বাংলার শিব – চন্দনেশ্বর শিব মন্দিরের ইতিহাস

184

বাংলার শিব – চন্দনেশ্বর শিব মন্দিরের ইতিহাস

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

বাংলার কাছেই ওড়িশার চন্দনেশ্বর মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত ব্যাপারে। একাধিক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় এই শিব মন্দিরকে কেন্দ্র করে।

পাতাল ফুঁড়ে উঠে আসায় এখানে শিব স্বয়ম্ভূ। বর্গী আমলে তৈরী এই মন্দিরের বয়স প্রায় তিনশো বছরের কাছাকাছি। আগে এখানে ছিল হোগলা বনের জঙ্গল আর কাজুর গাছ।হিংস্র জীব,বিষাক্ত সাপ এবং ডাকাত দের স্বর্গ রাজ্য ছিলো এই এলাকা।

শোনা যায় লক্ষ্মী নামে এক অসহায় মহিলা শিবলিঙ্গটির দর্শন পান।প্রতিদিন তিনি গোরু চরাতে বের হতেন। কিন্তু, সেই গোরু ঠিকমতো দুধ নাদেওয়ায় পরিবারের লোকজন লক্ষ্মীকেই বাড়িছাড়া করেছিল। সেই সময়ই লক্ষ্মী নিজের গোরুর পিছু নিয়ে দেখতে পান জঙ্গলের মধ্যে গোরুটি এক চম্পক গাছের তলায় শিবলিঙ্গের সামনের বসে আছে। ঠিক যেনো শিবের সামনে রাখা নন্দী মূর্তি আর সেই শিবলিঙ্গে কোথা থেকে যেন ফুল, জল বেলপাতা নিজে থেকেই পড়ছে।তারপর পুজো শেষে মাটির তলায় চলে যাচ্ছে ওই শিবলিঙ্গ।এও অলৌকিক দৃশ্য দেখে সেই মহিলা তা সবাইকে জানায়। ধীরে ধীরে লোক মুখে এই শিবের মহিমা প্রচারিত হয়। তৈরী হয় চন্দনেশ্বর শিব মন্দির।

ভক্তদের রোগব্যাধি দূর করা। বিভিন্ন মনস্কামনা পূরণ। সংস্কারে শান্তি ফেরানো। এমন হাজারো সমস্যায় এই চন্দনেশ্বর মন্দির অঞ্চলের শিব ভক্তদের ভরসাস্থল। দূর-দূরান্ত থেকে চৈত্র এবং শ্রাবন মাসে বিশেষ পুজো উপলক্ষে বহু ভক্ত আসেন এই শিব মন্দিরে।নিজ নিজ মনোস্কামনা নিয়ে।ভক্তবৎসল চন্দনেশ্বর সবার মনোস্কামনা পূরণ বলে বিশ্বাস।

আরো একটি অলৌকিক ঘটনা এই মন্দির চত্বরে কান পাতলেই শোনা যায়।এই মন্দিরে একটি পুকুর আছে। সেখানে চড়কের সময় তিনটি কাঠ পাওয়া যায়। চড়কের প্রধান সন্ন্যাসী তিনটি কাঠের মধ্যে একটিকে সিঁদুর দিয়ে পুজো করেন। তারপর যথা সময়ে সেই কাঠ নিজে থেকেই অদৃশ্য হয়ে যায়। এমনটা প্রতিবছর ঘটছে বলেই ভক্তরা দাবী করেন।

ফিরে আসবো বাংলার শিবের পরবর্তী পর্ব নিয়ে আগামী দিনে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।