শিব মাহাত্ম – শ্যামলেশ্বর শিব 

27

শিব মাহাত্ম – শ্যামলেশ্বর শিব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শ্রাবন মাস সারা বিশ্বের শিব ভক্তদের কাছে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। আজ এই পবিত্র সময়ে আপনাদের বাংলার আরো এক প্রাচীন শিব মন্দিরের ইতিহাস জানাবো।আজকের পর্বে শ্যামলেশ্বর শিব মন্দির নিয়ে লিখবো।

 

বাংলা ওড়িশা সীমান্ত এলাকার দাঁতনে আছে হাজার বছরের প্রাচীন শ্যামলেশ্বর শিব মন্দির।

এই শিব মন্দির আনুমানিক হাজার বছরের আগে নির্মিত হয়েছিল। মন্দিরের স্থাপত্যটি বেশ আকর্ষণীয়। প্যাগোডার আদলের ছোঁয়া আছে। মন্দিরটির আদলে প্রাচীনত্বের নানা ছাপ আছে। প্রবেশপথের সামনে কষ্টিপাথরে নির্মিত নন্দী মূর্তিটি অপূর্ব সুন্দর।এই মন্দির চত্বরে ইতিহাসের নানা নিদর্শন আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যা শ্যামলেশ্বর মন্দিরের প্রাচীনত্বর প্রমান।

 

মন্দিরের প্রতিষ্ঠালিপি না থাকায় মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা কে করেছিলেন তা সঠিক জানা যায় না। জানা যায় না প্রতিষ্ঠার সময়কাল।তবে ঐতিহাসিক দের দাবি সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। একটি মত অনুসারে ওড়িশার সূর্যবংশীয় নৃপতি গজপতি মুকুন্দদেব ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্ধে মন্দিরটি শিব মন্দির টি নির্মাণ করেছিলেন।আবার কেউ কেউ বলেন উজ্জ্বয়িনী রাজ্যের অধিপতি বিক্রমাদিত্যর শ্বশুর ভোজ রাজার শাসনাধীন ছিল দন্তপুর বা আজকের দাঁতন এবং ভোজরাজাই মন্দিরটি গড়েছিলেন।

দণ্ডভুক্তির রাজা বিক্রমকেশরী এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন এমনটাও অনেকে মনে করেন।

 

মন্দিরের চারপাশ পাথরের তৈরি প্রায় দশ ফুটের উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা।মন্দিরের ভিতরের অঙ্গনটিও বিশালকৃতির।প্রায় ফুট চারেক উঁচু একটি ভিত্তির উপর মন্দিরটি স্থাপিত। মন্দিরের অলঙ্করণ হিসাবে দেখা যায় মূল প্রবেশপথের সামনে একটি নন্দীমূর্তি যার কথা আগেই বলেছি এছাড়াও সামনের দ্বারপথের মাথায় ভগবান বিষ্ণুর অনন্তসজ্জায় সায়িত রূপ খোদাই করা আছে।

 

এই মন্দিরে প্রতিদিন বহু ভক্ত ভিড় জমান। তবে শ্রাবন এবং চৈত্র এই দুটি মাসে অসংখ্য

ভক্ত আসেন তাদের আরাধ্য শিবের বিশেষ পুজোয় অংশ নিতে।

 

আবার পরের পর্বে শিব মাহাত্মর আরেকটি পর্ব নিয়ে ফিরে আসবো আপনাদের জন্য। থাকবে আরেকটি শিব মন্দিরের ইতিহাস। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।