Home Blog Page 108

কলকাতার কালী -ঢাকা কালী বাড়ি

সামনেই দূর্গা পূজা তারপর দীপাবলি|সারা দেশ মেতে উঠবে আলোর উৎসবে আর গোটা বাংলা জুড়ে হবে কালী পূজা|আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরেও বিশেষ পূজা, হোম যজ্ঞ এবং মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের ব্যবস্থা করা হয়েছে|এই দীপান্বিতা অমাবস্যার ঠিক আগে আমি নিয়ে এসেছি কলকাতার কালীর একটি নতুন পর্ব|আজকের পর্বে কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ কালী মন্দির ঢাকা কালী বাড়ি নিয়ে লিখবো|

দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শা রোডে অবস্থিত এই প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরটি যার সাথে জড়িত প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নাম|ঢাকা শহরের নাম থেকেই ঢাকা কালীবাড়ির নামকরণ|

দেশ ভাগের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ঢাকা শহর থেকে কলকাতায় আসেন ননীগোপাল চক্রবর্তী এবং এখানে এসে তিনি এই কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন| সময় টা 1956 সাল|ঢাকা থেকে আসা একজন ব্যক্তির হাতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঢাকা কালীবাড়ি নামে প্রসিদ্ধ হয় এই মন্দির|

আনুষ্ঠানিক ভাবে মন্দির নির্মাণ হওয়ার আগে এখানে রক্ষাকালীর পূজা হতো বলে শোনা যায় এবং মন্দির প্রতিষ্ঠার পর এখানে দক্ষিনা কালীর পুজোও শুরু হয়|এখন রক্ষাকালী পুজো ও নিত্য পুজো দুইই হয় নিষ্ঠা সহকারে|

ঢাকা কালী বাড়িতে পুজো হয় মূলত বৈদিক নিয়মে তাই বলী প্রথার প্রচলন নেই|বিশেষ তিথিতে বিশেষ পূজা হয় তাছাড়া প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ শনিবার প্রতিষ্ঠা দিবসের পুজো হয়|ঢাকা কালীবাড়ি তে মায়ের ভোগ হিসাবে অন্নভোগের পাশাপাশি দেওয়া হয়, নিরামীষ তরকারি, পাঁচ রকমের ভাজা, পায়েস, চাটনি এবং দু রকমের মাছের পদে|

মায়ের পুজো ছাড়াও মন্দির কতৃপক্ষ বিভিন্ন সামাজিক কাজেও অংশগ্রহণ করে থাকে নিয়মিত|

আজকের কলকাতার কালীর এই পর্ব এখানেই শেষ করলাম|আগামী পর্বে ফিরবো নতুন পর্ব নিয়ে|জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|মনে রাখবেন যেকোনো কাজে সাফল্যর সঠিক সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ|এই সময় কে কাজে লাগান|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

দেবী অন্নপূর্ণা

দীর্ঘ দিন ধরে দেবী আদ্যা শক্তির বিভিন্ন রূপ এবং শক্তি পীঠ নিয়ে আমি বহু আধ্যাত্মিক লেখা লিখছি ধারাবাহিক ভাবে যা ইতিমধ্যে পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত হয়েছে|সামনেই নব রাত্রি দূর্গা,পূজা এবং দীপাবলি|এই বিশেষ সময়ে আজ আমি আপনাদের জন্য একটি বিশেষ পর্ব নিয়ে উপস্থিত আজ দেবীর একটি বিশেষ রূপ অন্নপূর্ণাকে নিয়ে লিখবো|জানবো তার স্বরূপ, তার উৎপত্তির রহস্য ও পৌরাণিক ব্যাখ্যা এবং বাংলার অন্নপূর্ণা পূজার প্রচলনের প্রাচীন ইতিহাস|

অন্নপূর্ণা দেবী দুর্গারই একটি রূপ|দেবী মূলত দ্বিভূজা তার বামহাতে সোনার অন্নপাত্র এবং ডান হাতে চামচ তিনি ক্ষুধার্ত মহাদেবকে অন্নদান করছেন|দেবীর মাথায় বিরাজিত অর্ধচন্দ্র|মনে করা হয় চৈত্র শুক্লাষ্টমীতিথি হলো দেবীর আবির্ভাব তিথি এই তিথি তেই মূলত তন্ত্র মতে দেবীর পুজো অনুষ্ঠিত হয় সর্বত্র| 

মার্কেণ্ডেয় পুরাণের কাশীখণ্ড দেবীভাগবত পুরান অনুসারে দেবী অন্নপূর্ণার উৎপত্তি জড়িত কাশী প্রতিষ্ঠার সূচনাকালের সাথে|কথিত আছে একবার যোগিরাজ শিব ভিক্ষুক বেশে ভিক্ষা করতে করতে কাশী তে এলেন এবং ক্ষুদার্থ অবস্থায় অন্নপুর্ণার হাত থেকে অন্ন খেয়ে পরিতৃপ্ত হলেন|তারপর পরিতৃপ্ত শিব স্বয়ং নিজের উদ্যোগে কাশীতে অন্নপূর্ণা মন্দির প্রতিষ্ঠা করলেন|চৈত্র শুক্লাষ্টমীতিথিতে কাশীতে শুরু হয় দেবী অন্নপূর্ণার পূজা|ক্রমেই অন্নপূর্ণার মাহাত্ম ও তার পূজা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র|আজ কাশীর অন্নপূর্ণা মন্দির জগৎ বিখ্যাত|

কাশীতে সৃষ্টি হলেও দেবী অন্নপূর্ণার সাথে বাংলার সম্পর্ক অতি প্রাচীন ও গভীর বিখ্যাত তন্ত্রসার গ্রন্থে অন্নপূর্ণা পুজোর বিশদ বিবরণ রয়েছে দেবীর মাহাত্ম্যগাথা নিয়ে পরবর্তীতে রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রায় রচনা করেছিলেন তার বিখ্যাত অন্নদামঙ্গল গ্রন্থ|বাংলায় অন্নপুর্ণা শস্যদেবী|বহু প্রাচীন কাল থেকেই বাংলায় নবান্ন উৎসবের সময় এই অন্নপূর্ণার পুজো হয়ে আসছে|আজও গ্রাম বাংলায় প্রথা মেনে ফসল তোলার পরই দেবীর হাতে ধানের পাকা শিষের গুচ্ছো দিয়ে পুজো হয়|এই প্রথা কাশীতেও আছে|

কিছু পুরান বিশেষজ্ঞ ও শাস্ত্রজ্ঞর মতে দেবীর অন্নপূর্ণা আসলে বাংলার লৌকিক দেবী তবে ঐতিহাসিক ভাবে অন্নপূর্ণার পুজো বঙ্গদেশে প্রচলন করেছিলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পূর্বসুরী ভবানন্দ মজুমদার এবং পরবর্তীতে মহারাজ কৃষ্ণ চন্দ্রের চেষ্টায় দেবী অন্নপূর্ণার পূজা অনেক বেশি জনপ্রিয়তা ও প্রসার লাভ করে|
এই দেবীর পূজা বাংলা তথা কোলকাতার বহু বনেদি ও জমিদার পরিবারেও শুরু হয় যার মধ্যে রানী রাসমণির পরিবার ও শেওড়াফুলি রাজবাড়ী অন্যতম|

সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মের মানুষ অন্তর থেকে বিশ্বাস করে নিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে দেবী অন্নপূর্ণার পূজা করলে কোনোদিনও অন্নাভাব হয় না|

আজকের বিশেষ পর্ব এখানেই শেষ করছি| অনেকেই ইতিমধ্যে যোগাযোগ করছেন আসন্ন এই গুরুত্বপূর্ণ তিথিতে জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের জন্যে|সবাইকে জানিয়ে রাখি তিথি নক্ষত্র মেনে এবারও হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরে শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খন্ডন হবে|এই গুরুত্বপূর্ণ সময় কে যারা কাজে লাগাতে চান অবশ্যই উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করে আমার সাথে সরাসরি কথা বলুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

কলকাতার কালী- আদ্যাপীঠ

আসন্ন নবরাত্রি ও দূর্গা পূজা এবং তারপরবর্তী তে দীপাবলি বা দীপান্বিতা অমাবস্যা মিলিয়ে সময় টা আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে বেশ তাৎপর্য পূর্ণ|শক্তি আরাধনায় মেতে উঠবে গোটা দেশ|জ্যোতিষ ও তন্ত্রের জগতেও এই সময় বিশেষ তাৎপর্য পূর্ণ|আর শক্তি সাধনার ঠিকপ্রাক্কালে আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কলকাতার কালীর একটি বিশেষ পর্ব|আজকের পর্বে আদ্যাপীঠ|

ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের প্ৰিয় শিষ্য অন্নদা ঠাকুর অর্থাৎ অন্নদা চরণ ভট্টাচার্য এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন তার গুরুদেব অর্থাৎ রামকৃষ্ণ দেবের আদেশে|অসংখ্য অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী এই মন্দির ও দেবী আদ্যা শক্তি|বহু প্রচলিত কিংবদন্তী জড়িত এই মন্দির ও মন্দির নির্মাণের সাথে|তার কিছু আজ আপনাদের জন্য লিখবো এই পর্বে|

ঠাকুর তার ভক্ত ও শিষ্য অন্নদা ঠাকুরকে নির্দেশ দিয়ে ছিলেন কলকাতার একটি দীঘি থেকে দেবী মূর্তি উদ্ধার করে নিয়ে এসে দক্ষিনেশ্বর এর অদূরে আরিয়া দহে এক মন্দির নির্মাণ করতে এবং শর্ত ছিলো বারো বছরের মধ্যে মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে না হলে সর্ব সাধারণের জন্য মন্দিরের দ্বার উন্মুক্ত থাকবেনা|অন্নদা ঠাকুর আদেশ পালন করে ছিলেন কিন্তু বারো বছরের জায়গায় পঁয়ত্রিশ বছর লেগে ছিলো মন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে|তাই আজও সর্ব সাধারণের জন্য মুল মন্দিরের দ্বার বন্ধই আছে|

কথিত আছে এক রাম নবমীর রাতে মা আদ্যা শক্তি অন্নদা ঠাকুর কে দর্শন দিয়েছিলেন এবং আদ্যা স্তোত্র পাঠ করে শুনিয়েছিলেন এবং অন্নদা ঠাকুর এই আদ্যা স্তোত্র লিখে রাখেন যা আজও পাঠ করা হয় মন্দিরে|

ঠাকুর রামকৃষ্ণ ও অন্নদা ঠাকুরের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই মন্দির 10 কাটা জমির উপর নির্মিত তবে প্রায় 27 বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে আদ্যাপীট সংঘ|মুল মন্দির প্রায় একশো ফুট উঁচু|সামনে রয়েছে সু দৃশ্য নাট মন্দির|প্রতিদিন দুপুরে ও সন্ধ্যায় মা আদ্যার আরতি হয় এই সময় ছাড়া বন্ধ থাকে মন্দিরের প্রধান দরজা|তবে সর্ব সাধারণ কে দেবীর দর্শন করতে হয় সামনের নাট মন্দির থেকে কারন মুল মন্দিরে সর্ব সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ|মুল মন্দিরে আদ্যা শক্তির অষ্ট ধাতুর মূর্তি রয়েছে এবং তার নিচে রয়েছে রামকৃষ্ণ দেবের মূর্তি|এছাড়াও মন্দিরের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে ছয় টি আটচালা শিব মন্দির|

অন্নদা ঠাকুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে|সংঘের তরফ থেকে সারা বছর অনাথ ছেলে মেয়েদের শিক্ষা দান ও দরিদ্র মানুষের নানাবিধ সেবা দান করা হয় নিয়মিত|

প্রতি বছর আদ্যা নবমী তে মন্দিরে বিশেষ পূজা এবং কালী পূজা উপলক্ষে মহা পূজার আয়োজন করা হয়|প্রতিদিন দেবী কে সাড়ে বাইশ সের চালের অন্ন ভোগ ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবকে সাড়ে বারো সের চালের অন্ন ভোগ দেয়া হয় আদ্যাপিঠে|

আজকের বিশেষ পর্ব এখানেই শেষ করছি|ফিরবো আগামী পর্বে অন্য কোনো কালী মন্দিরের কথা নিয়ে|যারা আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ তিথি তে জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকারের জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করতে চান তাদের জন্য আমার নাম্বারে উল্লেখ করা রইলো| ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

ভারতের সাধক – শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর

আসন্ন নবরাত্রি, দূর্গা পূজা কে কেন্দ্র করে জ্যোতিষ সংক্রান্ত ব্যস্ততা কিঞ্চিৎ বৃদ্ধি পেয়েছে কারন প্রতিটি বিশেষ তিথির ন্যায় এই গুরুত্বপূর্ণ তিথি তেও আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা মায়ের মন্দিরে শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের সু ব্যবস্থা থাকবে|তার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই|তবে শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমার কলম থেমে নেই|আজ উপস্থিত হয়েছি এক মহাপুরুষ এর জীবন কাহিনী নিয়ে|ভারতের সাধকের আজকের পর্বে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর|

অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার সফলাডাঙ্গা গ্রামে 1812 ক্রিস্টাব্দর 11 মার্চ যশোমন্ত ও অন্নপূর্ণা দেবীর গৃহে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন কলি যুগের এই অন্যতম শ্রেষ্ট মহাপুরুষ|তার পরিবার ছিলো নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবার|ফলে শৈশব থেকেই শাস্ত্র পাঠ ও ধর্ম আলোচনার প্রতি তার এক গভীর আগ্রহ ও নিষ্ঠা
বর্তমান ছিলো|যত বয়স বাড়তে লাগলো শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের মধ্যে এক ঐশরিক শক্তির বিকাশ হতে থাকলো|যথাযত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই তিনি একজন জ্ঞানী শাস্ত্রজ্ঞ ও বৈষ্ণব শাস্ত্রে অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন|
মূলত প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন তিনি|

পরবর্তীতে তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতি মতুয়াবাদ রূপে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে|তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রান পুরুষ|সারা জীবন তিনি উৎসর্গ করেন মতুয়া আদর্শের প্রচারে এবং প্রসারে|তিনি মনে করতেন ঈশ্বর প্রাপ্তির জন্য সন্ন্যাস নেয়ার প্রয়োজন নেই অন্তরে শ্রদ্ধা ও ভক্তি থাকলে এবং নিষ্ঠা সহকারে ঈশ্বর চিন্তা করলে গৃহীরও ঈশ্বর লাভ সম্ভব|নানা শ্রেণী ও জাতি তে বিভক্ত হিন্দু সমাজ কে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন মতুয়াবাদের দ্বারা|তৎকালীন হিন্দু সমাজের অসংখ্য নিপিড়িত, দরিদ্র ও তথা কথিত নিম্ন শ্রেণীর মানুষ দের তিনি পরম স্নেহে বুকে টেনে নিয়েছিলেন এবং তাদের সার্বিক উন্নতি সাধনই ছিলো তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য|

আজ দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি মতুয়াদের কাছে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ চাঁদ ঠাকুর কলি যুগের শেষ এবং শ্রীহরি-র পূর্ণ অবতার|যথার্থ অর্থেই তিনি পতিতপাবন|

শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ৫ মার্চ ১৮৭৮ সালে ৬৫ বছর বয়সে মর্তলোক ত্যাগ করেন|তার মহা প্রয়ানের পর তার পুত্র শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর মতুয়া সমাজের উন্নতি সাধনে ব্রতী হন|আজও বংশ পরম্পরার শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরহরিচাঁদ ঠাকুরের সুযোগ্য বংশধরেরা মতুয়া সমাজ কে নেতৃত্ব দান করে চলেছেন|

আজ অসংখ্য মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁরঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধাম একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে|প্রতি বছর চৈত্র মাসে মতুয়া ধামে মতুয়া মহামেলা বসে যাতে অংশগ্রহণ করেন অগুনতি মানুষ| এই সময়ে ভক্তরা কামনা সাগর’-এ ডুব দিয়ে পুণ্যস্নান করেন|এছাড়াও বাংলাদেশে ঠাকুরের জন্ম স্থানে ঠাকুরের জন্ম তিথি উপলক্ষে উৎসব পালন হয় মহা সমারোহে|

আগামী পর্বে নিয়ে আসবো অন্য কোনো মহান সাধকের কথা|আপাতত বিদায় নিচ্ছি|তবে মনে করিয়ে দিই যারা আগামী নবরাত্রি বা দূর্গা পূজা উপলক্ষে জোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকারের কথা ভাবছেন আর দেরি না করে এখনই উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করে আমার সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

কলকাতার কালী – পুঁটে কালী মন্দির

আপনাদের কথা দিয়েছি এক এক করে আরো অনেক গুলি কোলকাতার কালী পর্ব আপনাদের সামনে নিয়ে আসবো|তাই শত ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত কলম ধরতে হয় আপনাদের জন্য|আজ কলকাতার আরেক প্রাচীন কালী মন্দির নিয়ে লিখবো|আজকের পর্বে পুঁটে কালী মন্দির|

কলকাতার ব্যাস্ততম অঞ্চল গুলির অন্যতম বড়ো বাজার অঞ্চলে কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটে অবস্থিত বিখ্যাত পুঁটে কালী মন্দির|এই মন্দিরের ইতিহাস অতি প্রাচীন ও বহু অলৌকিক ঘটনা এবং কিংবদন্তী জড়িত আছে এই মন্দির দেবীর মূর্তির সাথে|

বর্তমান মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেনতান্ত্রিক মানিকচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রথম পাকা মন্দির স্থাপিত হয়েছিল ১৫৫৮ খ্রিষ্টাব্দে|যদিও প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে এই দেবী মূর্তি এখানে আরো আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত ছিলো|

বহু প্রাচীন কালে এই অঞ্চল ছিলো দুর্গম ও অরণ্য সংকুল, সেকালে ডাকাতরাই রাজত্ব করতো এখানে|তখন ডাকাতরা এই মন্দিরে নিয়মিত পূজা করতো এমনকি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে নর বলীও হতো বলে শোনা যায়|পরবর্তীতে তন্ত্র সাধক মানিকরাম বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন|

১৯৩০ সালে মন্দিরের সংস্কার করা হয়মন্দিরটি চারচালা ও তিনটি চূড়াবিশিষ্ট। চূড়াগুলির উপর চক্র, ত্রিশূল ও পতাকার চিহ্ন আছে। মন্দিরটির তলায় একটি পাতালকক্ষ আছে|মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কালীমূর্তিটি ছয় ইঞ্চি লম্বা|

মন্দির এবং দেবী মূর্তির এই অদ্ভুত নামকরণ প্রসঙ্গে দুরকম ব্যাখ্যা রয়েছে|কেউ কেউ মনে করেন পুঁটি” অর্থে ছোটো মেয়ে বোঝায়|এই মন্দিরের কালীমূর্তিটির উচ্চতা মাত্র ছয় ইঞ্চি এত ছোটো মূর্তি বোঝাতেই তাই “পুঁটিকালী” বা নামটির প্রচলন হয় এবং পরবর্তীতে লোক মুখে তা বিকৃত হয়ে “পুঁটেকালী” হয়ে যায়|

নামের দ্বিতীয় ব্যাখ্যা অনুসারে একবার মন্দিরে হোম চলা কালীন গঙ্গার খাদ থেকে একটি পুঁটিমাছ লাফিয়ে হোমকুণ্ডের মধ্যে পড়ে যায়|পড়ে অর্ধদগ্ধ মাছটিকে তুলে জলে ফেলে দিতেই সেটি আবার জীবন্ত হয়ে হয়ে ওঠে এবং অলৌকিক ঘটনার জন্য দেবীর নাম হয় “পুঁটিকালী” বা “পুঁটেকালী”|

এই মন্দিরে পূজা হয় তন্ত্রমতে। দীপান্বিতা কালীপূজার রাতে প্রতিমার স্বর্ণবেশ হয় এবং ভৈরবী পূজাও অনুষ্টিত হয়|এখানে আজও কালী পূজা উপলক্ষে কুমারী পূজা হয়|এছাড়াও বিশেষ বিশেষ তিথিতে ছাগ বলীর ও ব্যবস্থা করা হয়|দেবীর উদেশ্যে আমিষ ও নিরামিষ দু রকম ভোগ ই নিবেদিত হয়|লক্ষণীয় বিষয় এই মন্দিরে দেবী কালীর পাশে দেবী শীতলার ও পূজা করা হয় নিষ্ঠা সহকারে|স্থানীয় দের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই মন্দির এবং বিশেষ বিশেষ তিথিতে বহু দর্শনার্থী ভিড় জমান এই মন্দিরে|

আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি|দেখা হবে আগামী পর্বে|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ এবং প্রতিকারের জন্য আমার সাথে সরাসরি কথা বলতে চান নির্দ্বিধায় ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|

কলকাতার কালী – চীনে কালী মন্দির

শুরুতেই এই কলকাতার কালী শীর্ষক ধারাবাহিক লেখনী যে আপনাদের এতো প্রশংসা ও সমাদর পাবে ভাবিনি|আপনাদের ভালো লাগা বরাবরই আমাকে উৎসাহিত করে আরো বেশি আধ্যাত্মিক চর্চা করতে এবং নতুন নতুন বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরতে|আজ এই ধারাবাহিক লেখার নতুন পর্বে কলকাতার এক প্রাচীন ও অভিনব একটি কালী মন্দিরের কথা লিখবো|আজ চীনে কালী মন্দির|

কলকাতার ট্যাংরা অঞ্চলে রয়েছে চায়না টাউন যেখানে বহু বছর থেকে চীন দেশীয় মানুষেরা বসবাস করছেন|যদিও মনে প্রানে এবং দৈনন্দিন জীবন শৈলীর দিক দিয়ে তারা হয়ে উঠেছেন ভারতীয় এবং অবশ্যই বাঙালি|বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে চৈনিক সংস্কৃতির একে অদ্ভুত মেল বন্ধন চোখে পড়ে কোলকাতার এই বিশেষ অঞ্চলে|আর এই অঞ্চলেই রয়েছে এক অদ্ভুত কালী মন্দির যা চীনারাই মূলত প্রতিষ্ঠা করেন এবং মন্দিরের দেখা শোনার দায়িত্ব তারাই নিয়েছেন|এই মন্দির চীনে কালী মন্দির বা চাইনিস কালী মন্দির নামে প্রসিদ্ধ|

এই মন্দির গড়ে ওঠার মুলেও রয়েছে এক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ|শোনা যায় প্রায় ষাট বছর আগে এখানে একটি সিঁদুর মাখা কালো পাথরকে পুজো করতো স্থানীয়রা|প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে, একবার একটি বছর দশে‌কের কিশোরকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই পাথরটির কাছে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। ডাক্তারেরাও নাকি বলেছিলেন তার মৃত্যু আসন্ন উপায়ান্তর না দেখে শিশুটির বাবা-মা পাথরটির সামনে শিশুটিকে রেখে বিরামহীন পূজার্চনা শুরু করেন। তারপরেই ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা ছেলেটি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং তার বাবা মার কোলে ফিরে যায়|এই ঘটনা লোক মুখে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং পরবর্তীতে ওই স্থানে নির্মিত হয় আজকের কালী মন্দিরটি ও স্থাপিত হন দেবী কালী|সেই পাথর ও স্থান পায় মন্দিরে| রয়েছে একটি মহাদেবের মূর্তিও|

মন্দিরের প্রধান সেবকের দায়িত্বে রয়েছেন একজন চৈনিক ব্যক্তি|এখন মন্দিরে প্রতিদিন সন্ধ্যা আরতি হয়|পূজা হয়|এছাড়া দীপাবলির দিনে বা কালী পূজা উপলক্ষে বহু মানুষ সমবেত হন এই মন্দিরে যার মধ্যে চীনা মানুষ দের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো|এখানে বৌদ্ধ তন্ত্র ও হিন্দু তন্ত্র মতে দেবীর পূজা হয়|শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই মন্দিরে দেবীর ভোগ হিসেবে নুডলস সহ বহু চাইনিস খাবার ব্যবহিত হয়ে আসছে বহু কাল ধরে|কলকাতার বুকে এ এক অদ্ভুত ও বিরল সংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় মিলন ক্ষেত্র|

আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি আগামী পর্বে ফিরবো এক নতুন কালী মন্দির ও তার অজানা গল্প নিয়ে|আপাতত বারাসাতে আমার গৃহ মন্দিরে এবং গড়িয়ায় আমার চেম্বারে নিয়মিত বসছি|আর অনলাইনে আছি যেমন টা ছিলাম আগে|জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকারের জন্য উল্লেখিত নম্বরে ফোন করে সরাসরি আমার সাথে কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন| ধন্যবাদ|

পন্ডিতজির মনের কথা : সম্মোহন ( Hypnotism & Mesmerism)

পন্ডিত জির মনের কথা প্রতিটি পর্বে থাকবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে আলোচনা,ব্যাখ্যা ও আমার মতামত|এক অন্য আঙ্গিকে অন্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে| প্রতি বৃহস্পতিবার ও রবিবার ঠিক সকাল ছটায়