কালী কথা – ইন্দ্রগাছার বামা কালীর পুজো 

14

কালী কথা – ইন্দ্রগাছার বামা কালীর পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বীরভূমের ইন্দ্রগাছা গ্রামের কালীপুজো আলাদা ঐতিহ্য বহন করে। এখানকার কালী পুজোর এক সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে অনেক জনশ্রুতি। সেসব নিয়েই আজকের কালী কথা।

 

এই গ্রামে বাস করতেন রাম কানাই।কথিত আছে হরকুনার গভীর জঙ্গলে সাধনা করতে গিয়ে মায়ের সাক্ষাৎ পান সাধক রামকানাই। মায়ের জীবন্ত সাক্ষাৎ সেই রূপ তিনি একটি থালায় এঁকে নেন। জীবন্ত মায়ের সেই রূপের ছবি দেখে বানানো হয় মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি যা পরবর্তীতে মূর্তি বানিয়ে মন্দিরে স্থাপন করে শুরু হয় পুজো।

 

এই মন্দিরের প্রধান দুটি আকর্ষণ হলো সাধক রাম কানাইয়ের লেখা দুর্বধ্য ভাষায় লেখা একটি প্রাচীন পুঁথি যে পুঁথিতে আছে অনেক প্রাচীন উপাচার এবং পূজা পদ্ধতি এবং সেই থালা যে থালায় মায়ের জীবন্ত রূপ দেখে ছবি এঁকেছিলেন।

 

এই কালী কে বামা কালী নাম ডাকেন সবাই। দীপান্বিতা অমাবস্যা বা দীপাবলী এই মন্দিরের প্রধান উৎসব। ইন্দ্রগাছার এই বামাকালী প্রায় পাঁচশো বছর ধরে পুজিত হয়ে চলেছে। প্রায় তেরো ফুটের এই বামকালীর গায়ের রং ও চক্ষুদান করা হয় পুজোর দিনেই প্রাচীন প্রথা মেনে। গায়ের রং করা হয় কাঠে আগুন জ্বালিয়ে তৈরি ভুসোকালি থেকে। আজও এই ক্ষেত্রে কৃত্তিম উপায়ে তৈরী রঙ ব্যাবহার হয়না।

 

প্রতি বছর কালী পুজোর দিন মধ্যরাতে মূর্তিকে চল্লিশ ফুট বড় লাল কাঠের ওপর চাপিয়ে কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় মূল মন্দিরে। পুজোর পর ভাইফোঁটার দিন বিসর্জন হয়।বিগত প্রায় পাঁচশো বছরে এই পুজোর রীতি নীতি পরিবর্তন হয়নি।

 

আজও এই পুজো দেখতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ।বামা কালীর প্রতি তাদের অগাধ বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা রয়েছে।

 

আগামী দিনে আবার ফিরে আসবো কালী কথা নিয়ে। দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে চলতে

থাকবে কালী কথা। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।