Home Blog Page 15

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ মন্দিরের বিধি নিষেধ

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ মন্দিরের বিধি নিষেধ

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

পুরীর মন্দির নিয়ে রহস্যর যেমন শেষ নেই তেমনই পুরীর মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম বা বিধি নিষেধ যা নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন এবং কৌতূহল। এই নিয়ম গুলির পেছনে থাকা শাস্ত্রীয় এবং ঐতিহাসিক কারন গুলি নিয়ে আজকের পর্বে লিখবো।

পুরীর মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের অনুমতি রয়েছে কেবলমাত্র হিন্দুদেরই এবং এই মন্দিরে বিদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।এক অংশের ইতিহাসবিদের মতে, একাধিকবার অহিন্দু বৈদেশিক শত্রু পক্ষ এই মন্দিরে হামলা চালায় এবং মন্দির ধ্বংস করে জগন্নাথ বিগ্রহ ও প্রভু জগন্নাথের বিপুল ধন সম্পত্তি লুঠ করার পরিকল্পনা করে হয়তো সে কারণেই সেবায়েতরা

পুরী মন্দিরের অন্দরে শুধু মাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং ভারতীয় দের প্রবেশ অধিকার দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী থাকা কালীন ইন্দিরা গান্ধীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তিনি একজন অ-হিন্দুকে বিয়ে করেছিলেন। এছাড়া রবীন্দ্র নাথ থাকুরও কোনোদিন পুরীর মন্দিরে প্রবেশ করেন নি কারন জন্ম সূত্রে তিনি ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজের।থাইল্যান্ডের রাজকুমারী মহা শ্রীনিধর্ন প্রথম ওডিশা সফরে পৌঁছন। তিনি বাইরে থেকেই মন্দিরের দর্শন করেন। বিদেশি বলে তাঁকে প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।ইস্কন প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদ ও পুরীর মন্দিরে প্রবেশ করেন নি কারন তার সাথে থাকা বিদেশি ভক্ত দের মন্দিরে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়।এমন কি একবার এলিজাবেথ জিগলারকে নামক এক জগন্নাথ ভক্তকে কয়েক কোটি টাকা দান দেয়ার পরেও মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কারণ তিনি ছিলেন খ্রীস্ট ধর্মের মানুষ এবং বিদেশি নাগরিক।এমন বহু বিখ্যাত ভক্ত জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করার অনুমতি পাননি।

এখানে প্রশ্ন ওঠে জগন্নাথ তো জগতের নাথ তবে তার দর্শন থেকে কেনো তার বিদেশি এবং অন্য ধর্মের মানুষ বঞ্চিত থাকবেন। এই সমস্যার সমাধান করতেই প্রভু জগন্নাথ প্রতি বছর রথ যাত্রায় মন্দির থেকে বেরিয়ে আসেন। সেদিন মুছে যায় সব ভেদাভেদ সব বিধি নিষেধ। রথে শুধু জগন্নাথ দর্শন নয় তার ভক্তরা তাকে স্পর্শ এবং আলিঙ্গন ও করতে পারে।

ফিরে আসবো জগন্নাথ সংক্রান্ত বিশেষ আলোচনা নিয়ে আবার আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথদেবের স্নান যাত্রা 

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথদেবের স্নান যাত্রা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

পুরীর মন্দিরে অবস্থিত জগন্নাথ বিগ্রহ সাক্ষাৎ জগতের নাথ। প্রতিনিয়ত তিনি নানা লীলার মাধ্যমে নিজের নিজের দিব্য উপস্থিতি প্রমান করে চলেছেন। তার এমনই এক লীলা আজকের এই স্নান যাত্রা। প্রতিবছর দেবস্নান পূর্ণিমায়

অনুষ্ঠিত হয়।জগন্নাথদেবের স্নান যাত্রা।

 

স্কন্দপুরাণ অনুসারে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন যখন দারু ব্রহ্ম মূর্তি স্থাপন করেছিলেন তখন তিনি এই স্নান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। এই দিনটিকে ভগবান জগন্নাথের আবির্ভাব তিথি বলে মনে

করা হয়।যেহেতু এই তিথিতে জগন্নাথ দেব স্নান করেন তাই এই এই পূর্ণিমা তিথি দেবস্নান পূর্ণিমা নামে পরিচিত।

 

জগন্নাথকে তাঁর আদি রূপ অর্থাৎ নীলমাধব রূপে পূজা করছিলেন বিশ্ববাসু নামে একজন সবর প্রধান। আজও জগন্নাথের অঙ্গ সেবক দের সাথে মিলে সেই জন জাতীর লোকেরা বংশ পরম্পরায় স্নান যাত্রার আয়োজন করেন।

 

প্রথা মেনে স্নান যাত্রার আগের দিন জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার মূর্তি আনুষ্ঠানিকভাবে গর্ভগৃহ থেকে স্নান-বেদীতে নিয়ে আসা হয়। পুরীর মন্দির চত্বরে এই বিশেষ প্যান্ডেলটিকে বলা হয় স্নান মন্ডপ।

 

স্নানের আগের দিন যখন দেবতাদের শোভাযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন পুরো প্রক্রিয়াটিকে পাহান্দি বা পাহান্ডি বিজয় বলা হয়। স্নানের দিন মঙ্গলা আরতির পরে তামা ও সোনার একশত ত্রিশটি পাত্রে সোনা কুয়া নামক বিশেষ কূপ থেকে জল আনতে একটি আনুষ্ঠানিক শোভাযাত্রায় যায়। তারপর সেই জল চন্দন, আগুরু, ফুল, সুগন্ধি এবং ভেষজ ঔষধি দিয়ে শুদ্ধ করা হয়।

ভরা পাত্রগুলি ভোগ মন্ডপ থেকে স্নান বেদী পর্যন্ত

নিয়ে আসার রীতিকে বলা হয় ‘জলধিবাসা’

তারপর একশো আট কলস জলে স্নান করানো হয় জগন্নাথকে

 

স্নান যাত্রার পরে, দেবতাদের পনের দিনের জন্য জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দূরে রাখা হয় এবং এই সমস্ত দিনগুলিতে মন্দিরের দৈনন্দিন অনুষ্ঠান স্থগিত থাকে। এই সময়ে মন্দিরের অভ্যন্তরে একটি বিশেষ ঘরে জগন্নাথ সুভদ্রা এবং বলরামকে রাখা হয়। এই সময়কে বলা হয় ‘অনাবাসর কাল’ অর্থাৎ উপাসনার অনুপযুক্ত সময়। কথিত আছে ভগবান জগন্নাথকে স্নান করানোর পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং চৌদ্দ দিন তিনি নিভৃতে বিশ্রামে থাকেন। রথযাত্রা পর্যন্ত তাকে বিশেষ যত্নে রাখা হয় এবং রাজ বৈদ্যরা তার সেবা সুশ্রসা করেন।তাকে সুস্থ্য করে তোলেন।

 

সুস্থ্য হয়ে রাজ বেসে সুসজ্জিত রথে প্রভু পথে নামেন তার ভক্তদের দর্শন দিতে।শাস্ত্র মতে স্নান যাত্রা এবং রথ যাত্রা এই দুই তিথিতে সবাই তাকে দর্শন করতে পারেন এবং এই সময়ে তার দর্শন পেলে জন্ম জন্মান্তরের পাপ খণ্ডন হয় এবং পরম পুন্য লাভ হয়।যেহেতু সবাই পুরীর মন্দিরে সবাই প্রবেশ করতে পারেন না। কিছু বিধিনিষেধ আছে তাই অসংখ্য ভক্ত এই স্নান যাত্রা এবং পরবর্তীতে রথ যাত্রায় প্রভু জগন্নাথের দর্শন লাভের জন্য সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।

 

চলতে থাকবে নানা পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় বিষয় নিয়ে আধ্যাত্মিক আলোচনা। যথা সময়ে আবার রথ যাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথ প্রসঙ্গে বিশেষ আধ্যাত্মিক পর্ব নিয়ে ফিরে আসবো।

সবাইকে জানাই স্নান যাত্রার শুভেচ্ছা।

পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – নীলমাধব রহস্য

জয় জগন্নাথ – নীলমাধব রহস্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ভগবান নীলমাধব হলেন ভগবান বিষ্ণুরই অন্যতম রূপ। পুরীতেই ইনি ভগবান জগন্নাথ হিসেবে পূজিত হচ্ছেন। ওড়িশা রাজ্যের প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, পুরীতে জগন্নাথদেবের পুজোর আগে থেকেই ভগবান বিষ্ণুর রূপ হিসেবে নীলমাধবের পুজো করা হত।আজকের পর্বে এই নীলমাধব রহস্য নিয়ে লিখবো।

 

বিষ্ণুসহস্র নামে উল্লেখ রয়েছে ভগবান বিষ্ণুর চব্বিশ টি প্রধাননামগুলির মধ্যে অন্যতম হল নীলমাধব।

 

জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়ার আগেই চারটি নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই নীলমাধবের পুজোর স্থান । শাস্ত্র মতে ভগবান বিষ্ণু প্রথমে নীলমাধবের আকারে কাঠের মূর্তি রূপে ওড়িশার কন্টিলোতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অর্থাৎ পুরীর মন্দিরের আগে থেকেই কন্টিলোতে চলে আসছে পুজো।

 

পরবর্তীতে স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু ওড়িশার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে একদিন স্বপ্নে দেখা দেন এবং জানান, ওড়িশার মহানদীর তীরে তিনি নীলমাধব রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। যেখানে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন সেখানে শবর জনগোষ্ঠীর প্রধান তাঁকে একটি বড় গাছের নিচে পুজো করছে। এই স্বপ্ন দেখার পরের দিনই ইন্দ্রদ্যুম্ন, তাঁর বিশ্বস্ত ব্রাহ্মণ পুরোহিত বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের মূর্তি খুঁজে বের পুরীতে আনার নির্দেশ দেন।

 

নীলমাধবের খোঁজে গিয়ে সবর জনজাতি গোষ্ঠীর প্রধান বিশ্ববসুর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। বিশ্ববসুর কাছে পুরীর রাজার সন্ধির প্রস্তাব দেন।এই সময় বিদ্যাপতি বিশ্ববসুর কন্যা ললিতার প্রেমে পড়েন এবং তাঁকে বিয়ে করেন। এরপর একদিন বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের দর্শন করান বিশ্ববসু। পরবর্তীকালে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের কাছে ফিরে গিয়ে বিদ্যাপতি জানান যে, নীলমাধবকে তিনি খুঁজে পেয়েছেন। পরবর্তীকালে নিজের দলবল নিয়ে বনের মধ্যে গিয়ে পড়েন কিন্তু নীলমাধব তাকে দর্শন দেননি।

 

নিজ রাজ প্রাসাদে ফিরে ইন্দ্রদ্যুম্ন শুরু করেন কঠোর তপস্যা। অন্ন-জল কোনও কিছু গ্রহণ করেননি। সারাক্ষণ নীল মাধবের দেখা পাওয়ার জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে ধ্যান করতে লাগলেন। অবশেষে বিষ্ণু প্রকট হন রাজার সামনে। তাঁকে জানান যে, পুরীর সমুদ্র সৈকতে তিনি দারু ব্রহ্মা রূপে আবির্ভূত হবেন রাজা পুরীতে বিশাল মন্দির নির্মাণ করে সেই দারু ব্রহ্ম দিয়ে তার মূর্তি নির্মাণ করে যেনো তাকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং পুজো শুরু করেন।

 

পরবর্তী ইতিহাস হয়তো আমরা অনেকেই জানি। সে কথা আমি আগেও অনেক বার বলেছি। নীলমাধব আজও পুরী ধামে জগন্নাথ রূপে বিরাজমান।ফিরে আসবো পরবর্তী পর্বে জগন্নাথ সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – পুরী ধামের রহস্য 

জয় জগন্নাথ – পুরী ধামের রহস্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

প্রায় প্রতিটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের সাথে কিছু না কিছু রহস্য জড়িত আছে তবে চার ধামের অন্যতম পুরীর মন্দির আগা গোড়াই রহস্যে মোড়া তারই কিছু আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো।

 

মনে করা হয় পুরী হলো ভগবানের ভোজনের স্থান তাই এখানকার সবচেয়ে বড়ো রহস্য হল প্রসাদ। সারাবছর ধরে সমপরিমাণ প্রসাদ রান্না করা হয়। কিন্তু একই পরিমাণ প্রসাদ দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ হোক বা কয়েক লক্ষ মানুষকে খাওয়ানো হোক তবু প্রসাদ কখনো নষ্ট হয় না বা কখনো কম পড়ে না|এই প্রসাদ রন্ধন পক্রিয়াতেও রয়েছে এক রহস্য রান্নার পদ্ধতিতেও বেশ রহস্য আছে, মন্দিরের হেঁশেলে একটি পাত্রের উপর আরেকটি পাত্র এমন করে মোট সাতটি পাত্র আগুনের উপর বসে রান্না করা হয়। এই পদ্ধতিতে যেটি সবচেয়ে উপরে বসানো হয় থাকে, তার রান্না সবার আগে হয়। আর তার নিচেরগুলো তারপর। এই রহস্যর আজও কোনো সমাধান হয়নি।

 

আরো অনেক রহস্য আছে মন্দিরের উপর দিয়ে কোন বিমান বা পাখি উড়ে যেতে পারেনা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিষয়টি কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা অগ্রাহ্য করতে পারেন না। তবে মাত্র কিছুদিন আগে এক বিরাট পক্ষীকে মন্দিরের চূড়া প্রদক্ষিণ করতে দেখা গেছে। অনেকে বলেন নিশ্চই কোনো পৌরাণিক পক্ষী জগন্নাথ দর্শনে এসেছিলেন।

 

মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো আছে তা রোজ নিয়ম করে পাল্টানো হয়,এই পতাকা সব সময় হওয়ার বিপরীতে ওড়ে। এর কারণ কিন্তু জানা যায় না কিন্তু এই অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটে থাকে|

বিশেষ বিশেষ জাগতিক ঘটনার আগে কখনো এই ধজাতে আগুন লাগা বা ধজা অর্ধনমিত হওয়ার মতো ব্যাতিক্রমী ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকেও অনেকে অলৌকিক বার্তা বলে মনে করেন।

 

মন্দিরের যেকোনো স্থান থেকে মন্দিরের চূড়ার দিকে তাকালে সুদর্শন চক্র আপনার দিকে সম্মুখীন হয়ে থাকবে।

 

মন্দিরে প্রবেশ করার পর প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের আওয়াজ আর শুনতে পাওয়াযায় না কিন্তু সিঁড়ি টপকে গেলেই তারপর আবার সমুদ্রের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়|

 

এতো রহস্য এতো অলৌকিক বিষয় থেকে এটাই প্রমান হয় যে জগন্নাথদেবের লীলা বোঝা দায়|তার ইচ্ছায় সবই সম্ভব|সাধারণ বুদ্ধি বা যুক্তি দিয়ে ভগবানের লীলার বিচার সম্ভব নয়|

 

আজ এই বিশেষ পর্ব এখানেই শেষ করছি|ফিরবো আগামী পর্বে। স্নান যাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথ প্রসঙ্গে আলোচনা চলতে থাকবে।

পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ দেবের স্বরূপ

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ দেবের স্বরূপ

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জগন্নাথ শব্দের অর্থ জগতের নাথ। কিন্তু এই জগন্নাথ দেবের স্বরূপ বা তার আসল পরিচয় নিয়ে নানা মুনির নানা মত। বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ মহাভারতের মতো গ্রন্থে জগন্নাথ দেবের উল্লেখ নেই আবার কিছু গ্রন্থে দাবি করা হয়েছে বুদ্ধ নন। বিষ্ণুর নবম অবতার হলেন জগন্নাথ।আজকের এই পর্বে জগন্নাথদেবের স্বরূপ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করবো।

 

প্রতিবছর ভাদ্র মাসে তাঁকে বিষ্ণুর বামন অবতারের বেশে পুজো করেন। বার্ষিক রথযাত্রার সময়ও তাঁকে বামন রূপে পুজো করা হয়। বলা হয় দধিবামন।শ্রীচৈতন্যদেব আবার জগন্নাথের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণকে খুঁজে পেয়েছিলেন।

 

জগন্নাথ আসলে আদিবাসী দেবতা। ওড়িশার আদিবাসী শবররা ছিল বৃক্ষ উপাসক। তারা নিজেদের দেবতাকে বলত জগনাত। যা থেকে জগন্নাথ নামের উৎপত্তি। আজও অব্রাম্ভন সবর বংশের দৈতাপতিরা জগন্নাথ সেবার দায়িত্বে থাকেন।নিজেদের শবররাজ বিশ্ববসুর বংশধর বলে দাবি করেন যার হাত দিয়ে শুরু হয় নিলমাধবের পুজো।

 

অন্যদিকে শাক্তরা দাবি করেন জগন্নাথ ভৈরব কারন তিনি দেবী বিমলার ভৈরব। জগন্নাথ মন্দিরের পূজারিরাও শাক্ত সম্প্রদায়ভুক্ত। জগন্নাথ মন্দির চত্বরে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে দেবী বিমলার মন্দির যা একান্ন পীঠের একটি এবং শাস্ত্র মতে এখানে দেবী সতীর নাভি পড়েছিল বলে মনে করা হয়।

 

আবার দারুব্রহ্ম রূপে জগন্নাথকে নৃসিংহ স্ত্রোত্র পাঠ করে পুজো করা হয়। সেক্ষেত্রে জগন্নাথ দেবের সঙ্গে নৃসিংহদেবকে এক করে দেখা হয়।

 

জগন্নাথদেবকে নিয়ে এবং তার মন্দির নিয়ে রহস্যর শেষ নেই। আবার ফিরে আসবো জগন্নাথ প্রসঙ্গে আলোচনায়। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথমন্দির এবং যম শীলা

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথমন্দির এবং যম শীলা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

মনে করা হয় স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণই দেহত্যাগের পর জগন্নাথ রূপে এখানে আত্মপ্রকাশ করেন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা রহস্য। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে এখানে জগন্নাথ দেবের দর্শন করলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মনের সব ইচ্ছে পূরণ হয়।পুরাণে জগন্নাথধামকে মর্ত্যের বৈকুণ্ঠ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।আজ এই জগন্নাথ মন্দিরের একটি রহস্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

 

পুরীর মন্দিরের সিঁড়ি হয়তো আপনারা অনেকেই দেখেছেন। এই সিঁড়ি দিয়ে উঠেই জগন্নাথ দেবের রত্নবেদী এবং বিগ্রহ দর্শন করা হয়।মনে করা হয় এই মন্দিরের সিঁড়ির তৃতীয় ধাপে কখনোই পা দিতে নেই। জগন্নাথ মন্দিরের সিঁড়ির তৃতীয় ধাপকে ‘যম শিলা’ বলা হয়।

 

শাস্ত্র মতে জগন্নাথ মন্দিরে দর্শন করে ভক্তেরা মুক্তি পেয়ে যান। মৃত্যুর পর তাঁদের আর স্বর্গ বা নরকবাস করতে হয় না। এই কারনে যমলোক প্রায় শূন্য হওয়ার উপক্রম হয় তখন বেগতিক দেখে সূর্যপুত্র যমরাজ স্বয়ং জগন্নাথ মন্দিরে এসে প্রভু জগন্নাথের দর্শন করেন এবং তিনি জগন্নাথদেবকে এই সমস্যা সম্পর্কে বলেন এবং সব শুনে জগন্নাথদেব মন্দিরের মূল দরজার সিঁড়ির তৃতীয় ধাপে মৃত্যুর দেবতা যমকে অবস্থান করতে বলেন।

 

সেই থেকে জগন্নাথ মন্দিরের সিঁড়ির তৃতীয় ধাপে বাস করেন স্বয়ং যম এবং সিঁড়ির তৃতীয় ধাপকে তাই ‘যম শিলা’ বলা হয়। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে দর্শনের পর এই সিঁড়িতে পা দিলেই দর্শনের যাবতীয় পূণ্য নষ্ট হবে এবং ওই ব্যক্তিকে মৃত্যুর পর যমলোক যেতে হবে এমনটা জনশ্রুতি আছে।

 

জগন্নাথ জগতের নাথ। শুধু মানুষ নয় দেবতারাও বিপদে পরে তার স্মরণাপন্ন হন এবং কাউকেই তিনি খালি হাতে ফেরান না।

 

ফিরে আসবো জগন্নাথ সংক্রান্ত পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় আলোচনা নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথদেব এবং জগদীশ পন্ডিত

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথদেব এবং জগদীশ পন্ডিত

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জগন্নাথদেব জগতের নাথ। তার লীলা শুধু পুরী ধামে সীমাবদ্ধ নয়। সারা দেশে এবং এই বঙ্গে নানা ভাবে নানা সময়ে তার অলৌকিক সত্ত্বা প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পর্বে জগন্নাথ ভক্ত জগদীশ পন্ডিত এবং একটি তার সাথে ঘটা একটি অলৌকিক ঘটনার কথা জানাবো।

 

জগদীশ পন্ডিত ছিলেন মহাপ্রভুর শিষ্য এবং অন্যতম ভক্ত। গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু তখন সপারিষদ  নিলাচলে  অবস্থান  করছেন। প্রথা অনুসারে সেবার   জগন্নাথ  দেব যখন নবকলেবর  ধারণ করেন।তখন জগদীশ পণ্ডিত

পুরীর  জগন্নাথ  দেবের  পরিত্যক্ত পুরোনো দারুময়  বিগ্রহটি  সংগ্রহ করেন এবং পুরীধাম থেকে  বহন  করে  নবদ্বীপের  উদ্দেশে  যাত্রা  করেন।তার ইচ্ছে ছিলো নবদ্বিপে জগন্নাথ বিগ্রহ  পুনঃ  প্রতিষ্ঠা  করা।

 

বিশাল  বিগ্রহ  দণ্ডে  ঝুলিয়ে  দুজনে  কাঁধে  করে  বয়ে  নিয়ে  চলেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়লেন এবং এক নির্জন স্থানে রাত্রি  যাপন  করলেন।

পরদিন সকালে জগন্নাথ দেবকে কাঁধে  তুলবার  সময়  আর  ওঠাতে  পারলেন  না। কাঠের মূর্তি যেনো   পাথরের থেকেও বেশি ভারী হয়ে গেছে। পরে জগদীশ পন্ডিত স্বপ্নাদেশ পেলেন যে প্রভু জগন্নাথ বলছেন আমি  এখানেই  অবস্থান  করব। সেই  থেকে  জগন্নাথ  এখানেই  আছেন।স্থানটি নদীয়ার চাকদার কাছে।এখানেই তার মন্দির নির্মাণ হয় জগদীশ  পণ্ডিত তার বাকি  জীবন  এখানেই  বসবাস  করে  জগন্নাথ  সেব  করেন।পরবর্তীতে স্বয়ং শ্রীচৈতন্যদেব  ও  শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু  এখানে  পদার্পণ  করে ছিলেন এবং জগন্নাথ দর্শন করেছিলেন।

 

প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ  পূর্ণিমায়  জগন্নাথ

দেবের  স্নানযাত্রা উপলক্ষে এখানে বিশেষ

পুজোর আয়োজন করা হয়।

 

ফিরে আসবো জগন্নাথ লীলা নিয়ে আবার

আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – প্রভু জগন্নাথের রাজ বেশ

জয় জগন্নাথ – প্রভু জগন্নাথের রাজ বেশ

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আর কয়েকদিন পরেই জগন্নাথের স্নান যাত্রা প্রভু নব রূপে সেজে উঠবেন। প্রভু জগন্নাথ শুধু তার ভোগের জন্য নয় নানারকম বেশ বা সাজ সজ্জার জন্যও বিশেষ ভাবে পরিচিত।

 

নানা সময়ে নানা বেশে সাজেন জগতের নাথ এবং প্রতিটি বেশের আছে আলাদা পরিচয় এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা।আজ জগন্নাথের রাজ বেশ নিয়ে আলোচনা করবো

 

প্রাচীন গ্রন্থ মাদলা পাঞ্জিতে উল্লেখ আছে ১৪৬০ খ্রিস্টাব্দে উৎকলের গজপতি রাজা কপিলেন্দ্র দেব দাক্ষিণাত্যের এক রাজার বিরুদ্ধে ভীষণ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। দীর্ঘ সংগ্রামের পর কপিলেন্দ্র যুদ্ধে জয়লাভ করেন।শত্রু দেশ থেকে লুঠে আনেন ষোলটি হাতির পিঠ বোঝাই করে সহস্র মণ সোনা। সমস্ত সোনা রাজা কপিলেন্দ্র জগন্নাথদেবের মন্দিরের ভাণ্ডারে পাঠিয়ে দিলেন এবং জগন্নাথদেবকে তিনি ওড়িশার প্রকৃত রাজা বলে স্বীকার করলেন ও নিজেকে তাঁর অনুগত সেবক বলে ঘোষণা করলেন। একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই ক্ষমতা হস্তান্তর সর্বসাধারণের সম্মুখে উদযাপন করা হয়।এই সময় জগন্নাথের ‘রাজবেশ’-এর প্রবর্তন হয় । সাধারণের কাছে এই ‘বেশ’ আর একটি নাম আছে তা হল, ‘বড়া তাধাও বেশ’।

 

আবার রথের আগে বিশেষ রীতি মেনে জগন্নাথ দেবকে পরানো হয় রুপোর হাত।সেই সময় ও রাজ বেশে সাজানো হয় প্রভুকে। জগন্নাথ দেবের নবযৌবন উৎসব পালিত হয় রাজ বেশে।প্রভু জগন্নাথ রাজার রাজা তাই তার জন্য এই বিশেষ রাজ বেশের আয়োজন।

 

এছাড়াও আরো অনেকগুলি তাৎপর্যপূর্ণ বেশে নানা সময়ে সাজানো হয় জগন্নাথদেবকে সেগুলি নিয়ে আবার পরবর্তী সময়ে আলোচনা করবো। ফিরে আসবো দিনে জগন্নাথ দেবকে নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনায়। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – ভৈরব রূপে প্রভু জগন্নাথ

জয় জগন্নাথ – ভৈরব রূপে প্রভু জগন্নাথ

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জগন্নাথ বৈষ্ণবদের কাছে বিষ্ণুর অবতার হলেও শাক্ত দের কাছে তিনি ভৈরব কারন এই পুরী ধাম শুধু জগন্নাথ ধাম নয়। দেবী বিমলা এই শ্রী খেত্রেই অধিষ্টান করেন।পীঠনির্ণয় তন্ত্রে উল্লেখ আছে দেবী শ্রীমন্দিরের কত্রী।প্রভু জগন্নাথ তাঁর ভৈরব হিসেবে অবস্থান করেন।আবার তিনি দেবী মহামায়ার অংশ এবং একান্ন টি সতীপীঠের অন্যতমা দেবী বিমলার মন্দির তাই প্রভু জগন্নাথকে নিয়ে আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যায় দেবী

বিমলাকে না জানলে।

 

আজও জগন্নাথের ভোগ সবার আগে সমর্পন করা হয় দেবী বিমলাকে । দেবীর পুজো হয় তন্ত্রমতে। মনে করা হয় দেবী বিমলার দর্শন না করা অবধি জগন্নাথ দর্শন সম্পূর্ণ হয় না।

 

পুরান মতে বিষ্ণু দর্শন হেতু মহাদেব একবার বৈকুণ্ঠে হাজির হন এবং নারায়নের প্রসাদ গ্রহন করেন সেই প্রসাদের কিছুটা তাঁর মুখে লেগে যায়। কৈলাসে ফিরে নারদকে দেখতে পান মহাদেব। মুখে লেগে থাকা অবশিষ্ট প্রসাদ নারদ চেয়ে নেন সেই সময় দেবী পার্বতীও সেখানে উপস্থিত হন। প্রসাদ পাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন কিন্তু শিব তো অপারগ কারন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ক্রোধান্নিতা পার্বতী হাজির হন নারায়ণের কাছে। সব শুনে নারায়ণ তাঁকে বলেন এবার থেকে পুরী ধামে তাঁর শক্তি রূপে অবস্থান করবেন দেবী।

এবং নারায়ণের প্রসাদ সবার আগে তাঁকে অর্পন করা হবে। যে প্রথা আজও এতটুকু বদল হয়নি। দেবী বিমলাকে অর্পন করার পরই জগন্নাথের প্রসাদ হয়ে ওঠে মহাপ্রসাদ।

 

শ্রীমন্দিরে চত্বরেই দেবী বিমলার মন্দির।

আবার পুরাণমতে সতীর ডান পায়ের কড়ে আঙুল পড়েছিল এই খানে তাই এটি সতী পীঠ।প্রতিটি সতী পীঠে একজন ভৈরব থাকেন। বিমলাদেবীর মন্দিরে আলাদা করে ভৈরব নেই কারন এখানে ভৈরব স্বয়ং জগন্নাথদেব।

 

ফিরে আসবো আগামী পর্বে জগন্নাথ প্রসঙ্গে আলোচনা নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ সখা ভক্ত রঘুদাস

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ সখা ভক্ত রঘুদাস

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জগন্নাথ প্রসঙ্গে আলোচনা পর্বে আগেই

ভক্ত রঘুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি আপনাদের। রঘু দাস শুধু ভক্ত নন তিনি ছিলেন প্রভু জগন্নাথের সখা। বাৎসল্য ভাবের একটি প্রমান আজকের পর্বে দেবো।

 

পুরীতে ভক্ত রঘু দাস একসময় গুরুতর অসুখে পড়ল। তাঁর স্বাস্থ্য এতই ভেঙে গেল যে, তাঁর আর বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াবার শক্তি ছিলোনা।প্রায় মৃত্যু সজ্জায় রঘু দাস রোগ-পীড়ায় কাতর হয়ে ঘন ঘন অচৈতন্য হয়ে পড়ছিল। এ অবস্থায় তাঁর নিজেকে সাহায্য করার কোনও ক্ষমতা ছিল না।

তিনি একা থাকতেন এবং জগন্নাথ প্রেমেই দিন কাটাতেন।সঙ্গী সাথী তেমন ছিলোনা। তাই এই খবরও কেউ পায়নি।

 

সেসময় একদিন একটি ছোট বালক রঘু দাসের সেবা করতে এল। বালকটি রঘুর অসুস্থ্য দেহ, বিছানা, কুটির সবকিছু পরিষ্কার করল। তাঁর দেহ সে চন্দনে প্রলিপ্ত করল এবং ঘরে সুগন্ধিত দ্রব্য দিয়ে ঘরের দুর্গন্ধ দূর করে ঘরকে শুদ্ধ করলো।

তারপর শুরু হলো রোগীর সেবা।

 

রঘুর যখন একটু সুস্থ্য হলো তখন সে দেখল একটি বালক তার সেবা করছে । পরিচয় জিগেস করলে বালক জগন্নাথ রূপে দর্শন দিলেন। অশ্রু সিক্ত নয়নে রঘু জগন্নাথকে বলল তোমার সেবা পেয়ে আমি ধন্য কিন্তু তুমি তো সহজেই আমার রোগ ভোগ দুর করতে পারতে তবে আমাকে সুস্থ করে দেওয়ার পরিবর্তে কেন তুমি আমার এমন সেবা সুশ্রসা করলে?

 

জগন্নাথ দেব উত্তরে বললেন কর্ম ফল সবার ভোগা উচিৎ, তোমার সকল প্রারব্ধ কর্ম নাশ করতেই আমি আমার শক্তি প্রয়োগ করে তোমাকে সুস্থ্য করিনি যাতে তুমি দেহান্তে আমার ধামে ফিরে আসতে পারো। তাছাড়া আমার ভক্তগণ যেমন আমার সেবা করে আনন্দ পায়, তেমনি আমিও আমার ভক্তগণের সেবা করে আনন্দ লাভ করি।” এইভাবে প্রভু জগন্নাথ ও রঘুর মধ্যে ভক্তি এবং সখ্যতার মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো।

 

এই ঘটনা প্রমান করে যে জগন্নাথ প্রেমে নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পন করতে পারলে জগন্নাথ তার সেবা করতে এবং নিজের সখার স্থান দিতে

দ্বিধা করেননা।

 

ফিরে আসবো প্রভু জগন্নাথের আরো অনেক

লীলা এবং জগন্নাথ মকন্দিরের রহস্য নিয়ে।

পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।