কালী কথা – জীবন্ত কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
এক অর্থে প্রতিটি দেবী মন্দিরেই যেখানে দেবী পূজা গ্রহন করেন শাস্ত্র মতে মূর্তি প্রতিষ্ঠিত সখানেই দেবী জাগ্রতা এবং জীবন্ত তবে
কলকাতার উত্তরে শুকিয়ে স্ট্রিটে রয়েছে
‘জীবন্ত কালী’র এক বিশাল মন্দির।আজ কালী কথায় জানাবো এই মন্দিরের বর্ণময় ইতিহাস।
জীবন্ত কালী মন্দির ঘিরে প্রচলিক আছে এক অলৌকিক কাহিনী। সে বহুকাল আগের কথা। দিনটি ছিল অমাবস্যা তিথি। কালী মন্দিরের তৎকালীন পুজারী বাজারে গিয়েছিলেন অমাবস্যার পুজোর বাজার করতে। সেই সময়ে বছর পাঁচেকের একটি ছোট্ট মেয়ে তাঁর কাছে চালকলা খেতে চায় এবং সে জানায়, দু’দিন ধরে সে কিছু খায়নি সে। পুরোহিতের এসব মোটেই পছন্দ হয়নি। তিনি ওই বালিকাকে অবজ্ঞা করে নিজের কাজে চলে যান।
সন্ধ্যায় যখন মন্দিরে দেবীর ভোগের ব্যবস্থা হয়েছিল অমাবস্যার সে রাতে। নিয়ম মেনে অন্ধকারেই চলছিল দেবীর আরাধনা। পুজো চলাকালীন পুরোহিত হঠাৎ লক্ষ্য করেন যে শুধু মহাদেবই শায়িত রয়েছেন। দেবী কালী অদৃশ্য।প্রথমে ভ্রম মনে হলেও পরে ঘি-এর প্রদীপ জ্বালিয়ে মূর্তি দেখার চেষ্টা করেন এবং একই জিনিস দেখেন। তৎক্ষণাৎ নুপুরের শব্দ কানে ভেসে আসে। পুরোহিত বুঝতে পারেন স্বয়ং দেবী কালী সকালে ছোট্ট মেয়ে রূপে খাবার চাইতে এসেছিলেন না বুঝে তিনি অবজ্ঞা করেছেন।
সেই থেকেই চলছে চালকলা দিয়ে দেবীর পুজোর রীতি।
এখানে দেবী বালিকা রূপে বিরাজ করছেন।
তাই অম্ববাচি পালিত হয় না এই মন্দিরে। বলির কোনও রীতি নেই। পুরোপুরি নিষিদ্ধ মাছ, মাংস।মন্দিরের বেদীতে উপবেষ্টিতা দেবী।
তাঁর গা ঘেঁসেই বসে রয়েছেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। পাশের ঘরেই রয়েছেন ভৈরব।দেবী কিশোরীদের মতো সাজতে ভালো বাসেন তাই তাকে প্রতিটি বিশেষ পুজোয়
সুন্দর করে সাজানো হয়।
ভক্তদের বিশ্বাস, কাউকে কক্ষণও খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না দেবী।ভক্তের কাতর প্রার্থনায় ঠিক সাড়া দেন দেবী পূরণ করেন প্রত্যেকের মনবাঞ্ছা।
জীবন্ত কালী শ্যামসুন্দরী রূপেও খ্যাত।
দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে বাংলার এমন সব প্রাচীন কালী মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে চলতে থাকবে কালী কথা। যথা সময়ে ফিরে আসবো পরবর্তী পর্ব নিয়ে।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।