শিব মাহাত্ম – বানেশ্বর শিব

27

শিব মাহাত্ম – বানেশ্বর শিব

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

বাংলার প্রাচীন শিব ধাম গুলির মধ্যে পুরুলিয়া জেলায় বাবা বানেশ্বর ধাম অন্যতম। শুধু পুরুলিয়া জেলা নয় পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহার এবং ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু পুণ্যার্থীরা এই মন্দিরে ছুটে আসেন। আজকের পর্বে এই বানেশ্বর শিব
ধাম নিয়ে লিখবো।

আজ থেকে কয়েকশো বছর আগে বাবা বানেশ্বর পাতাল ফুঁড়ে পুরুলিয়ার অনাড়া নামক এক প্রত্যন্ত গ্রামে আবির্ভুত হয়েছিলেন অর্থাৎ তিনি স্বয়ম্ভু।সেই সময়ে জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল মন্দির চত্বর।বন্য জন্তু এবং দস্যুদের ভয়ে সেই সময় এই স্থানে কেউ প্রবেশ করতো না।তার আবির্ভাবের পরে পাতকুমের মহারাজ স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির স্থাপন করেন এবং পুজো শুরু করান পরবর্তীতে পুরুলিয়ার কাশিপুরের মহারাজ এই মন্দির সংস্করণ করেন। মন্দির পরিচালনার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করেছিলেন কাশীপুরের মহারাজ।

তারপর রাজ পরিবারের সূর্য যখন অস্থামিত এবং মন্দির যখন ক্রমশঃ তার জৌলুস হারাচ্ছে সেই সময়ে উত্তর কাশি থেকে একজন সাধু আসেন তার নাম স্বামী শিবানন্দ পুরী মহারাজ। তিনি এই মন্দিরে এসে মন্দির সংস্কার করে মন্দিরটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন এবং আবার ধুম ধাম করে বাবা বানেশ্বরের পুজো শুরু হয়।

বর্তমানে দুটি ভাগে বিভক্ত রয়েছে মন্দির পরিচালনা কমিটি। দেহঘড়িয়া কমিটি যারা বানেশ্বরের সেবার কাজে জড়িত থাকেন ও অপরটি হল চক্রবর্তী ষোল আনা কমিটি যারা মন্দিরের পারিপার্শ্বিক দায়িত্বভার নেন।এই শিব ধাম অনাড়া বাবা বানেশ্বর শিব ধাম নামে সর্বত্র প্রসিদ্ধ।

বহু মানুষের বিশ্বাস এই মন্দিরে ভক্তি ভরে পুজো দিলে সমস্ত মনোবাসনা পূরণ হয় । তাই দূর-দূরান্ত
থেকে ভক্তরা ছুটে আসেন বাবা বানেশ্বর ধামের মন্দিরে পুজো দিতে।শ্রাবন মাসে এবং চৈত্র মাসে ভিড় হয় সব থেকে বেশি।

ফিরে আসবো শিব মাহাত্ম নিয়ে আগামী পর্বে। থাকবে আরো একটি শিব মন্দিরের প্রাচীন ইতিহাস। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।