বাংলার কালী – ফৌজদারি কালীর পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বর্ধমানের খোসবাগান নামক স্থানে এক বিতর্কিত কালী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। নামটিও বেশ বিচিত্র। ফৌজদারি কালী। কি সেই বিতর্ক এবং কেনই বা এমন নামকরম জানবো আজকের পর্বে।
প্রাচীন সময় থেকে চলে আসা এই কালী পুজো বাগদি সম্প্রদায়ের কালী পুজো নামেই শুরুর দিন থেকে পরিচিত। আজ থেকে বেশ কয়েকশো বছর আগে খোসবাগানের কয়েক ঘর অদিবাসী এই পুজো শুরু করেছিলেন। তারপর কোনো এক সময় প্রতিমা নিরঞ্জন কে কেন্দ্র করে কিছু সামাজিক সমস্যা তৈরি হয়।বাঁধা আসে প্রতিমা নিরঞ্জনে এবং সাময়িক ভাবে বন্ধ হয় পুজো পক্রিয়া।কি কি হয়েছিলো সে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাচ্ছি না। তবে বিষয়টি আদালত অবধি
গেছিলো বলে জানা যায়।
তারপর বর্ধমান শহরের একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একটি গোপন বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে স্থির হয় এরা প্রতিমা নিয়ে আইন অমান্য করে নিরঞ্জন সমাপন করবেন এবং আগের মতোই মহা সমারোহে পুজো পক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
পরিকল্পনা মাফিক পুজো পূজার সব শাস্ত্রীয় উপাচার পালন করে একটি যুবকের মাথায় প্রতিমা কে চাপিয়ে শহর পরিক্রমায় বের হয় সমবেত জনগন শোভাযাত্রা নিয়ে গিয়ে বিসর্জন করার পর যুবকরা গ্রেপ্তার বরণ করেন এবং করেন এবং তাদের এই কর্মের জন্য তাদের এবং তাদের আরাধ্যা দেবী কালীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রুজু হয় ।
সামান্য কিছু দিন সাজা ভোগ করার পর সবাই মুক্তি পান এবং শোভাযাত্রা করার আইন সম্মত অধিকার লাভ হয় । সেই থেকেই এই দেবী ‘ফৌজদারি’ কালী নামে খ্যাত। বর্তমানে ফৌজদারী কালী মায়ের পুজো ও শোভাযাত্রা বেশ ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয়।আজ এই পুজো সব বিতর্কের উর্দ্ধে এবং সব সম্প্রদায় ও সব শ্রেণীর মানুষ এই পুজোয় আনন্দে মেতে ওঠেন।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। অন্য এক কালী পুজোর ইতিহাস নিয়ে। চলতে থাকবে বাংলার কালী। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।