আসন্ন নবরাত্রি, দূর্গা পূজা কে কেন্দ্র করে জ্যোতিষ সংক্রান্ত ব্যস্ততা কিঞ্চিৎ বৃদ্ধি পেয়েছে কারন প্রতিটি বিশেষ তিথির ন্যায় এই গুরুত্বপূর্ণ তিথি তেও আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা মায়ের মন্দিরে শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের সু ব্যবস্থা থাকবে|তার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই|তবে শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমার কলম থেমে নেই|আজ উপস্থিত হয়েছি এক মহাপুরুষ এর জীবন কাহিনী নিয়ে|ভারতের সাধকের আজকের পর্বে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর|
অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার সফলাডাঙ্গা গ্রামে 1812 ক্রিস্টাব্দর 11 মার্চ যশোমন্ত ও অন্নপূর্ণা দেবীর গৃহে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন কলি যুগের এই অন্যতম শ্রেষ্ট মহাপুরুষ|তার পরিবার ছিলো নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবার|ফলে শৈশব থেকেই শাস্ত্র পাঠ ও ধর্ম আলোচনার প্রতি তার এক গভীর আগ্রহ ও নিষ্ঠা
বর্তমান ছিলো|যত বয়স বাড়তে লাগলো শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের মধ্যে এক ঐশরিক শক্তির বিকাশ হতে থাকলো|যথাযত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই তিনি একজন জ্ঞানী শাস্ত্রজ্ঞ ও বৈষ্ণব শাস্ত্রে অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন|
মূলত প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন তিনি|
পরবর্তীতে তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতি মতুয়াবাদ রূপে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে|তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রান পুরুষ|সারা জীবন তিনি উৎসর্গ করেন মতুয়া আদর্শের প্রচারে এবং প্রসারে|তিনি মনে করতেন ঈশ্বর প্রাপ্তির জন্য সন্ন্যাস নেয়ার প্রয়োজন নেই অন্তরে শ্রদ্ধা ও ভক্তি থাকলে এবং নিষ্ঠা সহকারে ঈশ্বর চিন্তা করলে গৃহীরও ঈশ্বর লাভ সম্ভব|নানা শ্রেণী ও জাতি তে বিভক্ত হিন্দু সমাজ কে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন মতুয়াবাদের দ্বারা|তৎকালীন হিন্দু সমাজের অসংখ্য নিপিড়িত, দরিদ্র ও তথা কথিত নিম্ন শ্রেণীর মানুষ দের তিনি পরম স্নেহে বুকে টেনে নিয়েছিলেন এবং তাদের সার্বিক উন্নতি সাধনই ছিলো তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য|
আজ দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি মতুয়াদের কাছে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ চাঁদ ঠাকুর কলি যুগের শেষ এবং শ্রীহরি-র পূর্ণ অবতার|যথার্থ অর্থেই তিনি পতিতপাবন|
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ৫ মার্চ ১৮৭৮ সালে ৬৫ বছর বয়সে মর্তলোক ত্যাগ করেন|তার মহা প্রয়ানের পর তার পুত্র শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর মতুয়া সমাজের উন্নতি সাধনে ব্রতী হন|আজও বংশ পরম্পরার শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরহরিচাঁদ ঠাকুরের সুযোগ্য বংশধরেরা মতুয়া সমাজ কে নেতৃত্ব দান করে চলেছেন|
আজ অসংখ্য মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁরঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধাম একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে|প্রতি বছর চৈত্র মাসে মতুয়া ধামে মতুয়া মহামেলা বসে যাতে অংশগ্রহণ করেন অগুনতি মানুষ| এই সময়ে ভক্তরা কামনা সাগর’-এ ডুব দিয়ে পুণ্যস্নান করেন|এছাড়াও বাংলাদেশে ঠাকুরের জন্ম স্থানে ঠাকুরের জন্ম তিথি উপলক্ষে উৎসব পালন হয় মহা সমারোহে|
আগামী পর্বে নিয়ে আসবো অন্য কোনো মহান সাধকের কথা|আপাতত বিদায় নিচ্ছি|তবে মনে করিয়ে দিই যারা আগামী নবরাত্রি বা দূর্গা পূজা উপলক্ষে জোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকারের কথা ভাবছেন আর দেরি না করে এখনই উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করে আমার সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|