ভক্তের ভগবান – প্রল্লাদ এবং নৃসিংহ দেব

17

ভক্তের ভগবান

 

প্রল্লাদ এবং নৃসিংহ দেব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

যারা ভক্তি মার্গে চলেন তাদের ভক্তি যদি খাঁটি হয় যদি সম্পূর্ণ রূপে স্মরনাগতি আসে তবে ভগবান তার জন্য সবকিছু করতে পারেন

এমনকি অবতার রূপে অবতীর্ণ হতে পারেন

যেমনটা হয়েছিলো ভক্ত প্রল্লাদের খেত্রে।

 

বিষ্ণু বরাহ অবতারে হিরণ্যাক্ষ নামে এক রাক্ষসকে বধকরেন ও পৃথিবীকে রক্ষা করেন এই হিরণ্যাক্ষের ভাই হিরণ্যকশিপু স্বাভাবিক ভাবেই প্রবল বিষ্ণুবিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। তিনি বিষ্ণুকে হত্যা করার পথ খুঁজতে থাকেন।তিনি বহু বছর ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করেন। ব্রহ্মাও হিরণ্যকশিপুর তপস্যায় সন্তুষ্ট হন। তিনি হিরণ্যকশিপুর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে তাঁকে বর দিতে চান। হিরণ্যকশিপু অমরত্ত চাইলেন। কিন্তু তা পেলেন না তখন তিনি বললেন আপনি আমায় এমন বর দিন যে বরে আপনার সৃষ্ট কোনো জীবের হস্তে আমার মৃত্যু ঘটবে না, আমার বাসস্থানের অন্দরে বা বাহিরে আমার মৃত্যু ঘটবে না, দিবসে বা রাত্রিতে, ভূমিতে বা আকাশে আমার মৃত্যু হবে না, শস্ত্রাঘাতে, মনুষ্য বা পশুর হাতে আমার মৃত্যু হবে না,।বাধ্য হয়ে ব্রম্হা তাকে ইচ্ছা মতো বর দেন|

 

পরবর্তীতে হিরণ্য কশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ হয়ে ওঠেন পরম বিষ্ণুভক্ত।এতে তাঁর পিতা হিরণ্যকশিপু অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। ক্রমে প্রহ্লাদের বিষ্ণুভক্তিতে হিরণ্যকশিপু এতটাই ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হন যে তিনি নিজ পুত্রকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।

 

হোলিকা রাক্ষসী প্রল্লাদকে আগুনে দগ্ধ করতে চাইলে বিষ্ণু তাকে রক্ষা করেন এবং হোলিকা আগুনে পুড়ে মারা যায়।

 

তারপর বিষ্ণু স্বয়ং নৃসিংহ অবতারে হিরণ্য কশিপুরকে বধ করে প্রহ্লাদকে রক্ষা করেন|দেবতা মানুষ বা পশু হলে হবেনা কারন ব্রহ্মার বর হিরণ্য কশিপুর কে রক্ষা করবে তাই নৃসিংহ পরিপূর্ণ দেবতা, মানব বা পশু নন; হিরণ্যকশিপুকে দিবসে বা রাত্রিতে বধ করা যাবে না, তাই নৃসিংহ দিন ও রাত্রির সন্ধিস্থল গোধূলি সময়ে তাঁকে বধ করেন; হিরণ্যকশিপু ভূমিতে বা আকাশে কোনো শস্ত্রাঘাতে বধ্য নন, তাই নৃসিংহ তাঁকে নিজ জঙ্ঘার উপর স্থাপন করে নখের আঘাতে হত্যা করেন; হিরণ্যকশিপু নিজ গৃহ বা গৃহের বাইরে বধ্য ছিলেন না, তাই নৃসিংহ তাঁকে বধ করেন তাঁরই নিজের গৃহদ্বারে।

 

ভগবানের প্রতি ভক্ত প্রল্লাদের বিশ্বাস এতটাই ছিলো যে তিনি একটি পাথরের স্তম্ভ থেকে অবির্ভুত হয়েছিলেন কারন প্রল্লাদ দাবী করেছিল যে বিষ্ণু জগতের সর্বত্র বিরাজমান।

 

আবার পরের পর্বে অন্য এক ভক্ত এবং তার ভগবানের দিব্য লীলা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।