শিব মাহাত্ম – জটেশ্বর শিব

66

শিব মাহাত্ম – জটেশ্বর শিব

 

পন্ডিতজি ভৃগুর শ্রীজাতক

 

বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং জাগ্রত শিব মন্দির জটেশ্বর শিব মন্দির।এই শিব মন্দির নিয়ে আছে বহু অদ্ভুত এবং অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ।

আজকের শিব মহাত্ম এই জটেশ্বর শিব মন্দির নিয়ে।

 

আলিপুরদুয়ারে অবস্থিত জটেশ্বর শিব মন্দিরের বয়স আনুমানিক প্রায় দুশো বছর এই দীর্ঘ সময়ে একাধিকবার মন্দিরের সংস্কার হয়েছে।এই জটেশ্বর শিব লিঙ্গের আবিষ্কারের ঘটনাটিও বেশ অলৌকিক এবং রোমাঞ্চকর।

 

শোনা যায় একবার মন্দির সংলগ্ন কাঠালবাড়ি গ্রামের গ্রামবাসীরা লক্ষ্য করেন জঙ্গলের ভিতর একটি স্বেত বর্ণের দুগ্ধবতীর আবির্ভাব হয় মাঝে মাঝে।এই গোমাতা কোথা থেকে যে আসে এবং আবার কোথায় মিলিয়ে যায় তা বোঝা যায়না। অনেকেই গোপনে এই গভীর উপর নজর রাখতে শুরু করেন।একদিন গ্রামবাসিরা গোমাতার পিছু নিয়ে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে লক্ষ করেন সেই গাভী গভীর জঙ্গলে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা এক শিব লিঙ্গের অভিষেক করছে নিজের দুধ দিয়ে।সবাই এই অলৌকিক দৃশ্য দেখে মোহিত হয়ে যায় এবং দ্রুত এই খবর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

 

পরবর্তীতে স্থানীয় জমিদারের আদেশে লোক জন গিয়ে শয়ম্ভু শিব লিঙ্গটি উদ্ধার করে এবং সেটি বহন করে জমিদার বাড়িতে আনার সময় পথে এক স্থানে তা নামিয়ে রাখলেন বিশ্রামের জন্যে। অলৌকিক ভাবে পরে সেই স্থান থেকে শিব লিঙ্গকে ওঠানো আর সম্ভব হয়নি।এমনকি জমিদারের হাতিও ওই স্থান থেকে শিব লিঙ্গ এক চুল নাড়াতে পারেনি। সবাই বোঝেন এই স্থানেই বাবা মহাদেব বিরাজ করতে চান। পরে ঐখানেই ছোট শিব মন্দির বানিয়ে পুজো শুরু হয়|

 

এর পর দীর্ঘ সময় কেটে যায়|একদিন হঠাত্‍ করে এক দিগম্বর সাধুর আবির্ভাব ঘটলো সেই গ্রামে। তিনি শিব পুজোর দায়িত্ব নেন।সাধু দীর্ঘদিন পুজো দিয়েছিলন এই শিব মন্দিরে তারপর একদিন তিনি অন্তর্ধান হন |এরপর একদিন মিথিলা থেকে এক পুরোহিত এলেন তিনি এসে স্থানীয়দের জানালেন তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন এখানে আসার জন্য এবং এই স্থানে তিনি এসে দেখেন স্বপ্নে যা যা দেখেছেন সব একশো শতাংশ সত্যি। তিনি স্থানীয় লোকেদের সাথে কথা বলে নিয়মিত পুজোর ব্যাবস্থা করেন তৈরি হয় সুন্দর এক বৃহৎ শিব মন্দির। জটেশ্বর মহাদেব নামে এখানে পূজিত হন শিব|

 

আজও সেই শুরুর দিনের মতো শাস্ত্র মতে এখানে পুজো হয়। বাবার বহু ভক্ত আসেন নিজের নিজের মনোস্কামনা নিয়ে। বাবার দয়ায় সবার মনোস্কামনা পূর্ণ হয়।বিশেষ করে শ্রাবন মাসে এবং চৈত্র মাসে ভিড় হয় সব থেকে বেশি।

 

বাংলায় শিব মন্দিরের সংখ্যা অসংখ্য। অলৌকিক ঘটনার সংখ্যাও প্রচুর।আবার শিব মাহাত্মর পরবর্তী পর্বে বলবো অন্য কোনো প্রাচীন শিব মন্দিরের কথা।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।