শিব মহিমা – পৌরাণিক উজ্জ্বয়িনী শিব মন্দিরের ইতিহাস
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ আপনাদের যে শিব মন্দিরের ইতিহাস জানাবো পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, মার্কণ্ডেয় ঋষি এই মন্দিরেই যমরাজকে পরাজিত করে সাক্ষাৎ মৃত্যুকে জয় করেছিলেন এবং
চিরঞ্জীবী হয়েছিলেন।
আগে সেই পৌরাণিক ঘটনা সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক।পুরান অনুসারে ঋষি মৃকন্দ ব্রহ্মার তপস্যা করে পুত্র লাভের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন, কিন্তু জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে তাঁর পুত্র মার্কণ্ডেয়ের আয়ু ছিল কম। যার কারণে ঋষি মৃকন্দ তাঁর পুত্র ঋষি মার্কণ্ডেয়র স্বল্প আয়ু নিয়ে চিন্তিত থাকতেন । পিতাকে চিন্তিত দেখে পুত্রের মনে আঘাত লাগে এবং উদ্বেগ তৈরি হয়। একদিন ছেলের অনুরোধে ঋষি তাঁকে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পিতার দুঃখ দূর করতে এবং দীর্ঘায়ু লাভের জন্য মার্কণ্ডেয় অবন্তিকা তীর্থে গভীর জঙ্গলে ভগবান শঙ্করের কঠোর তপস্যা করেন। যখন তার বয়স বারো বছর পূর্ণ হয় এবং মৃত্যুর সময় এসে উপস্থিত হয় তখন যমরাজ ধৰ্মরাজ রূপে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু মৃত্যুকে স্বীকার করতে চান না তিনি। যমরাজকে হারাতে শিবের মূর্তিকে দুই হাতে চেপে ধরেন। সেই মুহূর্তে মহাদেব তাঁকে রক্ষা করার জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং নিজের অন্তত আয়ু থেকে পাঁচ বছর সেই বালককে দান করেন। সেই পাঁচ বছর এতো দীর্ঘ সময় যে আজও ঋষি মার্কেন্ডেয় স্বশরীরে এই পৃথিবীতে বিরাজমান।
মনে করা হয়, ভক্তদের রক্ষা করার জন্যই এই মন্দিরে সাক্ষাৎ মৃত্যুকে পরাজিত করেছিলেন মহাকাল। তাই মন্দিরে মহাদেব দর্শনেই
ভক্তরা দীর্ঘায়ু লাভ করেন।
সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন।
ধর্মীয় নগরী উজ্জয়নীত শিবের এই প্রাচীন এবং পৌরাণিক মন্দির রয়েছে। মনে করা হয় বেশ কয়েক বছরের পুরনো এই মন্দিরটি সম্রাট বিক্রমাদিত্যের আমলের নির্মাণ করা হয়েছিল। এখানে শিবলিঙ্গটি দক্ষিণমুখী।শিব লিঙ্গে একটি চোখ খোদাই করা আছে।শিব কে এখানে মার্কন্ডেশ্বর মহাদেব রূপে পুজো করা হয়।
শিব মহিমা এবং বাংলার শিব মন্দির গুলি নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা চলতে থাকবে সমগ্র
চৈত্র মাস জুড়ে। ফিরে আসবো আগামী পর্বে যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।