Home Blog Page 74

বাংলার কালী : কঙ্কালেস্বরী কালী মন্দির

কিছুদিন আগেই গেছে কৌশিকী অমাবস্যা, সামনে মহালয়া অমাবস্যা ও দীপান্বিতা অমাবস্যা, প্রতিটি অমাবস্যা তিথিই জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতে গুরুত্বপূর্ণ এই শক্তি সাধনার প্রাক্কালে আজ আরো একবার বাংলার এক প্রাচীন কালী মন্দিরের কথা লিখবো|দক্ষিণ বঙ্গের প্রাচীন কালী মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধমানের কাঞ্চন নগরের কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির|বর্ধমানের মহারাজ বিজয়চাঁদ মহাতাবের উদ্যোগে এই মূর্তি কাঞ্চন নগরের এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে সময় এই নবরত্ন মন্দির কোনও বিগ্রহ ছিল না। এই পাথরের কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠার দিন থেকে এখানে নিত্য পূজা শুরু হয়|এই মূর্তি প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত আছে এক অলৌকিক ঘটনা ও এক ধার্মিক পরিব্রাজকের নাম|কমলানন্দ পরিব্রাজক নামে এক সাধক মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী তিনি দামোদরের তীরে গিয়ে ধোপাদের কাপড় কাঁচার কাজে ব্যবহৃত পাথরটি উদ্ধার করেন। সেই পাথরই খোদাই করা ছিলো এই দেবী মূর্তি। এই পাথরের দেবী মূর্তি পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় মন্দিরে|পাথরে খোদাই দেবী কঙ্কালের মতো দেখতে। নাম তাই কঙ্কালেশ্বরী কালী। দেবী এখানে অষ্টভূজা। শায়িত শিবের নাভি থেকে উৎপত্তি হয়েছে পদ্মের। সেই পদ্মার ওপর দেবী বিরাজমান। তাঁর চালচিত্রে একটি হাতি রয়েছে।প্রতিটি বিশেষ তিথিতে নিষ্ঠা সহ দেবীর পুজো হয়|এখানে চামুন্ডা মতে দেবীর পুজো হয় এবং এখানে বলী হয়না কখনো|বর্ধমান সহ গোটা বাংলার প্রসিদ্ধ ও প্রাচীন কালী মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম এই কঙ্কালেস্বরী কালী মন্দির|আগামী পর্বে এমন কোনো কালী মন্দির ও অলৌকিক ঘটনা নিয়ে আবার ফিরে আসবো|আগের মতোই চেম্বারে ও অনলাইনে নিয়মিত থাকছি জ্যোতিষ চর্চায়|যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

দেব শিল্পী বিশ্বকর্মা

আজ বিশ্বকর্মা পূজা|সাধারনত ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি তেই বিশ্বকর্মা পূজা হয়ে থাকে|আজ সারা বাংলা তথা দেশের শিল্প ও নির্মানশিল্প কেন্দ্র গুলিতে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকর্মাপূজার|আসুন আজকের এই পবিত্র দিনে জেনে নেই দেব শিল্পী বিশ্বকর্মার আধ্যাত্মিক স্বরূপ ও তার সাথে জড়িত কিছু পৌরানিক ঘটনা|আমাদের সনাতন ধর্মে ভগবান বিষ্ণু তার সৃষ্টি কর্মের একএকটি গুরু দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন এক একজন দেবতার উপর|অর্থাৎ ও বাণিজ্যর ভার দেবী লক্ষীর উপর, শিক্ষা ও সংস্কৃতির দায়িত্ব স্বরস্বতীর আবার প্রতিরক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন দেবী দূর্গা|এদের মধ্যে বিশ্বকর্মা হলেন স্থাপত্য ও নির্মাণের দেবতা|তিনি দেব শিল্পী|বিশ্বকর্মা মূলত বৈদিক দেবতা|ঋগ বেদ সহ একাধিক ধর্ম গ্রন্থে এবং রামায়ন মহাভারতের মত মহাকাব্যে উল্লেখ রয়েছে বিশ্বকর্মার|তিনি ব্রহ্মা সৃষ্টি কর্মের অন্যতম সহযোগী|সৃষ্টির একদম আদি লগ্ন থেকে বিভিন্ন সৃষ্টি কর্মের মাধ্যমে তিনি জগৎ নির্মাণের কাজে যুক্ত|বিশ্বকর্মার পুত্র বিশ্বরূপকে ইন্দ্র বধ করেছিলেন এবং ইন্দ্র ও বিশ্বকর্মার শত্রুতাও দেখা দিয়েছিলো|যদিও নিজের কর্তব্যে সদা অবিচল বিশ্বকর্মা এবং নিজের সৃষ্টিকর্মে সর্বদা মগ্ন তিনি|আজ তার পুজোর মধ্যে দিয়ে তাকে ও তার সৃষ্টিশীলতাকে আসুন শ্রদ্ধা জানাই|আপনাদের সবাইকে বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

রাধাষ্টমী ব্যাখ্যা

আজ রাধাষ্টমী|প্রতি বছর শ্রীকৃষ্ণের জন্মের পরবর্তী অষ্টমী তিথি রাধাষ্টমী হিসেবে পালিত হয়| এটি কৃষ্ণ সঙ্গিনী শ্রীরাধার পবিত্র জন্মতিথি। মথুরার পবিত্র বারসনা শ্রীরাধার জন্মস্থান। রাজা বৃষভানু এবং তাঁর স্ত্রী কীর্তি স্বর্ণপদ্মের উপর শ্রীরাধাকে পেয়েছিলেন। ভক্তিভরে রাধাষ্টমী পালন করলে মনের সব কামনা পূরণ হয়। ভাদ্র মাসের শুক্ল অষ্টমী তিথি শ্রী শ্রী রাধারানির জন্মতিথি রাধাষ্টমী।আজ ১৪ সেপ্টেম্বর, ২৮ ভাদ্র, মঙ্গলবার শ্রী শ্রী রাধাষ্টমী।সূর্য দেব বিষ্ণুর বর প্রাপ্ত হয়ে বৃষ ভানু রূপে জন্মে রাধাকে তাদের কন্যা রূপে পেয়েছিলেন|রাজা শ্রীবৃষভানু এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীকীর্তি তাঁদের কন্যা হিসাবে রাধা-কে বড় করেছিলেন। রাধা এই তিনটি কল্প, ব্রহ্মকালপ, ভারহাকল্প এবং পদ্মকাল্পে কৃষ্ণের সর্বোচ্চ শক্তি হিসাবে বর্ণিত হয়েছে।এ কারণেই বেদ ও পুরাণ প্রভৃতি তাদের ‘কৃষ্ণবল্লভা’, ‘কৃষ্ণাত্মা’ কৃষ্ণপ্রিয়া ‘বলে অভিহিত করা হয়েছে। পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে এমন একটি বিবরণ পাওয়া যায় যে, কৃষ্ণ রূপে অবতার নেওয়ার আগে ভগবান শ্রীবিষ্ণু তাঁর ভক্তদেরও পৃথিবীতে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সময় বিষ্ণু প্রিয়া লক্ষ্মীও রাধা রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন।রাধাষ্টমী উপাসনা পদ্ধতি সহজ সরল|সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরুন।ঠাকুরের স্থানে লাল বা হলুদ কাপড় পেতে তার উপরে, শ্রী কৃষ্ণ এবং রাধার মূর্তিটি স্থাপন করুন। পাশাপাশি পুজোর ঘটও স্থাপন করুন।এই দিন পঞ্চামৃত দিয়ে রাধা ও কৃষ্ণের স্নান করান। এরপর দুজনকেই নতুন বস্ত্র পরিয়ে সাজিয়ে দিন।আপনার নিয়ম মেনে পুজো সারুন, ফুল-ফল নৈবেদ্য সাজিয়ে দিন, প্রয়োজনে ভোগও দিতে পারেন।এরপর রাধা কৃষ্ণের মন্ত্রগুলি জপ করুন, ও রাধা কৃষ্ণের আরতি করুন।সনাতন ধর্মে রাধা-কৃষ্ণ ভক্তদের জন্য রাধা অষ্টমীর বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্রে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে, যিনি এই ব্রত রাখেন তাঁর কোনওদিন অর্থের অভাব হয় না। শ্রী কৃষ্ণ ও রাধাআশীর্বাদ সর্বদা তাঁধের উপর বজায় থাকে।এই কারণেই ভক্তরা প্রথমে তাঁর আরাধ্য কৃষ্ণের পুজো করার আগে, রাধা রানীর পুজো করেন। বিশ্বাস করা হয় রাধা অষ্টমীর উপবাস করলে সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়।আপনাদের সবাইকে রাধাষ্টমীর শুভেচ্ছা|পালন করুন এই তিথি|ভালো থাকুন|নমস্কার

পুরাণ রহস্য – হনুমানজি কি বিবাহিত ?

যদিও আমরা সকলেই হনুমানজীকে ব্রহ্মচারী বলে জেনে এসেছি। কিন্তু আপনি হয়ত জানেন না হনুমানজীর একবার বিবাহও হয়েছিল|শাস্ত্রে উল্লেখিত এই রহস্যই আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো| পবনপুত্র একাধারে বিবাহিত ছিলেন এবং আবার তিনি বাল ব্রহ্মচারীও ছিলেন।  কিছু বিশেষ পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব জগতের কল্যাণে বজরঙ্গবালীকে সর্বচ্চলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়েছিল। এই ঘটনার উল্লেখ আছে পরাশর সংহিতায়।পরাশর সংহিতায় বলা আছে যে সূর্যদেব নিজেই এই বিবাহ সম্পর্কে বলেছেন যে – এই বিবাহ বিশ্বজগতের কল্যাণে করা হয়েছে এবং হনুমানজীর ব্রহ্মচর্য এতে কোন ভাবেই প্রভাবিত হয়নি।হনুমানজীকেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়েছিল।  তবে এর অর্থ এই নয় যে ভগবান হনুমান ব্রহ্মচারী ছিলেন না। হনুমানজীকে একবার বিশ্বজগতের কল্যাণে বিবাহ করেতে হয়েছিল। তিনি বিবাহ করেছিলেন সূর্য দেবের কন্যা সর্বচ্চলাকে। ছোট বেলায় হনুমানজী সূর্যদেবকে ফল মনে করে খেতে যাওয়া সূর্যদেবকেই তার গুরু মেনে নেন। তিনি সূর্যদেবের কাছ থেকে মোট নয়টি বিদ্যা রপ্ত করতে গেছিলেন। প্রথম পাঁচটি বিদ্যা উনি শেখার পর শেষ চারটি বিদ্যার জন্য উনি অসমর্থ ছিলেন। কারন শেষ চারটি বিদ্যার জন্য ওনাকে বিবাহিত হতে হত। কিন্তু উনিতো ব্রহ্মচারী। শেষে উনি বিবাহের জন্য রাজি হন। উনি বিবাহ করেন  সূর্যদেবেরকন্যা সর্বচ্চলাকে। সর্বচ্চলা ছিলেন একদিকে তপাস্বী ও তেজস্বী। সূর্যদেব ওনাকে বলেছিলেন সর্বচ্চলার তেজ এক তুমিই সম্বরণ করতে পারবে। হনুমানজী কিন্তু বিবাহ করলেও ব্রহ্মচারীই ছিলেন।সর্বচ্চলা বিবাহের পর আবার তপস্বায় চলে যান। হনুমানজী সূর্যদেবের কাছে তাঁর সম্পূর্ন বিদ্যা শেষ করেন।তেলেঙ্গানার খাম্মাম জেলায় হনুমানজী ও সর্বচ্চলার একটি মন্দির আছে অনেক পুরোন।তাঁকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকেরা আসেন। কথিত আছে যে হনুমান জি তাঁর স্ত্রী সর্বচ্চলার মন্দির দর্শনের পরে ঘরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চলার সমস্ত উত্তেজনা শেষ হয়। আগামী দিনে পুরান রহস্যর নতুন পর্বে নতুন কোনো রহস্য নিয়ে ফিরে আসবো|চেম্বার ভিসিট ও অনলাইন জ্যোতিষ চর্চা দুই চলছে সমান তালে প্রয়োজনে উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেননা|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

গণেশ বন্দনা

আজ গণেশ চতুর্থী তে মূলত তার আমরা বিঘ্নহর্তার জন্ম তিথি উদযাপন করি ঘরে ঘরে এবং তার কাছে প্রার্থনা জানাই নিজেদের আধ্যাত্মিক ও বৈষয়িক উন্নতির|গণেশকে নিয়ে আমাদের পুরানে অসংখ্য ঘটনার উল্লেখ আছে|গনেশের মূর্তিতে তার একটি দাঁত ভাঙা|এনিয়েও আছে পৌরাণিক ব্যাখ্যা|মনে করা হয়, একবার পরশুরাম দেবাদিদেব মহাদেবের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর গৃহে যান। কিন্তু গণপতি দরজাতেই তাঁকে আটকে দেন। ভেতরে প্রবেশ করতে দেন না। কারণ সেই সময় মহাদেব ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। তখনই ক্রোধান্বিত হয়ে পরশুরাম গণপতির একটি দাঁত কেটে দেন তার অস্ত্র দিয়ে|

আরেকটি ব্যাখ্যা আছে,পুরাণ অনুসারে, একটি শর্তেই এই মহাকাব্য বলা ও লেখার কাজ করা হয়েছিল। শর্ত ছিল, একটানা বলে যাবেন বেদব্যাস আর তা একটানা একটুও না থেমে লিখে যাবেন গণপতি|তাই চলছিল,এই ভাবে টানা লিখতে লিখতে এক সময় হঠাৎই লেখার পালকটি ভেঙে যায়। তখন লেখা না থামিয়ে গণপতি নিজের একটি দাঁত ভেঙে নিয়ে তা দিয়ে লেখা চালিয়ে যান।

গণেশ বন্দনা চলবে সারা বছর তবে এই বিশেষ দিনে তাকে শাস্ত্রীয় পদ্ধতি অনুসারে সন্তুষ্ট করুন পুজোর মাধ্যমে ও উপাচারের মাধ্যমে|সবাইকে গণেশ চতুর্থীর শুভেচ্ছা|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

পুরাণ রহস্য – গণেশের বিবাহ

গণেশে চতুর্থীর প্রাক্কালে আজ পুরান রহস্যর এই পর্বে গনেশের বিবাহ নিয়ে লিখবো|বাংলার দুর্গোৎসবের সময়ে কলা বউ স্নান করানোর রীতি আছে|অনেকে মনে করেন এই কলা বউ গণেশের স্ত্রী|পুরান কিন্তু অন্য কথা বলছে| শিব পুরাণ অনুসারে প্রজাপতি ব্রহ্মার দুই কন্যা সিদ্ধি ও বুদ্ধির সঙ্গে বিয়ে হয় গণেশের। দুই স্ত্রীর সঙ্গেই গণেশের একজন করে সন্তানের জন্ম হয়। সিদ্ধির গর্ভে জন্মান ক্ষেম। আর বুদ্ধির সন্তানের নাম লাভ। তবে গণেশের দুই স্ত্রীর নাম নিয়ে কিন্তু মতভেদ রয়েছে। কোথাও  গণেশের দুই বউয়ের নাম তুষ্টি ও পুষ্টি আবার কোনো শাস্ত্রে ঋদ্ধি ও বুদ্ধি।  গনেশের জন্ম ও তার অদ্ভুত রূপ নিয়ে যেমন অনেক পৌরাণিক ঘটনা আছে তেমন তার বিবাহ নিয়েও পুরানে একটি ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় বিবাহ স্থির করার আগে মহেশ্বর কার্তিক ও গণেশ কে বললেন–তোমরা দুজনেই আমাদের কাছে সমান। আমরা ঠিক করেছি যে আগে পৃথিবী পরিক্রমা করে আসবে, তার আগে বিয়ে হবে।কার্তিক তার বাহন ময়ুরে চড়ে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে বেরিয়ে পড়লেন|বেগতিক দেখে বুদ্ধিমান গণেশ এক অদ্ভুত কান্ড করে ফেললেন|তিনি তার পিতা মাতা কেই সাত বার প্রদক্ষিণ করলেন ভক্তি সহকারে ও বললেন পুত্রের প্রধান তীর্থ পিতা-মাতার পাদপদ্ম। তেমনি স্বামীই পত্নীর পরম তীর্থক্ষেত্র। এখন আমি আপনাদের প্রদক্ষিণ করলাম। এতো পৃথিবী পরিক্রমা হল আর যদি না হয়ে থাকে তাহলে বেদবাক্যকে মিথ্যা বলতে হয়। যথারীতি এই উত্তরে প্রসন্ন হয়ে শিব ও পার্বতী তাদের প্ৰিয় পুত্র গনেশের বিবাহ আগে স্থির করেন ও যথা সময়ে গণেশের বিবাহ সম্পন্ন হয়| আজ পুরান রহস্য এইখানেই শেষ করলাম|আবার আগামী দিনে নতুন লেখা নিয়ে ফিরে আসবো|যারা চেম্বারে বা অনলাইনে জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজ নিয়ে যোগাযোগ করতে চান একবার উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে নেবেন|ভালো থাকুন|নমস্কার|

শিক্ষক দিবস

সমাজে শিক্ষকদের ভূমিকায় সম্পর্কে এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, ‘যদি একটি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত এবং সুন্দর মনের মানুষের জাতি হতে হয়, তাহলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এ ক্ষেত্রে তিনজন সামাজিক সদস্য পার্থক্য এনে দিতে পারে। তারা হলেন বাবা, মা এবং শিক্ষক।’

ভারতের প্রাচীন গুরু শিষ্য পরম্পরার হাত ধরে আমরা জাানি, একজন মানুষের সফতার পেছনে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন আদর্শ শিক্ষক কেবলমাত্র পড়াশোনার ক্ষেত্রে নয়, তিনি ছাত্রকে জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। তিনি তাকে শুধুমাত্র জীবনে সফল হওয়া নয়, কিভাবে একজন ভাল মানুষ হতে হয় শেখাবেন।

শিক্ষাবিদ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন ‘জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্রহ লাভ করবো।’

আজ জাতীয় শিক্ষক দিবস এবং আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের ১৩৩তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকল শিক্ষককে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা|

বাংলার কালী – দুর্লভা কালী, বর্ধমান

কৌশিকী অমাবস্যার বিশেষ পুজো ও গ্রহ দোষ খণ্ডন অনুষ্ঠানের আর বেশি দেরি নেই, ব্যস্ততার মাঝেই আজ কলম ধরেছি আপনাদের জন্যে, আজ আপনাদের নিয়ে যাবো বর্ধমান, বর্ধমানের প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম লাকুড্ডি দুর্লভা কালী।বর্ধমানের দুর্লভা কালীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রাজ কাহিনী ও নানা লোককথা তার কিছু আজকে বলবো আপনাদের বাংলার কালীর এই পর্বে যে অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে গড়ে ওঠে এই প্রাচীন কালী মন্দির সেই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রধান দুটি চরিত্র হোলেন প্রখ্যাত তান্ত্রিক সাধক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারি ও বর্ধমানের মহারাজা তেজচাঁদ|জনশ্রুতি অনুসারে ঘটনাটি অনেকটা এই রকম|লোকমুখে তাঁর নানান অলৌকিক ক্ষমতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই ক্ষমতার কথা শুনে একদিন রাত্রে বর্ধমানের মহারাজ তেজচাঁদ মন্ত্রী সান্ত্রীদের নিয়ে সেখানে গেলেন গোকুলানন্দ কাছে|চারদিকে ঘন জঙ্গল। তার মাঝে বসে কালী সাধনা করছেন তান্ত্রিক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী। বর্ধমানের মহারাজ দেখতে চান তান্ত্রিকের অলৌকিক ক্ষমতা। সেদিন ঘোর অমাবস্যা। রাজা জানতে চাইলেন, আজ কি তিথি? তান্ত্রিক জানালেন, আজ পূর্ণিমা। রাজা বললেন, আমাকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখাতে পারেন।তান্ত্রিক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী বুঝলেন, রাজা তাঁর ক্ষমতার পরীক্ষা নিতে এসেছেন। মৃদু হাসলেন গোকুলানন্দ। চারদিক জ্যোৎস্না আলোকিত হয়ে উঠলো। আকাশের দিকে আঙুল দেখিয়ে তান্ত্রিক বললেন, ওই পূর্ণিমার চাঁদ। দেখুন মহারাজ|বিস্মিত চোখে তন্ত্র শক্তির অদ্ভুত প্রয়োগ দেখলেন রাজা|পরবর্তীতে মহারাজ তেজচাঁদ কালী মন্দির করে দিলেন। সেদিন থেকেই বর্ধমানের লাকুড্ডির দুর্লভা কালীবাড়িতে নিত্য পুজো চলছে।এই কালীমন্দিরে ঘটের আবাহন বা বিসর্জন নেই। ঘট ছাড়াই শুধু বিগ্রহের নিত্য পূজা হয় এই কালী মন্দিরে।বর্ধমানের রাজারা এই মন্দিরে ভোগঘর তৈরি করে দেন। পুজোর ব্যয়ভার বহন করতেন তাঁরাই। এখানে আজও নিত্য পূজার পাশাপাশি দেবীকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়।দীপান্বিতা কালীপুজোয় অগণিত ভক্তের সমাগম হয় মন্দিরে। মনে করা হয় দেবীর দর্শন পাওয়া অতি দুর্লভ। তাই নাম দুর্লভা কালী। প্রায় আড়াইশো বছর আগে তান্ত্রিক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী পাশের জলাশয়ে স্নান করতে নেমে একটি পাথর পান।সেই পাথরকেই মা কালী রূপে পুজো করেন তিনি। সেই পাথর খণ্ড প্রতিষ্ঠিত হয় রাজার তৈরি করে দেওয়া মন্দিরে। পরে কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হলেও আজও সেখানে সেই পাথর খণ্ড সামনে রেখেই পুজো করা হয়। সাধক কমলাকান্তও এখানে তন্ত্র সাধনা করতে আসতেন।আপাতত আজ বাংলার কালী নিয়ে এই ধারাবাহিক লেখা এখানেই শেষ করলাম|কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের বিশেষ পুজোয় আপনাদের স্বাগত|পুজোয় যোগ দিতে বা গ্রহ দোষ খণ্ডন করাতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বাংলার কালী – শান্তিপুরের সিদ্ধেশ্বরী কালী

নদিয়ার শান্তিপুর স্টেশন থেকেব প্রায় দু কিলোমিটার দুরে অবস্থিত এক প্রাচীন কালী মন্দির যেখানে মা সিদ্বেশ্বরী রূপেই পূজিত হন|অবশ্য মা কালীর এখানে একটি পোশাকি নাম আছে, তাহলো চাঁদুনি, এবং এই মন্দিরে পুজোর ক্ষেত্রে মহিলারাই প্রধান ভূমিকায় থাকেন|কেনো এই নাম এবং কেনো মহিলা দের এতো বেশি গুরুত্ব তার সাথেও জড়িত আছে এক কিংবদন্তী|বহুকাল আগে নদিয়ার শান্তিপুর ছিল বর্ধিষ্ণু জনপদ৷ তখন শান্তিপুর দিয়ে প্রবাহিত হত মা গঙ্গা৷ আর সেই গঙ্গার পাড়ে একটি কুটিরে বাস করতেন সাত্ত্বিক গোপীনাথ সার্বভৌম যিনি ছিলেন শ্রীচৈতন্যর শিক্ষা গুরু|কথিত আছে এক রাতে গোপীনাথ মায়ের স্বপ্নাদেশ পান৷ স্বপ্নাদেশে তিনি জানতে পারেন মা সিদ্ধেশ্বরীরা প্রতিমা নির্মাণ করতে হবে তাঁরই পত্নীকে৷ মায়ের নির্দেশে বাড়ির পঞ্চমুণ্ডির আসনে গোপীনাথ প্রতিষ্ঠা করেন মা চাঁদুনিকে৷মায়ের এহেন নাম নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে৷ কারও মতে চাঁদুনি নামটি এসেছে চাঁদনি থেকে৷ চাঁদনি মানে জ্যোৎস্না৷তবে অনেকেই একমত নন তাই নামের উৎস নিয়ে কিঞ্চিৎ বিতর্ক রয়েছে|সার্বভৌমর পরিবারের লোকেরাই বংশ পরম্পরায় পুজো করে আসছেন মা সিদ্বেশ্বরীরা| এখানে দুর্গাপুজোর শেষে দুর্গা দেউলেই শুরু হয় মায়ের কাঠামো গড়া৷ পারিবারিক রীতি অনুযায়ী আজও বংশের বড় বউ কাঠামোতে প্রথম মাটি দিয়ে এর শুভারম্ভ করেন৷প্রতি অমাবস্যায় মায়ের কাঠামো শক্তিরূপে পুজো করা হয়৷ কালীপুজোর দিন মা চাঁদুনিকে দুর্গাদেউল থেকে বাতাস করতে করতে কালীমন্দিরে আনা হয়৷ দেবীর পুজো হয় নিষ্ঠা ও জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে যদিও একসময় এখানে মোষবলি হত৷ এখন তা না হলেও পাঁঠাবলি হয়|আপাতত আসন্ন কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে ব্যাস্ততা চূড়ান্ত|প্রতিবারের ন্যায় আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরীর মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ পুজো ও গ্রহ দোষ খণ্ডন যজ্ঞ|অনেকেই ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছেন|সবাইকে জানাই স্বাগত|এখনো যারা যোগাযোগ করবেন ভাবছেন তারা নির্দ্বিধায় উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করুন|দেখা হবে পরের পর্বে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

নন্দ উৎসব

নন্দ উৎসব পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক কংসের হাত থেকে তাঁর প্রজাদের রক্ষা করতে মাতা দেবকীর কোলে বিষ্ণু অষ্টম অবতার রূপে জন্ম নেন শ্রী কৃষ্ণ|শ্রী কৃষ্ণের জন্ম তিথি উপলক্ষে প্রতিবছর ভাদ্রমাসে কৃষ্ণা অষ্টমী তিথিতে পালিত হয় জন্মাষ্টমী যা কাল মহা সমারোহে গোটা দেশ জুড়ে পালিত হয়েছে|আমার গৃহ মন্দিরে সারাদিন ব্যাপী পুজো অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ দেখেছেন|ধন্যবাদ আপনাদের|তবে উৎসব এখনো শেষ হয়নি|শাস্ত্র মতে জন্মাষ্টমীর ঠিক পরের দিনই ভারতবাসী মেতে ওঠেন নন্দ উৎসবে। পুরাণ কাহিনী অনুযায়ী কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল রাত্রে।গোকুল রাজ নন্দ হলেন শ্রীকৃষ্ণের পালিত পিতা|নন্দ সেই  আনন্দ উৎসব উদযাপন করেছিলেন পরেরদিন সকালে। সেই খবর শুনে সমস্ত গোকুলবাসী সেদিন মেতে উঠেছিলেন আনন্দে। এই দিনটিকে কেন্দ্র করেই শুরু নন্দ উৎসব। মথুরা ও বৃন্দাবনের পাশাপাশি নদীয়ায় মহা সমারোহে জন্মাষ্টমীর পরদিন পালিত হত নন্দ উৎসব। বহু স্থানে,এই উৎসবে শিশুরা শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানান ঘটনা ছড়া আকারে বলে বা গান গেয়ে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে, প্রত্যেক গৃহস্থের বাড়ি গিয়ে  সংগ্রহ করত তালের বড়া।এখনও জন্মাষ্টমীর পরের দিন নন্দউৎসব পালিত হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়।বলা যায় এই নন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়েই সমাপ্ত হয় কৃষ্ণের জন্মোৎসব, এরপর আবার একটা বছরের অপেক্ষা| পালন করুন নন্দ উৎসব|আগামী দিনে আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আসবো আপনাদের সামনে|দেখতে থাকুন ইউটিউব ও টিভির অনুষ্ঠান|আর যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে বা সমস্যারা সমাধান চাইলে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|