Home Blog Page 5

দামোদর মাসের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

দামোদর মাসের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

সনাতন ধর্মে কার্তিক মাস বিষ্ণুর মাস। এই মাস দামোদর মাস রূপে গোটা বিশ্বের সনাতনীরা খুবই নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন।আজ আপনাদের দামোদর মাসের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য শোনাবো।

 

শাস্ত্রে বলা হয় কৃষ্ণ যা পছন্দ করতেন তা যদি এই মাসে করা হয় তাহলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।|দামোদর মাসেই ভীষ্মপঞ্চক ব্রতের কথা বলা হয়। গড়ুরপুরাণে এই ব্রতের কথা বলা হয়েছে। একাদশীর থেকে শুরু হয় এই ব্রতের। তবে কার্তিক মাসের শেষ পাঁচদিন এই ব্রত পালন করলেই হবে।

 

ভীষ্ম যখন শরশয্যায় ছিলেন, তখন তিনি বাসুদেবের কাছে প্রার্থনা করে এই ব্রত পালন করেছিলেন এবং শরশয্যাতেই রাজধর্ম, মোক্ষধর্ম, দানধর্ম ও কীর্তন করেন। পান্ডবরা তখন ভীষ্মের এই কীর্তন শুনেছিল। এমনকী শ্রীকৃষ্ণও তা শুনেছিলেন।আর ভীষ্মের সেই কীর্তন শুনে কৃষ্ণ মনে মনে বলেছিলেন, ‘হে ভীষ্ম, তুমিই ধন্য; কেননা, তুমি আজ আমাদের শ্রেষ্ঠ ধর্ম শ্রবণ করিয়েছো‘।

 

শাস্ত্র মতে কার্তিক মাসে এই ব্রত পালন করলে সব মনবাঞ্ছা পূরণ হয়। যার যেটুকু সাধ্য রয়েছে, সেই মতো আরাধনা করলেই কৃষ্ণ খুশি হন।যাদের বাড়িতে গোপাল রয়েছে তাঁরা একদিন গোপালের প্রিয় পদ রান্না করে নিবেদন করুন। যাঁদের আর্থিক সামর্থ রয়েছে তাঁরা যদি কাউকে নতুন বস্ত্রদান করতে পারেন, তাহলেও মনবাঞ্ছা পূরণ হয়। মন খুলে পুজো করুন। সেই সঙ্গে সবার জন্য কিছু না কিছু ভালো করার চেষ্টা করুন। পাঁচদিন ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানোর কথা বলা হয়েছে। সম্ভব হলে প্রতিদিন একটি করে পদ্ম কৃষ্ণকে নিবেদন করুন।এই কার্তিক মাসে যে কারণে মন্দিরে কিংবা তুলসী তলায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালার কথা হয়। এছাড়াও বলা হয় এই মাসে সাত্ত্বিক আহার করতে হয়।

শিম, কলমী শাক, বরবটি, বেগুন, পটল ইত্যাদি বর্জন করতে পারলে ভালো।

 

এই মাসে বাড়িতে কৃষ্ণ, গোপাল বা বিষ্ণুর আরাধনা করুন। ফল, মিষ্টি আর নারকেল নাড়ু দিয়ে কৃষ্ণের পুজো দিন। যে কোনও একদিন সিন্নি প্রসাদও দিতে পারেন।বহু স্থানে কার্তিক মাসের সংক্রান্তিতে হয় গরুর বিশেষ পুজো। বলা হয় এদিন শ্রীকৃষ্ণ নিজে গোয়াল ঘর দেখতে আসেন। যে কারণে এদিন গোয়াল ঘর পরিস্কার করে গোরুর পুজো করা হয়। নিবেদন করা হয় কৃষ্ণের প্রিয় খাবার|এই মাসে নগরকীর্তনের চল এখনও রয়েছে গ্রাম বাংলায়। শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার গান গাইতে গাইতে কার্তিক মাসে সকলকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতেন বৈষ্ণব ভক্তরা । এরপর তাঁরা সারা গ্রাম পরিক্রমা করতেন। সেই গানের মধ্যে দিয়েই বর্ণিত হত কৃষ্ণ মাহাত্ম্য। সব দিক দিয়ে তাৎপর্য পূর্ন ও গুরুত্বপূর্ণ দামোদর মাস

 

দামোদর মাসে শ্রী কৃষ্ণর মহিমা বর্ণন এবং শ্রবনের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। তাই এই মাসের বাকি কয়েকটি দিন কৃষ্ণ কথা নিয়ে লিখবো। ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

ভাইফোঁটার শাস্ত্রীয় এবং পৌরাণিক ব্যাখ্যা

ভাইফোঁটার শাস্ত্রীয় এবং পৌরাণিক ব্যাখ্যা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ ভাই ফোঁটা।আজ আপনাদের জানাবো ভাই ফোঁটার পৌরাণিক ব্যাখ্যা এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা।

 

ভাই ফোঁটা সংক্রান্ত একটি পৌরাণিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় ভাইফোঁটা নিয়ে যেখানে বর্ণনা আছে আজকের তিথিতে যমরাজ গিয়েছিলেন বোন যমুনার সঙ্গে দেখা করতে । যমুনা কপালে তিলক পরিয়ে তার অগ্রজকে বরণ করে নিয়েছিলেন দিনে এবং তার মঙ্গল কামনা করেছিলেন।সেই থেকে সহোদরের মঙ্গলকামনায় পালিত হয়ে আসছে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া।

 

আবার পুরান অনুসারে ধনত্রয়োদশীর পরের দিন চতুর্দশী তিথিতে নরকাসুরকে বধ করলেন কৃষ্ণ। তার পর প্রাগজ্যোতিষপুর থেকে দ্বারকায় ফিরে এলেন এই দ্বিতীয়া তিথিতে। কৃষ্ণকে দেখে তার বোন সুভদ্রার উচ্ছ্বাস বাধা মানল না। তিনি বরাবরই কৃষ্ণের আদরের বোন। এই কয়েকদিন তিনি দাদাকে দেখতে পাননি। তার উপর আবার খবর পেয়েছেন সুভদ্রা যে নরকাসুরের অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন কৃষ্ণ। সেই থেকেই তিনি ভাইয়ের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন।দ্বারকা পৌঁছতেই কৃষ্ণকে তিনি বসালেন আসনে। তাঁর কপালে পরিয়ে দিলেন বিজয়তিলক এবং নানাবিধ মিষ্টান্ন দিয়ে তাকে আপ্যায়ন করলেন। সেই প্রথাই স্বীকৃত হল ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা নামে।

 

পৌরাণিক বা শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা যাই হোক। ভাই ফোঁটার আসল উদ্দেশ্য বোন বা দিদি কতৃক ভাইয়ের মঙ্গল কামনা।

 

আজ প্রত্যেক বোনই তার ভাইয়ের কল্যানে তার কপালে তিলক পড়িয়ে দেন, মিষ্টি মুখ করান, এবং প্রার্থনা করেন যেনো তার ভাইয়ের থেকে দুরে থাকে সব বিপদ|প্রত্যেক বোন ও তার ভাইয়ের সম্পর্ক যেনো সুদৃঢ় হয় এই কামনাই করি। সবাইকে জানাই ভাতৃদ্বিতীয়ার অনেক শুভেচ্ছা|

 

ফিরে আসবো আগামী পর্বে দামোদর মাস নিয়ে বিশেষ ধারাবাহিক আলোচনায়।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

গোবর্ধন পুজোর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য 

গোবর্ধন পুজোর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

চলছে পবিত্র দামোদর মাস। আজ গোবর্ধন পুজো। আমার গৃহ মন্দিরেও শাস্ত্র মতে গোবর্ধন পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে।আসুন আজ জেনে নিই এই উৎসবের এবং গিরিরাজ গোবর্ধনের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

 

শ্রী কৃষ্ণের শৈশবের সাথে জড়িয়ে আছে গিরিরাজ গোবর্ধন পর্বতের কথা যে পর্বত আজও প্রতিটি কৃষ্ণ ভক্তের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। বৃন্দাবনের দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে এটি একটি।

 

পুরাণের কাহিনিতে মতে ভালো বৃষ্টি হয়ে যাতে ফলন ভালো হয়, তার জন্য দেবরাজ ইন্দ্রের পুজো করতেন বৃন্দাবনবাসী।কারন গবাদী পশু পালন এবং কৃষি কাজের জন্য জলের উপর নির্ভর করতে হতো।

 

কিন্তু ইন্দ্রের আরাধনায় গরীব বৃন্দাবনবাসীর বিপুল খরচ হতো। এই বিপুল ব্যয় পছন্দ করেননি শ্রীকৃষ্ণ। তাই তিনি সেই খাবার ইন্দ্রকে না দিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। শ্রীকৃষ্ণের কথা মেনে বৃন্দাবনের অধিবাসীরা ইন্দ্রের পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন দেবরাজ তিনি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে বৃন্দাবনে প্রবল বৃষ্টি নামান।ভারী দুর্যোগ দেখা দেয়।

 

দেবরাজ ইন্দ্রের রোষে বন্যা গোটা বৃন্দাবন প্রায় ভেসে যায়। কৃষ্ণের কারণেই তাঁদের এই বিপদ বলে অভিযোগ করেন বৃন্দাবনবাসী। তারা কৃষ্ণকে সাহায্য করতে বলেন।তখন তাঁদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন কিশোর শ্রীকৃষ্ণ। নিজের কনিষ্ঠ আঙুলের ডগায় বৃন্দাবনের গোবর্ধন পর্বত অনায়াসে তুলে ফেলেন শ্রীকৃষ্ণ।

 

প্রবল বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে তার নীচে আশ্রয় নেয় বৃন্দাবনের সকল মানুষ ও গবাদি পশু। টানা সাত দিন শ্রী কৃষ্ণ আঙুলের ডগায় গোবর্ধন পাহাড় তুলে অটল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।তার এই দিব্য লীলা দেখে বৃন্দাবনবাসীরা ধন্য হয়।

 

অবশেষে দেবরাজ ইন্দ্র নিজের ভুল বুঝতে পেরে সেই প্রবল বৃষ্টি বন্ধ করেন।রক্ষা পায় বৃন্দাবন।আজকের তিথিতে শ্রী কৃষ্ণ গোবর্ধনকে নিজ আঙ্গুলে ধারণ করেন।তাই আজ পালন হয় গোবর্ধন পুজো।

 

সবাইকে গোবর্ধন পুজোর শুভেচ্ছা জানাই।

ফিরে আসবো দামোদর মাস উপলক্ষে শ্রী কৃষ্ণকে নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনায়

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কালী কথা – কৃষ্ণ কালীর পুজো

কালী কথা – কৃষ্ণ কালীর পুজো

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

দীপান্বিতা অমাবস্যায় আমার গৃহ মন্দিরে প্রথা মেনে শ্রী কৃষ্ণকে কালী রূপে সাজিয়ে
পুজো হয়েছে।এই রূপের বিশেষ মাহাত্ম এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা আছে।আজ শ্রী কৃষ্ণের এমন এক লীলার কথা আপনাদের বলবো যেখানে শ্রী কৃষ্ণ স্বয়ং দেবী কালীর রূপ ধরে ছিলেন।

বৃন্দাবনের কুঞ্জবনে কৃষ্ণের বাঁশি শুনে ঘর ছেড়ে রোজ বেরিয়ে যান রাধা। নীরবে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে মিলিত হন কৃষ্ণের সঙ্গে। কেউ কিছু জিগেস করলে বলতেন তিনি কালিন্দী নদীর ধরে শ্যামা মায়ের পুজো করতে যান। প্রসঙ্গত বলে রাখি এই শ্যামা মা অর্থাৎ দেবী কালী রাধার স্বামী আয়ানের পরিবারের ইষ্ট দেবী। তাই তারাও বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নেন।

কিন্তু একদিন রাধার দুই সহচরি জটিলা কুটিলা
আসল কথাটা তুলে দিল রাধার স্বামী আয়ানের কানে। ক্রুদ্ধ আয়ান রাধাকে হাতেনাতে ধরতে চাইলেন। তিনি তক্কে তক্কে থাকলেন সেদিন রাধা বেরোলেই তিনি তাঁর পিছু নেবেন। হলো ও তাই।

কিন্তু ভগবান কৃষ্ণ সর্ব জ্ঞানী। তার কাছে আয়ানের এই আগমন বার্তা গোপন রইল না। তিনি সেদিন রাধা আসতেই তাঁকে বললেন, যা বলছি করো, তুমি দ্রুত আমাকে লতাপাতা ফুল-ফল দিয়ে সাজিয়ে দাও। আর আমার পায়ের কাছে ভক্তের মতো বিনীত ভাবে বসে থাকো।

আশ্চর্য হলেও রাধা প্রশ্ন না করে কৃষ্ণর কথা মতো দ্রুত সবটা করলেন।তারপর চোখের পলকে শ্যাম পরিবর্তিত হলেন শ্যামায়।তার নিজের দ্বিভুজ দেহ একেবারে চতুর্ভুজ রূপ হয়ে গেল। তার উন্মুক্ত কেশ রাশি দুলতে আরম্ভ করলো । তাঁর গলায় থাকা পদ্মের মালা খানি নৃমুণ্ড মালার রূপ নিলো।বাঁশি হল অসি এবং কপালের তিলক চন্দ্র রূপে শোভা পাচ্ছিলো।তিনি কৃষ্ণ থেকে কালীতে সম্পূর্ণ ভাবে রূপান্তরিত হয়েছেন।

আয়ান এসে দেখলেন ঘন বনের মধ্যে এসে তাঁর বউ রাধা তাঁরই ইষ্টের আরাধনা করছেন! তাঁর মনটা আনন্দে ভরে গেল। তিনি রাধার আচরণে খুশিই হলেন এবং নিজের ইষ্ট দেবী শ্যামাকে দর্শন
করে ধন্য হলেন।সেই দিনের এই রুপই
শাস্ত্রে উল্লেখিত কৃষ্ণ কালী রুপ।

সনাতন ধর্মে বৈষ্ণব এবং শাক্ত দুই দর্শনের মধ্যে বিরোধ বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে।
বৈষ্ণবরা একমাত্র কৃষ্ণের উপাসনায় বিশ্বাস করেন
অন্য দিকে শাক্তরা কালী সাধনা বা শক্তি সাধনা নিয়ে থাকেন।এই বিশেষ কালী রূপ বৈষ্ণব এবং শাক্ত দর্শনের অপূর্ব সমম্মিলিত রূপ।এই কৃষ্ণ কালী রূপ প্রমান করে দেয় যে যিনি কৃষ্ণ তিনিই কালী ভক্তের কাছে তিনি ভক্তের সাধনা অনুযায়ী ধরা দেন মাত্র।

সবাইকে জানাই দীপাবলীর শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আজ এই পর্ব এখানেই শেষ করছি। আবার ফিরে আসবো পরবর্তী পর্ব নিয়ে।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

শুভ দীপাবলীর শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

শুভ দীপাবলীর শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আজ দীপাবলী। হিন্দি বলয়ে দিওয়ালি। বাংলায় কালী পুজো এবং জ্যোতিষ বা তন্ত্র জগতে দীপান্বিতা। একই তিথি নানা ভাবে উদযাপিত এবং তাদের ব্যাখ্যাও আলাদা আলাদা।

আজ চোদ্দ বছর বনবাসে কাটিয়ে অযোধ্যা ফিরেছিলেন রাম৷ তাই রামচন্দ্রের পথ আলোকিত করতে গোটা দেশ সেজে উঠেছিল আলোয়৷এখানে দীপের সাথে এই উৎসবের অন্য সম্পর্ক।

আবার বাংলায় আজ কালী সাধনার দিন, কারন আজ দীপান্বিতা অমাবস্যা, মা কালী শাস্ত্রমতে শক্তির উপাসকদের দেবী। তার অপর নাম শ্যামা বা আদ্যাশক্তি। তন্ত্রশাস্ত্র মতে, তিনি দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত। তন্ত্রমতে পূজিত প্রধান ১০ জন দেবীর মধ্যে প্রথম দেবী কালী। শাক্তরা কালীকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ মনে করেন।

দীপাবলী ও কালী পুজো দুই আসলে অশুভ শক্তির উপর শুভ শক্তির জয় লাভের প্রতীক, রাম যেমন অশুভ শক্তির প্রতিনিধি রাবনকে হারিয়ে ছিলেন তেমনই দেবী কালী অসুর বধ করে সৃষ্টি রক্ষা করেছিলেন|

আজ এই অমাবস্যা তিথি তন্ত্র সাধনার দিন এই তন্ত্র ও মূলত ব্যবহার হয় অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে, এই অশুভ শক্তি বিশ্বব্যাপি হতে পারে, আমার আপনার জীবন কেন্দ্রিক হতে পারে, বাস্তু সম্পর্কিত ও হতে পারে|

সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় এই উৎসবের আমেজ।
সমগ্র ভারত বর্ষের কাছের আজ আনন্দের দিন।
আজ উৎসবের দিন। আলোর উৎসব।

সবাইকে দীপাবলীর অসংখ্য শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন|ফিরে আসবো আগামী আরো অনেক আধ্যাত্মিক এবং পৌরাণিক বিষয় সংক্রান্ত ধারাবাহিক লেখা নিয়ে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কালী কথা – বিদ্যাসুন্দর কালী 

কালী কথা – বিদ্যাসুন্দর কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

কালী কথায় আজ লিখবো বর্ধমানের প্রসিদ্ধ এবং প্রাচীন বিদ্যাসুন্দর কালী মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে|

 

বর্ধমানের বিদ্যাসুন্দর কালীপুজোর পেছনে জড়িয়ে রয়েছে এক অলৌকিক ঘটনা যা অনেকটা সাহিত্য বা চলচ্চিত্রর কাহিনীর মতো শোনায়।আসুন প্রথমে জেনে নিই কি সেই ঘটনা।

 

তখন বর্ধমানের মহারাজা তেজচাঁদের আমল । রাজার এক কন্যা ছিল, নাম বিদ্যা ৷ আর রাজবাড়ির পুজারি ছিলেন সুন্দর নামে এক যুবক। সুন্দরের আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল ছিল না । রাজবাড়িতে ফুল দিতে আসত মালিনী মাসি নামে জনৈক ভদ্র মহিলা|তিনি প্রতিদিন রাজ পরিবারের ঠাকুর বাড়িতে ফুলের মালা দিতেন। যথারীতি একদিন মালিনী মাসি মন্দিরে ফুলের মালা নিয়ে এসেছেন । সেই মালা দেখে পুজারি সুন্দর খুব আকৃষ্ট হন । তিনি মালিনী মাসিকে জিজ্ঞাসা করেন, এত সুন্দর ফুলের মালা কে গেঁথেছে। যে মালা গেঁথেছে তাকে দেখতে চায় সুন্দর । মালিনী মাসি তাকে বলে, রাজকুমারী বিদ্যা মালা গেঁথেছে কিন্তু তাকে দেখা সম্ভব নয়।ঘটনা চক্রে পরবর্তীকালে বিদ্যার সঙ্গে সুন্দরের পরিচয় হয় । তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এমনকী তারা নাকি মন্দিরের পাশ থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত একটা সুড়ঙ্গ বানিয়ে তার ভিতর দিয়ে একে-অপরের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে যেত।

 

একদিন এক গুপ্ত চরের মাধ্যমে তেজচাঁদ বিদ্যা ও সুন্দরের প্রণয়ের ব্যাপারে জেনে ফেলেন । খবরটা কানে যেতেই রাজা প্রচণ্ড রেগে যান । তিনি বিদ্যা এবং সুন্দরকে কালীর সামনে বলি দেওয়ার আদেশ দেন ৷সেই সময়ে দামোদর তীরবর্তী গভীর জঙ্গলে ছিলো এক কালী মন্দির। ওই কালী মন্দিরে কেউ সচরাচর যেতেন না। জনশ্রুতি আছে যারা অন্যায় অত্যাচার করত, তাদের এই মন্দিরে দেবীর সামনে হাঁড়িকাঠে নরবলি দেওয়া হত । তাই সেই সময় এই কালী দক্ষিণ মশান কালী নামে পরিচিত ছিল ।রাজার হুকুম মতো তাদেরকে বলি দিতে নিয়ে যাওয়া হয় সেই মন্দিরে|বলি দেওয়ার আগের মুহূর্তে বিদ্যা ও সুন্দর সেই মন্দিরের কাপালিকের কাছে অনুরোধ জানায়, মৃত্যুর আগে তারা দেবীকে প্রণাম করে আসতে চায় । কাপালিক সেই অনুমতি দেন । প্রণাম করতে যাওয়ার সময় কাপালিক অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান । তারপরেই বিদ্যা ও সুন্দর নাকি কোথায় যেন মিলিয়ে যায় । এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি । সেই সময় থেকেই মন্দিরের নামকরণ হয় বিদ্যাসুন্দর কালী মন্দির । তার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় নরবলি প্রথা।

 

বর্তমানে এখানে দেবীর মন্দির ছাড়াও দুটো শিব মন্দির আছে যা ভৈরব এবং পঞ্চানন্দ নামে পরিচিত। নরবলি বন্ধের পরে মন্দিরে মেষ বলি ও পরে ভেড়া বলি দেওয়া হত । এখন ছাগল বলি দেওয়া হয়।কালী পুজো ছাড়াও প্রতিটি বিশেষ তিথিতে তন্ত্র মতে বিশেষপুজোর আয়োজন হয়।

 

এমন বহু অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী রয়েছে

বাংলার বহু প্রাচীন কালী মন্দির। সেই সব ইতিহাস নিয়ে চলতে থাকবে ধারাবাহিক কালী কথা।

ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

ধনতেরাসের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

ধনতেরাসের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ধনতেরাস উপলক্ষে আজকের এই বিশেষ পর্বে জানবো এই উৎসবের সাথে জড়িত এক অদ্ভুত পৌরাণিক ঘটনা এবং এই উৎসবের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য।

 

দীপাবলী মূলত পাঁচ দিনের উত্সব। এর আর এক নাম আছে— ধনাত্রয়োদশী বা ধনবত্রী ত্রয়োদশী। ‘ধন’ শব্দের মানে সম্পত্তি। ত্রয়োদশী শব্দের অর্থ হিন্দু ক্যালেন্ডারের ১৩ তম দিন। দীপাবলীর সময় লক্ষ্মীপুজোর দিন দুই আগে ধনতেরাস হয়। বলা হয়, ধনতেরাসের দিন দেবী লক্ষ্মী তার ভক্তদের গৃহে যান ও তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করেন। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে এই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা এ দিন দামি ধাতু কেনেন। সম্পদের দেবতা কুবেরও এ দিন পূজিত হন|

 

প্রাচীন কালে ভারতবর্ষে এক রাজা ছিলেন, তার নাম ছিলো রাজা হিমা, রাজা হিমার ষোলো বছরের ছেলের এক অভিশাপ ছিল। তার কোষ্টিতে লেখা ছিল, বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হবে। তার স্ত্রীও জানত সেই কথা। তাই সেই অভিশপ্ত দিনে সে তার স্বামীকে সে দিন ঘুমোতে দেয়নি। শোয়ার ঘরের বাইরে সে সমস্ত গয়না ও সোনা-রূপার মুদ্রা জড়ো করে রাখে। সেই সঙ্গে সারা ঘরে বাতি জ্বালিয়ে দেয়। স্বামীকে জাগিয়ে রাখতে সে সারারাত তাকে গল্প শোনায়, গান শোনায়। পরের দিন যখন মৃত্যুর দেবতা যম তাদের ঘরের দরজায় আসে, আলো আর গয়নার জৌলুসে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোয়ার ঘর পর্যন্ত তিনি পৌঁছন ঠিকই। কিন্তু সোনার উপর বসে গল্প আর গান শুনেই তাঁর সময় কেটে যায়। সকালে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যান তিনি। রাজপুত্রের প্রাণ বেঁচে যায়। পরদিন সেই আনন্দে ধনতেরাস পালন শুরু হয়।

 

ধনতেরাস একসময় মূলত অবাঙালিদের মধ্যে প্রচলিত থাকলেও এখন বাঙালিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এই উৎসব।

 

ভারতে ধনতেরাস উত্সব উদযাপিত হয় সোনা, রুপো বা বাসন কিনে। একে সৌভাগ্যের লক্ষণ বলা হয়। নতুন জামাকাপড়ও এ সময় কেনে মানুষ। এরপর করা হয় লক্ষ্মী পুজো। চারিদিকে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবীর আরাধনা করা হয়। পুজো হয় গণেশেরও।যেকোনো শুভ কাজের জন্যই এই তিথি শুভ।

 

সবাইকে জানাই ধনতেরাসের অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। ফিরে আসবো দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে বিশেষ পর্ব নিয়ে।

পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কালীকথা – মন্দিরবসিনী কালী

কালীকথা – মন্দিরবসিনী কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজকের কালী পর্বে আপনাদের প্রাচীন কালী মন্দির মন্দিরবাসীনি কালী মায়ের মন্দির

প্রসঙ্গে জানাবো।দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের ফিকাহার এলাকায় রয়েছে ছয়শো বছরের প্রাচীন এই মন্দির।

 

এই কালী মাকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এক মহিলা তান্ত্রিক। লোকশ্রুতি রয়েছে, এই মহিলা তান্ত্রিক কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাঁর কিশোরী কন্যাকে জীবন্ত কবর দেন এবং তার ওপরই গড়ে তোলেন এই কালী মায়ের মূর্তি। এখানে বসেই তান্ত্রিক তাঁর তন্ত্রসাধনা করতেন। তান্ত্রিকের মৃত্যুর পর এরপর দক্ষিণ দিনাজপুরের এক জমিদার তান্ত্রিকের তন্ত্র সাধনার জায়গাতেই এই মন্দির গড়ে তোলেন। যা ছয়শো বছেরেরও পুরনো।হার হিম করা এই তন্ত্র সাধনার উপখ্যান আজও এই অঞ্চলের মানুষ সত্যি বলেই মানেন।

 

বিশেষ কিছু রীতি আছে এই মন্দিরে এই মা কালী হলেন অসূর্যস্পর্শা যার অর্থ সূর্যের আলো দেখেননা তিনি। মন্দিরেই বাস এই দেবীর তাই এই দেবীকে মন্দিরবাসীনি দেবী হিসাবে ডাকা হয়।

আজও তার উপস্থিতি ভক্তরা উপলব্ধি করেন।

 

নিয়ম করে প্রতি বছর কালীপুজোর দিন সূর্যাস্তের পরে কালীর মূর্তি তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে চক্ষু দান সহ মূর্তি তৈরি করে একরাতের মধ্যে পুজো সম্পন্ন করা হয় এবং সূর্যোদয়ের আগেই মাকে বিসর্জন দেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রথাই চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। শাক্তমতে পুজো হয় তাই বলি দেওয়ার প্রচলন রয়েছে এই কালী পুজোয়।

 

বর্তমানে মন্দিরের অবস্থা প্রায় ভগ্নাশেষ। এই পুজোতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, এখানে মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ।যা বাংলার আর কোনো কালী মন্দিরে লক্ষ্য করা যায়না।পুজোর কাজ থেকে শুরু করে সবকিছু পুরুষরাই করে থাকেন।

 

মনে করা হয় যদি দেবী সূর্যের আলো দেখে ফেলেন তাতে গ্রামের অকল্যাণ হতে পারে।সব নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করে দেবী মন্দির বসিনীর পুজো হয়।

 

বাংলার প্রাচীন কালী পুজোগুলি নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা চলতে থাকবে। ফিরে আসবো কালী কথার পরবর্তী পর্বে।পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

 

.

কালী কথা – বীরভূমের বামা কালী

কালী কথা – বীরভূমের বামা কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বীরভূমের ইন্দ্রগাছা গ্রামের বামা কালীর পুজো আলাদা ঐতিহ্য বহন করে। এখানকার কালী পুজোর এক সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে অনেক জনশ্রুতি। সেসব নিয়েই আজকের কালী কথা।

 

এই গ্রামে বাস করতেন এক মাতৃ সাধক, নাম

রাম কানাই।কথিত আছে গভীর জঙ্গলে সাধনা করতে গিয়ে মা কালীর সাক্ষাৎ পান সাধক রামকানাই। মায়ের সাক্ষাৎ সেই রূপ তিনি একটি থালায় এঁকে নেন। জীবন্ত মায়ের সেই রূপের ছবি দেখে বানানো হয় মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি যা পরবর্তীতে মূর্তি বানিয়ে মন্দিরে স্থাপন করে শুরু হয় পুজো।

 

এই মন্দিরের প্রধান দুটি আকর্ষণ হলো সাধক রাম কানাইয়ের লেখা দুর্বধ্য ভাষায় লেখা একটি প্রাচীন পুঁথি যে পুঁথিতে আছে অনেক প্রাচীন উপাচার এবং পূজা পদ্ধতি এবং সেই থালা যে থালায় মায়ের জীবন্ত রূপ দেখে ছবি এঁকেছিলেন।

 

বাংলায় সাধারণ দেবী কালীর দুই রূপ বেশি

পুজো করা হয়। দক্ষিনা কালী এবং বামা কালী।

রামকানাই দ্বারা স্থাপিত কালী বামা কালী।

দীপান্বিতা অমাবস্যা বা দীপাবলী এই মন্দিরের প্রধান উৎসব। ইন্দ্রগাছার এই বামাকালী প্রায় পাঁচশো বছর ধরে পুজিত হয়ে চলেছে। প্রায় তেরো ফুটের এই বামকালীর গায়ের রং ও চক্ষুদান করা হয় পুজোর দিনেই প্রাচীন প্রথা মেনে। গায়ের রং করা হয় কাঠে আগুন জ্বালিয়ে তৈরি ভুসোকালি থেকে। আজও এই ক্ষেত্রে কৃত্তিম উপায়ে তৈরী রঙ ব্যাবহার হয়না।

 

প্রতি বছর কালী পুজোর দিন মধ্যরাতে মূর্তিকে চল্লিশ ফুট বড় লাল কাঠের ওপর চাপিয়ে কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় মূল মন্দিরে। পুজোর পর ভাইফোঁটার দিন বিসর্জন হয়।বিগত প্রায় পাঁচশো বছরে এই পুজোর রীতি নীতি পরিবর্তন হয়নি।

 

আজও এই পুজো দেখতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ।বামা কালীর প্রতি তাদের অগাধ বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা রয়েছে।

 

আগামী দিনে আবার ফিরে আসবো কালী কথা নিয়ে। দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে চলতে

থাকবে কালী কথা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

কালী কথা – রিষড়ার সিদ্ধেশ্বরী কালী

কালী কথা – রিষড়ার সিদ্ধেশ্বরী কালী

কালী কথা – রিষড়ার সিদ্ধেশ্বরী কালী

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

গঙ্গার দুই তীরজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে যে হাজারও কালী মন্দির তারমধ্যে রিষড়ার সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির অন্যতম।সাধক জটাধর পাকড়াশী কর্তৃক কালী মন্দিরে মাকে ঠাকরানী নামেও ডাকা হয়। আজ কালী কথায় এই মমদিরের কথা জানাবো।

তন্ত্র সাধক জটাধর পাকড়াশী নামে এক তান্ত্রিক হুগলী জেলার রিষড়ার সাধনা করতেন। একদিন তিনি স্বপ্নাদেশ পান। বর্তমান মন্দিরের বাম পাশে এক দীঘিতে একটি ভাসমান ঘট দেখতে পান। ঘটটিকে জল থেকে তুললেন। তারপর গোলপাতা দিয়ে মন্দির তৈরি করলেন। স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী মায়ের কৃষ্ণবর্ণের দ্বিভুজা মূর্তি তৈরি করে নিত্য পুজো শুরু করেন।

পরবর্তীতে তিনি সিদ্ধেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন
জায়গাটি ব্রহ্মোত্তোর জমি হিসেবে পান
সেখানেই থাকতে আরম্ভ করেন জটাধর পাকড়াশী। তৈরি হয় মন্দির।

সিদ্ধেশ্বরী রূপ মায়ের শান্ত স্নিগ্ধ রূপ।
মায়ের লোল জিভ থাকে না।
অর্থাৎ তিনি জিভ বের করে থাকেন না।
কালীর গলায় নর মুণ্ডমালা থাকে। সিদ্ধেশ্বরী মায়ের গলায় মুণ্ডমালা নেই। আদপে মা কৃষ্ণকালীর আরেক রূপ।

মাতৃমূর্তির উচ্চতা ছয়।ফুট তবে আর মৃন্ময়ী নয়, দেবী কালিকা এখন মর্মর মূর্তিতে বিরাজিতা। পাশেই রয়েছে মায়ের ভৈরব শিবের মন্দির। দেবী কালিকার পদতলে শিব থাকেন না, একপাশে শায়িত থাকেন।সিদ্ধেশ্বরী দ্বিভুজা, দেবীর ডান হাতে রয়েছে খড়্গ ও বাম হাতে নরমুণ্ড। এখন নবরত্ন মন্দিরে মায়ের নিত্য পুজো হয় দু’বেলা।

প্রাচীন কিছু গ্রন্থে রিষড়ার অধিষ্ঠাত্রী দেবী রূপে শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী বিরাজ করছেন রিষড়াবাসীদের বিশ্বাস মা সিদ্ধেশ্বরী তাঁদের আগলে রেখেছেন সব বিপদ আপদ থেকে।

ফিরে আসবো আগামী পর্বে আবার কালী কথা নিয়ে। থাকবে অন্য এক কালী মন্দিরের কথা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।