আজকের পর্ব ধনতেরাস নিয়ে। আজ জানবোএই উৎসবের সাথে জড়িত এক অদ্ভুতপৌরাণিক ঘটনা এবং এই উৎসবের শাস্ত্রীয় বা আধ্যাত্মিক এবং পৌরাণিক গুরুত্ব|এক সময়ে শুধু মাত্র অবাঙালিদের মধ্যে এর প্রচলনথাকলেও এখন বাঙালিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এই উৎসব। এই উৎসবে মূলত সোনা কেনা হয়।ধনতেরাসের পরের দিন নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী।প্রাচীন কালে ভারতবর্ষে এক রাজা ছিলেন, তার নাম ছিলো রাজা হিমা, রাজা হিমার ১৬ বছরের ছেলের এক অভিশাপ ছিল। তার কুষ্টিতে লেখা ছিল, বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হবে। তার স্ত্রীও জানত সেই কথা। তাই সেই অভিশপ্ত দিনে সে তার স্বামীকে সে দিন ঘুমোতে দেয়নি। শোয়ার ঘরের বাইরে সে সমস্ত গয়না ও সোনা-রূপার মুদ্রা জড়ো করে রাখে। সেই সঙ্গে সারা ঘরে বাতি জ্বালিয়ে দেয়। স্বামীকে জাগিয়ে রাখতে সে সারারাত তাকে গল্প শোনায়, গান শোনায়। পরের দিন যখন মৃত্যুর দেবতা যম তাদের ঘরের দরজায় আসে, আলো আর গয়নার জৌলুসে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোয়ার ঘর পর্যন্ত তিনি পৌঁছন ঠিকই। কিন্তু সোনার, হিরে,জহরতের উপর বসে গল্প আর গান শুনেই তাঁর সময় কেটে যায়। সকালে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যান তিনি। রাজপুত্রের প্রাণ বেঁচে যায়। পরদিন সেই আনন্দে ধনতেরাস পালন শুরু হয়।এই ঘটনার অন্তর্নিহিত অর্থ হলো যার প্রতি দেবী লক্ষী প্রসন্ন হন তিনি তার ঐশর্য এবং সম্পদের বলে প্রতিকূলতা জয় করেন।দীপাবলী মূলত পাঁচ দিনের উত্সব। এর আর এক নাম আছে— ধনাত্রয়োদশী বা ধনবত্রী ত্রয়োদশী। ‘ধন’ শব্দের মানে সম্পত্তি। ত্রয়োদশী শব্দের অর্থ হিন্দু ক্যালেন্ডারের ১৩তম দিন। দীপাবলীর সময় লক্ষ্মীপুজোর দিন দুই আগে ধনতেরাস হয়। বলা হয়, ধনতেরাসের দিন দেবী লক্ষ্মী তার ভক্তদের গৃহে যান ও তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করেন। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে এই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা এ দিন দামি ধাতু কেনেন। সম্পদের দেবতা কুবেরও এ দিন পূজিত হন|ভারতে ধনতেরাস উত্সব উদযাপিত হয় সোনা, রুপো বা বাসন কিনে। একে সৌভাগ্যের লক্ষণ বলা হয়।যারা প্রতিকার রূপের রত্ন, রুদ্রাক্ষ বা যন্ত্র ধারণ বা স্থাপন করতে চান তাদের জন্য এই সময় শ্রেষ্ঠ সময়।সবাইকে ধনতেরাসের শুভেচ্ছা।সামনেই দীপাবলী। চলছে কালী কথা। আগামী পর্বে যথা সময়ে ফিরে আসবো কালী কথার একটি বিশেষ পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।