ঐতিহাসিক লাল কালী মন্দির

436

আপনারা হয়তো জানেন আবার আগের মতোই জ্যোতিষ কার্যে নিয়ম করে চেম্বারে বসা শুরু হয়েছে, এমনকি কলকাতার বাইরে জেলাতেও যাচ্ছি নিয়ম করে পাশাপাশি মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা মন্দিরের নানান কাজে প্রায়ই এখানে ওখানে ছুটে বেড়াতে হয়, এমনই একটি দরকারে কাল গিয়ে ছিলাম উত্তর কলকাতার শোভাবাজার অঞ্চলে গাড়ি করে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দেখলাম উত্তর কলকাতার একটি প্রসিদ্ধ কালী মন্দির যে মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক গল্প, কিংবদন্তী ও অলৌকিক ঘটনা, মনে পড়লো এই মন্দিরের কথা এখনো বলা হয়নি, তাই আজকের পর্বে কলকাতার বিখ্যাত লাল কালী মন্দির|

যেখানে সেন্ট্রাল এভিনিউয়ের রাস্তা দুভাগে ভাগ হয়ে নাম হয়েছে চিত্তরঞ্জন এভিনিউ ও যতীন্দ্র মোহন এভিনিউ সেখানে অবস্থিত এই প্রাচীন কালী মন্দির বর্তমানে মন্দিরটি যতীন্দ্র মোহন এভিনিউ-তে পড়ে|কোনও মন্দিরই দেখা যায় সাধারণত রাস্তার একধারে কিন্তু অদ্ভুত ভাবে এখানে রাস্তায় মাঝখানে রয়েছে মন্দিরটি|এই মন্দির তৈরির পেছনে রয়েছে বহু কাহিনী|

২৫০ বছর আগে এই মন্দির একটা মাটির ঘর ছিল তখন অমরকৃষ্ণ ঠাকুর চক্রবর্তী নামে এক মাতৃ সাধক রাজা নবকৃষ্ণের বাড়িতে চণ্ডীপাঠ করতেন আর ওই মাটির ঘরে তিনি তন্ত্রসাধনা করতেন|

শোনা যায় রঘু ডাকাত একবার হাটখোলা থেকে ডাকাতি করে ফেরার সময় লুঠ করা যোগমায়ার মূর্তি রাজা নবকৃষ্ণের পুকুরে ফেলে দেয় পরবর্তীতে অমরকৃষ্ণ ঠাকুর চক্রবর্তী স্বপ্নাদেশ পেয়ে মাকে নিয়ে এসে সেই মাটির ঘরে পুজো শুরু করেন|

ব্রিটিশ আমলে রাস্তা তৈরি করার সময় ইংরেজরা মন্দির টি সরাতে চাইলে অমরকৃষ্ণ ঠাকুর চক্রবর্তী মন্দির সরিয়ে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন৷ তখন ব্রিটিশ গভনর্মেন্ট তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে৷ তিনদিন তাঁকে হাজতে আটকে রেখেছিল৷শোনা যায় যোগমায়াকে কোলে নিয়েই হাজতে ছিলেন তিনি ৷ রাজকৃষ্ণদেব তাঁর হয়ে মামলা লড়েন এবং সেই মামলায় তাঁর জয় হয়৷ তারপর ইংরেজরাই ওনাকে প্রস্তাব দেয় মন্দিরটা সুন্দর করে বানিয়ে দেওয়ার৷ তাতে ঠাকুরদা রাজি হয়েছিলেন৷ ইংরেজরাই এই লাল রঙের মন্দির তৈরি করে দেয়|

শোনা যায় ব্রিটিশরা যখন পুরোনো মন্দির ভেঙে দেয়া প্রচুর জল বেরিয়েছিলো এখান থেকে যদিও আশ্চর্যজনক ভাবে জলের কোনো উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি|

কলকাতায়া মেট্রো রেলের কাজ শুরু হওয়ার সময় এই মন্দিরের গায়ে কোনও আঁচড় লাগেনি৷ সেইসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, তিনি মন্দিরটা চিনতেন,ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, এই মন্দিরটা রেখেই মেট্রোর কাজ হবে৷ তার জন্য আলাদা করে তিনি তিন কোটি টাকা অনুমোদন করেছিলেন বলেও শোনা যায়|ইন্দিরা গান্ধীর পরেও এই নিয়ম মেনেই মেট্রোর কাজ এগিয়েছে এখানে|

এই মন্দিরে মাকে যোগমায়া রূপে পুজো করা হয়৷ তন্ত্রমতে সেই পুজো হয়৷ আগে ছাগ বলি হত৷ এখন ফল পুজো হয়৷ আর প্রতিবছর কালীপুজোর আগে মন্দিরের রঙ লাল করা হয়|

আজকের এই পর্ব এখানেই শেষ করছি আবার পরের পর্বে নতুন কোনো কালী মন্দির নিয়ে লিখবো|যারা ফেসবুকে মেসেজ বা কমেন্ট করে জানতে চাইছেন আমাকে জ্যোতিষ পরামর্শ বা ভাগ্যবিচারের জন্যে কবে ও কখন পাবেন তাদের অনুরোধ করবো পোস্টে উল্লেখিত নাম্বারে একবার ফোন করে নিতে|ভালো থাকবেন|ধন্যবাদ|