দীপাবলী উপলক্ষে শুরু করেছি কালী কথা।
কালী কথা মানে দেবী কালিকার মাহাত্ম তার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ব্যাখ্যার পাশাপাশি সারা বাংলা জুড়ে অবস্থান করা অসংখ্য কালী মন্দিরের কথা আপনাদের সামনের তুলে ধরা।আজ লিখবো চন্দ্র কোনার সিংহ বাড়ির কৌটো কালীর কথা। দেবীর কেনো এই অদ্ভুত নাম তা পরে জানাচ্ছি আগে এই পুজো সম্পর্কে কিছু তথ্য জানিয়ে দিই।
প্রায় তিনশো বছর ধরে চন্দ্রকোণা এক নম্বর ব্লকের পুড়শুড়ি গ্রামে পূজিতা হয়ে আসছেন সিংহ পরিবারের কৌটো কালী মা|মনে করা হয় পুড়শুড়ি গ্রামের সিংহ পরিবারের এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন জমিদার রাম চন্দ্র সিংহ ১২৭৪ সালে |নিয়ম অনুযায়ী, দেবী প্রতিমাকে পুরোহিত ছাড়া কেউ দর্শন করতে পারেন না। মহিলারা তো রীতিমতো ব্রাত্য মাতৃদর্শনে। এমনকি ওই পরিবারের বাড়ির লোকজনও মাতৃদর্শন করেন না|পুজোর সব দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় ঘোষ পরিবার সিংহ পরিবার কেবলমাত্র অতিথি হিসেবে থাকে|
এই দেবীর পুজো ও মন্দিরের সাথে জড়িত আছে কিছু বিচিত্র প্রথা যা শুনতে বেশ অদ্ভুত লাগে|কয়েকশ বছর ধরে এই রীতি নীতি পালিত হয়ে আসছে এখানে|কৌটো কালী মাকে বিষ্ণু মন্দিরে ঠাঁই দেন জমিদার নীলকন্ঠ সিংহ। ক্ষুদ্রকৃতি মা কালী সারা বছর বিষ্ণু মন্দিরেই অধিষ্ঠান করেন একটি কৌটোর মধ্যে শুধু কালীপুজোর সময় মাত্র চার ঘন্টার জন্য মন্দির থেকে দেবী প্রতিমাকে বার করা আনা হয়| আবার পুজো শেষে তাকে কৌটোর মধ্যে রেখে দেয়া হয়।সেই কারণেই দেবী এখানে কৌট কালী নামে প্রসিদ্ধ|
আজও পুজো উপলক্ষে দেবীর সামনে দেওয়া হয় ছাগল বলিও। রীতি মেনে চার ঘন্টার মধ্যে পুজো ও ছাগল বলি সম্পন্ন করে, ফের দেবীপ্রতিমা বিষ্ণু মন্দিরে রেখে আসেন পুরোহিত| এই ভাবে নিয়ম ও প্রথা মেনে প্রতিটি বিশেষ তিথি তে এখানে কালীপূজা হয়|স্থানীয়দের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় দেবী কৌটা কালী।
আগামী পর্বে আবার কোন বিশেষ কালী মন্দিরের কথা নিয়ে আপনাদের সামনে আসবো কালী কথা পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।