পুরী জগন্নাথ মন্দিরের রহস্য

169

পুরী জগন্নাথ মন্দিরের রহস্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জগন্নাথ প্রভু কে নিয়ে এই বিশেষ ধারাবাহিক আলোচনায় আজ পুরীর জগন্নাথ মন্দির সংক্রান্ত বেশ কিছু অদ্ভুত তথ্য আপনাদের জানাবো।

 

শাস্ত্র মতে হিন্দু দের পবিত্র চার ধামের মধ্যে পুরীর জগন্নাথ মন্দির অন্যতম|পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য আছে যার জন্যে ভারতের অন্যান্য প্রাচীন মন্দির গুলির থেকে পুরীর মন্দির অনেকটাই আলাদা।

 

পুরীর মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর পুরীর তৎকালীন রাজা ইন্দ্রদুম্ন চেয়েছিলেন ব্রহ্মলোক থেকে স্বয়ং ব্রম্হা এসে পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার শাস্ত্রীয় রীতি নীতি সম্পন্ন করুন। কিন্তু ব্রম্হা তাকে বলেন জগতের নাথ তার স্বেচ্ছায় নিজ রূপে বিরাজ করবেন।তার মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার সাধ্য কারুর নেই। বাস্তবে

তাই হয়।সমুদ্রে ভেসে আসে দারু ব্রহ্ম। তাই দিয়ে প্রভুর নির্দেশে তৈরী হয় মূর্তি। সম্পন্ন হয় প্রতিষ্ঠা পর্ব।

 

শুরুর দিন থেকে সব রীতি নীতি এই মন্দিরে একই রকম আছে। আজও মন্দিরের উপর দিয়ে কোন বিমান বা পাখি উড়ে যেতে পারেনা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিষয়টি কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা অগ্রাহ্য করতে পারেন না|মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো আছে তা রোজ নিয়ম করে পাল্টানো হয়,এই পতাকা সব সময় হওয়ার বিপরীতে ওড়ে। এর কারণ কিন্তু জানা যায় না|আপনারা যারা পুরীর মন্দির দর্শন করেছেন হয়তো জানেন পুরীর যে কোন জায়গা থেকেই আপনি যদি মন্দিরের চূড়ার দিকে তাকান তাহলে সুদর্শন চক্র আপনার দিকে সম্মুখীন হয়ে থাকবে|এও এক রহস্য|মন্দির চত্বরের কোলাহলের জন্যে হয়তো খেয়াল থাকেনা কিন্তু মন্দিরের ভিতরে সিংহদ্বারে মন্দিরে প্রবেশ করার পর প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের আওয়াজ আর শুনতে পাওয়াযায় না কিন্তু সিঁড়ি টপকে গেলেই তারপর আবার সমুদ্রের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়|

 

মনে করা হয় পুরী হলো ভগবানের ভোজনের স্থান তাই এখানকার সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বৈশিষ্ট্যটি হল প্রসাদ। রহস্যময় বিষয় হলো সারাবছর ধরে সমপরিমাণ প্রসাদ রান্না করা হয় কিন্তু একই পরিমাণ প্রসাদ দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ হোক বা কয়েক লক্ষ মানুষকে খাওয়ানো হোক তবু প্রসাদ কখনো নষ্ট হয় না বা কখনো কম পড়ে না|এই প্রসাদ রন্ধন পক্রিয়াতেও রয়েছে এক রহস্য মন্দিরের হেঁশেলে একটি পাত্রের উপর আরেকটি পাত্র এমন করে মোট সাতটি পাত্র আগুনের উপর বসে রান্না করা হয়। এই পদ্ধতিতে যেটি সবচেয়ে উপরে বসানো হয় থাকে, তার রান্না সবার আগে হয়। আর তার নিচেরগুলো তারপর।

এভাবেই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে|

 

আজও কোনো জাগতিক বিপদ আপদ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে পুরীর মন্দিরে ঘটে যায় কোনো না কোনো ব্যাতিক্রমী ঘটনা। যেমন মন্দিরে ধ্বজা খুলে পড়েযাওয়া বা ওই জাতীয় অন্য কিছু।

 

আবার প্রভু জগন্নাথ সংক্রান্ত বিশেষ একটি পর্ব নিয়ে যথা সময়ে আপনাদের সামনের আসবো।

থাকবে আরো অনেক তথ্য এবং

শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।