শিব মাহাত্ম – এক্তেশ্বর মহাদেব

35

শিব মাহাত্ম – এক্তেশ্বর মহাদেব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শিব মাহাত্মর আজকের পর্বে বাংলার মন্দির নগরী নামে প্রসিদ্ধ বিষ্ণুপুরের কাছেই বাঁকুড়ার একটি বিখ্যাত শিব মন্দিরের কথা আপনাদের জানাবো |এই মন্দির এক্তেশ্বর শিব মন্দির নামে পরিচিত।

 

এই মন্দির ও শিব লিঙ্গ নিয়ে প্রচলিত রয়েছে অসংখ্য লোককাহিনী এবং অলৌকিক ঘটনা|

প্রাচীনকালে এই অঞ্চলে যে জনগোষ্ঠী বাস করতো তাঁরা নিজেদের সূর্যের সন্তান বলে প্রচার করতেন। এই আদিবাসীরা ছিলেন একেশ্বরবাদী অনেকে মনে করেন একঈশ্বর থেকে এক্তেশ্বর নামটি সৃষ্টি হয়েছে|

 

বর্তমানে বাঁকুড়া শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে দ্বারকেশ্বর নদের বাম তীরে এই প্রাচীন শিব মন্দির অবস্থিত|মন্দিরের কুণ্ডের মধ্যে যে শিবলিঙ্গটি রয়েছে সেটি কিছুটা বাঁকা ভাবে অবস্থান করছে|অনেকে মনে করেন এই কিঞ্চিৎ বাঁকা শিবলিঙ্গ থেকেই বাঁকুড়া নামের উৎপত্তি|বর্তমানে ল্যাটেরাইট তৈরি সুগঠিত পশ্চিমমুখী মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। ভক্তদের একাংশের ধারণা সেই দ্বাপর যুগ থেকে এই শিব এখানে বিরাজ করছেন এই মন্দিরটি পাণ্ডবদের সময় নির্মিত হয়েছিল। যা তৈরি করেছিলেন স্বয়ং দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা। মন্দিরের গর্ভগৃহের মধ্যে রয়েছে কুণ্ড। যার মধ্যে রয়েছে শিবলিঙ্গ। অনেকের মতে এই শিবলিঙ্গ নিয়ে এসে এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য।

 

এই অঞ্চলের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে এই শিব মন্দির।একটি প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজার সঙ্গে ছাতনার সামন্তভূমের রাজার রাজ্য সীমানা নিয়ে বিবাদ চরম আকার নিলে তার মীমাংসা করতে আসেন স্বয়ং শিব পরবর্তীতে বিবাদিত অঞ্চলের সীমানার সংযোগস্থলে একতার প্রতীক হিসেবে এই

এক্তেশ্বর শিব মন্দির স্থাপিত হয়|

 

শুধু বাঁকুড়া বা বাংলা নয় সারা দেশের শিব

ভক্ত দের কাছে একটি প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র এই এক্তেশ্বর শিব মন্দির|শ্রাবন মাস উপলক্ষে এখানে কয়েক হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়।সেই সময়ে এই শিব পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে|

 

শিব মাহাত্মর পরবর্তী পর্বে অন্য এক প্রাচীন

শিব মন্দিরের কথা নিয়ে যথা সময়ে

আবার ফিরে আসবো। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।