেন। ধনেশ্বরের স্ত্রী নিজের পুত্রবধূদের দিয়ে লক্ষ্মীব্রত করাতেই তাঁদের সংসারের সব দুঃখ ঘুচে গেল। ফলে লক্ষ্মীব্রতের কথা অবন্তী নগরে প্রচারিত হয়ে গেল। একদিন অবন্তীর সধবারা লক্ষ্মীপূজা করছেন, এমন সময় শ্রীনগরের এক যুবক বণিক এসে তাদের ব্রতকে ব্যঙ্গ করল। ফলে লক্ষ্মী তার উপর কুপিত হলেন। সেও সমস্ত ধনসম্পত্তি হারিয়ে অবন্তী নগরে ভিক্ষা করতে লাগল। তারপর একদিন সধবাদের লক্ষ্মীপূজা করতে দেখে সে অনুতপ্ত হয়ে লক্ষ্মীর কাছে ক্ষমা চাইল। লক্ষ্মী তাকে ক্ষমা করে তার সব ধনসম্পত্তি ফিরিয়ে দিলেন। এই ভাবে সমাজে লক্ষ্মীব্রত প্রচলিত হল|কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো দক্ষিণ ভারত ও পূর্ব ভারতে অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও উত্তর ও পশ্চিম-ভারতে মা লক্ষ্মীর আবাহন মূলত হয় ধনতেরাস-দিওয়ালি তিথিকে কেন্দ্র করে|বাংলায় লক্ষ্মীপুজোর সংস্কৃতি ভারতের অন্যান্য রাজ্যের থেকে একটু অন্যরকম। যেমন ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে শুক্রবার মহালক্ষ্মীর উপবাস রাখা হয় ও বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। ওদিকে বাংলার ঘরে ঘরে বৃহস্পতিবারই লক্ষ্মীবার|আমি তো বলি প্রতিটা গৃহে প্রতি বৃহস্পতিবারই নিষ্ঠা সহকারে দেবী লক্ষীর পুজো করলে গৃহের কল্যাণ হয়|এবার দেবী লক্ষীর রূপ নিয়ে বলতে গেলে বলা যায় লক্ষ্মীর চারটি হাত যথাক্রমে ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষর প্রতীক|দেবীর বাহন প্যাঁচা ও যথেষ্ট তাৎপর্য পূর্ণ|প্যাঁচা কৃষকের বন্ধু তাই অর্থ ও সম্পদের প্রতীক|প্যাঁচা গভীর অন্ধকার মাঝেও পথ দেখতে সক্ষম অর্থাৎ প্রতিকূলতা কে কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দেয়|লক্ষী পুজোর এই বিশেষ সময়ে জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকার অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে তা দীর্ঘ তিন দশকের পেশাদার জ্যোতিষ জীবনে আমি বহুবার বহু ভাবে উপলব্ধি করেছি|তাছাড়াও সামান্য কিছু উপাচার বা বাস্তু সংক্রান্ত পরামর্শও বদলে দিতে পারে জীবনের মোড়|সৌভাগ্যের দেবী কে ডাকুন আর তার পাশাপাশি নিজের জীবনের সৌভাগ্যের চাবি কাঠি খুঁজে নিতে আস্থা রাখুন সঠিক ভাগ্যবিচার, জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের উপর|যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নম্বরে|আগামী পর্বগুলিতে দেবী লক্ষীর আটটি বিশেষ রুপ নিয়ে আলোচনা করবো|সবাইকে কোজাগরী লক্ষী পুজোর আগাম শুভেচ্ছা|ভালো থাকুন| |ধন্যবাদ|