বাংলার শিব – একশো আট শিব মন্দির
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
একটি দুটি এমনকি ছাব্বিশ টি শিব মন্দির একত্রে এই বাংলায় দেখা যায় কিন্তু একসাথে একশো আটটি শিব মন্দির বাংলা কেনো গোটা দেশের মধ্যেই অত্যন্ত বিরল নিদর্শন। আজকের পর্বে আপনাদের এমনই এক শিব মন্দিরের কথা জানাবো ।
সারা ভারতে ১০৮ শিবমন্দির মাত্র দু’টি জায়গায় আছে। এবং এই দু’টি জায়গাই বাংলায়, পূর্ব বর্ধমানে। প্রথমটি বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে নবাবহাটে এবং দ্বিতীয়টি কালনাতে|
সারা দেশে ১০৮ শিবমন্দির রূপে প্রচারিত হলেও কালনার এই মন্দিরের প্রকৃত নাম ‘নবকৈলাস মন্দির।বর্ধমানের রাজা তেজচন্দ্র ১৮০৯ সালে কালনার এই মন্দিরটি নির্মাণ করান যেখানে সাদা ও কালো শিব লিঙ্গের বৈচিত্রপূর্ণ সমাহার লক্ষ্য করা যায়, মনে করা হয় সাদা রং ত্যাগের প্রতীক এবং কালো ভোগের প্রতীক|
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি বাড়িতে স্বেত বর্ণের শিব লিঙ্গ রাখার নিয়ম নেই। স্বেত বর্ণের শিব লিঙ্গ রাখলে তা মন্দিরে রাখতে হয় এবং নিত্য পুজো করতে হয়।
এই কালনা রাজবাড়ি চত্বরের দক্ষিণ দিকে এই ১০৮ শিবমন্দির দু’টি বৃত্তকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
মোট ৭১টি সাদা ও ৩৭টি কালো শিবলিঙ্গ নিয়ে এই মন্দির অবস্থান করছে ভিতরের বৃত্তের মাঝখানে রয়েছে একটি বিরাট কূপ। অনেকেই মনে করেন মন্দিরের পুজোর কাজে জলের চাহিদা মেটানোর জন্যই এই কূপ খনন করা হয়।আবার অন্য মতে এই বৃহৎ কূপটি শূন্য তথা নিরাকার ব্রহ্মস্বরূপ পরম শিবের প্রতীক|এই কূপ ঘিরেও তাই রহস্যর শেষ নেই।
সেই রাজাও আর নেই কোনো রাজকীয় রীতি নীতি তবে নব কৈলাশ শিব মন্দির একাধারে ঐতিহাসিক এবং ধার্মিক স্থল হিসেবে স্বমহিমায় বিরাজমান।
দেশ বিদেশের বহু তীর্থযাত্রী প্রায় সারা বছরই আসেন এই অপূর্ব শিব মন্দির দর্শন করতে চৈত্র সংক্রান্তি এবং মহা শিব রাত্রি উপলক্ষে এখানে বহু শিব ভক্তের ভিড় হয়।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে বাংলার আরো একটি শিব মন্দিরের কথা নিয়ে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।