বাংলার কালী – আউস গ্রামের ডাকাত কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বর্ধমানের আউশগ্রামে আছে এক প্রাচীন ডাকাত কালীর মন্দির যে মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে সাধক কমলাকান্তের নাম আছে এক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ। আজ জানাবো সেই ইতিহাস এবং এক অদ্ভুত ঘটনা।
শোনা যায় সাধক কমলাকান্ত এখানে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই কালী মূর্তি ।এই গ্রাম তখন জঙ্গলাকীর্ণ নির্জন এলাকা ছিল। সাধক কমলাকান্ত এখানে একটি বটগাছতলায় সাধনা করতেন। এক রাতে তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়ে একটি নির্দিষ্ট শিলাখণ্ড সেখান থেকে সংগ্রহ করেন। তারপর একটি মাটির ঘরে সেই শিলাখণ্ড প্রতিষ্ঠা করে দেবীরূপে পুজো করতে শুরু করেন। সেই সময়ে দেবী মাথার উপরে ছাউনি ছিলোনা।
পরবর্তীতে কিছুটা দূরে একটি গাছের নীচে ফের শিলাখণ্ডটি প্রতিষ্ঠা করেন সাধক কমলাকান্ত। সেখানেই দেবীর পুজো শুরু হয়।
এই কালী মন্দিরে কালী ও শিবের শিলামূর্তি এক সঙ্গে পূজিত হয়।তাঁর সঙ্গে অধিষ্ঠান করছেন মহাদেব। এলাকাবাসীর কাছে তা ভৈরবনাথ নামে পরিচিত।এই কালী পরিচিত।
এই কালী কে অনেকে অন্ধ কালীও বলেন।
দেবীর নাম কেনো অন্ধকালী হলো তার পিছনেও রয়েছে একটি ঘটনা।জনশ্রুতি আছে এই মন্দিরে পুজো শুরু হওয়ার পর এক দল ডাকাত এসেছিল এই গাছতলায়। তাদের লক্ষ্য ছিল গর্ভ গৃহে স্থাপিত শিলাখণ্ডটি নিজেদের সাথে নিয়ে যাওয়া কিন্তু সেই শিলাখণ্ডে হাত দেওয়ার চেষ্টা করতেই ডাকাতরা অন্ধ হয়ে যায়। আর ফিরে যেতে পারেনি তারা।
পরে দেবীর কাছে ক্ষমা চেয়ে মন্দির পার্শবর্তী একটি নীম গাছতলার মাটি চোখে বুলিয়ে নিতে। তারা আবার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। সেই থেকেই অন্ধকালী নামে পরিচিত হন এই দেবী।
আজও দেবী অন্ধকালীর অসংখ্য ভক্ত আসেন মন্দিরে নিজেদের মনোস্কামনা নিয়ে। দেবী অত্যন্ত দয়া ময়ী এবং তাদের প্রার্থনা তিনি শোনেন এবং মনোস্কামনা পূরণ করেন বলেই বিশ্বাস।
আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো অন্য
এক কালী মন্দিরের অলৌকিক ইতিহাস নিয়ে।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।