সাবর্ন রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
তিলোত্তমা কলকাতার ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায় একটি পরিবারের কথা না বললে। সেই পরিবার হলো সাবর্ন চৌধুরী পরিবার। একাধিক ইতিহাসকার মনে করেন এই কলকাতার দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন এই বংশের আদি পুরুষ লক্ষ্মীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়।আজকের পর্বে এই বাড়ির দূর্গাপুজো নিয়ে আলোচনা করবো।
মোঘল আমলে সাবর্ণ গোত্রীয় জমিদার লক্ষ্মীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় সেনাপতি মানসিংহের কাছ থেকে পেলেন আটখানি পরগণার জমিদারি সত্ত্ব। তারপর তার আর্থিক উন্নতি ও সামাজিক প্রতিপত্তি বাড়লো ধূমকেতুর গতিতে।
আগে হালিশহরের বাড়িতে পুজো হতো পরবর্তীতে জমিদার লক্ষ্মীকান্ত মজুমদার বরিশায় এক প্রকান্ড প্রাসাদ বানালেন। সেখানে তৈরী হলো চণ্ডীমণ্ডপ। সেই সুবিশাল চন্ডী মণ্ডপে শুরু করলেন দেবীদুর্গার আরাধনা।
প্রায় চারশো বছর ধরে চলে আসছে সাবর্ন রায় চৌধুরীদের দুর্গাপূজা।তবে কালের নিয়মে অনেক পরিবর্তন এসেছে। পরিবারের সদস্যর পরবর্তীতে ছড়িয়ে পরেন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। আলাদা আলাদা করে তারা দূর্গা পুজো শুরু করেন।
বর্তমানে কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় সাবর্ণদের আটটি বাড়িতে আটটি দুর্গাপুজো হয়। যার মধ্যে বড়িশায় ছয়টি বাড়ির পাশাপাশি একটি বিরাটির বাড়ি ও একটি নিমতার বাড়িতে
পুজো হয়।
আটটি বাড়িতে দেবীর গায়ের রঙ হয় স্বর্ণবর্ণা। আজও এই বাড়ির পুজোয় বিভিন্ন প্রাচীন গয়না দিয়ে সাজানো হয় দেবীকে এবং জন্মাষ্টমীতে কাঠামোপুজো হয় এবং কৃষ্ণানবমীতিথিতে বোধন হয়।বিদ্যাপতি রচিত ‘দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী’ মতেই পুজো হয় আটটি বাড়িতে।
এই পরিবারের ইতিহাস থেকে জানা যায় সুদূর অতীতে পশুবলিপ্রথা থাকলেও বর্তমানে সেই প্রথা বন্ধ রয়েছে।বাকি বাড়ি গুলিতে বাড়িতে আমিষভোগ হলেও নিমতার বাড়িতে নিরামিষভোগ হয়।
আজকের এই পর্ব এখানেই শেষ করলাম|
ফিরবো আগামী পর্বে|বনেদি বাড়ির দূর্গা পূজোর আগামী পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ।
