ভক্তের ভগবান : তিরুপতি বালাজি এবং অনন্ত আচার্য্য

120

ভক্তের ভগবান

 

তিরুপতি বালাজি এবং অনন্ত আচার্য্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ভগবান বহুবার বহু অবতারে, ভিন্ন ভিন্ন রূপে ভক্তের উদ্ধারের জন্য পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন

মনে করা হয় কলিযুগের দুঃখ ও যন্ত্রণা থেকে মানব সমাজকে মুক্ত করতে ভগবান বিষ্ণু তিরুমালায় ‘ভেক্টেশ্বর’ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন।

তিরুপতি মন্দিরের আরাধ্য দেবতা ভেঙ্কটেশ্বর। তাকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার রূপেই দেখা হয়।

আজকের পর্বে আপনাদের তিরুপতি বালাজির এক অদ্ভুত লীলার কথা লিখবো।

 

একবার তিরুপতি মন্দিরে বালাজি দর্শনে এসেছিলেন পরম বৈষ্ণব এবং বালাজির

ভক্ত অন্তত আচার্য্য এবং তার স্ত্রীর। প্রচন্ড গরমে বালাজির কষ্ট ভক্তের মনকে দুঃখ দিয়েছিলো। তিনি বুঝলেন এই রুক্ষ পাহাড়ি অঞ্চলে আদ্রতা এবং গরমের জন্য বালাজির কষ্ট হচ্ছে। কিছু একটা করা দরকার। তিনি ঠিক করলেন এই মন্দির পরিসরে তিনি নিজে হাতে একটি পুকুর খনন করবেন যাতে বালাজির চারপাশ ঠান্ডা থাকে এবং ইচ্ছে হলে তিনি নৌকা বিহার ও করতে পারেন।

 

নিজে হাতে কোদাল চালিয়ে তিনি পুকুর খনন করতে শুরু করলেন এবং স্ত্রীকে আদেশ দিলেন মাটি একটি ঝুড়িতে করে দূরে একটি নিদ্দিষ্ট স্থানে ফেলে আসতে। তার মাটি কাটার সাথে সাথেই তার স্ত্রী ঝুড়ি খালি করে ফিরে আসছিলেন। এতো তাড়াতাড়ি কি করে এ কাজ সম্ভব এটা ভেবে অবাক হয়ে যান অনন্ত আচার্য্য। স্ত্রীকে প্রশ্ন করতে তিনি বললেন একটি চতুর্ভুজ কৃষ্ণ বর্ণের বালক তার হাত থেকে ঝুড়ি নিয়ে নিজেই মাটি অন্য জায়গায় ফেলে আসছে। ভক্ত বুঝলেন এ নিশ্চই স্বয়ং ভগবান বালাজি। তিনি স্ত্রীকে অনুসরণ করে বালাজিকে দেখে ফেললেন।বালাজি বললেন তাদের এই কষ্ট তিনি দেখতে পারছেন না তাই সাহায্য করতে এসেছেন।

 

বালাজির প্রতি তার বাতসল্য ভাব ছিলো। নিজের সখা হিসেবে তিনি বালাজিকে তিরস্কার করে লাঠি উঁচিয়ের বললেন তিনি এটা ঠিক করছেন না। ভক্তের অধিকার ভগবানের সেবা করা। এই অধিকার ভগবানও কেড়ে নিতে পারেনা।বালাজি তার ধমক খেয়ে অন্তর্ধান হলেন।

 

সেই রাতে তিরুপতির রাজাকে বালাজি স্বপ্নে দেখা দিলেন এবং নির্দেশ দিলেন মন্দিরে একটি পুকুর খনন করতে। এক রাতেই রাজা সেই পুকুর খনন করিয়ে ছিলেন।

 

আজও তিরুপতি মন্দিরে ভক্ত অনন্ত আচার্য্যর সেই লাঠি রাখা আছে যা মন্দিরে আগত দর্শণার্থীরা দর্শন করেন।

 

আবার পরের পর্বে ভগবানের এমনই এক দিব্য এবং অলৌকিক লীলা নিয়ে ফিরে আসবো।

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।