কালী কথা – বদ্যি কালী মাতা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আসন্ন দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে আরো একবার আপনাদের জন্য কালী কথা নিয়ে ফিরে এলাম। বাংলার প্রসিদ্ধ এবং জাগ্রত কালী মন্দির গুলি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করবো। থাকবে কালী সংক্রান্ত নানা পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় তথ্য।আজ জানাবো হুগলীর বিখ্যাত
বদ্যি কালী মন্দিরের কথা।
বাংলার হুগলি জেলার জনাইয়ে অবস্থিত এই বদ্যিমাতা মন্দির। আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়।মন্দিরের পাশেই আছে এক রহস্যময় পুকুর যে পুকুর নিয়ে একটি কিংবদন্তী এলাকায় প্রচলিত আছে। তবে সব থেকে বেশি যে কারণে এই মন্দির প্রসিদ্ধ তা একটি প্রচলিত বিশ্বাস।
আজও এও অঞ্চলে কারুর কোনও রোগ-ব্যাধি হলেআগে সে দেবীর কাছে প্রার্থনা জানান।
দেবী নাকি স্মরনাগত ভক্তদের স্বপ্নাদেশ দেন। সেই স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী ওষুধ খেলে ভক্তদের যাবতীয় রোগ-ব্যাধি সেরে যায়। গত দুশো বছর ধরেই এমনটা চলছে। আর এই সব কারণে ভক্তদের কাছে দেবী বদ্যি কালী নামেই বেশি জনপ্রিয়।
কে এবং ঠিক কবে এই মন্দির তৈরী করে দেবীকে এখানে স্থাপন করেন তা স্পষ্ট নয় তবে আগে এখানে ছিল টালির চাল। সেখানেই এখন তৈরি হয়েছে পাকা দালানের পরিপূর্ণ সাজানো-গোছানো মন্দির। ভক্তদের অর্থ সাহায্যে ধীরে ধীরে নতুন রূপে গড়ে উঠেছে এই মন্দির।দেবীর এখানে দক্ষিণাকালীর রূপে বিরাজ করছেন।
এবার আসি সেই রহস্যময় পুকুর প্রসঙ্গে। মন্দিরের কাছে রয়েছে একটি বহু প্রাচীন জলাশয়।
ভক্তদের বিশ্বাস আজও দেবী এখানে নিত্যরাতে পাশের পুকুরে স্নান করেন। সেই জন্য এই মন্দিরে ভক্তরা সচরাচর রাত্রিবাস করেন না।সারাদিন ভক্ত দের ভিড় থাকলেও রাতে এই মন্দিরের পরিবেশ একদম পাল্টে যায়। শান্ত এবং জনমানব শুন্য এই মন্দির তখন একেবারেই দেবীর ব্যাক্তিগত বিচরণ ক্ষত্রে পরিণত হয়।
অমাবস্যায় মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়।সেই সময় রাতে ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকার দেয়া হয়।ভক্তদের বিশ্বাস অমাবস্যার দিনগুলোয় দেবী তাঁদের মন্দিরে রাত্রিবাসের ছাড়পত্র দিয়েছেন।সেই সময় বিশেষ পুজো এবং শাস্ত্র মতে হোম যজ্ঞর পাশাপাশি ভক্তদের ভোগের প্রসাদও খাওয়ানো হয়।
দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে চলত থাকবে
ধারাবাহিক কালী কথা। ফিরে আসবো অন্য
একটি মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।