বাংলার শিব – জলেস্বর শিব মন্দিরের ইতিহাস

485
  • বাংলার শিব – জলেস্বর শিব মন্দিরের ইতিহাস

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ বাংলার আরেকটি প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ শিবমন্দিরের কথা আপনাদের বলবো।

আজকে পর্বে নদিয়ার জলেস্বর শিব মন্দির।

 

নদিয়ার শান্তিপুরে ‘জলেশ্বর শিব মন্দির’ বাংলার অন্যতম প্রাচীন শৈবতীর্থ। এখানে রয়েছে কষ্টিপাথরের বিশাল আকারের শিবলিঙ্গ। মন্দিরকে কেন্দ্র করে রয়েছে অসংখ্য অলৌকিক কাহিনী|শোনা যায় এক বছর খরায় চাষের কাজ বন্ধ হয়ে যায়, প্রায় দুর্ভিক্ষ হওয়ার উপক্রম,প্রচণ্ড সমস্যায় পড়ে শান্তিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ|গ্রামের চাষিরা এক শিবলিঙ্গের মাথায় প্রচুর জল ঢালেন বৃষ্টির প্রার্থনায়। অলৌকিক ভাবে তার পরেই বৃষ্টি নামে। শস্য-শ্যামলা হয়ে ওঠে ধরিত্রী। সেই থেকেই মন্দিরের নাম হয় ‘জলেশ্বর’|

 

এই মন্দিরের ইতিহাস খুব প্রাচীন তবে জলেশ্বর মন্দিরে কোনও প্রতিষ্ঠালিপি নেই।তাই সঠিক দিনক্ষণ জানা যায়না তবে ‘নদিয়া গেজেটিয়ার’ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন এই মন্দির, নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন নদিয়া রাজ রাঘব রায়। তাঁর রাজত্বকাল ছিল আনুমানিক ১৬৩২ থেকে ১৬৮৩ খ্রিস্টাব্দ। সেই সূত্রেই মনে করা হয় ওই সময়ের মধ্যেই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়|

 

সারা বছরই শিব ভক্তদের আনাগোনা লেগে থাকে এই মন্দিরে তবে চৈত্র মাসে এবং শ্রাবণ মাস জুড়ে এই মন্দিরে প্রচুর মানুষ পুজো দেন। পাশাপাশি শিবের মাথায় জল ঢালতেও প্রতি দিন ভক্ত সমাগম হয়। আর শ্রাবণের শেষ সোমবারে ভক্তদের ভিড় কার্যত উপচে পড়ে|চৈত্র মাস এবং নীল ষষ্ঠীতেও এখানে বিশেষ পুজো উপলক্ষে

বহু শিব ভক্ত আসেন।এই চৈত্র মাসে আসন্ন নীল সময়ে আপনারাও পারলে অবশ্যই দর্শন করবেন জলেস্বর শিব মন্দির|

 

আজ এখানেই শেষ করলাম বাংলার শিব চলতে থাকবে আমার এই ধারাবাহিক অনুষ্ঠান। ফিরে আসবো বাংলার শিব নিয়ে পরের পর্বে।

সঙ্গে থাকুন। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।