লক্ষী বার উপলক্ষে বিশেষ লেখনীর সূচনা করেছিলাম তা আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে আমি অতিশয় আনন্দিত, আপনাদের প্রশংসা ও উৎসাহ আমাকে উদ্বুদ্ধ করে আরো ভালো কাজ করতে, আরো বেশি বেশি লিখতে|আজ যথা সময়ে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আমি আপনাদের হাজির|আজ লিখবো মা লক্ষীর আটটি ভিন্ন রুপ ও তার অন্তর্নিহিত অর্থ নিয়ে, জানবো এই রূপ গুলির আধ্যাত্মিক তাৎপর্য আর তার পাশাপাশি থাকবে লক্ষী বারে মা লক্ষীর আরাধনার পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য|
পুরান মতে লক্ষীর জন্ম হয়েছিলো সমুদ্র মন্থনকালে|মন্থনের সময়ে অমৃতকুম্ভ, ঐরাবত, হলাহলের মাঝে উঠেছিলেন দেবী লক্ষ্মীও|
এই যে বৃহস্পতিবার ঘরে ঘরে মা লক্ষীর পূজা হয় তার সাথে সম্পর্ক আছে মা লক্ষীর আটটি রূপের| মা লক্ষীর মোট আটটি অবতার রয়েছে এবং প্রতিটি রূপেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট এবং তাৎপর্য রয়েছে|এই এক একটি রূপ প্রকৃতপক্ষে আলাদা আলাদা শক্তির প্রতীক|এই রূপ গুলি হলো যথাক্রমে-
আদি লক্ষী – এই দেবীকেই মহালক্ষী বলা হয়,
মহা লক্ষী হলো মা লক্ষীর আদিরূপ|
এই মা লক্ষী হলেন অফুরন্ত ধনসম্পদের অধিষ্ঠাত্রী|
গজ লক্ষী – গজ মানে হাতি, এই দেবী হাতির ওপর সরাসরি অধিষ্ঠাত্রী না হলেও, তার চারিদিক আবর্ত থাকে হাতি দ্বারা|ধন সম্পদের প্রতীক এই দেবী| পুরান মতে সমুদ্র মন্থন কালে ভগবান ইন্দ্রের হারিয়ে যাওয়া ধন সম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গজলক্ষী|
বিদ্যা লক্ষী – সনাতন ধর্মে বিদ্যার দেবী সরস্বতী হলেও |বিদ্যার প্রতীক এই বিদ্যালক্ষী দেবী|এই দেবী পদ্মের ওপর সাদা শাড়িতে অধিষ্টাত্রী|তিনি জ্ঞান ও ভক্তি প্রদান করেন|
ধনলক্ষী- ধন ও ঐশর্য প্রাপ্তির আশায় সর্বাধিক পূজিতা হন এই দেবী|দেবীর একটি হাত অভয় মুদ্রার ন্যায় রাখা এবং তা থেকে সোনার মোহর বা মুদ্রা বের হয়। বাকি পাঁচটি হাতের প্রতিটি হাতে থাকে একে একে চক্র, শঙ্খ, একটি ঘটে বা পবিত্র কলসি, তীর – ধনুক এবং একটি পদ্ম|দেবী মূলত লাল শাড়িতেই অধিষ্ঠাত্রী|
বিজয়লক্ষী – এই দেবী বিজয়এর প্রতীক স্বরূপ। কোনো সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে বা প্রতিকুল পরিস্থিতির উপর বিজয় পেতে এই দেবীর পূজা হয়ে থাকে|
সন্তান লক্ষী – জন সমগ্রে কিছুটা কম পরিচিতা এই দেবী মূলত পরিবারের সন্তানদের মঙ্গলার্থে আবার সন্তান প্রাপ্তির প্রার্থনা স্বরূপ ও পূজিতা হন|
ধান্যলক্ষী – লক্ষীর এই বিশেষ রূপটি খাদ্য শস্য বা কৃষিজ সম্পদের প্রতীক|দেবীর হাতে থাকে শস্যের সমাহার এবং দেবীর পরনে থাকে শস্যের রঙের সবুজ শাড়ি যা প্রকৃতির প্রান শক্তির প্রতীক|
ধৈর্যলক্ষী বা ধরিয়া লক্ষী – এই দেবী হলেন ধৈর্য্যশক্তির প্রতীক। এই দেবীর আরাধনা মনের শক্তি, ধৈর্য্য যোগায় ও একাগ্রতা সৃষ্টি করে|
দেবী লক্ষীর এই রূপের জন্য রয়েছে নিদ্দিষ্ট মন্ত্র ও পূজা পদ্ধতি যা পরে কোনো সময়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে|তবে বৃহস্পতিবার যারা দেবী লক্ষীর আরাধনা করবেন তারা কয়েকটি অতি সহজ ও সাধারন বিষয়ে অবগত হলে অনেক বেশি ফল লাভ করতে পারেন|
ঘর খুব ভালো করে পরিষ্কার রাখুন।
মনে রাখবেন পরিচ্ছন্নতাই এই পুজোর মূল মন্ত্র|পারলে এদিন একটি করে পদ্মফুল দেবীর পায়ে নিবেদন করুন। একটি করে ফল দিন|হলুদ গাঁদায় পুজো করুন। লক্ষ্মীর স্বামী নারায়ণ। তাই একটি করে সাদা ফুল নারায়ণকেও দিন|সপ্তাহের মাত্র এই একটা দিন প্রদীপ সারাক্ষণ জ্বেলে রাখুন।সম্ভব হলে বাড়িতে শ্রীযন্ত্র স্থাপন করুন|
বৃহস্পতিবার ও মা লক্ষীর মহিমা নিয়ে এই বিশেষ প্রতিবেদন আপাতত এখানেই শেষ করলাম, আগামী সময়ে আবার উপস্থিত হবো আপনাদের সামনে|নতুন বিষয় এবং নতুন পর্ব নিয়ে|জ্যোতিষ সংক্রান্ত কাজ নিয়ে যারা যোগাযোগ করছেন তাদের বলবো উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|