কালী কথা – আদ্যা কালী 

36

কালী কথা – আদ্যা কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজকের কালী কথায় আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বাংলা তথা দেশের অন্যতম জাগ্রত এবং প্রসিদ্ধ কালী ক্ষেত্র আদ্যাপীঠের কথা।

 

দক্ষিনেশ্বর মন্দিরের কিছুটা দূরেই অবস্থিত এই আদ্যাপীঠ মন্দির যেখানে বিরাজ করছেন আদ্যা কালী।ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের প্ৰিয় শিষ্য অন্নদা ঠাকুর অর্থাৎ অন্নদা চরণ ভট্টাচার্য এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন তার গুরুদেব অর্থাৎ রামকৃষ্ণ দেবের আদেশে|

 

ঠাকুর তার ভক্ত ও শিষ্য অন্নদা ঠাকুরকে নির্দেশ দিয়ে ছিলেন কলকাতার একটি দীঘি থেকে দেবী মূর্তি উদ্ধার করে নিয়ে এসে দক্ষিনেশ্বর এর অদূরে আরিয়া দহে এক মন্দির নির্মাণ করতে এবং শর্ত ছিলো বারো বছরের মধ্যে মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে না হলে সর্ব সাধারণের জন্য মন্দিরের দ্বার উন্মুক্ত থাকবেনা|অন্নদা ঠাকুর আদেশ পালন করে ছিলেন কিন্তু বারো বছরের জায়গায় পঁয়ত্রিশ বছর লেগে ছিলো মন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে|তাই আজও সর্ব সাধারণের জন্য মুল মন্দিরের দ্বার বন্ধই আছে|

 

ঠাকুর রামকৃষ্ণ ও অন্নদা ঠাকুরের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই মন্দির 10 কাটা জমির উপর নির্মিত তবে প্রায় 27 বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে আদ্যাপীট সংঘ|মুল মন্দির প্রায় একশো ফুট উঁচু|সামনে রয়েছে সু দৃশ্য নাট মন্দির|প্রতিদিন দুপুরে ও সন্ধ্যায় মা আদ্যার আরতি হয় এই সময় ছাড়া বন্ধ থাকে মন্দিরের প্রধান দরজা|তবে সর্ব সাধারণ কে দেবীর দর্শন করতে হয় সামনের নাট মন্দির থেকে কারন মুল মন্দিরে সর্ব সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ|মুল মন্দিরে আদ্যা শক্তির অষ্ট ধাতুর মূর্তি রয়েছে এবং তার নিচে রয়েছে রামকৃষ্ণ দেবের মূর্তি|এছাড়াও মন্দিরের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে ছয় টি আটচালা শিব মন্দির।

 

কথিত আছে এক রাম নবমীর রাতে মা আদ্যা শক্তি অন্নদা ঠাকুর কে দর্শন দিয়েছিলেন এবং আদ্যা স্তোত্র পাঠ করে শুনিয়েছিলেন এবং অন্নদা ঠাকুর এই আদ্যা স্তোত্র লিখে রাখেন যা আজও পাঠ করা হয় মন্দিরে।

 

অন্নদা ঠাকুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

প্রতি বছর আদ্যা নবমী তে মন্দিরে বিশেষ পূজা এবং কালী পূজা উপলক্ষে মহা পূজার আয়োজন করা হয়|প্রতিদিন দেবী কে সাড়ে বাইশ সের চালের অন্ন ভোগ ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবকে সাড়ে বারো সের চালের অন্ন ভোগ দেয়া হয় আদ্যাপিঠে|

 

চলতে থাকবে কালী কথা ফিরবো আগামী পর্বে কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে বিশেষ পর্ব

নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।