প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিশেষ পর্ব
বিপ্লবীদের কালী পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে আজ
আলোচনা করবো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একটি কালী পুজো নিয়ে যে পুজোর সাথে জড়িয়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাস।
এককালে স্বাধীনতা সংগ্রামী দের সঙ্গে থাকতো গীতা। স্বামী বিবেকানন্দর বই এবং আনন্দ মঠ।তারা অনেকেই কালী পুজোয় করতেন। মাতৃ আরাধনার মাধ্যমে শক্তি সঞ্চয় করে দেশমাতৃকার পরাধীনতা ঘোচানোই ছিলো প্রধান উদ্দেশ্য।
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু যখন কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার কালী পুজো নিয়ে বাস্তু তখন
জেলায়র বিপ্লবীরা কালী পুজো শুরু করেন।সালটা ১৯৩৯।
স্বাধীনতা আন্দোলনের আগুন জ্বলছে সারা দেশে। মেদিনীপুরে আন্দোলনের পথ দেখাচ্ছেনবিমল দাশগুপ্ত, কিষাণ সাহা। আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে বহু তরতাজা প্রাণ।মেদিনীপুর শহরের কাছেই লাল দীঘি।দুধারে আদিবাসী জনবসতি,শ্মশান আর ঝোপঝাড়। সেখানেই ছিল বিমল দাশগুপ্তদের গুপ্ত ডেরা। আনাগোনা লেগে থাকতো তরুণদের। গোপনে চলতো ভারতমাতার সন্তানদের দীক্ষা দেওয়া। সেসময়ই বাঁদিকে এক জায়গায় গড়ে তোলা হোল অস্থায়ী বেদী। ঘট প্রতিষ্ঠা করা হলো দেবী কালীর। সামনে চলতে থাকল দেবীরপুজো আর গোপনে অস্ত্র শিক্ষা।
পুজো আর শুধু পুজো ছিলোনা। হয়ে উঠেছিলো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মিলন স্থল। সেখানে মিলিত হতেন বিপ্লবীরা। তৈরী হতো পরিকল্পনা। থাকতো অগ্নি গর্ভ ভাষণ। যা আরো অনেক তরুণকে বিপ্লবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতো। সেই সময়ে ব্রিটিশ পুলিশ ও নজরদারি করতো এই সব পুজোয় তবে ধর্মীয় কারণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারতো না।
স্বাধীনতা পাওয়ার পরও বিমল দাশগুপ্তরা নিয়ম করে আসতেন এই স্থানে। স্বাধীনতার পরে ১৯৬৮ সালে দক্ষিণাকালী প্রতিমা উপাসনার সূচনা। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় পুজোর সময় এখন বড়ো করে পুজো হয় শ্রদ্ধা জানানো হয় স্বাধীনতা সংগ্ৰামিদের।সারা বাংলায় এমন বহু পুজো আছে যা স্বাধীনতা সংগ্রামীরা শুরু করেছিলেন
এবং আজও চলছে।
আবার কালী তীর্থ নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে। থাকবে অন্য একটি কালী পুজোর কথা। শুভ প্রজাতন্ত্র দিবস। জয় হিন্দ।