ভক্তের ভগবান – কৃষ্ণ ভক্ত মাধবেন্দ্র পুরী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
মাধবেন্দ্র পুরী ছিলেন আধ্যাত্মিক গুরু চৈতন্য মহাপ্রভুর আধ্যাত্মিক গুরু। শ্রীল মাধবেন্দ্র পুরী কতৃক প্রতিষ্ঠিত গোপাল আজ শ্রীনাথজি হিসাবে পূজিত হন।আজকের পর্বে এই মহান
ভক্তকে নিয়ে লিখবো।
শ্ৰীহট্টর ধর্মনিষ্ঠ ব্ৰাহ্মণ পরিবারে তাঁর জন্ম। ব্যাকরণ, কাব্য ও ধর্মশাস্ত্রে পারদর্শী মাধবেন্দ্ৰ চতুষ্পাঠী স্থাপন করে অধ্যাপনা শুরু করেন।পরবর্তীতে সংসার ত্যাগ করে পুরী সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসীর কাছে দীক্ষা নিয়ে আধ্যাত্মিক জীবন শুরু করেন।
মাধবেন্দ্র পুরীর কৃষ্ণ প্রেম ছিল খুবই অস্বাভাবিক। আকাশে কালো বৃষ্টির মেঘ দেখলেই তিনি তাঁর মধ্যে তাঁর আরাধ্য কৃষ্ণকে খুঁজে পেতেন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতেন । দিনরাত্রি তিনি কৃষ্ণপ্রেমে ডুবে থাকতেন কখনও হাসতেন, কখনও কাঁদতেন, কখনও উচ্ছৃঙ্খল হৈ চৈ করতেন।
মাধবেন্দ্র পুরীকে প্রথম দেখে নিত্যানন্দ প্রভু চিৎকার করে বললেন, “আজ আমি আমার সমস্ত পবিত্র স্থানে ভ্রমণের ফল পেয়েছি। মাধবেন্দ্র পুরীর চরণ দেখে আমি ভগবানের প্রেমের ভান্ডার পেয়েছি, এবং এইভাবে আমার জীবন ধন্য হয়ে উঠেছে।”
একবার বৃন্দাবনে অবস্থান কালে অভুক্ত মাধবেন্দ্র পুরী জেদ ধরলেন তিনি নিজে চেয়ে বা মাধুকরী করে আহার করবেন না।কৃষ্ণ স্বয়ং চাইলে তার খিদে মেটাবেন। ভগবান তার ভক্তের কষ্ট সইতে পারলেন না। এক গোপ বালক রূপে তিনি ক্ষীর নিয়ে এলেন এবং বললেন এটা তার জন্যে
এক ভক্ত পাঠিয়েছেন এবং তিনি যেনো খেয়ে নিয়ে পাত্রটি রেখে দেন। তিনি এসে নিয়ে যাবেন। মাধবেন্দ্র পুরী আহার সম্পন্ন করলেন।কিন্তু পাত্র নিতে কেউ এলেন না। ঘুমের মধ্যে তিনি দেখলেন তার আরাধ্য গোপীনাথ তাকে দর্শন দিয়েছেন। তিনি ভগবানের দর্শন পেয়ে ধন্য অনুভব করলেন। বুঝলেন সেই গোপ বালক গোপাল স্বয়ং।
মাধবেন্দ্র পুরী সম্পর্কে কবিরাজ গোস্বামী লিখেছেন— ‘পৃথিবীতে রোপণ করি গেলা প্রেমাঙ্কুর/সেই প্ৰেমাঙ্কুরের বৃক্ষ চৈতন্য ঠাকুর’
আবার এক ভক্তের কথা নিয়ে যথা সময়ে
ফিরে আসবো থাকবে আরো একটি
অলৌকিক লীলা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।