দেবতাদের অস্ত্র শস্ত্র – তীর ধনুক

1032

গতকাল অমাবস্যা উপলক্ষে আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলার মন্দিরের বিশেষ পুজোতে যারা সরাসরি অংশগ্রহন করলেন এবং যারা সরাসরি পুজোর সম্প্রচার দেখলেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ|আজকের পর্বে ভারতের পৌরাণিক যুগের যে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও বহু ব্যবহিত অস্ত্রের কথা বলবো তীর ধনুক|

পুরান, রামায়ন, মহাভারত এবং ইতিহাস সর্বত্র যুদ্ধ মানেই তীর ধনুকের ছড়াছড়ি|রামায়নে রাবনের হত্যা সম্ভব হয়েছিলো একটি বিশেষ তীরের মাধ্যমে|মহা ভারতের যুদ্ধে বীরত্বের মাপদন্ড হয়ে উঠেছিল তীর নিঃক্ষেপ করার সঠিক কৌশল ও কিছু বিশেষ তীর যেগুলির রয়েছে বিশেষ কাজ ও বিশেষ ক্ষমতা|

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ব্যাবহিত একটি তীর হলো নারায়ণাস্ত্র|নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে এটা নারায়ণের অস্ত্র ছিলো। এই অস্ত্রটা ছিলো তিনজনের কাছে। দ্রোণাচার্য, অশ্বত্থামা আর কৃষ্ণ। কিন্তু যেহেতু কৃষ্ণ অস্ত্রধারণ করবেননা বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন, তাই যুদ্ধক্ষেত্রে এটা বাকি দুজনের কাছেই ছিলো। নিক্ষেপ করার পরে এটা একটা তীর থেকে দশ হাজার তীর সৃষ্টি করতে পারতো। আর সামনের দশহাজার জনকে একসাথে মারার ক্ষমতা ছিলো। অশ্বত্থামা এটা একবার ব্যবহার করেছিলেন পাণ্ডব সৈন্যদের একসাথে শেষ করার জন্য।

এই অস্ত্র ব্যবহার করা ও এর আঘাত থেকে বাঁচা সবাই জানতেন না কিন্তু কৃষ্ণ এর ব্যবহার জানতেন, আর অশ্বত্থামা কৌরবপক্ষ থেকে পাণ্ডবদের দিকে এই তীর নিক্ষেপ করেছিলেন, তাই কৃষ্ণ তার প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে এটাকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিলেন।

আরেকটি অদ্ভুত তীর ছিলো বাসবী শক্তি|এই তীর ছিল ইন্দ্রর। দেবরাজ এই তীর দিয়েছিলেন কর্ণকে এটা কর্ণ বহুবছর ধরে সংরক্ষণ করে রেখেছিল অর্জুনকে বধ করার জন্য, কিন্তু যখন ভীমের পুত্র ঘটৎকচ এসে যুদ্ধে প্রচুর কৌরবসেনা মারছিল, তখন বাধ্য হয়েই কর্ণ এই শক্তি ব্যবহার করে ঘটৎকচকে বধ করে। এটা আসলে একটা মন্ত্রপূত তীর ব্যাবহারে শর্ত ছিল, কেবলমাত্র একবারই ব্যবহার করা যাবে এই অস্ত্র। আর এটা কখনওই বিফল হবেনা। যাকে উদ্দেশ্য করে এই অস্ত্র ছোঁড়া হবে, সে যেখানেই থাকুক, এই শক্তি গিয়ে তার মাথাতেই লাগবে, আর সাথে সাথে তার মৃত্যু ঘটবে।ঘটোৎকচ হত্যার পর কর্ণ চিরতরে হারায় এই অস্ত্রটা|

পৌরাণিক যুগের দেবতা ও বীর যোদ্ধা দের নিজস্ব ধনুকের আলাদা নামের ও উল্লেখ আছে|পিনাক নামক ধনুকের দ্বারা ভগবান শঙ্কর ত্রিপুরাসুর অসুরকে বধ করেছিলেন|গানডিভ নামক এই ধনুকটি ছিল অর্জুনের সাথে কুরুক্ষেত্রর যুদ্ধে|বিজয় নামক ধনুকটি কর্ণের কাছে ছিল, তাঁর গুরু পরশুরাম কর্ণকে এই ধনুক দিয়েছিলেন|আবার ধনুক ভঙ্গ করে নিজের বীরত্ব প্রমান করার প্রমান করার প্রথাও ছিলো যার উল্লেখ পাওয়া যায় একাধিক পৌরাণিক ঘটনায়|

আবার পরের পর্বে ফিরে আসবো অন্য কোনো অস্ত্র বা শস্ত্র নিয়ে|উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করুন জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে কথা বলুন সরাসরি|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|