Home Blog Page 133

ভারতের সাধিকা – ভৈরবী ব্রাহ্মনী

ভারতের সাধকদের নিয়ে বেশ অনেক গুলি পর্ব ইতিমধ্যে লিখেছি, তবে সাধকদের পাশাপাশি আমাদের দেশে অসংখ্য সাধিকাও রয়েছেন যারা আধ্যাত্মিক সাধনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন আজ এমনই এক সাধিকার কথা লিখবো|আজকের পর্বে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের তন্ত্র তন্ত্র সাধনার গুরু ভৈরবী ব্রাহ্মনীর কথা বলতে চলেছি|তার ব্যক্তিগত জীবনে, সন্যাস পূর্ব জীবন নিয়ে খুব একটা তথ্য পাওয়া যায়না তবে তার দক্ষিনেশ্বর আগমন ও ঠাকুর রামকৃষ্ণকে তন্ত্র সাধনায় দীক্ষিত করার মধ্যে দিয়ে তার অলৌকিক ব্যাক্তিত্ব ও শাস্ত্রজ্ঞান পরিলক্ষিত হয়|

গুরু স্থানীয় হলেও শ্রীরামকৃষ্ণ ভৈরবীকে মাতৃরূপে দেখতেন। অন্যদিকে ভৈরবী তাঁকে মনে করতেন ঈশ্বরের অবতার। মাতাজী প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রথম সর্বসমক্ষে শ্রীরামকৃষ্ণকে অবতার বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু নানা লোকের কথা শুনেই শ্রীরামকৃষ্ণ নিজে তাঁর অবতারত্ব সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। পরবর্তীতে ভৈরবীর নিকট তন্ত্রসাধনা তাঁর আধ্যাত্ম-সাধনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্ব বিবেচিত হয়।

ভৈরবী ব্রাহ্মণী ১৮৬১ সালে দক্ষিনেশ্বর আসেন যতদূর জানা যায় তাঁর প্রকৃত নাম ছিল যোগেশ্বরী এবং বয়স ছিল চল্লিশের কাছাঁকাছি। দক্ষিণেশ্বরে আগমনের পূর্বে তাঁর জীবন সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না। তবে তিনি ছিলেন তন্ত্র ও বৈষ্ণব সাধনে সিদ্ধা|

সাধনার একটি পর্যায়ে শ্রীরামকৃষ্ণ ভৈরবীর কাছে তাঁর ভাবতন্ময়তা ও দৈহিক পীড়ার বর্ণনা দিলেন। ভৈরবী তাঁকে এই বলে আশ্বস্ত করলেন যে তিনি পাগল হয়ে যাননি এক আধ্যাত্মিক ‘মহাভাব’ তাঁকে আশ্রয় করেছে। এই মহাভাবের বশেই তিনি দিব্যপ্রেমে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন ভক্তিশাস্ত্রের উদাহরণ দিয়ে তিনি দেখালেন রাধা ও চৈতন্য মহাপ্রভুরও একই ভাব উপস্থিত হয়েছিল। ভৈরবী তাঁর দৈহিক পীড়া অবসানের পথ ও নির্দেশ করলেন|

যোগেশ্বরী ভৈরবীর পথনির্দেশনায় শ্রীরামকৃষ্ণ তন্ত্রমতে সাধনা শুরু করলেন ও তন্ত্রোল্লেখিত ৬৪ প্রকার প্রধান সাধন অভ্যাস করলেন। জপ ও পুরশ্চরণের মতো মন্ত্রসাধনায় চিত্ত শুদ্ধ করে পূর্ণ আত্মনিয়ন্ত্রণ স্থাপন করলেন। সমস্যা দেখা দেয় যখন ঠাকুর জানলেন তন্ত্রসাধনায় বামাচারের মতো ধর্মবিরোধী পন্থাও অভ্যাস করতে হয়, যার মধ্যে মাংস ও মৎস্য ভক্ষণ, মদ্যপান ও যৌনাচারও অন্তর্ভুক্ত। শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁর জীবনীকারগণের কথা থেকে জানা যায়, শেষোক্ত দুটি তিনি অভ্যাস করেননি, শুধুমাত্র সেগুলির চিন্তন করেই কাঙ্খিত সাধনফল লাভ করেছিলেন।

ভৈরবী শ্রীরামকৃষ্ণকে কুমারী পূজা শিক্ষা দেন। এই পূজায় কোনও কুমারী বালিকাকে দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এছাড়াও ভৈরবীর নির্দেশনায় শ্রীরামকৃষ্ণ কুণ্ডলিনী যোগেও সিদ্ধ হন। ১৮৬৩ সাল নাগাদ তাঁর তন্ত্রসাধনা সম্পূর্ণ হয়।শ্রীরামকৃষ্ণ বামাচারকে একটি জ্ঞানমার্গ বলে উল্লেখ করলেও, অন্যদের এই পথে সাধন করতে নিষেধ করতেন|স্বামী বিবেকানন্দকেও তিনি এই বামাচারের পথে চলতে নিষেধ করেন|

একটি কথা একবাক্যে স্বীকার করতে হয় ঠাকুরের আধ্যাত্বিক জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এই তন্ত্র সাধন পর্ব এবং এই পর্বে প্রধান চালিকা শক্তি ভারতের এই মহান তন্ত্র সাধিকা ভৈরবী মাতা|রামকৃষ্ণ পরবর্তী কালে এই সাধিকার জীবন ও আধ্যাত্মিক কর্মকান্ড সম্পর্কে খুব একটা জানা যায়না তবে দক্ষিনেশ্বরে তার অলৌকিক উপস্থিতি ও আধ্যাত্মিক শক্তির কথা আজও লোকের মুখে মুখে ফেরে|

আজ এই মহান সাধিকাকে প্রনাম জানিয়ে এই পর্ব শেষ করছি, আগামী দিনে এমন আরো অনেক সাধিকার জীবন ও সাধন আপনাদের সামনে তুলে ধরবো|যাওয়ার আগে জানিয়ে রাখি বাড়তে থাকা মহামারীর কারনে আপাতত জ্যোতিষ পরামর্শ বা ভাগ্যবিচারের ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমকেই ওধিক গুরুত্ব দিচ্ছি|যারা শারীরিক ভাবে আসতে পারছেন না চিন্তা করবেননা|উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে সরাসরি আমার সাথে কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

মন্দির রহস্য – ভূতওয়ালা মন্দির

ভগবানের নাম শুনলে অশরীরীরা পালিয়ে যায় , কিন্তু শিব ব্যাতিক্রম, তিনি ভূতনাথ|শিবকে ঘিরে থাকে অশরীরীরা|এমনকি এদেশে এমন একটি মন্দির ও আছে যা নির্মাণ করেছিলো ভুতেরা,তাদের উপস্থিতি মন্দিরকে অন্য মাত্রা দেয়, মন্দিরের নামই ভূতওয়ালা মন্দির|

উত্তর প্রদেশের দাতিয়ানা নামের এক গ্রামে রয়েছে এই ভূতওয়ালা মন্দির|মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে স্বয়ং ভূতনাথ|মন্দির নাকি রাতারাতি নির্মাণ করেছিলো একদল অশরীরী|পুজো পাঠের দায়িত্বও তাদের উপরেই|মন্দিরের নির্মাণ শৈলীও বেশ অদ্ভুত|ইটের গাঁথা দেয়াল কিন্তু সিমেন্ট বলে কিছু ব্যবহার হয়নি|মন্দিরের চুড়ো কিছুটা অসম্পূর্ণ কারন একরাতে নির্মিত হয়ে ছিলো মন্দির, ভোরের আলো ফোটায় ভুতেরা ওই কাজ টুকু শেষ করতে পারেনি|

বন্যা, ঝড় , বজ্রপাত এবং ভূমিকম্পর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মন্দিরের প্রাচীন অংশের কোনো ক্ষতি হয়না, উল্টে গোটা গ্রামকে যেকোনো বিপদে রক্ষা করে এই মন্দির|এমনটাই জনশ্রুতি চলে আসছে কয়েকশো বছর ধরে|

সন্ধের পর এই মন্দির চত্বরে পা রাখলেই একটি গা ছমছমে অনুভূতি হতে বাধ্য, স্বয়ং ভূতনাথ ও তার অনুগত ভূত প্রেতের বাসস্থান হিসেবে এই মন্দিরকে সমিহ করে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা|ভক্তি সহকারে পুজো করে নিজের মনোস্কামনা জানাতে আসেন অসংখ্য মানুষ|সব মিলিয়ে ভূত ওয়ালা মন্দির সত্যি বেশ রহস্যময়|

পরের পর্বে আবার কোনো রহস্যময় মন্দির নিয়ে ফিরে আসবো|ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ধন্যবাদ| 

শক্তিপীঠ ঢাকেশ্বরী

আপাতত প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্যে অফলাইন চেম্বার প্রাকটিসের থেকে অনলাইন কন্সালটেন্সির উপর একটু বেশি গুরুত্ব দিতে হয়েছে তাই হাতে রয়েছে কিছুটা বাড়তি অবসর আর সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে আজ অনেকদিন পর একটি শক্তিপীঠ পর্বনিয়ে আমি আপনাদের মুখোমুখী|আজ লিখবো বাংলাদেশের ঢাকেশ্বরী মন্দির নিয়ে|

সতীর দেহ ছিন্ন হবার পর এই স্থানে তার কিরীটের ডাক এই জায়গায় পড়ে তাই এটা উপ-পীঠ|ডাক হল উজ্জ্বল গহনার অংশ। ডাক থেকেই ঢাকেশ্বরী নামের উৎপত্তি এই ঢাকেশ্বরী থেকেই রাজধানী ঢাকার নামকরণ|

মন্দিরের ইতিহাস বেশ প্রাচীন কথিত রয়েছে, ১২০০ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন রাজা বল্লাল সেন মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন৷কিংবদন্তি অনুযায়ী, রাজা আদিসুর তার এক রানীকে কোনো কারনে বুড়িগঙ্গার এক জঙ্গলে নির্বাসন দেন জঙ্গলে রানী প্রসব করে পুত্র বল্লাল সেন কে। জঙ্গলেই বেড়ে ওঠে বল্লাল সেন। শৈশবে জঙ্গলের মধ্যে বল্লাল সেন একটি দেবী মূর্তি পান বল্লাল সেন বিশ্বাস করতে শুরু করে জঙ্গলে সকল বিপদ-আপদ থেকে এই দেবী দুর্গাই তাকে রক্ষা করছে। পরে বল্লাল সেন রাজ ক্ষমতায় অসিন হলে তার জন্মস্থানে যেখানে দেবীর মূর্তি পেয়েছিলেন সেখানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।

নাম করনের অন্য একটি ব্যাখ্যা অনুসারে রাজা মূর্তিটি জঙ্গলে ঢাকা অবস্থায় পেয়েছিলেন যায় বলে দেবীর নাম হয় ঢাকাঈশ্বরী বা ঢাকেশ্বরী মন্দিরটিও ঢাকেশ্বরী মন্দির নামে পরিচিতি পায়।

মুক্তি যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনার গোলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ পরে বাংলাদেশ সরকার সংস্কার করে ফের ফিরিয়ে আনেন মন্দিরের হারানো সৌন্দর্য|বর্তমানে এই মন্দির বাংলাদেশের জাতীয় সম্পত্তি৷ কথিত আছে দেবী স্বয়ং মহানগর ঢাকার রক্ষাকত্রী৷ তাই তিনি ঢাকার ঈশ্বরী অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী|

আজ এই শক্তিপীঠের কথা এখানেই শেষ করছি,স্বাস্থ সংক্রান্ত সকল বিধি নিষেধ মেনে চলুন|আমার কাছে জ্যোতিষ পরামর্শ নিতে বাইরে বেরোতে হবেনা, প্রয়োজনে ফোন করে নেবেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন|ধন্যবাদ|

রাম নবমীর শুভেচ্ছা

বিভিন্ন যুগে ভগবান বিষ্ণু বিশ্ব সংসারের সকল মানুষকে ন্যায়পরায়ণতার ও সত্যের পথ প্রদর্শন করতে মিথ্যার উপর সত্যের জয় প্রতিষ্ঠা করতেনানা অবতার রূপে আমাদের ধরিত্রী তে অবতরণ করেন|ত্রেতা যুগে রাম ভগবান বিষ্ণুর সপ্তম অবতার রূপে জণ্মেছিলেন আজকের দিনে, এই দিনটি প্রতি বছর পালিত হয় রামনবমী রূপে, অর্থাৎ রাম নবমী পালন করার মূল উদ্দেশ্য হল অধর্মকে নিক্ষেপ করে ধর্মকে স্থাপন করা। মন্দ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির সূচনা করা|ভগবান রামের উল্লেখ যে শুধুমাত্র প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থে পাওয়া যায় তা নয়, জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থেও ভগবান রামের উল্লেখ আছে। বিশ্বের বহু দেশেই রামের মন্দির আছে,ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম রাম মূর্তি|শ্রী রাম সততার প্রতীক, ত্যাগের প্রতীক,অসত্যর উপর সত্যর জয়ের প্রতীক|রাজ ধর্ম পালন করতে তিনি যে আত্মত্যাগ করেছেনতা এক দৃষ্টান্ত|রাম নামকে বলা হয় কলিযুগের সব অন্ধকারকে দূর করে এগিয়ে যাওয়ার প্রধান অস্ত্র|শাস্ত্রমতে এই রাম নবমী উপলক্ষ্যে ধার্মিক ব্যক্তিরা সমগ্র দিন জুড়ে বৈদিক মন্ত্র পাঠ করেন। সমগ্র দিনজুড়ে ভক্তিমূলক গান গাওয়া বিভিন্ন হিন্দু ধর্মীয় বইগুলি থেকে পাঠ করে শোনাবার রীতি আছে| এই দিনটিতে রাম কথার বর্ণনা করে, রাম কাহিনী পড়ে সহজেই বিষ্ণুর কৃপা লাভ করা যায়, অনেকে মন্দিরে যান, অনেকে বাড়িতে রামের মূর্তিতে পূজা করেন। হিন্দুদের আদি দেবতা সূর্য দেবকে জল প্রদান করে, সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী সূর্য দেবতার আশীর্বাদ গ্রহণ করা হয় আজকের দিনে|কোন রীতি পালন করলেন সেটা বড়ো কথা নয়, আসল বিষয় হলো শ্রী রামের প্রতি আপনার বিশ্বাস এবং তার আদর্শকে অনুসরণ করার ইচ্ছা|তবে একজন পেশাদার জ্যোতিষী হিসেবে বলবো,এই রামনবীমি এবং কিছু দিন পরেই হনুমান জয়ন্তী, অমাবস্যা,সব মিলিয়ে একটা আধ্যাত্মিক ভাবে তাৎপর্য সময়ের মধ্যে আমরা রয়েছি|এই সময়ে জ্যোতিষ পরামর্শ এবং প্রতিকারের শ্রেষ্ট সময়|এই সময়কে কাজে লাগাতে চাইলে যোগাযোগ করবেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

দেবী অন্নপূর্ণা ও মহাদেব

আজ মা অন্নপূর্ণার পূজার দিন,তিনি অন্নের দেবী, সুখ ও সমৃদ্ধির দেবী|কথিত আছে তার পুজোর পর দরিদ্রকে অন্ন দান করলে জীবন থেকে সব অভাব দূর হয়|নিষ্ঠাভরে দেবীর আরাধনায় সংসার হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ|দেবী অন্নপূর্ণাকে নিয়ে আমি আগেও লিখেছি, সেই লেখা আপনারা পড়তে পারেন আমার ওয়েবসাইট এ গিয়ে,আজ জানাবো দেবীর আবির্ভাবের কথা, তার পৌরাণিক ব্যাখ্যা|

এক চৈত্র মাসের শুক্ল অষ্টমীতে দেবী অন্নপূর্ণা আবির্ভুতা হয়ে ছিলেন কাশীধামে|
পুরাণ মতে দেবী পার্বতীর সঙ্গে দেবাদিদেবের মতবিরোধে দেবী কৈলাস ত্যাগ করলে মহামারি, খাদ্যাভাব ঘটে। ভক্তগণকে এই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য দেবাদিদেব ভিক্ষার ঝুলি নিজ কাঁধে তুলে নেন। কিন্তু দেবীর মায়ায় ভিক্ষারও আকাল ঘটে। তখন দেবাদিদেব শোনেন কাশীতে এক নারী সকলকে অন্ন দান করছেন। দেবীকে চিনতে মহাদেবের একটুও দেরি হয় না। মহাদেব দেবীর কাছে ভিক্ষা গ্রহণ করেন ও অন্ন ভিক্ষা নিয়ে তার ভক্তদের খাদ্যাভাব থেকে রক্ষা করেন|

এরপর মহাদেব দেবীর একটি মন্দির নির্মাণ করেন কাশীতে এবং সেই থেকে তিনি কাশীর অধিষ্টাত্রী দেবী তার কৃপায় কাশিতে ইচ্ছা থাকলেও অনাহারে থাকা যায়না, প্রত্যেক কাশী বাসির অন্নদানের ভার দেবী অন্নপূর্ণার|

অন্নদাত্রী দেবী অন্নপূর্ণার আরেকনাম অন্নদা
তিনি দেবী দুর্গার আরেক রূপভেদ।মূলত দ্বিভূজা বা চতুর্ভূজা । গায়ের রঙ লালচে। দ্বিভূজা দেবীর বামহাতে সোনার অন্নপাত্র। ডানহাতে চামচ বা হাতা।মাথায় বিরাজিত অর্ধচন্দ্র। তিনি ক্ষুধার্ত মহাদেবকে অন্নদান করছেন স্মিতহাস্যে তার এক পাশে শ্রী ও অন্য পাশে ভূমি|

প্রাচীন তন্ত্রসার গ্রন্থে দেবীর পূজা পদ্ধতি রয়েছে, আবার অন্নদামঙ্গল কাব্য রচিত হয়েছে দেবীর মহিমা কীর্তন করে|সব মিলিয়ে সনাতন ধর্মে দেবী অন্নপূর্ণার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য অপরিসীম|আজ দেবী অন্নপূর্ণাকে প্রনাম জানিয়ে লেখা শেষ করলাম আপনাদের সবাইকে জানাই অন্নপূর্ণা পুজোর অনেক শুভেচ্ছা|এই শুভ ও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যারা ভাগ্যগণনা করাতে বা প্রতিকার গ্রহন করতে চান অবশ্যই যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

ভারতের সাধক – নিম কারোলি বাবা

ভারতের অসংখ্য সাধক তাদের জীবন ও আধ্যাত্মিক সাধনা দিয়ে এমন সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে যা বহিঃবিশ্বের কাছে আজও এক রহস্য|এমনই এক রহস্যময় সাধক ছিলেন নিম কারোলি বাবা যার ভক্ত তালিকায় রয়েছে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ, অ্যাপেল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস আবার ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শঙ্কর দয়াল শর্মা থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবাই তার গুনমুগ্ধ , তালিকায় আরো রয়েছে দেশ বিদেশের একাধিক বিখ্যাত ফিল্ম ষ্টার|কে ছিলেন এই নিম কারোলি বাবা? কেমন ছিলো তার অলৌকিক জীবন? জানাবো আজকের পর্বে|

উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদে জন্মেছিলেন এই মহা পুরুষ, প্রথম জীবনে বিবাহ করে সংসার ও শুরু করেছিলেন কিন্তু হটাৎ একদিন সব ছেড়ে ঈশ্বর অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন তিনি, বহু স্থান ঘুরলেন শেষে উত্তরা খন্ডের কাঁচি ধামে নিজের ছোট্ট একটি হনুমান মন্দির স্থাপন করে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করলেন|

বহু অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ আছে তার সারা জীবন জুড়ে, একবার আশ্রম ভ্রমণে আশা নেতা এক সধারণ রাজনীতিবিদকে তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার আশির্বাদ দিয়ে বসেছিলেন|পরবর্তীতে আশ্চর্যজনক ভাবে সেই নেতা ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন, তিনি আর কেউ নন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শংকর দয়াল শর্মা|তিনি আজীবন মানতেন বাবার আশীর্বাদেই তার এই সাফল্য|

একটি প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে একবার বাবাকে ট্রেনে তুলতে অস্বীকার করে কোনো ব্রিটিশ কর্মচারী তারপর বহু চেষ্টা করেও এক চুল ও গড়ায়নি ট্রেনের চাকা|বাবার ইচ্ছায় তা আবার চলতে শুরু করেছিলো|এমন অসংখ্য ঘটনা আছে|

বাবা জন সমক্ষে খুব কমই আসতেন , খুব একটা পছন্দ করতেন না মানুষের ভিড়|সর্বক্ষণ তার শরীর ঢাকা থাকতো একটি বড়ো চাদরে|কেনো তা কেউ জানেনা|বাবার আচরণ ও দৈহিক কিছু বিষয় দেখে অনেকেই বাবা নিম কারোলিকে বজরংবলীর অংশ বা তার অবতার জ্ঞানে পূজা করতো|

মহান এই সাধক 1973 সালে পরলোক গমন করেন|বর্তমানে দেশে এবং বিদেশের মাটিতে 108 টি মন্দির রয়েছে নিম কারোলি বাবার|রয়েছে অগণিত ভক্ত|এই মহান সাধককে প্রনাম জানিয়ে শেষ করছি আজকের পর্বে|কেমন লাগলো জানবেন এবং জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রয়োজনে যোগাযোগ করবেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

মন্দির রহস্য – সংকট মোচন মন্দির

বহু রহস্যময় শিব মন্দির ও কালী মন্দিরের কথা আপনাদের ইতিমধ্যে বলেছি যা আপনাদের প্রশংসা লাভ করায় আমার পরিশ্রম ও গবেষণা সার্থক বলে মনে করি, সামনেই হুনুমান জয়ন্তী, আমাদের সনাতন ধর্মে তিনি রূদ্র অবতার অর্থাৎ শিবের অংশ, বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্রেও তার গুরুত্ব অপরিসীম|আজ এমন একটি মন্দিরের কথা বলবো যেখানে তার তার সংকট মোচন রূপকে জীবন্ত হিসেবে দেখা হয়|

কাশীর সংকট মোচন হনুমান মন্দিরকে বলা হয় জীবন্ত বিগ্রহের মন্দির|বহু মানুষ প্রতিদিন আসেন এই মন্দিরে নিজেদের গ্রহ দোষ খণ্ডন করাতে ও বজরংবলীর আশীর্বাদ নিতে|কথিত আছে এই স্থানেই হনুমানজির দর্শন পেয়েছিলেন রাম চরিত মানস ও হনুমান চালিসার স্রষ্টা সাধক তুলসী দাস|

সংকট মোচন মন্দিরের কিছু দূরেই রয়েছে শ্রীরামের মন্দির, মনে করা হয় হনুমানের অনুমতি ছাড়া তার প্রভু রামের মন্দিরে প্রবেশ করা যায়না|
অগণিত ভক্তদের বিশ্বাস বজরংবলী এখানে জীবন্ত ও অত্যন্ত জাগ্রত|প্রতিটি ভক্তের অভাব অভিযোগ তিনি নিজে শোনেন ও তাদের মনোস্কামনা পূরণ করেন|

এককালে এই স্থানে নিয়মিত আসতেন ও বিশ্রাম করতেন স্বয়ং তুলসীদাস, এখানেই তাকে প্রভু শ্রী রামের দর্শন করার পন্থা বলে দিয়েছিলেন হনুমান সাধক তুলসীদাসের একটি একটি মূর্তিও রয়েছে এখানে|

আগামী দিনে রূদ্র অবতার হনুমানকে নিয়ে আরো অনেক তথ্য আপনাদের সামনে আনবো লেখা ও ভিডিওর মাধ্যমে|দেখতে থাকুন , পড়তে থাকুন এবং এই পবিত্র সময়ে যারা জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকার নেয়ার কথা ভাবছেন সরাসরি যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

শুভ নববর্ষ

আজ আমাদের মানে বাঙালিদের বড়ো আনন্দের দিন, আজ নতুন বাংলা বছরের সূচনা,আমরা ঢুকে পড়ছি একটি নতুন বছর 1428 এ , মহামারী আবার নতুন রূপে ফিরে আসছে, তাই কিছুটা ভয় কিছুটা অনিশ্চয়তা এই মুহূর্তে আমাদের সবার মনেই রয়েছে|তবু আজকের দিনটি বিশেষ, আজ পয়লা বৈশাখ|আমরা আশা করবো, প্রার্থনা করবো ঈশ্বরের কাছে যেনো নতুন বছরে এই প্রাণঘাতি ভাইরাস আমাদের ছেড়ে চীর তরে বিদায় নেয়|

এককালে এই দিনটায় হতো খাজনা আদায়ের শুরু, নতুন ফসল বেচে কৃষকদের হাতে অর্থ আসতো এবং তারা উৎসবে মেতে উঠতেন
আবার ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রুপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে|

ব্যবসা বাণিজ্যর ক্ষেত্রেও পয়লা বৈশাখের ভূমিকা রয়েছে|তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাঠের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকে। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে|

পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা বছর গণনা শুরু হয় আকবরের আমল থেকে, সেদিক দিয়ে আলাদা করে বাংলা নব বর্ষ বা পয়লা বৈশাখ পালনের কারন কিছুটা অর্থনৈতিক|জমিদাররা এই দিন থেকে রাজস্ব দানের নতুন খাতা শুরু করতেন|
মুঘল আমলের প্রথম দিকে ইসলামিক রীতি অনুসারে হিজরি সন অনুযায়ী চলত শাসন। কিন্তু সমস্যা হত খাজনা আদায়ে। কারণ চাঁদের ওপর এই সন নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। খাজনা আদায়ের বিষয়টিকে আরও মসৃণ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হন সম্রাট আকবর। তাঁর নির্দেশেই জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেউল্লাহ সিরাজি বাংলা সন গণনা শুরু করেন। প্রথমে একে বলা হত ফসলি সন। পরে বঙ্গাব্দ শব্দটি প্রবর্তিত হয়। সেই সময়ে চৈত্র মাসের শেষের দিন খাজনা আদায়ের শেষ দিন বলে ধরা হত।আর তারপর দিন উৎসব হিসেবে নব বর্ষের সূচনা বা পয়লা বৈশাখ পালন করা হতো|এই রীতি অনুসরণ করেছিলেন মুর্শিদকুলি খা যা বাঙালির ব্যবসা বাণিজ্যর ক্ষেত্রে এখনো চলছে, আজও এই দিনে নতুন হাল খাতা চালু হয়|

এখানে বলে রাখি বাংলায় আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়|

আমাদের বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্রেও পয়লা বৈশাখের গুরুত্ব রয়েছে সাধারণত চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তি বা মহাবিষুবসংক্রান্তির দিন পালিত হয় চড়কপূজা অর্থাৎ শিবের উপাসনা। এইদিনেই সূর্য মীন রাশি ত্যাগ করে মেষ রাশিতে প্রবেশ করে, গ্রহের এই সঞ্চার মানুষের জীবনকে নানা ভাবে প্রভাবিত করে|সে নিয়ে পরে কখনো বিস্তারিত আলোচনা করবো|

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গর গ্রামাঞ্চলে এবং কলকাতা শহরের উপকণ্ঠে পয়লা বৈশাখ থেকে আরম্ভ হয় বৈশাখী মেলা। এই মেলা সমগ্র বৈশাখ মাস জুড়ে অনুষ্ঠিত হয়।ঢাকার বৈশাখী উৎসবের একটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার জন্য বানানো নয় রং-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিলিপি। ১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখের উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ।

এখন বাঙ্গালীর প্রধান উৎসব গুলোর অন্যতম এই পয়লা বৈশাখ তবে এখন আর শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই পয়লা বৈশাখ পালন, এই বিশ্বায়নের যুগে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে বাঙালি আর পয়লাবৈশাখ ও পালিত হচ্ছে গোটা বিশ্ব জুড়ে, আজ বাঙালির শ্রেষ্ট উৎসব গুলোর মধ্যে অন্যতম এই বর্ষবরণ উৎসব|

নতুন বছর নতুন করে শুরু করুন, পরিস্থিতি যাই হোক সঠিক চিন্তা এবং সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও শাস্ত্র সম্মত প্রতিকার জীবনের যেকোনো খারাপ সময়কে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে,একজন জ্যোতিষী হিসেবে আমাকে পাবেন সারাটা বছর, চেম্বারে ও অনলাইনে, প্রয়োজন মনে করলে যোগাযোগ করবেন উল্লেখিত নাম্বারে|আপনাদের সবাইকে জানাই শুভ নববর্ষ|ভালো থাকুন|দেখতে থাকুন মনের কথা|নমস্কার|

চরক উৎসব

আমাদের বাংলায় চৈত্র সংক্রান্তি মানেই চরক উৎসব, এখন চরক উৎসবের সেই জৌলুস আর নেই শহর ও মফস্সল থেকে ক্রমশঃ লুপ্ত হচ্ছে এই ধার্মিক উৎসব তবে এখনো জেলায় বিশেষত গ্রাম অঞ্চলে চোখে পরে চরকের নানা রীতি নীতি|আজ এই চরক উৎসবের সময়ে চরক নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সামনে আনছি এই বিশেষ পর্বে|

চরক মূলত বাংলার লৌকিক উৎসব হলেও পুরানে এর উল্লেখ আছে , লিঙ্গ পুরানে স্পষ্ট বলা আছে চৈত্র মাসে শিবকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে করা নাচ গানের প্রথাকে বলে চরক|আবার অন্য একটি তথ্য অনুসারে বানরাজ দ্বারকাধীশ কৃষ্ণর কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তার আরাধ্য মহাদেবকে নিজ রক্ত নিবেদন করে তুষ্ট করেন অমরত্ব লাভের আশায় সেই সাধনাকে স্মরণ করা হয় চরক উৎসবের মাধ্যমে

লোকমুখে শোনা যায় যে ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা প্রথম করেছিলেন এই পুজো এবং ক্রমে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সারা বাংলা জুড়ে|

এককালে সাধু সন্ন্যাসীরা বিরাট শোভাযাত্রা বের করতো চরক উপলক্ষে, শরীরে তীক্ষ্ণ অস্ত্র বিঁধিয়ে দেয়া থেকে আগুন ঝাঁপ, কাঁটা ঝাঁপ, বঁটি ঝাঁপ অনেক রীতিই পালন হতো|গ্রামবাংলায় আজও চৈত্রের শুরু থেকেই ধ্বনিত হয় ‘বাবা তারকনাথের চরণে সেবা লাগে’। সমাজের প্রান্তিক স্তরের নারী-পুরুষের একাংশ সন্ন্যাস পালন করেন। কেউ কেউ আবার শিব-পার্বতী সেজে হাতে ‘ভিক্ষাপাত্র’ নিয়ে বের হন।কিছু অঞ্চলে চরকের মেলাও বসে যা চলে পয়লা বৈশাখ অবধি|

এই চরক স্থান বিশেষে কোথাও নীল পুজো কোথাও গম্ভীরা কোথাও গাজন উৎসব , তবে উদ্দেশ্য একই শিবকে তুষ্ট করা ও তার আশীর্বাদ নিয়ে নতুন বছর শুরু করা|আপনাদের সবাইকে জানাই চরক উৎসবের অনেক শুভেচ্ছা ও আগাম শুভনববর্ষ|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ| 

মন্দির রহস্য – ঘুমন্ত শিব

আজ চৈত্র মাসের শেষ সোমবার , গঙ্গার পবিত্র ঘাট গুলিতে চলছে পবিত্র স্নান , দেবাদিদেব মহাদেবকে ডাকার তার কৃপা লাভ করার এটাইতো শ্রেষ্ঠ সময়|আজ পুন্য তিথীতে, মন্দির রহস্য পর্বে আলোচনা করবো একটি অদ্ভুত শিব মন্দির নিয়ে যেখানে কয়েকশো বছর ধরে ঘুমিয়ে রয়েছেন মহাদেব|

বর্ধমানের ইটাচুনা রাজবাড়িতে অধিষ্ঠিত শিব ঠাকুরকে নিয়ে আছে এক রহস্য, শিব মূর্তি আছে, অর্থবল, লোকবল সবই আছে, তবু গত দেশড় বড়র ধরে ঘুমিয়ে শিব ঠাকুর, মন্দিরে তাঁর পুজি হয় না। কিন্তু কেনো?

প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে , ১৮৭১ সালে তদানিন্তন ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে গিরিডি অঞ্চলে রেল লাইন বসাবার কন্ট্রাক্ট পান পরিবারের কর্তা বিজয় নারায়ণ কুণ্ডু। সেখানে কাজ করতে গিয়ে গিরিডির জঙ্গলে এক অদ্ভূত শিব মূর্তির খোঁজ পান তিনি। মূর্তিটির প্রচলিত শিব মূর্তির মত নয়, অভিনব, ঠিক যেন দাওয়ায় বসে আছেন দেবাদিদেব মহাদেব।মূর্তিটি এনে তিনি স্থাপন করেন নিজ গৃহে|

পুজো শুরু হয়, এরপরই ঘটে কিছু অলৌকিক ঘটনা, শিব মূর্তি স্থাপনের পরই মারা যান পরিবারের এক সদস্য।তারপর ক্রমাগত বাধা আসতে থাকে বিভিন্ন কাজে। এইভাবে বন্ধ হয়ে যায় শিবপুজো।

কেনো এমনটা হয়েছিলো তা নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে|অনেকেই মনে করেন শাস্ত্র মতে মা দূর্গা বা মা কালি ছাড়া শিব মূর্তির পুজো হয় না। আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, যদিও বা হয় তবে শুধু শিব লিঙ্গের পুজো হতে পারে, একা শিব মূর্তির পুজো হয় না, তাতে মঙ্গলের পরিবর্ধে নেমে আসে ঘোর অমঙ্গল এবং টাই হয়েছিলো এই পরিবারে|

আজ সবাই ভক্তি ভরে মহাদেব কে ডাকুন , তিনি তুষ্ট হলে আপনারা মনোস্কামনা নিশ্চই পূরণ হবে|যারা এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকার নেয়ার কথা ভাবছেন যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|