আপনাদের কথা দিয়েছি এক এক করে আরো অনেক গুলি কোলকাতার কালী পর্ব আপনাদের সামনে নিয়ে আসবো|তাই শত ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত কলম ধরতে হয় আপনাদের জন্য|আজ কলকাতার আরেক প্রাচীন কালী মন্দির নিয়ে লিখবো|আজকের পর্বে পুঁটে কালী মন্দির|
কলকাতার ব্যাস্ততম অঞ্চল গুলির অন্যতম বড়ো বাজার অঞ্চলে কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটে অবস্থিত বিখ্যাত পুঁটে কালী মন্দির|এই মন্দিরের ইতিহাস অতি প্রাচীন ও বহু অলৌকিক ঘটনা এবং কিংবদন্তী জড়িত আছে এই মন্দির দেবীর মূর্তির সাথে|
বর্তমান মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেনতান্ত্রিক মানিকচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রথম পাকা মন্দির স্থাপিত হয়েছিল ১৫৫৮ খ্রিষ্টাব্দে|যদিও প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে এই দেবী মূর্তি এখানে আরো আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত ছিলো|
বহু প্রাচীন কালে এই অঞ্চল ছিলো দুর্গম ও অরণ্য সংকুল, সেকালে ডাকাতরাই রাজত্ব করতো এখানে|তখন ডাকাতরা এই মন্দিরে নিয়মিত পূজা করতো এমনকি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে নর বলীও হতো বলে শোনা যায়|পরবর্তীতে তন্ত্র সাধক মানিকরাম বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন|
১৯৩০ সালে মন্দিরের সংস্কার করা হয়মন্দিরটি চারচালা ও তিনটি চূড়াবিশিষ্ট। চূড়াগুলির উপর চক্র, ত্রিশূল ও পতাকার চিহ্ন আছে। মন্দিরটির তলায় একটি পাতালকক্ষ আছে|মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কালীমূর্তিটি ছয় ইঞ্চি লম্বা|
মন্দির এবং দেবী মূর্তির এই অদ্ভুত নামকরণ প্রসঙ্গে দুরকম ব্যাখ্যা রয়েছে|কেউ কেউ মনে করেন পুঁটি” অর্থে ছোটো মেয়ে বোঝায়|এই মন্দিরের কালীমূর্তিটির উচ্চতা মাত্র ছয় ইঞ্চি এত ছোটো মূর্তি বোঝাতেই তাই “পুঁটিকালী” বা নামটির প্রচলন হয় এবং পরবর্তীতে লোক মুখে তা বিকৃত হয়ে “পুঁটেকালী” হয়ে যায়|
নামের দ্বিতীয় ব্যাখ্যা অনুসারে একবার মন্দিরে হোম চলা কালীন গঙ্গার খাদ থেকে একটি পুঁটিমাছ লাফিয়ে হোমকুণ্ডের মধ্যে পড়ে যায়|পড়ে অর্ধদগ্ধ মাছটিকে তুলে জলে ফেলে দিতেই সেটি আবার জীবন্ত হয়ে হয়ে ওঠে এবং অলৌকিক ঘটনার জন্য দেবীর নাম হয় “পুঁটিকালী” বা “পুঁটেকালী”|
এই মন্দিরে পূজা হয় তন্ত্রমতে। দীপান্বিতা কালীপূজার রাতে প্রতিমার স্বর্ণবেশ হয় এবং ভৈরবী পূজাও অনুষ্টিত হয়|এখানে আজও কালী পূজা উপলক্ষে কুমারী পূজা হয়|এছাড়াও বিশেষ বিশেষ তিথিতে ছাগ বলীর ও ব্যবস্থা করা হয়|দেবীর উদেশ্যে আমিষ ও নিরামিষ দু রকম ভোগ ই নিবেদিত হয়|লক্ষণীয় বিষয় এই মন্দিরে দেবী কালীর পাশে দেবী শীতলার ও পূজা করা হয় নিষ্ঠা সহকারে|স্থানীয় দের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই মন্দির এবং বিশেষ বিশেষ তিথিতে বহু দর্শনার্থী ভিড় জমান এই মন্দিরে|
আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি|দেখা হবে আগামী পর্বে|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ এবং প্রতিকারের জন্য আমার সাথে সরাসরি কথা বলতে চান নির্দ্বিধায় ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|