শিবধাম – পঞ্চকেদারের ইতিহাস

83

শিবধাম – পঞ্চকেদারের ইতিহাস

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

প্রায় সব শিবভক্তের স্বপ্ন থাকে একবার অন্তত পঞ্চকেদার দর্শন করা। কি এই পঞ্চ কেদার এবং কিভাবেই বা সৃষ্টি হলো পঞ্চ কেদার আর তার মাহাত্মই বা কি। আজকের পর্বে এই সব প্রশ্নের শাস্ত্র সম্মত উত্তর খুঁজবো।

 

পাণ্ডবরা কৌরবদের পরাজিত করার পর যুদ্ধের সময় তাদের দ্বারা করা ব্রাহ্মন হত্যার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে দেবাদিদেব মহাদেবের খোঁজ করতে গেল। প্রথমে কাশীতে যান তারা। শিব কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের মৃত্যু এবং অসততার জন্য গভীরভাবে বিরক্ত ছিলেন তাই পাণ্ডবদের দেখা না দিয়ে নন্দীর রূপ ধারণ করেন এবং গাড়ওয়াল অঞ্চলে লুকিয়ে থাকেন। কাশীতে শিবকে না পেয়ে পাণ্ডবরা গাড়ওয়াল হিমালয়ে চলে যান। ভীম গুপ্তকাশীর কাছে একটি ষাঁড়কে ঘুরে বেড়াতে দেখে তার স্বরূপ উপলব্ধি করেন তৎক্ষণাৎ তিনি ষাঁড় রুপী মহাদেবকে বল পূর্বক ধরতে চেষ্টা করেন তবে লেজ আঁকড়ে ধরার সাথে সাথে

বীর বিক্রমে হিমালয়ের দুর্গম পাদদেশে অদৃশ্য হয়ে গেলো সেই বিশালাকৃতি জীব। পরে কিছু অংশে আবার আবির্ভূত হলো। পাঁচটি স্থানে প্রকাশ পেলো এই রূপ। এই পাঁচটি স্থানকেই একত্রে পঞ্চ কেদার বলা হয়।

 

কেদারনাথে কুঁজ,বাহুগুলি তুঙ্গনাথে, মুখ রুদ্রনাথে, নাভি এবং পেট মধ্যমহেশ্বর এবং লোমগুলি কল্পেশ্বরে প্রকাশিত হয়েছিল।

পাণ্ডবরা এই স্থানে পাঁচটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।সেই মন্দিরই পঞ্চ কেদার ধাম রূপে আজও বিরাজমান।

 

কেদারনাথের চারপাশেই এই শিব মন্দির গুলি ছড়িয়ে রয়েছে। পাঁচটি মন্দিরে পাঁচজন প্রধান পুরোহিত রয়েছেন এবং তারা এক বছরের জন্য পালাক্রমে প্রধান সেবক হিসেবে কাজ করেন।

বছরের একটি দীর্ঘ সময়ে বরফে ঢাকা থাকে এই স্থান। তাপ মাত্রা হিমাংকের নিচে নেমে যায়।তবে এই দুর্গম স্থান হওয়া সত্ত্বেও বহু ভক্ত আসেন প্রতি বছর শিব পুজো করতে।শাস্ত্র বলছে এই পাঁচটি শিব মন্দির একত্রে দর্শন করলে জীব তার কর্মফল থেকে মুক্তি পায়।

 

ফিরে আসবো শিব সংক্রান্ত নতুন এক পর্ব

নিয়ে আগামী দিনে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।