শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দূর্গা পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
হুগলী জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। আজকের পর্বে এই পূজোর ইতিহাস নিয়ে লিখবো।
স্থানীয়দের কাছে এই বাড়ি গোস্বামী বাড়ি নামে পরিচিত।ইতিহাস বেশ পুরোনো এবং সমৃদ্ধ।বাংলার মসনদে যখন নবাব আলিবর্দি খান তখন এই জমিদারীর পত্তন হয়।রাজা রামগোবিন্দ গোস্বামী শ্রীরামপুর গোস্বামী পরিবারের আদিপুরুষ। তাঁর নাতি হরিনারায়ণ গোস্বামীর আমলে সূচনা হয় দুর্গাপুজোর। জানা যায়, ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু হয় শ্রীরামপুর রাজবাড়িতে।
জমিদার বাড়িতে বসতবাড়ির অনুকরণে নির্মিত প্রাসাদ সংলগ্ন ঠাকুরদালানে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এখানে একচালার মধ্যে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে মা দুর্গার সাথে থাকেন কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী এবং সরস্বতী ঠাকুর। প্রতিমা সজ্জিত হয় ডাকের সাজে।
জানা যায় এই রাজবাড়িতে দুর্গাপুজোয় আসর জমিয়ে গিয়েছেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি এবং ভোলা ময়রা যাদের কবিগান ছিলো সে যুগে বিখ্যাত যা নিয়ে পরবর্তীতে সিনেমাও হয়েছে।এই বাড়িতে এসেছেন গান্ধীজি, বিধান রায় এবং নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মতো মনীষীগণ।
শুরু থেকেই এই রাজবাড়িতে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। রথের দিন কাঠামো পুজো হয়। তারপর একচালার প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়ে যায়। মায়ের ডাকের সাজ আজও বর্ধমানের পূর্বস্থলী থেকে নিয়ে আসা হয়। অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় এখনও পুরনো আমলের পিতলের ১৩৮টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। দশমীর দিন বাড়ির মহিলারা ঠাকুর দালানের বাইরে মাছ ও পান খেয়ে মাকে বরণ করার পর শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জনের প্রস্তুতি। শ্রীরামপুর রাজবাড়ি ঘাটেই করা হয় প্রতিমা বিসর্জন।
বনেদি বাড়ির পূজোর পরের পর্ব নিয়ে
ফিরে আসবো যথা সময়ে। থাকবে অন্য একটি দূর্গাপূজো নিয়ে অনেক এমন তথ্য থাকবে এমন অনেক ইতিহাস। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
