Home Blog Page 141

পুরী জগন্নাথ মন্দির

বিগত পর্বগুলিতে বেশ কয়েকটি মন্দির ও তার সাথে জড়িত কিছু রহস্য আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি|ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকের পর্বে আলোচনা করবো এমন এক মন্দির নিয়ে যাকে নিয়ে রহস্যর শেষ নেই|আজকের বিশেষ পর্বে পুরী জগন্নাথ মন্দির|

হিন্দু দের পবিত্র চার ধামের মধ্যে পুরীর জগন্নাথ মন্দির অবশ্যই অন্যতম|পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য আছে যা কিন্তু যথেষ্ট রহস্যে মোড়া, তারই কিছু আজ আপনাদের সামনে আনবো এক এক করে|

প্রথমেই বলি,মন্দিরের উপর দিয়ে কোন বিমান বা পাখি উড়ে যেতে পারেনা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিষয়টি কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা অগ্রাহ্য করতে পারেন না|

মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো আছে তা রোজ নিয়ম করে পাল্টানো হয়,এই পতাকা সব সময় হওয়ার বিপরীতে ওড়ে। এর কারণ কিন্তু জানা যায় না কিন্তু এই অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটে থাকে|

আপনারা যারা পুরীর মন্দির দর্শন করেছেন হয়তো জানেন পুরীর যে কোন জায়গা থেকেই আপনি যদি মন্দিরের চূড়ার দিকে তাকান তাহলে সুদর্শন চক্র আপনার দিকে সম্মুখীন হয়ে থাকবে|এও এক রহস্য|

মন্দির চত্বরের কোলাহলের জন্যে হয়তো খেয়াল থাকেনা কিন্তু মন্দিরের ভিতরে সিংহদ্বারে মন্দিরে প্রবেশ করার পর প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের আওয়াজ আর শুনতে পাওয়াযায় না কিন্তু সিঁড়ি টপকে গেলেই তারপর আবার সমুদ্রের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়|

মনে করা হয় পুরী হলো ভগবানের ভোজনের স্থান তাই এখানকার সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বৈশিষ্ট্যটি হল প্রসাদ। রহস্যময় বিষয় হলো সারাবছর ধরে সমপরিমাণ প্রসাদ রান্না করা হয়, কিন্তু একই পরিমাণ প্রসাদ দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ হোক বা কয়েক লক্ষ মানুষকে খাওয়ানো হোক তবু প্রসাদ কখনো নষ্ট হয় না বা কখনো কম পড়ে না|এই প্রসাদ রন্ধন পক্রিয়াতেও রয়েছে এক রহস্য রান্নার পদ্ধতিতেও বেশ রহস্য আছে, মন্দিরের হেঁশেলে একটি পাত্রের উপর আরেকটি পাত্র এমন করে মোট সাতটি পাত্র আগুনের উপর বসে রান্না করা হয়। এই পদ্ধতিতে যেটি সবচেয়ে উপরে বসানো হয় থাকে, তার রান্না সবার আগে হয়। আর তার নিচেরগুলো তারপর , এভাবেই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে|

এতো রহস্য এতো অলৌকিক বিষয় থেকে এটাই প্রমান হয় যে ভগবানের লীলা বোঝা দায়|তার ইচ্ছায় সবই সম্ভব|সাধারণ বুদ্ধি বা যুক্তি দিয়ে ভগবানের লীলার বিচার সম্ভব নয়|

আজ এই বিশেষ পর্ব এখানেই শেষ করছি|ফিরবো আগামী পর্বে|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ ভাগ্য বিচার নিয়ে যোগাযোগ করতে চান উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

শিরডির সাইবাবা

ভারতের আধ্যাত্মিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের নিয়ে একটি ধারাবাহিক লেখনী শুরু করেছিলাম যেখানে ইতিমধ্যে কয়েকজন মহান সাধকদের নিয়ে লিখেছি|আজ দীর্ঘ বিরতির পর পুনরায় একটি নতুন পর্ব নিয়ে আমি আপনাদের সামনে|আজকের পর্বে শিরডির সাইবাবা|

নিঃসন্দেহে ভারতের সবচেয়ে পূজিত সন্তদের একজন মহারাষ্ট্রের শিরডির সাইবাবা। গোটা দেশ জুড়ে তাঁর ভক্তের সংখ্যা কোটি কোটি, তাতে নানা ধর্মের মানুষই আছেন। আর ভারত জুড়ে আছে অজস্র সাইবাবার মন্দির|

সাই শব্দটা পারসি শব্দ এর অর্থ পবিত্র ব্যক্তি। নিজের জীবৎকালে সাইবাবা কখনও তাঁর আসল নাম, জাতি বা ধর্ম প্রকাশ করেননি।তার জন্ম কাল ও জন্মস্থান ও সঠিক ভাবে জানা যায়না|

কেউ কেউ দাবি করেন, সাইবাবার জন্ম তামিলনাড়ুতে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারের আবার কেউ দাবী করেন তিনি গুজরাটে জন্মেছিলেন|সাম্প্রতিক কালে তাকে মুসলমান আখ্যা দিয়ে বিতর্কও সৃষ্টি করা হয়েছিলো|

এই সব বিতর্কে জড়িয়ে পড়া আমার উদেশ্য নয় আমার উদেশ্য সাইবাবার সাধনা ও তার জীবনের একাধিক অলৌকিক ঘটনা কে আপনাদের সামনে তুলে ধরা যা তার প্রতিটি ভক্তের কাছে ধ্রুব সত্য বলেই বিবেচিত|

মহারাষ্ট্রের শিরডি ছিলো সাইবাবার সাধন ক্ষেত্র|তার গোটা জীবন কালে একাধিক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়াযায় যা লিপিবদ্ধ আছে একাধিক গ্রন্থে|

দ্বারকামণির যে মসজিদ ছিল সাঁই বাবার সাধনক্ষেত্র সেখানে সর্বক্ষণ জ্বলত একটি ধুনি। সেই ধুনিরই ছাই প্রসাদ হিসেবে বাবা কখনও দিতেন ভক্তদের হাতে কখনও বা মাখিয়ে দিতেন তাঁদের কপালে। এটাই ছিলো তার ভক্ত দের প্রসাদ|কিংবদন্তী অনুসারে, সাঁই বাবার প্রদত্ত বিভূতির অনেক অলৌকিক ক্ষমতাও ছিল। অনেক প্লেগ রোগী নাকি এই বিভূতি খেয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কেউ আবার এই বিভূতির জোরে মুক্তি পেয়েছেন মানসিক অসুস্থতা থেকে|এই প্রক্রিয়ায় কর্মভার থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে তাঁদের বিশ্বাস। সাঁই বাবার ভক্তদের মধ্যে এখনও নিয়মিত জলে পবিত্র বিভূতি মিশিয়ে সেবনের রীতি প্রচলিত রয়েছে|

সাইবাবা বলতেন সব কা মালিক এক অর্থাৎ সবার পরম পিতা এক ঈশ্বর|তার অলৌকিক স্পর্শে যেমন তেলহীন প্রদীপে জ্বলে উঠতো আলো তেমনই তার আশীর্বাদে অনেক মানুষের জীবনের অনেক বিপদ কেটে যেত অলৌকিক ভাবে|তাই জাতী ধর্ম নির্বিশেষে সাই বাবা কোটি কোটি মানুষের আরাধ্য|

এই মহান সাধককে প্রণাম জানিয়ে শেষ করছি আজকের পর্ব|ফিরবি আগামী পর্বে|আপাতত অনলাইনে ছাড়াও বারাসাতের গৃহ মন্দিরে ও গড়িয়া চেম্বারে আমি নিয়মিত জ্যোতিষ পরামর্শ ও ভাগ্যবিচার করছি যারা যোগাযোগ করছেন তারা নির্দ্বিধায় উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

কারনি মাতা মন্দির

আবার আগের মতোই শুরু হয়েছে চেম্বারে বসা, বহু মানুষ আসছেন ভাগ্যবিচার করাতে, প্রতিকার নিতে পাশাপাশি অনলাইনে ভাগ্যগণনা তো চলছেই|এই এতো কিছুর মাঝে কিছুটা সময় বের করে আবার আপনাদের জন্যে নিয়ে এসেছি মন্দির রহস্যর একটি নতুন পর্ব|আজকের পর্বে কারনি মায়ের মন্দির|

আসলে কার্নি মাতা ছিলেন একজন হিন্দু সন্যাসিনী। তাঁকে সবাই মা দুর্গার একটি রূপ বলেই পুজো করতেন। যোধপুর এবং বিকানেরের রাজ পরিবারের আরাধ্য দেবীও এই কার্নি মাতা|

রাজস্থানের বিকানেরে অবস্থিত কারনি মাতার মন্দির একটি কারনে জগৎ বিখ্যাত যা একাধারে লৌকিক, রহস্য ময় এবং আশ্চর্য জনক|

এই কারনি মাতা মন্দিরে প্রায় কুড়ি হাজার ইঁদুরের বসবাস|মন্দিরের সর্বত্র তাদের অবাধ বিচরন| ভক্তরাও ইঁদুরদেরই রীতিমতো ভোগ দিয়ে পুজো করেন|মন্দিরে ইঁদুরে দের অত্যন্ত পবিত্র মনে করা হয় এবং এই একটি কারনে এই মন্দির পৃথিবীর সব মন্দিরের থেকে আলাদা|কিন্তু কেনো এখানে এতো ইঁদুরের অবস্থান? এনিয়ে দুটি প্রচলিত কিংবদন্তী রয়েছে|

একটি কাহিনী অনুসারে, কোনও এক যুদ্ধের সময়ে কুড়ি হাজার সেনার একটি বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে রাজস্থানের এই এলাকায় আশ্রয় নেন|সে সময়ে যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে আসার শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। কার্নি মাতা তখন তাদের ইঁদুরে রূপান্তরিত করে প্রান রক্ষা করেন ও মন্দিরে আশ্রয় দেন|সেই থেকে তারা ইঁদুর রূপে এখানেই রয়েছে|

অন্য একটি কাহিনীর অনুসারে কাহিনি অনুযায়ী, কার্নি মাতার এক পুত্রের পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছিলো তখন কার্নি মাতা যমরাজের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা করেন। যমরাজ কার্নি মাতার ওই ছেলে-সহ ওই দেবীর সমস্ত পুত্র সন্তানকে ইঁদুর রূপে পুনর্জন্ম দেন|সেই থেকে বংশ পরম্পরায় তারা ইঁদুরে রূপে ওই মন্দিরে বসবাস করছে|

অনেক ভক্তেরই বিশ্বাস, ইঁদুরের এঁটো করা প্রসাদ খাওয়া মানে পুণ্য অর্জন করা। তাছাড়া এখানে পায়ের উপর দিয়ে ইঁদুরের চলে যাওয়া বা সাদা ইঁদুরের দর্শন পাওয়া বিশেষ সৌভাগ্যের বলে মনে করা হয়|মন্দিরে জীবিত ইঁদুরের পাশাপাশি রুপোর ইঁদুরের প্রতিমূর্তি ও দেখা যায়|সব মিলিয়ে সত্যি রহস্যময় ও ব্যতিক্রমী এই মন্দির|

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি|আবার লিখবো মন্দির রহস্য নিয়ে আগামী পর্বে|যোগাযোগ করুন জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্যে, ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

মুণ্ডেশ্বরী মন্দির

ভারতের মন্দির ও তার রহস্য নিয়ে লেখা মানে এক বিশাল সমুদ্র থেকে মনিমুক্তা খুঁজে আনার চেষ্টা করা কারন আমাদের দেশ আধ্যাত্মিকতার দেশ|অসংখ্য মন্দির ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেশ জুড়ে তাদের নিয়ে রয়েছে অসংখ্য রহস্য ও কিংবদন্তী|আজকের পর্বে এমনই আরেকটা রহস্য ময় মন্দির নিয়ে লিখবো|আজকের পর্বে মুণ্ডেশ্বরী মন্দির|

বিহারের কাইমুর জেলার ভভূয়া নামে একটি গ্রামে রয়েছে মুন্ডেশ্বরী দেবীর এক প্রাচীন মন্দির|এই মন্দির একটি বিশেষ কারনে অলৌকিক ও রহস্যময়

আসলে এই মন্দিরে পশু বলিদানের প্রথা রয়েছে। বহু প্রাচীন কাল থেকেই এই মন্দিরে দেবীকে সন্তুষ্ট করার জন্য শ্রদ্ধালু ছাগল বলি উত্সর্গ করেন, তবে এই মন্দিরে উত্সর্গীকৃত পশুর জন্য কোনও অস্ত্রের প্রয়োজন নেই এবং এটি মন্দিরের রক্তের মাটিতে এক ফোঁটাও পড়ে না|এটাই এই মন্দিরের প্রধান রহস্য|

প্রথা অনুসারে ভক্তরা তাদের প্রাণী নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন এবং এখানকার পুরোহিতরা দেবদেবীর মূর্তির সামনে প্রাণীগুলি রাখেন এবং তারপরে প্রধান পুরোহিত সেখান থেকে একটি ফুল এবং কিছু ধানের শীষ তুলে পশুর দেহে রাখেন। কয়েক মুহুর্ত পরে, প্রাণীটি খুব অজ্ঞান অবস্থায় চলে যায়।

তারপর পুরোহিত আবার মূর্তির কাছে এসে একটি ফুল এবং কিছু চাল পশুর মৃতদেহের উপরে ফেলে দেয় এবং প্রাণীটি আবার উঠে দাঁড়ায়। অর্থাৎ রক্তপাত ছাড়াই সম্পন্ন হয় বলী প্রক্রিয়া এবং আশ্চর্যজনক ভাবে বলীপ্রদত্ত প্রাণী আবার ফিরে পায় তার প্রান|

বলীর সঠিক অর্থাৎ ও তার প্রয়োজনীতা নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের|আজ সেই বিতর্কে যাবোনা শুধু যুগ যুগ ধরে ঘটে চলা এক রহস্যময় ঘটনার উল্লেখ করাই আজ আমার উদ্দেশ্য ছিলো বাকিটা নির্ভর করে বিশ্বাস আর ভক্তির উপর যুক্তি দিয়ে তার বিচার হয়না|

আজ এখানেই থামছি|পড়তে থাকুন লেখা আর দেখতে থাকুন আমার অনুষ্ঠান গুলি|যোগাযোগ করুন জ্যোতিষ পরামর্শর জন্যে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বালাজি মন্দির

আজ মন্দির রহস্যর এই পর্বে লিখবো রাজস্থানের বালাজি মন্দির যা দেশের অন্যতম রহস্যময় এক মন্দির|এখানে বালাজি বলতে অবশ্য বিষ্ণুকে নয় বজরংবলী কে বোঝায়|

মেহন্দিপুর বালাজি মন্দিরের প্রধান উপাস্য দেবতা শ্রীহনুমান। তাঁর সঙ্গেই মন্দিরে পূজা পান ভৈরব। এবং, এই দুই দেবতার সঙ্গেই মন্দিরে বিরাজ করেন প্রেত রাজ। ভূতের রাজার অবস্থিতির কারণেই এই মন্দিরে প্রায় অবাধ বিচরণ অশরীরীদের|

মন্দির সৃষ্টির সাথেও জড়িয়ে আছে এক অলৌকিক ও রহস্যময় কাহিনী, কথিত আছে আচমকাই এক পুরোহিত স্বপ্নে দর্শন পান বালাজির। বালাজি তাঁকে বলেন, আরাবল্লী পর্বতের মাঝে এক জঙ্গলে তাঁর আর প্রেত রাজের মূর্তি সমাধিস্থ রয়েছে। নির্দেশ দেন, ওই মূর্তি তুলে এনে মন্দিরে রেখে পুজো করার|খোঁজা খুঁজির পরেও পুরোহিত অবশ্য ওই বিগ্রহ খুঁজে পাননি। পরে বালাজিই তাঁকে স্বপ্নে আবার দেখা দিয়ে জায়গাটা চিনিয়ে দেন। তার পর, জঙ্গল কেটে গড়ে ওঠে এই বালাজি মন্দির।

এই মন্দিরে তিনটি বিগ্রহের পুজো হয়। বালাজি বা বজরঙ্গবলি, প্রেত রাজ এবং কাল ভৈরব। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে কারোর ওপর অশুভ শক্তি ভর করলে এই মন্দিরে তা দূর করা সম্ভব|

এই মন্দিরে পুজো দেওয়ার রীতিও অবাক করার মতো। এক বাক্স লাড্ডুর মধ্যে তিন দেবতাকে প্রথমে একটি করে নিবেদন করা হয়। তার পর বাকি লাড্ডু ছুঁড়ে দিতে হয় মন্দিরের আনাচে-কানাচে। অশরীরীদের জন্য।

মন্দির চত্বরে পা রাখা মাত্র অনুভব করা যায়, প্রেতাত্মার অশরীরী উপস্থিতি। সেই কারণেই ভূত ঝাড়ানোর জন্য এই মন্দিরের প্রসিদ্ধি রয়েছে। দূর দূর থেকে ভক্তরা আসেন প্রেতগ্রস্ত প্রিয়জনের মুক্তি কামনায়|এখানে পুজো দেয়া প্রসাদ গৃহে নিয়ে যাওয়া হয়না এমনকি পুজো দিয়ে চলে আসার সময়ে আর পিছনে ফিরে দেখার নিয়ম নেই পাছে কোনও অতৃপ্ত আত্মা এসে গ্রাস করে|

ভুত প্রেত ও অশুভ শক্তির জন্যে প্রসিদ্ধ এই মন্দির আর সেখানেই লুকিয়ে আছে প্রধান রহস্য|ভূতে বিশ্বাস না করলেও এই মন্দিরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আপনার গা ছমছম করবেই|নিজের চারপাশে উপলব্ধি করবেন অসংখ্য অশরীরীর উপস্থিতি|

আজ এখানেই শেষ করছি|আগামী অমাবস্যায় হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরে বিশেষ পূজা ও গ্রহদোষ খণ্ডনের জন্যে ও সকল প্রকার জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকারের জন্যে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

নিধীবন মন্দির

আজকের মন্দির রহস্য লিখবো বৃন্দাবনে অবস্থিত নিধীবন নিয়ে, যাকে ঘিরে আছে অজস্র লোক কথা ও রহস্যময় ঘটনা

বৃন্দাবনের নিধীবনের পাশেই রয়েছে বিখ্যাত বাঁকে বিহারীর মন্দির মনে করা হয় প্রতি রাতেই এই মন্দিরে বিশ্রাম করতে আসেন স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণ|তার রাত কাটানোর নানা প্রমান পাওয়াযায় সকালে মন্দিরের দরজা খোলার পর যা অলৌকিক কিন্তু বাস্তব|

মনে করা হয়, এই বনেই গোপিনীদের সঙ্গে রাস লীলায় মেতে উঠেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ ৷ এই বনের গাছ চির সবুজ ৷ কখনও, কোনও কারণে, এমনকী গাছ ফাঁপা হয়ে গেলেও বা জলের অভাব ঘটলেও গাছের পাতা কখনও হলুদ হয় না বা শুকিয়ে যায় না|

আজও প্রতি রাতে কৃষ্ণ তার গোপিনীদের নিয়ে রাসলীলায় মেতে ওঠেন নিধীবনে|আশ্চর্যজনক ভাবে সূর্য ডোবার সাথে সাথে প্রতিটি প্রাণী বন ছেড়ে চলে যায়|কথিত আছে রাতে বনের প্রতিটি গাছ গোপিনীর রূপ ধরে শ্রী কৃষ্ণের সাথে রাসলীলায় অংশ নেয় এবং সূর্যউদয়ের আগে আবার সবকিছু ফিরে যায় আগের অবস্থায়|এমনকি এই বনে রাতে নূপুরের শব্দও শোনা যায়|

সন্ধের পর এখানে প্রবেশ নিষেধ|এই নির্দেশ যারা মানেননি তাদের করুন পরিণতির কোথাও শোনা যায়|এমনকি আশপাশের বাড়ি গুলির জানালা যদি নিধীবনের দিকে থাকে তবে সেগুলিও বন্ধ রাখা হয় রাতে|

কতইনা রহস্যময় মন্দির ছড়িয়ে রয়েছে আমাদের দেশে|আনবো তাদের কথা একে একে|পড়তে থাকুন আর জ্যোতিষ পরামর্শ আর ভাগ্যবিচারের জন্যে এবং প্রতিকার বা গ্রহদোষ খণ্ডনের জন্যে আমাকে প্রয়োজন হলে জানান উল্লেখিত নাম্বারে|আপনাদের জানিয়ে রাখি চলতি মাসে আগামী অমাবস্যা তিথিতে মা হৃদয়েশ্বরী মসর্বমঙ্গলা মন্দিরে বিশেষ পূজা ও শাস্ত্র মতে গ্রহদোষ খণ্ডনের সু ব্যবস্থা করা হয়েছে অংশ গ্রহণ করতে বা গ্রহদোষ খণ্ডনের জন্যে অবশ্যই ফোন করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

অচলেস্বর শিব মন্দির

ভারতের মন্দিরের সংখ্যা যেমন প্রায় অগুনতি তেমনই রয়েছে তাদের নিয়ে অসংখ্য রহস্য যার ব্যাখ্যা যুক্তিবাদ বা বিজ্ঞান আজও করে উঠতে পারেনি|এমনই কয়েকটি প্রাচীন মন্দির ও তাদের তাদের সাথে জড়িয়ে থাকা রহস্য নিয়ে শুরু করেছিলাম এই বিশেষ ধারাবাহিক লেখা যা পাঠক মহলে ইতিমধ্যে বেশ সমাদৃত|আপনাদের সমর্থন ও ভালোবাসার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ|আজকের পর্বে লিখবো একটি রহস্য ময় শিব মন্দির নিয়ে|

কয়েকটি বিশেষ কারনে এই মন্দির বেশ রহস্যময় সে বিষয়ে পরে আসছি আগে এই মন্দির নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সাথে ভাগ করে নিই|

রাজস্থানের সিরোহী জেলায় অচলগড় কেল্লার ঠিক বাইরেই এই মন্দিরের অবস্থান। অচলেস্বর শিব মন্দির নামেই বিখ্যাত এই মন্দির|কথিত আছে, মহাদেবের একটি পায়ের ছাপকে কেন্দ্র করে এই মন্দিরটি গড়ে ওঠে|

নবম শতকে তৈরি হয় এই মন্দির|নন্দীর মূর্তির পাশাপাশি মন্দিরের মধ্যে রয়েছে একটি স্তূপ স্থানীয়দের বিশ্বাস এই স্তূপটি আদপে নরকের দক্ষিণ দ্বার|পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। পুকুরের পাড়ে রয়েছে তিনটি ধাতব মহিষের মূর্তি। বলা হয়,এই তিনটি মূ্র্তি আসলে তিনটি রাক্ষসের প্রতিরূপ যারা এই মন্দির আক্রমন করে ও স্বাস্তি স্বরূপ পাথরে পরিণত হয়|

ইতিহাস অনুসারে অতীতে বৈদেশিক আক্রমনের শিকার হয়েছে এই মন্দির কিন্তু রক্ষা পেয়েছে অলৌকিক ভাবে|

এই মন্দিরের সবচেয়ে রহস্যময় বস্তুটি এর ভিতরে থাকা শিবলিঙ্গটি। দিনের বিভিন্ন সময়ে এর রং থাকে বিভিন্ন রকমের। দিনে অন্তত তিন বার রং বদলায় এই শিবলিঙ্গ। সকাল বেলা এর রং থাকে লাল, বিকেলে হয় জাফরান, আর রাত্রে এর রং হয় কালো|

আরো একটি রহস্যময় ঘটনার উল্লেখ পাওয়াযায় এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে|একবার গর্ভগৃহটি সংস্কারের সময় খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে গর্ভগৃহ বেষ্টন করে থাকা একটি সুড়ঙ্গ আবিষ্কৃত হয়। সুড়ঙ্গের মধ্যে দু’টি কুলুঙ্গিতে পাওয়া যায় দেবী চামুণ্ডার দু’টি মূ্র্তি। দেখা যায়, মূর্তি দু’টিতে লেপা রয়েছে সিঁদুর। যেন সদ্য পূজিতা হয়েছেন দেবী|এও এক রহস্য যার সমাধান আজও সম্ভব হয়নি|

এই পর্ব এখানেই শেষ করছি|দেখাহবে পরের পর্বে|জ্যোতিষ সংক্রান্ত কাজ বিশেষ করে আসন্ন নবগ্রহ যজ্ঞ সম্মন্ধে বিশদে জানতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বীরভদ্র মন্দির

প্রায় স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ আবার ফিরে এসেছে বললেই চলে তবে আপাতত আমাদের অবশ্যই কিছু স্বাস্থ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে, সে সব মেনেই নিয়মিত চেম্বারে বসছি, আর অনলাইন ভাগ্য বিচারে আগের থেকে একটু বেশি সময় দিচ্ছি|আগামী অমাবস্যায় আমার গৃহ মন্দিরে বিশেষ পূজা ও হোম যজ্ঞর মাধ্যমে গ্রহদোষ খণ্ডন ও হবে, তবে সবই ওই নিয়ম মেনে|আর এসবের মাঝে আজ মন্দির রহস্যর একটি নতুন পর্ব নিয়ে আমি আপনাদের সামনে|আজকের পর্বে বীরভদ্র মন্দির|

দক্ষিণ ভারতের এই মন্দির নিয়ে রয়েছে যেমন কিছু রহস্য তেমনই এক পৌরাণিক ঘটনার ও উল্লেখ পাওয়াযায়|রামায়ন অনুসারে রাবণের সীতাহরণের সময় বাঁধা দিতে গিয়ে প্রাণ যায় জটায়ুর|আকাশপথে সেই লড়াইয়ে রাবণের তলোয়ারের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে সে এসে পড়েছিল ভূপষ্ঠের এক মন্দিরে|সেই মন্দির হলো এই বীরভদ্র মন্দির|

এই মন্দিরের আরেকটি নাম লেপাক্ষী মন্দির কারন মৃত্যুর আগে রামচন্দ্রের সঙ্গে যখন জটায়ুর দেখা হয়, তখন রাম তাকে বলেছিলেন ‘লে পক্ষী’। যার অর্থ পাখি, উঠে দাঁড়াও। সেই থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের এই মন্দিরের নাম হয় লেপাক্ষী মন্দির|

রামায়ণে বর্ণিত এই লেপাক্ষী মন্দির তৈরি হয় ১৫৩৮ সালে। বিজয়নগর রাজের পারিষদ দুই ভাই বীরান্না ও বীরুপান্না মন্দিরটি তৈরি করেন। তখন এর নাম রাখা হয়েছিল বীরভদ্র মন্দির।আবার পুরাণ মতে, এই মন্দির তৈরি অগস্ত্য মুনির হাতে।

বিখ্যাত এই মন্দিরটিতে রয়েছে গণেশ, বীরভদ্র, শিব, ভদ্রকালী, বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর মূর্তি ও একটি বিশালআকার নন্দী মূর্তি|এই মূর্তিটি ২৭ ফিট দীর্ঘ ও ১৫ ফিট উঁচু। বিশালাকার এই মূর্তি ভারতের সবচেয়ে বড় নন্দী মূর্তির তকমা পেয়েছে।

এই মন্দির বিজয়নগর শৈলীর জাঁকজমকপূর্ণ স্থাপত্যের একটি নিখুঁত উদাহরণ , যাতে আছে ৭০ টি ঝোলানো স্তম্ভ|আর স্তম্ভই হলো এই মন্দিরের সব থেকে বড়ো রহস্য|ষোড়শ শতাব্দীর এই মন্দিরে প্রায় ৭০টি পাথরের থাম রয়েছে। তবে, তাজ্জব করা বিষয়, একটি থামও মাটির|উপরে দাঁড়িয়ে নেই থাম বা স্তম্ভ গুলি রয়েছে ঝুলন্ত অবস্থায়|

আজ পর্যন্ত কোনও স্থপতি বা ইঞ্জিনিয়ারের মাথায় আসেনি, কীভাবে কোনও কিছুর উপর ভর না দিয়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী দাঁড়িয়ে রয়েছে থামগুলি|সত্যি অবাক করা রহস্য|

এই রহস্য নিয়ে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে| শোনো যায় করেন যে একবার একজন ব্রিটিশ স্থপতি এই পিলারের কোন অংশ ভাঙ্গার চেষ্টা করে এর অলৌকিকতা বোঝার জন্য , কিন্তু তিনি সফল হননি |

আজ এখানেই থামছি আবার লিখবো একটি নতুন পর্ব, নতুন কোনো মন্দির রহস্য নিয়ে|পড়তে থাকুন আর যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

বিদেশের শক্তি পীঠ

অনেকদিনের বিরতির পর আজ একটি শক্তি পীঠ পর্ব নিয়ে আমি আবার আপনাদের সামনে উপস্থিত|ইতিমধ্যে আমাদের রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন শক্তি পীঠ নিয়ে আমি লিখেছি যা আপনাদের ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়িয়েছে|লেখা গুলি যারা পড়েননি আমার ওয়েবসাইট এ গিয়ে পড়তে পারেন|এবার দেশের বাইরের কয়েকটি শক্তি পীঠ আপনাদের সামনে আনবো যা বেশ জাগ্রত এবং জনপ্রিয়, আধ্যাত্মিক গুরুত্বও অপরিসীম|

আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানেও রয়েছে সতী পীঠ৷ দেবীপুরাণ মতে, সতীর ৫১ পীঠের দুটি পীঠ রয়েছে পাকিস্তানে৷ এরমধ্যে একটি বালোচিস্তানের হিংলাজ যা নিয়ে একটি পর্ব আমি লিখেছি আগেই আর আজ অন্যটি অর্থাৎ করাচির করবীপুর নিয়ে লিখছি|এই শক্তি পীঠ সিন্ধ প্রদেশে পড়ে শক্তি পিঠের তালিকা অনুসারে এই পীঠ রয়েছে তৃতীয় স্থানে|

পাক বন্দর নগর তথা বাণিজ্যিক রাজধানী করাচির পারকাই ও সুক্কুর স্টেশনের কাছে করবীপুর৷ এখানেই দেবীর প্রাচীন মন্দির তথা সতীপীঠ অবস্থিত| কথিত আছে, এখানে সতীর তিনটি নয়ন পড়েছিল৷ দেবী এখানে মহিষমর্দিনী রূপে পূজিতা হন এখানে শিব আছেন ক্রোধীশ রূপে|তিনি ক্রোধের প্রতীক|

কলকাতায় কালী ঘাটের মা কালী কে অনেকে যেমন বলেন কালী কলকাত্তেওয়ালি, তেমনই অনেকটা এখানে গেলে বলতে হয় ‘জয় কালী করাচিওয়ালি’ ওই নামেই দেবী পাকিস্তানে জনপ্রিয়|বহু দূর দূর থেকে হিন্দু তীর্থ যাত্রীর আসেন করবী পুরের এই প্রসিদ্ধ শক্তি পীঠ দর্শন করতে ও দেবী মহিষাসুর মর্দিনীর আশীর্বাদ পেতে|প্রতিদিনের পুজোর পাশাপাশি বিশেষ তিথিতে বিশেষ পুজো ও সেই উপলক্ষে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা যায় এই শক্তিপিঠে|

আবার ফিরে আসবো নতুন শক্তি পিঠের কথা নিয়ে জানাবো অনেক অজানা কথা|যাওয়ার আগে জানিয়ে রাখি আবার শুরু হয়েছে নতুন করে চেম্বারে জ্যোতিষ চর্চা, কিছু নতুন চেম্বার ও যোগ হয়েছে তালিকায় আর আগামী দিনে জেলা ও রাজ্যের গন্ডি পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্যেও বিভিন্ন জেলায় পাড়ি দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সেই সব খবর পেতে ও যেকোনো জ্যোতিষ পরামর্শ তথা প্রতিকারের জন্যে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|আমি শুনবো আপনাদের কথা, পাশে থাকবো সাধ্য মতো|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

গরুড়দেব ও সাপেদের শত্রুতা

পুরান নিয়ে কাহিনী নিয়ে আমি আগেও লিখেছি, পুরানের নানা জটিল বিষয় সহজ সরল ভাবে আপনাদের সামনে এনেছি, এবার পুরানে উল্লেখিত কিছু রহস্য ময় ব্যক্তিত্ব ও ঘটনা আপনাদের সামনে আনবো এবং জানাবো তার প্রকৃত ব্যাখ্যা ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য, এই নতুন ধারাবাহিক লেখনীর মাধ্যমে|

পুরানে দেবতা অসুর ও মানুষের পাশাপাশি কিছু অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন অদ্ভুত প্রাণীর ও উল্লেখ আছে|গরুড় দেব এদের অন্যতম|তিনি স্বয়ং ভগবান বিষ্ণুর বাহন|তিনি মহাবীর, তার প্রশ্নের উত্তরে সৃষ্টি হয়েছে গরুড় পুরান|তবে সব থেকে বেশি যে বিষয়টা আলোচিত হয় তা হলো গরুড়ের সাথে সাপেদের প্রবল শত্রুতা|কিন্তু কেনো এই শত্রুতা আর কবে তার সূচনা হলো? এসব জানার আগে গরুড়ের আসল পরিচয় ও স্বরূপ জানা দরকার|

আমরা আগেই জেনেছি গরুড় কশ্যপ মুনির সন্তান। কশ্যপের অনেক স্ত্রী ছিলেন। বিনতা তাঁদের অন্যতমা। এই বিনতার দুই পুত্র: গরুড় এবং অরুণ। কশ্যপের আর এক স্ত্রীর নাম কদ্রু। তাঁর অনেক সন্তান, সবাই সাপ। এখানে পারিবারিক ভাবে গরুড় ও সাপেদের শত্রুতার একটা ইঙ্গিত খুঁজে পাওয়া যায় |পড়ে বিষ্ণু গরুড় কে তার বাহন হিসেবে পান তার পেছনে ও আছে এক রোমাঞ্চকর পৌরাণিক কাহিনী |

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে গরুড়ের একবার অমৃতর খুব প্রয়োজন হয়ে পড়ে । অমৃত আছে দেবতাদের কাছে। গরুড় দেবলোকে অভিযান করলেন। দেবতাদের যুদ্ধে হারিয়ে অমৃতের ভাণ্ড নিয়ে গিয়ে দিলেন বিষ্ণুর কাছে। কিন্তু নিজে সেই অমৃত পান করলেন না। এই সংযম ও ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে বিষ্ণু গরুড়কে বর দিতে চাইলেন। গরুড় অমৃত চাইলেন না, কিন্তু অমরত্ব চাইলেন। তার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থনা করলেন যে, তিনি বিষ্ণুর রথের উপরে থাকতে চান। বিষ্ণু তাঁর সেই প্রার্থনা মঞ্জুর করলেন। এই কাহিনির আর একটি রূপও আছে। তাতে বলা হয়েছে, বিষ্ণু যেমন গরুড়কে বর চাইতে বললেন, গরুড়ও তেমনই বিষ্ণুকে বর দিতে চাইলেন বিষ্ণু তখন গরুড়কে তাঁর বাহন হতে বললেন এবং রথের ধ্বজায় অধিষ্ঠিত হতে অনুরোধ করলেন। গরুড় রাজি হলেন |সেই থেকে গরুড় বিষ্ণুর বাহন |তিনি অমরত্ব ও লাভ করলেন|

বিষ্ণুর আশীর্বাদে অমর হয়ে অমৃতের ভাণ্ডটি নিয়ে গরুড় আবার ডানা মেললেন, সেটি যথাস্থানে রেখে আসতে হবে। দেবরাজ ইন্দ্র অমৃত কেড়ে নেওয়ার জন্য চড়াও হলেন বজ্র দিয়ে আঘাত করলেন গরুড় কে । গরুড় তো অমর, কিন্তু দেবরাজের অস্ত্র বলে কথা, তার ওপর দধীচীর সম্মানও রক্ষণীয়, অতএব গরুড় তাঁর দেহের একটি পালক নিক্ষেপ করলেন, অর্থাৎ যুদ্ধে অক্ষত থাকলেন না তিনি। ইন্দ্র তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে বন্ধু করে নিলেন|

গরুড় আসলে হিন্দু ও বৌদ্ধপুরাণে উল্লিখিত একটি বৃহদাকার পৌরাণিক পাখি বা পক্ষীতুল্য জীব। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, গরুড় বিষ্ণুরবাহন।তার বংশ পরিচয় অতি আভিজাত্য পূর্ন তিনি স্বয়ং ঋষি কশ্যপ ও বিনতার পুত্র তার আরো একটি ভাই আছে যার নাম অরুণ তিনি আবার সূর্যের বাহন।গরুড় শব্দের অর্থ ডানা।তিনি কোনো সাধারণ পক্ষী নন তিনি বৈদিক জ্ঞানের প্রতীক এবং পরম বৈষ্ণব ।গরুড় কখনো মুক্তডানা ঈগলের মত, কখনো ঈগলমানবের মত বর্ণনা করা হয়েছে|

গরুড়ের সঙ্গে সর্পকুলের প্রবল শত্রুতা। তার অনেক কারন আছে|একটি কারন হলো কদ্রু গরুড়ের মা বিনতাকে দাসী করে রেখেছিলেন। বিমাতার দাসত্ব থেকে জননীকে মুক্ত করতে চান গরুড়। যেহেতু ভাইরা সব সাপ গরুড় বরাবরই সাপেদের সহ্য করতে পারতেন না |

আবার নাগেদের সঙ্গেও বিষ্ণুর একটা সম্পর্ক আছে। নাগকুলে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হলেন অনন্তনাগ বা শেষনাগ। বিষ্ণু তাঁর ওপর শয়ন করেন। অনন্তনাগ যখন নিজের দেহটি পাকিয়ে ফেলেন, তখন সময় পিছন দিকে যায়, ব্রহ্মাণ্ডের লয় হয়। তিনি যখন পাক খোলেন, সময় এগিয়ে যায়, ব্রহ্মাণ্ডের আবার সৃষ্টি হয়|এই নাগও আবার পরম বিষ্ণু ভক্ত অর্থ্যাৎ দুই বিষ্ণু ভক্তের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা বা মৃদু শত্রুতা কিছু অস্বাভাবিক নয়|

প্রাকৃতিক ভাবে গরুড়ের সাথে নাগেদের সম্পর্ক খাদ্য ও খাদকের |গরুড়ের প্রধান খাদ্য সাপ তাই গরুড় কে সাপেরা ভয় পাবে এটাই স্বাভাবিক|প্রাকৃতিক নিয়মে এরা একে অপরের শত্রু|

গরুড় ও সাপেদের শত্রুতা নিয়ে শাস্ত্র গুলিতে একাধিক ঘটনার বর্ণনা আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রামায়ণ এর একটি ঘটনা যখন রাম সেনা নাগ পাশে আবদ্ধ তখন তাদের উদ্ধার করতে আসে স্বয়ং গরুড় দেব | তার আসার পর সকলে নাগ পাশ থেকে মুক্ত হয়ে আবার রাবন সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ন হয় |

আজ প্রথম পর্ব এখানেই শেষ করছি|চলবে পুরান রহস্য|আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে আসবো|কেমন লাগছে জানাবেন|আর যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে,আমি শুনবো সরাসরি|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ