Home Blog Page 18

কালী কথা – হ্যাপা কালী

কালী কথা – হ্যাপা কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ফল হারিনি অমাবস্যা উপলক্ষে শুরু করেছি কালী কথা। বেশ কয়েকটি কালী মন্দিরের ইতিহাস ইতিমধ্যে আপনাদের বলেছি। আজ হুগলির হ্যাপা কালী নিয়ে লিখবো।

 

পান্ডুয়ার বেলুন ধামাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলুন গ্রামে হয় এই হ্যাপা কালীর পুজো।কেনো নাম হ্যাপা কালী হলো সে নিয়েও এক জনশ্রুতি প্রচলিত আছে।শোনা যায় মা কালী প্রতিষ্ঠা করতে অনেক হ্যাপা পোহাতে হয়েছিল। বহু বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় দেবীর মন্দির তাই নাম হয়েছে হ্যাপা কালী।

 

কথিত আছে, এলাকার বাগদিপাড়ার কয়েকজন ডাকাত এই পুজোর সূচনা করেন। মা কালীর পুজো দিয়ে তাঁরা ডাকাতি করতে যেতেন ডাকাতরা। পরবর্তী কালে এলাকার সাধারণ মানুষ পুজোর দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন।

 

এখানে তন্ত্র মতে দেবীর পুজো হয়। ছাগ বলি হয় পুজোর রাতে।প্রাচীন এই পুজোয় ব্যবহৃত গঙ্গাজল থেকে আলতা সিঁদুর, সবই নীলাম হয় পুজোর পরের দিন। নিলামে ওঠা প্রসাদ নিতে ভিড় জমান পার্শ্ববর্তী দশ বারোটি গ্রামের মানুষ। নিলাম থেকে আয় হওয়া অর্থ কাজে লাগানো হয় পুজোতে।

 

এই ভাবেই নিলামের অর্থে পাতার ছাউনি থেকে গড়ে উঠছে সুন্দর পাথরের মন্দির। তাছাড়া নিলামে কেনা পূজা সামগ্রী বাড়িতে রাখা শুভ বলে বিশ্বাস করেন স্থানীয়রা।

 

ফিরে আসবো পরবর্তী কালী কথা নিয়ে আগামী পর্বে। থাকবে আরেকটি প্রাচীন মন্দিরের ইতিহাস পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কালী কথা – তারাশঙ্করী পীঠের কালী

কালী কথা – তারাশঙ্করী পীঠের কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শুরু করেছি কালী ঘাটের কালীদিয়ে আজ কালী কথায় কলকাতার বেলগাছিয়া অঞ্চলে অবস্থিত আরো এক প্রসিদ্ধ কালী মন্দির

নিয়ে আলোচনা করবো কালী কথায়।আজকের পর্বে জাগ্রত তারা শঙ্করী পীঠ সম্পর্কে লিখবো।

 

শাস্ত্রে উল্লেখিত শক্তি পীঠ নাহলেও তারাপীঠের মতো এটিকেও একটি সিদ্ধ পীঠ রূপে দেখা হয়। ১৯৫২ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক এবং তন্ত্রমতে মায়ের আরাধনা শুরু করেন ।

 

শোনা যায় অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক। তিনি ভবিষ্যত দেখতে পারতেন|একবার তৎকালীন এক নামি রাজনীতি বিদ এই মন্দিরে এসেছিলেন তখন মাতৃ সাধক ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিলেন তিনি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হবেন এবং মন্ত্রী হবেন।পরবর্তীতে বাস্তবে হয়েছিল ঠিক তেমনটাই। তিনি প্রথমে সাংসদ হন এবং পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন।

 

বহু প্রাচীন কাল থেকে একটি অদ্ভুত রীতি পালিত হয় এই মন্দিরে|মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় বারাণসীর মণিকর্নিকা মহাশ্মশান থেকে এক সধবার চিতার আগুন আনা হয় এখানে সেই থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলছে সেই চিতার আগুন|অত্যন্ত পবিত্র অগ্নি রূপে এই আগুন কে শ্রদ্ধা করা হয় এই মন্দিরে|

 

মা তারার পাশাপাশি এই মন্দিরের পূজিত হন যশমাধব।তার মূর্তি নিমকাঠের তৈরি যা আনা হয়েছিলো বাংলাদেশ থেকে।নিত্য পুজোয়

যশমাধবকে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ।

একই সঙ্গে তারাশঙ্করী পীঠে পূজিত হন কালভৈরব|তারাশঙ্করী পীঠের আরও এক আকর্ষণ হল ‘নরমুণ্ডি আসন’। বাঘ, হাতি, শেয়াল, সাপ, অপঘাতে মৃত ব্যক্তি, চণ্ডাল ইত্যাদির ৯টি মাথার খুলি দিয়ে সজ্জিত এই আসন তন্ত্র সাধনায় ব্যাবহিত হতো।

 

তারাশঙ্করী পীঠ কলকাতা তথা দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং জাগ্রত কালী ক্ষেত্র।প্রায় প্রত্যেক বিশেষ তিথি এবং দীপান্বিতা অমাবস্যায় এখানে বিশেষ পুজো এবং হোম যজ্ঞর আয়োজন হয়।সেই সময়ে বহু মানুষের ভিড় হয় এই মন্দির প্রাঙ্গনে।

 

আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো অন্য

একটি কালী মন্দিরের কথা নিয়ে কালী কথায়।ফল হারিণী অমাবস্যা পর্যন্ত

চলবে কালী কথা।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কালী কথা – দেবী ঝিংলেস্বরী

কালী কথা – দেবী ঝিংলেস্বরী

 

কালী কথায় আজ বলবো পূর্ব মেদিনীপুরে অবস্থিত ঝিংলেস্বরী মায়ের মন্দিরের কথা|

 

একান্ন সতী পীঠের অন্যতম তমলুক বর্গভীমা মায়ের সঙ্গে ঝিঙলেশ্বরী মায়ের গভীর যোগাযোগ রয়েছে বলে। লোকমুখে প্রচলিত। দেবী বর্গভীমাকে ভীমা মা বলা হয়। কথিত আছে ভীমা মায়ের বোন দেবী ঝিংলেশ্বরী।শোনা যায় এক কালে নদীর গভীরে গোপন সুড়ঙ্গ পথে ভীমা মা এবং ঝিঙলেশ্বরী মায়ের মন্দিরে যাওয়ার পথ ও ছিলো।সেই পথ আজ লুপ্ত তবে বহু জনশ্রুতি আজও রয়ে গেছে।

 

কথিত আছে আগে এই স্থান দিয়ে বয়ে যেতো হলদি নদী, নদীতে যাতায়াত করতো বিরাট বিরাট জাহাজ, একবার এমনই একটি জাহাজ নোঙর ফেলেছিলো এই স্থানে|জাহাজের নাবিকরা যখন ধূমপান করতে ব্যাস্ত তখন হটাৎ একটি মেয়ের আবির্ভাব হয় সেখানে, মেয়েটি নাবিকদের কাছে আগুন চায়|নাবিকরা মেয়েটিকে আগুন নিতে জাহাজে আসতে বলে|মেয়েটির রহস্যময়ী ভাবে হেসে বলে সে জাহাজে উঠলে বিপর্যয় ঘটতে পারে|নাবিকরা ছোট্ট মেয়েটির কথায় গুরুত্ব না দিলে অবশেষে মেয়েটিকে জাহাজে উঠতে হয়|মেয়েটি জাহাজে পা দেয়ার সাথে সাথে জাহাজ বসে যায় এবং মাস্তলে দেখা যায় দেবী মূর্তি|

 

এই অলৌকিক ঘটনা আজও লোকের মুখে শোনা যায়|মানুষের বিশ্বাস ওই স্থানেই নির্মিত হয়েছে এই প্রাচীন ঝিংলেস্বরী মন্দির|দেবী সেদিন বালিকার বেশে নাবিক দের জাহাজে উঠেছিলেন|আজও তিনি ঝিংলেস্বরী রূপে সেই স্থানে স্বমহিমায় বিরাজমান|

 

বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের ভবানীপুর নামক স্থানে রয়েছে এই প্রাচীন মন্দির যা কোনো শক্তি পীঠ না হয়েও স্থানীয়দের কাছে বিশেষ শ্রদ্ধার এবং অত্যন্ত প্রসিদ্ধ|

 

প্রাচীন মন্দিরটি ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিলো এবং কে নির্মাণ করেছিলেন তা সঠিক ভাবে জানা যায়না তবে পরবর্তীতে মহিষাদলের রাজা প্রচুর জমি দান করেন মন্দিরের উদ্দেশ্যে এবং মন্দিরের পূজার ভার অর্পণ করা হয় একটি বিশেষ পরিবারকে যে পরম্পরা আজও চলছে|দেবী এখানে উগ্রতারা রূপে বিরাজিতা|দূর্গা পুজো উপলক্ষে এখানে বহু মানুষের সমাগম হয় এবং নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়|তাছাড়া সারাবছরই সূর্য দয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিত্য পুজোর

আয়োজন হয়।

 

ফিরে আসবো কালী কথার আগামী পর্ব নিয়ে। থাকবে আরো একটি প্রাচীন মন্দিরের ইতিহাস এবং তার মাহাত্ম। দেখতে থাকুন।

কালী কথা – কালী ঘাটের কালী

কালী কথা – কালী ঘাটের কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আসন্ন ফল হারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে আবার শুরু করছি কালী কথা। বাংলার বিভিন্ন কালী মন্দিরের ইতিহাস এবং অলৌকিক ঘটনা নিয়ে আলোচনা করবো ধারাবাহিক ভাবে।

আজকের পর্ব মহা তীর্থ কালীঘাট নিয়ে।

 

কলকাতার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করা ব্যক্তি দের একটি বড়ো অংশ মনে করেন এই কলকাতা নাম টির উৎপত্তি হয়েছে কালী কালী ঘাটের কালী থেকে। কালী খেত্র থেকে কলিকাতার উৎপত্তি |অর্থাৎ কলকতার নামের পেছনেও আছে এই বিশেষ কালী মন্দিরের অবদান।

 

পীঠ মালা তন্ত্র মতে সতীর ডান পায়ের চারটি আঙ্গুল পতিত হয়েছিলো এই পবিত্র স্থানে|যদিও অন্য একটি মত অনুসারে সতীর একটি মাত্র আঙ্গুল পতিত হয়েছিলো কালীঘাট এর পবিত্র স্থানে|দেবীর ভৈরব রূপে এখানে বিরাজমান নকুলেশ্বর|দেবী এখানে দক্ষিনা কালী রূপে বিরাজ করছেন।

 

জনশ্রুতি আছে বহু প্রাচীন কালে যখন এই

অঞ্চল ছিলো ঘন অরণ্যে ঢাকা তখন এই গঙ্গা তীরবর্তী দুর্গম অঞ্চলে কষ্টি পাথরের দেবী মূর্তি গড়ে তাতে প্রান প্রতিষ্ঠা করেন ব্রহ্মনন্দ গিরি ও আত্মারাম ব্রহ্মচারি নামে দুই সন্ন্যাসী|বর্তমানে আমরা যে কালীঘাট মন্দির টি দেখতে পাই তা নির্মাণ করেন বিখ্যাত সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের শিবদাস চৌধুরী 1809 সালে ও পরবর্তীতে মন্দির টি সংস্কার করেন এই পরিবারের অন্য আরেক জমিদার সন্তোষ চৌধুরী|

 

কালী ঘাট মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত দেবী মূর্তি কষ্ঠি পাথরে নির্মিত|দেবীর জিভ, দাঁত মুকুট, এমনকি মুন্ড মালাটিও সবই স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত |মন্দিরের মধ্যে একটি বিশেষ কক্ষে একটি সুরক্ষিত সিন্দুকে দেবীর প্রস্তরীভূত অঙ্গ টিও স্বজত্নে রক্ষিত আছে যা কখনো জন সমক্ষে আনা হয় না|

 

বর্তমান মন্দির টি তৈরী হয়েছে এক বিঘের কিছু বেশি পরিমান জমিতে এবং আনুমানিক খরচ হয়েছিলো তিন লাখ টাকা |মন্দির টির উচ্চতা নব্বই ফুট|পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আদি গঙ্গা ও অদূরে কেওড়া তলা মহা শ্মশান|চার পাশে ছড়িয়ে রয়েছে আরো অনেক গুলি রাধা কৃষ্ণ ও শিবের মন্দির|সব মিলিয়ে সর্বদা এক ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পরিবেশ বিরাজ করছে এই বিশেষ শক্তি পীঠ কে কেন্দ্র করে যা ঠিক ভাষায় প্রকাশ করা যায়না অনুভব করতে হয়, শ্রদ্ধা ও ভক্তি দিয়ে|

 

এক কালে কালী ঘাটের গঙ্গা ছিলো প্রশস্ত এবং ব্যাস্ত তম গঙ্গার ঘাট ছিলো এটি। দেশ বিদেশ থেকে বহু তীর্থ যাত্রী জল পথে আসতেন দেবীক দর্শন করতে। ডাকাত এবং হিংস্র জীব জন্তুর

ভয় উপেক্ষা করে তারা পুজো দিতেন মায়ের মন্দিরে। তন্ত্র সাধকরা আসতেন তন্ত্র সাধনা করতে। তবে সেই সময় আর নেই। গঙ্গায় জলস্তর কমেছে। পরিবেশে লেগেছে আধুনিকতার ছোয়া। শুধু অটুট রটে ভক্তি এবং শ্রদ্ধা।

 

এমনিতে প্রায় প্রতিদিনি ভক্ত দের ভিড় উপচে

পড়ে কালীঘাটে তবে কিছু বিশেষ বিশেষ তিথিতে বিশেষ পূজাঅর্চনা অনুষ্ঠিত হয় |প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ, দুর্গাপূজা ও দীপান্বিতা কালীপূজার দিন মন্দিরে প্রচুর ভক্ত ও পু্ণ্যার্থীর সমাগম ঘটে|

 

আজ কালী ঘাট নিয়ে আলোচনা এখানেই

থামাচ্ছি ফিরে আসবো আগামী দিনে পরবর্তীকালী কথা পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

বিশেষ পর্ব – জগন্নাথ এবং নবগ্রহ

বিশেষ পর্ব – জগন্নাথ এবং নবগ্রহ

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

পবিত্র অক্ষয় তৃতীয়ার দিন চন্দন যাত্রার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে গেলো প্রভু জগন্নাথের রথ যাত্রার প্রস্তুতি।ধারাবাহিক ভাবে তাই এই সময়ে কয়েকটা দিন জগন্নাথ মহিমা নিয়ে আলোচনা করছি। আজ জগন্নাথ দেবের সাথে নব গ্রহের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবো।

জগন্নাথ জগতের নাথ।সেদিক দিয়ে সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র তার অধীনে। জগন্নাথ কৃপা লাভ করলে সমস্ত গ্রহ দোষ খণ্ডন হয় বলে মনে করা হয়। তাছাড়া রথে বিরাজমান জগন্নাথ দর্শন করলেও গ্রহের অশুভ প্রভাব দুর হয়।

শাস্ত্রে আছে জগন্নাথ দেবের দ্বার সর্বদাই তার
ভক্ত দের জন্য উন্মুক্ত। যখন সাধারণ মানুষের জন্য মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায় তখন স্বর্গ থেকে দেবতারা আসেন জগন্নাথ দর্শন করতে। সেই দেবতাদের মধ্যে নব গ্রহও থাকেন।

অন্য একটি ব্যাখ্যা অনুসারে সমস্ত গ্রহরা প্রভুর শ্রী অঙ্গে বিরাজ করেন।প্রভুর চোখের পলক নেই তিনি সদা জাগ্রত এবং বলা হয়, দুই চোখের একটি সূর্য অন্যটি চন্দ্রের প্রতীক। জগন্নাথের কপালে বাস করেন দেবগুরু বৃহস্পতি। কালো অংশ গ্রহরাজ শনির প্রতীক। একপাশে থাকা হলুদ রেখা রাহুকে নির্দেশ করে। মহাপ্রভুর নাকে মঙ্গলগ্রহ বিরাজমান। এছাড়া দুই পাশে বুধ, শুক্র এবং কেতুর অবস্থানও রয়েছে।

তাই বলা হয় যে জগন্নাথের স্মরণ নিলে যে কোনও গ্রহের দোষ কেটে যায়। কারণ তাঁর পুজো করা মানেই একত্রে নবগ্রহের বন্দনা করা। সেই সঙ্গে জগন্নাথের কৃপায় ভক্তের সমস্ত দুর্ভোগ দুর হয়।

এবার একটা সহজ উপাচার বলি। যারা জগন্নাথ দেবকে সহজে সন্তুষ্ট করে তার কৃপা লাভ করতে চান তারা নিয়মিত জগন্নাথদেবকে খিচুড়ি ভোগ অর্পণ করুন। ভালো ফল পাবেন।

ফিরে আসবো জগন্নাথদেব সংক্রান্ত
আরো অনেক পৌরাণিক ঘটনা এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা নিয়ে।আগামী পর্ব গুলিতে । পড়তে থাকুন
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

বিশেষ পর্ব – জগন্নাথ দেবের চন্দন যাত্রা

বিশেষ পর্ব – জগন্নাথ দেবের চন্দন যাত্রা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

দেবী দূর্গা বা কালীর পাশাপাশি বাঙালির সাথে জগন্নাথদেবের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। পুরী বাঙালির অন্যতম আস্থা সব শ্রদ্ধার স্থান।সেই পুরীতে অক্ষয় তৃতীয়ায় অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথের চন্দন যাত্রা। আজকের পর্ব এই চন্দন যাত্রা নিয়ে।

 

প্রভু জগন্নাথের রথ যাত্রার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় পবিত্র চন্দন যাত্রার দিন থেকেই। এই চন্দন যাত্রা নিয়ে নানা পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত আছে।

কথিত আছে শ্রীজগন্নাথদেব মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে বৈশাখী শুক্লা অক্ষয় তৃতীয়াতে সুগন্ধি চন্দন দ্বারা তার শ্রী অঙ্গে লেপন করার নির্দ্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিন থেকে শুরু হয় চন্দন যাত্রা। উৎসব।

 

গ্রীষ্ম ঋতুতে প্রভু জগন্নাথ কর্পূর এবং চন্দন লেপনের মাধ্যমে গরমের কষ্ট থেকে রেহাই পান তাই এই রীতি তিনি নিজে শুরু করেছিলেন বলে মনে করা হয়।

 

আয়ুর্বেদ মতে চন্দন হল সর্বশ্রেষ্ঠ প্রলেপন। যেহেতু ভারতে বৈশাখ মাস অত্যন্ত উষ্ণ থাকে তাই চন্দনের শীতল গুণ ভগবানের আনন্দ প্রদান করে। জগন্নাথের দুই চক্ষু ব্যতীত সর্বাঙ্গে চন্দন লেপন করা হয়ে থাকে। এই সময়ে বিগ্রহগকে নিয়ে শোভাযাত্রা করা হয় এবং জগতের নাথকে মন্দির পুষ্করিণীতে নৌকাবিহার করানো হয়ে থাকে।

 

শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে আছে বৃন্দাবনে পরম বৈষ্ণব শ্রীমাধবেন্দ্র পুরীকে স্বপ্নে তাঁর আরাধ্য শ্রীগোপাল বলছেন, “আমার শরীরের তাপ জুড়োচ্ছে না। শ্রী ক্ষেত্র থেকে চন্দন নিয়ে এসো এবং তা ঘষে আমার অঙ্গে লেপন কর, তা হলে তাপ জুড়োবে।” বৃদ্ধ মাধবেন্দ্র পুরী পূর্বভারতে নীলাচলে জগন্নাথধাম পুরীতে এসে রাজার কাছে পূর্ব স্বপ্নগত সমস্ত কথা বললেন। রাজা তার আরাধ্য গোপালের জন্য এক মণ সুগন্ধি চন্দন দেন। চন্দন নিয়ে ফেরার মাধবেন্দ্র পুরী রেমুনা নামক স্থানে অবস্থিত শ্রীগোপীনাথ মন্দিরে আসেন। সেই রাত্রে তার আরাধ্য গোপাল তার স্বপ্নে এসে বলেন “হে মাধবেন্দ্র পুরী, আমি ইতিমধ্যেই সমস্ত চন্দন ও কর্পূর গ্রহণ করেছি। এখন কর্পূর সহ এই চন্দন ঘষে ঘষে শ্রীগোপীনাথের অঙ্গে লেপন কর। গোপীনাথ এবং আমি অভিন্ন।

 

পরের দিন মাধবেন্দ্র পুরী পুরীরর রাজা কে সব বলেন এবং ঠিক হয় দীর্ঘ ২১ দিন ধরে প্রত্যহ একজন পূজারী প্রভু গোপীনাথের শ্রীঅঙ্গে চন্দন লেপন করবেন । তাই হয়। সেইদিন থেকেই চন্দন যাত্রা শুরু হয়। সেই রীতি নীতি আজও সমান ভাবে চলছে।তবে বর্তমানে পুরীর জগন্নাথ দেবের চন্দন যাত্রা সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং প্রসিদ্ধ।চন্দন যাত্রার পর দেবস্নান পূর্ণিমায় হবে স্নান যাত্রা এবিং সব শেষে রথ যাত্রা

 

প্রভু জগন্নাথ সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য এবং ঘটনা নিয়ে চলতে থাকবে ধারাবাহিক আলোচনা। ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

 

চন্দন যাত্রার মধ্যে দিয়েই শুরু হয় রথ যাত্রার প্রস্তুতি। এর পরে হবে প্রভুর স্নান যাত্রা। তারপর রথ যাত্রা।সব শেষে উল্টো রথ যাত্রার মধ্যে দিয়ে পরিক্রমা শেষ হবে। আবার এক বছরের অপেক্ষা

শুরু হবে পরবর্তী রথ যাত্রার জন্য।

 

আধ্যাত্মিক, শাস্ত্রীয় এবং পৌরাণিক বিষয় নিয়ে চলতে থাকবে ধারাবাহিক আলোচনা।

ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

অক্ষয় তৃতীয়ার শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

যেকোনও শুভ কাজ আরম্ভের জন্য অক্ষয় তৃতীয়া তিথিকে প্রশস্ত বলে মনে করা হয়|আজ যেকোনো শুভ কাজ শুরু হলে তা সফল এবং স্বার্থক হয়।কারন বহু পৌরাণিক শুভ ঘটনা ঘটেছে এই তিথিতে।

 

এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনই মহাভারত রচনা শুরু করেছিলেন ব্যসদেব। তিনি এই চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতেই মহাভারতের শ্লোক উচ্চারণ শুরু করেন আর সিদ্ধিদাতা গণেশ তা লিখতে শুরু করেন।

 

ভীষণ গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে মা যশোদা গোপালের সারা অঙ্গে চন্দন লেপন করে রাখতেন দহন কমানোর জন্য। সেই প্রথা মেনে আজও মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের গাত্র দহন নিবারণের জন্য অঙ্গ সেবা ও চন্দন লেপন একুশ দিন

ধরে অনুষ্ঠিত হয়। এই চন্দন যাত্রার সূচনা হয় অক্ষয় তৃতীয়ায়।

 

বিষ্ণুর দশাবতারের ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের জন্ম চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে অর্থাৎ এই অক্ষয়তৃতীয়ার দিনে হয়েছিলো।

তাই দেশের বহু স্থানে আজকের দিনটি ‘পরশুরাম জয়ন্তী’ হিসেবেও পালিত হয়|

 

তন্ত্রের জগতেও এই তিথি তাৎপর্যপূর্ণ কারন অক্ষয় তৃতীয়া হল দশমহাবিদ্যার অন্যতম দেবী ধুমাবতীর আবির্ভাব তিথি। আবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে।

 

অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে সত্যযুগের অবসান হয়ে ত্রেতা যুগের সূচনা হয়।

 

সবাইকে জানাই শুভ অক্ষয় তৃতীয়া।

ফিরে আসবো পরের পর্ব নিয়ে।

ধারাবাহিক আধ্যাত্মিক আলোচনা

নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

অক্ষয় তৃতীয়ার শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

অক্ষয় তৃতীয়ার শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ অক্ষয় তৃতীয়ার শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা আপনাদের শোনাবো।জানাবো এই অনুষ্ঠানের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য।

 

আমাদের বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে যেকোনো শুভ কাজ শুরু করা যেতে পারে আজকের দিনে|আজকের দিনে সোনা রুপো বা মূল্যবান রত্ন ক্রয় করে গৃহে আনলে গৃহস্তের কল্যাণ হয় তাছাড়া আজ লক্ষী ও কুবেরের পুজোর মাধ্যমেও সৌভাগ্য লাভ করা যায়|

 

দেবী লক্ষী ধন প্রদান করেন এবং সেই ধন সম্পত্তির রক্ষাকর্তা হলেন কুবের তাই এই দুজন সন্তুষ্ট থাকলে তবেই অক্ষয় থাকে সম্পদ। আজ কুবের এবং মহা লক্ষী দুজনের আশীর্বাদ পাওয়ার দিন।

 

পুরান এবং বিভিন্ন শাস্ত্রে এই উৎসব সম্পর্কে অনেক তথ্য আছে।সনাতন ধর্মে ধন ও সম্পদের দেবতা হলেন রাবনের ভ্রাতা এবং মহাদেবের অন্যতম ভক্ত কুবেরদেব|আসলে হলেন দেবতাদের কোষাধক্ষ্য তাকে প্রতারিত করে লঙ্কা থেকে বিতাড়িত করেন রাবন এবং ছিনিয়ে নেন তার পুস্পক রথ, যে ব্যবহিত হয়েছিলো পরবর্তীতে রামায়নের সময়ে|তবে কুবের হাল ছাড়েননি কঠোর তপস্যায় মহাদেবকে সন্তুষ্ট করে তিনি জগতের সমস্ত বৈভব ও ঐশ্বর্যর দেবতা হন|

 

পুরাণ মতে আজকের এই অক্ষয় তৃতীয়ার তিথিতেই কুবেরকে তাঁর অনন্ত বৈভব দান করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব। পরবর্তীতে দেব শিল্পী বিশ্বকর্মা কৈলাসের কাছে অলকায় কুবেরের প্রাসাদ তৈরি করে দেন যা অলোকাপুরী নামে খ্যাত|

 

বিশ্বাস করা হয় আজ কুবেরের পুজো করলে এবং তার কাছে নিজের অভাব অভিযোগ জানালে তিনি কাউকে শুন্য হাতে ফেরান না।আরো অনেক পৌরাণিক বিষয় জড়িয়ে আছে অক্ষয় তৃতীয়ার সঙ্গে সেই সব পৌরাণিক ঘটনা এবং ব্যাখ্যা নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে।

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কৃষ্ণ কথা – কালীয়া নাগ দমন

কৃষ্ণ কথা – কালীয়া নাগ দমন

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শ্রী কৃষ্ণের বাল্য লীলা গুলির মধ্যে অত্যন্ত রোমাঞ্চকর একটি অধ্যায় তার কালিয়া নাগ দমন পর্ব। আজকের পর্বে কালিয়া দমন লীলা নিয়ে আলোচনা করবো।

 

কৃষ্ণের সময়ে কালীয়া নাগ রামাণকনামক এক দ্বীপে বাস করতো । ভগবান শ্রীবিষ্ণুর বাহন শ্রী গরুড় দেবের ভয়ে কালীয়া নাগ একবার রামাণক দ্বীপ ছেড়ে চলে আসেন বৃন্দাবনের যমুনা নদীতে।

 

কালিয়া নাগের আগমনে বৃন্দাবনবাসীর সাধারণ জীবন যাপন ব্যাহুত হয়। কারন তাদের জীবন ছিলো যমুনা কেন্দ্রিক।কালীয় নাগের বিষের প্রভাবে যমুনার জল বিষাক্ত হয়ে যায় । যখনই গাভী, বাছুরেরা সেই জল পান করে তৎক্ষণাৎ তাদের মৃত্যু ঘটতে থাকে । সকলে কালীয়া নাগের ভয়ে ছিল তটস্থ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই সমস্যার সমাধান করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

 

একদিন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সখাদের সাথে যমুনার তীরে খেলছিলেন। খেলার ছলেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যমুনায় ডুব দিলেন। কালীয়া নাগ ভগবানকে তৎক্ষণাৎ সেই স্থান পরিত্যাগ করতে বললেন। কিন্তু ভগবান সেই কথায় কর্ণপাত না করে নদীতে সাঁতার কাটতে লাগলেন।এরপর রাগে কালিয়া নাগ কৃষ্ণকে আক্রমণ করে বসে।

শ্রীকৃষ্ণকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ।

 

তখন শ্রীকৃষ্ণ এতই বৃহৎ আকার ধারণ করলেন যেন কালীয়া নাগ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। শ্রীকৃষ্ণ তাকে আঘাত করতে লাগলেন এবং তার ফনার উপর নৃত্য করতে লাগলেন।কালিয়া ভগবানের অসীম শক্তি উপলব্ধি করে তার কাছে ক্ষমা চান।এরপর শ্রীকৃষ্ণ একটি শর্তে ক্ষমা করতে রাজী হন।শর্তটি ছিল কালীয়া নাগ কে অবশ্যই যমুনা ও বৃন্দাবন পরিত্যাগ করে দূরে মধ্য সমুদ্রের অবস্থিত রামাণক দ্বীপে ফিরে যেতে হবে।

অনেকই মনে করেন এই দ্বীপ বর্তমানের ফিজি নামক দেশ।আজও ফিজির লোক কথায় কালিয়া নাগের অস্তিত্ব আছে।

 

কালীয়া নাগ তার দ্বীপে ফিরে যান এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহত্ব উপলব্ধি করে তার নিত্য সেবকে পরিণত হন।একদিক দিয়ে দেখতে গেলে কালীয়া নাগ হলেন পরম সৌভাগ্যবান কারন তার ফনায় ভগবান তার শ্রীচরণ রেখেছিলেন।

 

আজকের কৃষ্ণ কথা এখানেই শেষ করছি।

ফিরে আসবো কৃষ্ণ কথার পরবর্তী পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কৃষ্ণ কথা – শ্রী কৃষ্ণ এবং গোবর্ধন পর্বত

কৃষ্ণ কথা – শ্রী কৃষ্ণ এবং গোবর্ধন পর্বত

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শ্রীকৃষ্ণের সাথে জড়িত বিষয় এবং তার বিভিন্ন লীলা এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য নিয়ে এই পবিত্র মধুসূদন মাসে আলোচনা করছি।

 

শ্রী কৃষ্ণের শৈশবের সাথে জড়িয়ে আছে গিরিরাজ গোবর্ধন পর্বতের কথা যে পর্বত আজও প্রতিটি কৃষ্ণ ভক্তের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। বৃন্দাবনের দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে এটি একটি।

 

পুরাণের কাহিনিতে মতে ভালো বৃষ্টি হয়ে যাতে ফলন ভালো হয়, তার জন্য দেবরাজ ইন্দ্রের পুজো করতেন বৃন্দাবনবাসী।কারন গবাদী পশু পালন এবং কৃষি কাজের জন্য জলের উপর নির্ভর করতে হতো।

 

কিন্তু ইন্দ্রের আরাধনায় গরীব বৃন্দাবনবাসীর বিপুল খরচ হতো। এই বিপুল ব্যয় পছন্দ করেননি শ্রীকৃষ্ণ। তাই তিনি সেই খাবার ইন্দ্রকে না দিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। শ্রীকৃষ্ণের কথা মেনে বৃন্দাবনের অধিবাসীরা ইন্দ্রের পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন দেবরাজ তিনি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে বৃন্দাবনে প্রবল বৃষ্টি নামান।ভারী দুর্যোগ দেখা দেয়।

 

দেবরাজ ইন্দ্রের রোষে বন্যা গোটা বৃন্দাবন প্রায় ভেসে যায়। কৃষ্ণের কারণেই তাঁদের এই বিপদ বলে অভিযোগ করেন বৃন্দাবনবাসী। তারা কৃষ্ণকে সাহায্য করতে বলেন।তখন তাঁদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন কিশোর শ্রীকৃষ্ণ। নিজের কনিষ্ঠ আঙুলের ডগায় বৃন্দাবনের গোবর্ধন পর্বত অনায়াসে তুলে ফেলেন শ্রীকৃষ্ণ।

 

প্রবল বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে তার নীচে আশ্রয় নেয় বৃন্দাবনের সকল মানুষ ও গবাদি পশু। টানা সাত দিন শ্রী কৃষ্ণ আঙুলের ডগায় গোবর্ধন পাহাড় তুলে অটল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।তার এই দিব্য লীলা দেখে বৃন্দাবনবাসীরা ধন্য হয়।

 

অবশেষে দেবরাজ ইন্দ্র নিজের ভুল বুঝতে পেরে সেই প্রবল বৃষ্টি বন্ধ করেন।রক্ষা পায় বৃন্দাবন

গৃহে ফিরে গেলে মা যশোদা আট দিনের অভুক্ত কৃষ্ণকে ছাপ্পান রকম পদ রান্না করে খাওয়ায়। সেই থেকে ছাপ্পান ভোগের রীতির প্রচলন হয়।

 

এই ঘটনায় শ্রী কৃষ্ণের পাশাপাশি বৃন্দাবনবাসী গোবর্ধন পর্বতের কাছেও ঋণী হয়ে পরে। তারা গোবর্ধন পর্বতকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করতে শুরু করেন এবং সেই থেকে দীপাবলির পরের দিন গোবর্ধন পুজো শুরু হয়।

 

ফিরে আসবো কৃষ্ণ কথার পরবর্তী

পর্ব নিয়ে যথা সময়ে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।