কালী কথা – খুকীমা কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
এই বাংলার বুকে দেবী কালী নানা নামে নানা রূপে আমাদের কাছে ধরা দেন। কোথাও তিনি
বড়মা আবার কোথাও তিনি পুটে কালী। এমনই
এক কালী মন্দির আছে বজ বজে যেখানে দেবীকে খুকীমা নামে ডাকা হয়। আজকের পর্বে খুকীমা কালীর কথা জানাবো।
অদ্ভুত এই কালী মূর্তির ইতিহাস। শোনা যায় দয়াল ঠাকুর নামে এক মাতৃ সাধক এক সময়ে এই স্থানে সাধনা করতেন। পাশেই ছিলো শ্মশান এবং আদি গঙ্গা। এক রাতে এক ডাকাত দল এখানে আসে।
সাধক কে ডেকে নিয়ে যাওয়ার হয় তাদের সর্দারের কাছে।ডাকাত সর্দারের গা পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে। পানীয় জল ও চিকিৎসারে জন্যই তাই কুটির দেখে দাঁড়িয়ে পড়া শুনশান প্রান্তরে।
সেই ফাঁকে হয়ে যাবে ভাগ-বাটোয়ারাও। জানা গেল, সুদূর বর্ধমান থেকে লুঠ করে আসছেন তাঁরা।
দয়াল ঠাকুর লুট করা সামগ্রীরে মধ্যে পাথরের তৈরি এক কালী মূর্তি দেখলেন এই মূর্তি যে চুরি করা আনা হয়েছে কোনো রাজবাড়ি থেকে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাঁর কাছে। তার কারণ বিগ্রহের গঠন। অখণ্ড কষ্ঠীপাথরের তৈরি এই মূর্তি বড়ো কোনো পাথর থেকে কেটে বানানো। এমনকি দেবীর গলার নরমুণ্ডের মালাও খোদাই করে তৈরি। এ যে কোনো সাধারণ শিল্পীর হাতের কাজ হতে পারে না তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাঁর। তিনি অবহেলায় পড়ে থাকা সেই মূর্তির পুজোর ও ভোগের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলেন। নির্দেশ পালন করতেই সেরে ওঠেন ডাকাত সর্দার।
তারা বিদায় নেয় এবং কালী মূর্তি ওই স্থানেই স্থাপিত হয় এবং খুকিমা নামে আজও তিনি সেখানে স্বমহিমায় বিরাজিতা।
পরে জানা যায় এই মূর্তির পুজো করতেন মাতৃ সাধক কমলাকান্ত। বর্ধমান থেকে এই মূর্তি ডাকাতি করে সেই রাতে আনা হয়। এবং হয়তো দেবীর ইচ্ছাতেই এখানে আরেক মাতৃ সাধক সেই
মূর্তির পুজোর দায়িত্ব পান।সেই থেকে দক্ষিণ বঙ্গের জনপ্রিয় এবং জাগ্রতা কালী হলেন খুকী মা কালী।
আবার ফিরে আসবো কালী কথা নিয়ে আগামী পর্বে। থাকবে অন্য এক কালী মন্দিরের ইতিহাস। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
