শিব মাহাত্ম – ফুলেশ্বর শিব 

32

শিব মাহাত্ম – ফুলেশ্বর শিব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শিব মাহাত্মর আজকের পর্বে আপনাদের একটি অদ্ভুত শিব মন্দিরের কথা জানাবো যাকে কেন্দ্র করে অসংখ্য অলৌকিক জনশ্রুতি বা ঘটনা

শোনা যায়।আজকের পর্বে ফুলেশ্বর শিব মন্দির।

 

ফুলেশ্বর মহাদেবের মন্দিরটি রয়েছে আমতার কুশবেড়িয়া অঞ্চলে।প্রায় তিনশো আশি বছরের প্রাচীন এই ফুলেশ্বর বাবার মন্দির যা বাবার ভক্তদের দ্বারা একাধিক বার সংস্কার হয়েছে।

কিভাবে এই মন্দির বা শিব লিঙ্গ স্থাপন করেছিল তা নিয়ে একটি কিংবদন্তী প্রচলিত আছে এই এলাকায়।

 

শোনা যায় বহু বছর আগে এই এলাকা ছিলো ঘন জঙ্গলে ঢাকা। তখন ডাকাত বা তান্ত্রিক সন্ন্যাসীরা ছাড়া বড়ো একটা কেউ আসতো না এদিকে।সেই জঙ্গলে নাকি স্থানীয় জমিদার বাড়ির কামধেনু গাই যেত নিয়ম করে এবং সেই কামধেনু গাই প্রতিদিন একটি শিলা মূর্তিতে দুধ দিয়ে আসত। এই ঘটনা স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন জমিদার এবং তিনি সেখানে গিয়ে পাথর খণ্ডটি দেখে বুঝতে পারেন যে এটি আসলে একটি শয়ম্ভু শিবলিঙ্গ । তারপর আবার স্বপ্নাদেশ হয় এবং সেই স্থানে জমিদার নিজ অর্থ ব্যায়ে একটি সুন্দর শিব মন্দির নির্মাণ করে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিত্য পুজোর ব্যাবস্থা করেন।

 

এখানে আরো একটি অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ করতে হয়।আগে বাবার মূর্তি প্রায় দু-ফুট উচ্চতায় জেগে ছিল। বর্তমানে ফুলেশ্বর বাবা প্রায় মাটির অনেকটা গভীরে অবস্থান করছেন। অনেকে মনে করেন মহাদেব ধীরে ধীরে পাতালে প্রবেশ করছেন।

 

এই মন্দিরের ভিতরে নাকি নিয়মিত জোয়ার ভাটা খেলে। রহস্যজনক ভাবে এই জল মন্দিরে আসে পাতাল থেকে এবং আবার যথা সময়ে পাতালেই মিলিয়ে যায়।প্রতিদিন দুপুরে মধ্য গগনে সূর্য অবস্থান করলে এবং সূর্যের রশ্মি বাবার মাথায় পড়লে তবেই পুজো শুরু হয়। এ ভাবেই চলে সারা বছর।দুবেলা পুজো হয় নিয়ম মেনে।

 

শ্রাবন মাস এবং চৈত্র সংক্রান্তি তে নীল ষষ্ঠীর দিন এই মন্দিরে জাঁকজমক করে পুজো হয়।বিশেষ পুজোর পর পাতাল থেকে উঠে আসে বাবা ফুলেশ্বরের চরণামৃত যা যা ভক্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া হয়।

 

শিব মাহাত্ম নিয়ে আবার ফিরে আসবো পরবর্তী পর্বে। অন্য একটি শিব মন্দিরের কথা নিয়ে আলোচনা হবে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।